নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ১৬ মে ২০২৪ ০১ : ৫৬

বাংলা দক্ষিণ ভারত কাঁপাচ্ছে। অনেক দিন ধরেই। যিশু সেনগুপ্ত এ পথে অগ্রজ। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি, ‘কল্কি’ ছবি দিয়ে খাতা খুলেছেন। তালিকায় আরও একটি নাম, ঋষভ বসু। বুধবার প্রকাশ্যে তাঁর প্রথম তেলুগু ছবি ‘দক্ষিণ’-এর ট্রেলার। একের পর এক নারীর রক্তে ঋষভের হাত রাঙা! দেখে শিউরে উঠেছেন তাঁর অনুরাগীরা। ঋষভের বিপরীতে সাই ধনসিকা। আজকাল ডট ইনকে এ প্রসঙ্গে ঋষভ জানিয়েছেন, পরিচালক ওশো তুলসীরাম হইচইয়ের সিরিজ ‘মহাভারত মার্ডারস’-এ তাঁর অভিনীত চরিত্র ‘ভিকি প্যাটেল’ দেখেছিলেন। সেখান থেকেই বেছে নিয়েছেন।

ঋষভ মানেই নানা ধাঁচের ধূসর চরিত্র। ‘শ্রীকান্ত’, ‘মহাভারত মার্ডারস’, ‘কুমুদিনী ভবন’ তার উদাহরণ। ঘুরিয়েফিরিয়ে এক ধারায় অভিনয় করতে ভাল লাগে? প্রশ্নের জবাবে তাঁর যুক্তি, ‘‘ভাল ছেলের চরিত্রেও অভিনয় করেছি। যেমন, ‘প্রসেনজিৎ ওয়েডস ঋতুপর্ণা’, কিংবা ‘ভটভটি’। ওগুলো এক ধরনের। ধূসর চরিত্রে অভিনয় আর এক ধরনের। আমরা সব মানুষ কিন্তু দিনের শেষে সাদা-কালো থেকে ধূসর হয়ে যাই। এটা আমার বিশ্বাস। ফলে, এই ধরনের চরিত্রে সুযোগ পেলে আমিও সেটা উপভোগ করি।’’ তাই আলাদা করে বাড়তি প্রস্তুতিও নিতে হয়নি... কথা শেষের আগেই অভিনেতা জানালেন, ছবির শুট ২০২২-এ। তার আগে করোনা, লকডাউন। সেই সময় বাড়ি বসে প্রচুর এই ধরনের সিরিজ, ছবি দেখেছেন। ফলে, আপনা থেকেই প্রস্তুতি শুরু। সুজয় ঘোষের ‘কহানি’ ছবির ‘বব বিশ্বাস’ তাঁকে প্রভাবিত করেছে। তিনি নাকি শাশ্বতর অভিনয় খুঁটিয়ে দেখেছেন। পাশাপাশি, মন দিয়ে তেলুগু শিখেছেন। যাতে নিজের সংলাপ নিজেই বলতে পারেন। সেটাই হয়েছে। এই ছবিতে চাঁর কণ্ঠস্বর ডাব করা নয়। 

বাংলার শিল্পী দক্ষিণে গেলে কেমন ব্যবহার পান? আপ্লুত ঋষভ প্রশংসায় পঞ্চমুখ, ‘‘পুরো রাজার হালে রাখে। থাকা, খাওয়া, পারিশ্রমিক সব দিক থেকে। সঙ্গে প্রচণ্ড আপ্যায়ন। বাংলাকে ওরা যেন একটু বেশি ভালবাসে’’। বলতে বলতে হেসে ফেলেছেন তিনি। অশোক শিন্ডে প্রযোজিত এই ছবিতে ঋষভ নগ্নও হয়েছেন! অস্বস্তি ছিল? চিত্রনাট্যের খাতিরে কতটা সাহসী হবেন তিনি? অভিনেতার সাফ জবাব, ‘‘ছবিতে নগ্নতাও প্রযুক্তির সহযোগিতায় দেখানো হয়েছে। ফলে, অস্বস্তি কাজ করেনি।’’ একটু থেমে আরও যোগ, চিত্রনাট্য চাইল যতদূর সাহসী হওয়া যায় ততটাই হবেন তিনি। নগ্নতা নিয়ে তাঁর কোনও ছুঁৎমার্গ নেই।



দক্ষিণী বিনোদন দুনিয়া আপাতত সবার উপরে। বলিউডের জৌলুসও তার কাছে ফিকে। ঋষভ দুবছর আগে ওই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছেন। জাদুমন্ত্র কী? সামান্য ভাবলেন। তারপরেই বললেন, ‘‘ওরা ওদের সংস্কৃতি ভোলেনি। শিকড় ভোলেনি। তাই ওদের ছবিতে ধুলোমাটির গন্ধ বেশি।’’ আর অভিনয়ের প্রতি তীব্র অনুরাগ। সেই কারণেই একটি দৃশ্য মনমতো না হওয়ায় প্রযোজক ঋষভকে ফের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। প্রোডাকশন হাউজের খরচায়। ঋষভের তাই সাফ কথা, ‘‘বাংলা ছবিকে ৫০০ কোটি টাকার বাণিজ্য করতে হলে সবার আগে মাটির কাছাকাছি ফিরতে হবে। এখন সব ছবি শহরকেন্দ্রিক। প্রত্যেকটা বুদ্ধিদীপ্ত। এই ধরনের ছবি বুঝতে ন্যূনতম শিকার প্রয়োজন। সবার সেটা নেই। ফলে, সাধারণ মানুষ আগ্রহ হারাচ্ছে।’’ তারপরেই আফসোস, দক্ষিণ ভারতের মতো এই প্রজন্মের কাছে তোজাম্মেল হক বকুল পরিচালিত ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ অথবা অঞ্জন ‘শত্রু’ পৌঁছে দিলে ছবিগুলো ১০০ কোটি, ৫০০ কোটির ক্লাবে ঢুকে যেতে পারত।।