Reporter: শ্যামশ্রী সাহা | লেখক: উপালি মুখোপাধ্যায় | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ০৭ মে ২০২৪ ১৬ : ২৬

মৌ রায়চৌধুরীর অনেক পরিচয়। তিনি সাহিত্যিক, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ–এর কো চেয়ারপার্সন, সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির গভর্নিং বডির সদস্য, "আজকাল" এর ডিরেক্টর, শিল্পোদ্যোগী। তাঁর আরও এক পরিচয়, তিনি প্রযোজক। নয় নয় করে একমুঠো ছবি প্রযোজনা করেছিলেন সদ্যপ্রয়াত। তালিকায় সন্দীপ রায়ের ‘কৈলাসে কেলেঙ্কারি’, ‘হিট লিস্ট’। গৌতম ঘোষের ‘শঙ্খচিল’। ৭ মে, মঙ্গলবার সকালে তিনি প্রয়াত। খবর জানার পর থেকেই মুষড়ে পড়েছেন দুই তারকা পরিচালক। আজকাল ডট ইনকে সন্দীপ জানিয়েছেন, তাঁর দুটো ছবির প্রযোজক। এত আন্তরিক, অমায়িক প্রযোজক তিনি আর দেখেননি। গৌতম খবরটা প্রথম জেনেছেন আজকাল ডট ইনের থেকে। শুনেই বেশ কিছুক্ষণ কথা বলতে পারেননি। তারপর জানিয়েছেন, তাঁর অনুপস্থিতিতে আনন্দ করে দিল্লিতে ‘শঙ্খচিল’-এর জন্য জাতীয় পুরস্কার আনতে গিয়েছিলেন।

আরও অনেক স্মৃতি দুই পরিচালকের মনে। সন্দীপ যেমন বলেছেন, ‘‘প্রযোজক শিক্ষিত হলে সেই ছবি যে কত মসৃণ গতিতে তৈরি হতে পারে সেটা মৌকে দেখে শিখেছি। অত্যন্ত ভদ্র, মার্জিত, নম্র। নীচু গলায় কথা বলতেন। আর ভীষণ জানার আগ্রহ। প্রযোজক মৌ পরিচালক সন্দীপের থেকে খুঁটিয়ে সব কিছু শিখেছিলেন। তারপর সেই জ্ঞান উজাড় করে দিয়েছিলেন দুই মলাটের পাতায়।’’ সন্দীপের মতে, ভাল প্রযোজক হতে গেলে আরও একটা গুণ থাকতে হয়। সবার আগে টেকনিশিয়ানদের মন জয় করতে হয়। ওঁরা সহজে সন্তুষ্ট হন না। মৌ সেটাও হাসিমুখে পেরেছিলেন। কলাকুশলীরা পর্যন্ত ওঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ! সেটে এসে সবার খোঁজ নিতেন। সবার প্রয়োজনের খোঁজ নিতেন। নিজে দাঁড়িয়ে সব ব্যবস্থা করতেন। এমন প্রযোজক আর কি হবে?

একই অভিজ্ঞতা গৌতমেরও। কিছুদিন আগেই তাঁর দেখা হয়েছিল মৌ রায়চৌধুরীর সঙ্গে। তখনও তাঁর আবদার ছিল, ‘‘আমার সঙ্গে আরও একটা ছবি করবেন তো?’’ পরিচালক জানিয়েছিলেন, তিনি একটি বিদেশি ছবি নিয়ে ব্যস্ত। তবে নিশ্চয়ই তিনি আবার মৌ রায়চৌধুরীর প্রযোজনায় ছবি বানাবেন। সংসার, অফিসের কাজ সামলে সবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। সারাক্ষণ হাসিমুখ। ওঁর থেকে জোরে কথা বোধহয় কেউ শোনেনি। ওঁর অধীনস্ত কর্মীরাও নন। এমন মানুষদেরই সমাজের বেশি প্রয়োজন। আবার ঈশ্বরের কাছেও এঁরাই জরুরি। তাই বোধহয় এত তাড়াতাড়ি ডাক পাঠালেন।