নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ০৬ জুন ২০২৪ ১৯ : ০৩[DELETED]Rahul Majumder

নিজস্ব সংবাদদাতা: তিনি এ বাংলার অন্যতম উল্লেখযোগ্য সুরকার। সুর সৃষ্টির পাশাপাশি ছবিও আঁকেন। তিনি, দেবজ্যোতি মিশ্র। এবং তাঁর আঁকা সে সব ছবি যেমন শোভা পায় প্রদর্শনীর দেওয়ালে তেমনই বাংলার জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের বৈঠকখানায়। এবার সেই শিল্পীর বিরুদ্ধেই উঠল চুরির অভিযোগ! গোটা বিষয়টি নিয়ে এবার একমাত্র আজকাল.ইন-এর কাছে মুখ খুললেন দেবজ্যোতি। 

বিতর্কের সূত্রপাত গত বুধবার সমাজমাধ্যমে শিল্পীর পোস্ট করা একটি ছবি থেকে। হাতে আঁকা সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে জঙ্গলের দৃশ্য। সেই ছবির পোস্টের‌ ক্যাপশনে দেবজ্যোতি লেখেন, " জল রং আর ওয়াশে সবুজ এঁকে ফেলা যায়... ফেললামও। তারপর! সবুজ বনবীথিকা রক্ষা করার জন্য কী করছি আমরা!!"


নেটমাধ্যমে ছবিটি ছড়িয়ে পড়তেই জানা যায় সেই ছবিটি ইতালির বিখ্যাত চিত্রশিল্পী জিওভান্নি বলদিনির আঁকা। তারপরেই শুরু হয় ট্রোলিং। যদিও এরপর ফেসবুকে সেই পোস্টটি মুছে দেন 'অটোগ্রাফ' এর সুরকার। নতুন একটি পোস্ট করে গোটা বিষয়টিকে 'ভুল' বলে উল্লেখ করেন। লেখেন, তিনি নিজে ওই পোস্টটি করেননি। তাঁর দলের এক সদস্য করেছেন।‌ বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের আঁকা ছবিগুলির সঙ্গে তাঁর আঁকা ছবিগুলিও একই‌ ফোল্ডারে রাখা ছিল। সেই ব্যক্তিটি ভুল করে এই পোস্টটি করেন।

এরপর এ প্রসঙ্গে আজকাল.ইন-কে শিল্পী বলেন, "আমার দলে যে এই ভুলটি করেছেন, তাঁর নাম আমি জনসমক্ষে বলে তাঁকে লজ্জায় ফেলতে চাই না। তাই এ দোষ পুরোপুরি আমার। আমার আরও সজাগ থাকা উচিত ছিল। এবার থেকে থাকব। অন্য কারও হাতে আমার সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার দায়িত্ব দেব না। আমার যাঁরা শুভানুধ্যায়ী, যাঁদের গোটা বিষয়টি খারাপ লেগেছে তাঁদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী!"

সামান্য থেমে তিনি আরও বলেন, "আমি নিজেকে কোনওদিনই বিরাট দড়ের চিত্রশিল্পী হিসাবে মনে করি না। সুরকার হিসাবেও নয়। অন্যের সৃষ্টিকে নিজের কাজ বলে প্রশংসা কুড়োতে আমার রুচিতে বাধে। আমি মনের আনন্দে ছবি আঁকি। নাম কুড়োনোর জন্য নয়। এই বিষয়টিকে একটি বিরাট স্লিপ হিসাবে মেনে নিলে খুশি হব।"

আজকাল.ইনের তরফে দেবজ্যোতি মিশ্রকে ফের প্রশ্ন করা হয় একাধিক নেটনাগরিক ফেসবুকের মন্তব্য বক্সে তাঁর আগের করা একাধিক ফেসবুক পোস্টের ছবি তুলে ধরেছেন। সেখানেও দেখা যাচ্ছে সেই ছবিগুলির কোনওটি বেলজিয়াম শিল্পী শিন এমঘারের আঁকা 'রুস্টার' আবার কোনওটি আলেক্সজেন্ডার পিজোমভের আঁকা। একটি ছবির মন্তব্য বক্সে তো শিল্পী‌ বিক্রম ঘোষ সাধুবাদ জানিয়ে দেবজ্যোতি ঘোষকে তারিফ করেছন। মজার কথা, তিনি আবার পাল্টা জবাবে বিক্রম ঘোষকে 'ধন্যবাদ ভাই' পর্যন্ত বলেছেন! শিল্পী যদি সেই পোস্ট খেয়াল না করেন তাহলে মন্তব্যের পাল্টা জবাবটা দিলেন কেন?

সামান্য থেমে শিল্পীর উত্তর, "আমি ফের বলছি ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে পোস্ট আমি করি না। খুব একটা খেয়ালও রাখি না। আমার দলের যে সদস্যটি সামলাতেন তিনি হয়তো বলতেন আমার কোনও পরিচিত ব্যক্তি কোনও কমেন্ট করেছেন।‌ আমি তখন না দেখেই তাঁকে নির্দেশ দিতাম কী লিখতে হবে।‌ সেই থেকেই এই বিপত্তি! শুনুন, আর একটা কথা বলি, আমি বিশ্বের বিভিন্ন নামি শিল্পীদের আঁকা ছবি দেখে আঁকি,হাত পাকানোর জন্য। ব্যস, ওইটুকুই! আবার বলছি গোটা ঘটনাটি একটি বিরাট বড় স্লিপ। এর দায় আর কারও নয়,আমার উপরেই হয়তো বর্তায় এবং তা আমি মাথা পেতে নিচ্ছি।"

বক্তব্য শেষে শিল্পীর‌ ঘোষণা, "তবে আঁকা কিন্তু আমি চালিয়ে যাব। ফেসবুকেও‌ পোস্ট‌ করব। আর কিছুদিনের মধ্যেই আমার বেশ কিছু আঁকা ছবির প্রদর্শনী‌‌ হওয়ার কথা চলছে।‌ সেটাও কিন্তু হবে!"