বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Riya Patra | ২৬ মার্চ ২০২৪ ২০ : ৪৯Riya Patra
রিয়া পাত্র
বছরের শুরু থেকেই উত্তাল বাংলার সন্দেশখালি। কেউ কেউ বলছেন, ভোটের আগে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, লালগড়ের মতোই বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠে আসছে সন্দেশখালি। রাজনীতিতে জলঘোলা হয়েছে বিস্তর, জেলে গিয়েছে অভিযুক্তরা। আপাতত পরিস্থিতি ঠান্ডা হলেও এই সন্দেশখালিকেই পয়েন্ট ধরে এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির, আর তার প্রমাণ বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী। তৃণমূলের পোড় খাওয়া হাজি নুরুল ইসলামের বিপরীতে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে সন্দেশখালির ৭ নম্বর মাঝের পাড়ার রেখা পাত্রকে। প্রতিবাদী রেখা এখন প্রার্থী রেখা। "সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকতে প্রতিবাদ" মঞ্চ থেকে সোজা লোকসভার প্রার্থী, প্রধানমন্ত্রীর ফোন আসা, মিডিয়ার কল্যাণে পাদপ্রদীপের আলো, রবিবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত রেখা কী কী ভাবলেন তাই নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলল আজকাল ডট ইন।
আপনি সন্দেশখালির প্রতিবাদী মুখ, সেখান থেকে রাজনীতির ময়দান, দুটো সম্পূর্ণ আলাদা জগৎ...
রেখা- দেখুন, আমাদের মা বোনেদের সম্মানের জন্য এবং বাবা-ভাইয়েদের জমি জায়গার জন্যই আমাদের এই আন্দোলন। আমরা কখনও ভাবিনি সন্দেশখালি থেকে কেউ প্রার্থী হবে। হয়েছে,আমরা খুশি। আমার থেকেও সন্দেশখালির মা-বোনেরা বেশি খুশি। প্রার্থী হওয়ার পর আমি আশা করছি, মা-বোনেদের লড়াই তাঁরাই লড়ে নেবেন। তাঁরা আমার সঙ্গে আছেন। আমাকে বেশি পরিশ্রম করতে হবে না।
"রাজনীতি"র সঙ্গে যোগ কতদিনের?
রেখা- ছোটবেলা থেকে বাবাকে বাড়িতে দেখে এসেছি, ওঁরা বিজেপি করেন। শ্বশুরবাড়িতে এসে ২০১১ থেকে দুর্নীতি দেখছি। কেউ স্বাধীন ভাবে ভোটও দিতে পারেন না। আমি আশা করি আমার মা-বোন-ভাইয়েরা ভোট দিতে পারবেন।
আপনাকে কেন্দ্রের "ভূমিকন্যা" বলা হচ্ছে, সন্দেশখালি যাবেন কবে?
রেখা- আমার নিরাপত্তা প্রয়োজন, নিরাপত্তা পেলেই যাব।
এখন কোথায় রয়েছেন?
রেখা- বিজেপির পার্টি অফিসেই সুরক্ষার জন্য আমাকে রাখা হয়েছে।
আপনি নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেছেন দলের কাছে? বা আজ যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হল...
রেখা- এখনও করিনি, করব। আজ সেই কারণেই বেরনো।
৭টা বিধানসভা বসিরহাট কেন্দ্রে, সন্দেশখালির বাইরে সেসব জায়গায় গিয়েছেন কখনও? জানেন সেসব জায়গার পরিস্থিতি?
রেখা- না, আমি যাইনি কখনও। বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জ, কয়েকটা জায়গা গিয়েছি শুধু।
হাতে এখন সময় কম, কী পরিকল্পনা এই সময়ের মধ্যে সব বিধানসভার মানুষের কাছে পৌঁছনোর?
রেখা- প্রতি বিধানসভায় আমার সহকর্মী, ভাইয়েরা রয়েছে। সকলের সহযোগিতায় সব জায়গায় পৌঁছে যাব অবশ্যই।
প্রচার পরিকল্পনা ঠিক হয়েছে কিছু? মানুষের কাছে কোন বার্তা দেবেন?
রেখা-এখনও হয়নি, তবে খুব তাড়াতাড়ি হবে। প্রস্তুতি চলছে।
সন্দেশখালি নিয়ে সরব হয়েছেন, লোকসভায় কি সন্দেশখালি ইস্যুকে সামনে রেখে ভোট টানতে পারবেন? বিপক্ষের প্রার্থী বহু বছর রাজনীতির ময়দানে...
রেখা- সন্দেশখালি বলে নয়, নিশ্চয়ই সাত বিধানসভাতেও এই ঘটনা ঘটেছে, যেটা সামনে আসেনি। আমি চেষ্টা করব ৭ বিধানসভার মা-বোনেদের কাছে সঙ্গে যা ঘটেছে, দ্বিতীয়বার যেন না ঘটে, তাঁদের পাশে দাঁড়াবো।
এই প্রচার কি মা-বোনেদের অধিকার-সম্মানের ইস্যুকে সামনে তুলে আনবে?
রেখা- শুধু মা-বোনেদের সম্মান নয়, কৃষক বাবাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ইট ভাটায় যাঁরা কাজ করতেন, পায়ে ধরলেও তারা মজুরি পায়না। তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনীর কাছে মার খায়। পেটে খাবার না পড়লেও শরীরে আঘাত পান। আমি আশা করছি ওঁরা পাশে দাঁড়াবেন।
ভোট জিতলেই লোকসভা। আগে গিয়েছেন কখনও?
রেখা- না। তবে যাবার সময় হয়ত এসে গেছে। এই টিকিটটা দিয়েই হয়ত আমার যাবার সময় করে দিয়েছেন...
সংসদে গিয়ে কী বলবেন, কীভাবে বলবেন?
রেখা- সন্দেশখালি-বসিরহাটের মা-বোনেদের সঙ্গে আলোচনা করব। তাঁদের কষ্টের কথা বলব।
প্রার্থী হওয়ার পরেই খোদ প্রধানমন্ত্রী ফোন করলেন।
রেখা-আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। উনি ফোন করলেন।আমার কথা শুনে পাশে থাকার কথা দিয়েছেন। অনেক বিষয়ে কথা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আপনার হয়ে প্রচার করবেন?
রেখা- ওঁর হাত আমার মাথার উপর আছে। উনি আসবেন, প্রচার করবেন আমার সঙ্গে। আমার জন্য প্রচার করতে এলে খুশি হব খুব। আমার মা-বোনেরা খুশি হবে। আমি পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম জানাব। ওঁর সঙ্গে কথা বলে লড়াইয়ের মনোবল বেড়েছে।