শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Sumit | ০৫ জুন ২০২৪ ১৮ : ১২Sumit Chakraborty
আজকাল ওয়েবডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরের পাঁচবার কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীকে পরাজিত করে গোটা দেশে চমক দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের তারকা প্রার্থী ইউসুফ পাঠান। এবারের নির্বাচনে ইউসুফের প্রাপ্ত ভোট ৫ লক্ষ ২৪ হাজার ৫১৬। অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী পেয়েছেন মাত্র ৪ লক্ষ ৩৯ হাজার ৪৯৪ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা বিজেপির ডাঃ নির্মল সাহা পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ৮৮৫ ভোট। পাঁচবারের পোড় খাওয়া কংগ্রেস সাংসদ চৌধুরীকে ৮৫,০২২ ভোটে পরাজিত করেছেন ইউসুফ পাঠান। ইউসুফের জয়ের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এই প্রথম তারা বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে কোনও সাংসদ পেল।
যদিও ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল প্রার্থী জিতলেও দলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার নিজে কান্দি পুরসভার যে ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেই বুথ থেকে 'লিড' পাননি ইউসুফ পাঠান।
তৃণমূল সূত্রের খবর, অপূর্ব সরকার নিজে কান্দি পুরসভা তিন নম্বর ওয়ার্ডের লোহাপট্টি এলাকার বাসিন্দা। সেখানে কাদম্বরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি বুথের ভোটার তিনি। ওই বিদ্যালয়ের ১৭৮ এবং ১৭৯ নম্বর বুথে প্রাপ্ত মোট ভোটের নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউসুফ পাঠান। ওই স্কুলের দুটি বুথে কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ৩৮৯ ভোট, বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ৬৩৯ ভোট এবং ইউসুফ পাঠান পেয়েছে মাত্র ৩২১টি ভোট। তৃণমূল সূত্রের খবর, কান্দি পুরসভার মোট ১৮ টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র চারটি ওয়ার্ডে লিড পেয়েছেন ইউসুফ পাঠান।। যদিও বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে কেবলমাত্র বহরমপুর বিধানসভাতেই 'লিড' পেয়েছেন অধীর চৌধুরী। কান্দি বিধানসভা এলাকায় তিনি ইউসুফ পাঠানের থেকে পিছিয়ে রয়েছেন।
ভরতপুরে তৃণমূল বিধায়ক তথা বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের তরফ থেকে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হুমায়ুন কবীর বলেন,"কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার নিজে কান্দি পুরসভা এলাকার বাসিন্দা। তিনি তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানকে ভোট প্রচারের সময় কম করে ১০ বার নিজের এলাকায় নিয়ে গিয়ে প্রচার করেছেন। অথচ আমি যে দুই বিধানসভা এলাকায় -রেজিনগর এবং ভরতপুর- দায়িত্ব নিয়ে প্রচার করেছি সেখানে কোনও কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে একবারও প্রার্থীকে প্রচারে নিয়ে যেতে পারিনি।" তিনি বলেন,"কিন্তু সোমপাড়াতে আমি যে বুথের ভোটার সেখানে এবং রেজিনগর ও ভরতপুর বিধানসভা এলাকায় ইউসুফ যথেষ্ট 'লিড' পেয়েছেন।
হুমায়ুন আরও বলেন," ভরতপুর-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমানও সালার-হাজামপাড়াতে নিজের বুথে তৃণমূল প্রার্থীকে লিড দিতে পারেননি। এই সমস্ত নেতাদের আগামী দিন একটু হিসেব-নিকেশ করে রাজনীতি করা উচিত।"বিজেপির মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদিকা বিনীতা রায় বলেন,"কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারের নিজের ওয়ার্ডে ইউসুফ পিছিয়ে রয়েছেন। এর পাশাপাশি কান্দি পুরসভার চেয়ারম্যান জয়দেব ঘটক নিজের জেতা ওয়ার্ড এবং তাঁর যেখানে বাড়ি সেখান থেকেও তৃণমূলকে লিড দিতে পারেননি। পুরসভার ১৮ টির মধ্যে ১২ টি ওয়ার্ডে বিজেপি এবং ২ টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী লিড পেয়েছেন।"
কান্দি পুরসভার চেয়ারম্যান জয়দেব ঘটক ওয়ার্ডে পিছিয়ে থাকার তথ্য স্বীকার করে বলেন,"তা সত্ত্বেও কান্দি বিধানসভা এলাকা থেকে ইউসুফ পাঠান প্রায় ১২ হাজার ভোটের লিড পেয়েছেন এবং কান্দি পুরসভা এলাকায় আমরা কংগ্রেসের থেকে বেশি ভোট পেয়েছি।"