বুধবার ০৯ অক্টোবর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
রাহুল মজুমদার | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ১১ জুলাই ২০২৪ ০৮ : ২১[DELETED]Rahul Majumder
নিজস্ব সংবাদদাতা: কানাডাকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনা। কোপায় প্রথম থেকেই লিওনেল মেসির ফর্ম নিয়ে কথা উঠছিল। গোল করে সমালোচকদের জবাব দিয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। প্রতিযোগিতার ফাইনালে ওঠার পর আর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি মেসি। আর গোটা ব্যাপারটা চোখের সামনে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। চোখের সামনে কোপা আমেরিকায় মেসির ৩৮তম ম্যাচ দেখার কেমন অভিজ্ঞতা হল তাঁর? আমেরিকা থেকে ফোনে একমাত্র আজকাল ডট ইন-কে জানালেন 'অযোগ্য'র পরিচালক।
কৌশিকের কথায়, "এককথায় দুরন্ত। অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা! মেসি একটা ভয়ানক আবেগের নাম। শুধু শব্দ দিয়ে বেঁধে এই আবেগকে প্রকাশ করা ভারি শক্ত। মেসিকে দেখার পাশাপাশি ওঁর করা গোলও তো দেখলাম। বারবার তাই বলছি, খুব আবেগের ছিল আমার কাছে। দেখুন, খেলা ভাল করে দেখতে হলে তার জন্য টেলিভিশন আছে কিন্তু মাঠের যে একটা পরিবেশ, নীল-সাদা জার্সি পরে আর্জেন্টিনার ভক্তদের উল্লাস, কানফাটানো চিৎকার, আনন্দাশ্রু-সব মিলিয়ে সেটা একটা আলাদা তূরীয় মেজাজ..."
সামান্য থেমে আরও বললেন," দেখলাম, আর্জেন্টিনার ভক্তরা তাঁদের বাড়ির সবথেকে ছোট শিশুদেরও মাঠে নিয়ে এসেছেন। জার্সি পরিয়ে। তাঁদের কাঁধে -কোলে চাপিয়ে স্পেনীয় ভাষায় গান গাইছেন। ছোট থেকেই ফুটবল যেন তাদের চিন্তন, মননে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে সেই জন্যেই। অদ্ভুত! সত্যিই অদ্ভুত অনুভূতি। দু'চোখ ভরে দেখতে হয়। মেসির ফুটবল খেলা তো অতুলনীয় কিন্তু খেলার বাইরে অনবরত চলতে থাকা এই ব্যাপারগুলো দেখা, অনুভব করাও কিছু কম সুন্দর নয়"।
মেসিভক্ত এই বাঙালি পরিচালক-অভিনেতা আরও জানালেন, মেসিকে এর আগেও দু'বার তিনি দেখেছেন। একবার কলকাতায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। তারপর বছর দুয়েক আগে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইতালি বনাম আর্জেন্টিনার ম্যাচে। জানাতে ভুললেন না, সেই ম্যাচ তিন গোলে জিতেছিল মেসি ও তাঁর দশজন নীল-সাদা পোশাকের 'সৈনিক'। তবে আমেরিকার মেটলাইফ স্টেডিয়ামে বসে কোপা ফাইনাল দেখার অভিজ্ঞতা যে তাঁর কাছে সবসময় স্পেশ্যাল থাকবে তার পিছনের অন্যতম দুই কারণ জানালেন কৌশিক।
"প্রথমত, আমেরিকার ট্র্যাফিক। কী অসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে যে তা সামলানো হয় তা না দেখলে বিশ্বাস করা মুশকিল। প্রায় লাখখানেক লোক, অত গাড়ি অথচ স্টেডিয়ামের আশেপাশে কোথাও এতটুকুও জানজট দেখলাম না। জানিয়ে রাখি, স্টেডিয়াম চত্বর থেকে অন্তত এক কি.মি. হাঁটতে হয় খেলা দেখার প্রধান জায়গায় বসার জন্য। তবুও কোথাও অনাবশ্যক ভিড় দেখিনি।
এবং উজান। বাপ-ছেলে পাশাপাশি বসে আশি হাজার দর্শকের মধ্যে থেকে ওঠা মেসি শব্দব্রহ্মের যে মৌতাত তা উপভোগ করতে করতে মেসির গোল দেখা.... এর তুলনীয় আনন্দ খুব কমই আছে! কলকাতাতেও ভোর চারটে-পাঁচটার সময় বিশ্বকাপের ম্যাচ থাকলে আমি আর উজান একসঙ্গে টিভির পর্দায় চোখ রাখি। বলাই বাহুল্য, উজানও ভীষণ ফুটবল ভক্ত। আর মেসি তো এখন বিশ্বব্যাপী একপেশে ভালবাসার সবথেকে সেরা উদাহরণ। আমরাও সেই ফুটবলপ্রেমীদের তালিকায় রয়েছি"।
তবে এত ফুটবল ভক্ত হলেও এখনই ফুটবল কেন্দ্রিক কোনও ছবি করার তাঁর ইচ্ছে নেই বলে জানালেন কৌশিক। "এখন এত স্পোর্টস ফিল্ম হচ্ছে যে ফের খেলা নিয়ে কোনও ছবি তৈরির তুলনায় দেখতেই বেশি পছন্দ করছি"-সাফ কথা কৌশিকের।
কথার একেবারে শেষে ফোন রাখার আগে খানিক স্বগতোক্তি করার মতোই ধীরে ধীরে 'শব্দ'-এর নির্দেশক বলে উঠলেন, " জানি না আর কোনওদিন সামনে থেকে মেসির খেলা দেখতে পাব কি না। তবে যা পেলাম তাইই বা কম কী..."