রবিবার ২৪ আগস্ট ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর
দেবস্মিতা | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২ : ১৯Debosmita Mondal
গৌতম রায়
ঠিক একশো বছর আগে জন্ম নেওয়া মানুষটি এই পৃথিবীর জল-মাটি-আগুন থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন খুব বেশিদিন আগে নয়। এখনও তাঁর প্রাণের পরশ, তাঁর গানের শেষ রেশের মতই এই অহল্যা ধরিত্রীর বুকে ছড়িয়ে আছে। সুচিত্রা মিত্র। রবীন্দ্র গানের রাজেন্দ্রনন্দিনী। এমন একটি ব্যক্তিত্ব ছিলেন সুচিত্রা মিত্র যাঁকে নিয়ে বলতে গেলে, যাঁকে নিয়ে লিখতে গেলে বোধহয় একটি সুবৃহৎ মহাভারত হয়ে যায়। সুচিত্রা মিত্র এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি কখনও কোনও অবস্থাতে নিজের বিবেকের বিরুদ্ধে নিজেকে পরিচালিত করেননি। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর কাছে ছিল মন্ত্র। রবীন্দ্রমন্ত্র দিয়েই তিনি তাঁর জীবনের কান্না হাসির দোল দোলানো পৌষ ফাগুনের পালা অতিবাহিত করেছেন। বহু ঝড়ঝাপটা এই অতিবাহনের সময়কালে তাঁকে পোহাতে হয়েছে। তাই বলে হাল ছেড়ে দিয়ে কান্নাকাটি করব না -এটাই ছিল তাঁর জীবনের পরম আত্মস্থতার সমাহিত চিত্তের পরিচয়।
সুচিত্রা মিত্র একজন রাজনীতিমনস্ক মানুষ ছিলেন। তিনি তাঁর রাজনীতিমনস্কতাকে একটি বারের জন্য গোপন করেননি। সেই রাজনীতিমনস্কতার জন্য তাঁর শিল্পী কেরিয়ার তৈরির ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে তাঁকে পড়তে হয়েছে। কিন্তু তিনি তাঁর বিশ্বাসকে কখনও বন্ধক রাখেননি। তাই বলতে হয় সুচিত্রা মিত্র রবীন্দ্র ধারায় সিক্ত সেই জাতশিল্পী, যিনি কখনও নিজের চিন্তা-চেতনা, বিবেক, মেরুদন্ডকে, ঘুষ বা ঘুষির কাছে বন্ধক রেখে, নিজেকে কেবলমাত্র পারফর্মার হিসেবে তুলে ধরে, লক্ষ্মীর কৃপালাভে ব্যস্ত রাখেননি।
নিজের বোধকে বিকশিত করবার ক্ষেত্রে, রবীন্দ্রনাথ কোনও জায়গায় জাগুরুক থাকতে পারেন মানবসত্ত্বায়, তার যেন বাঙ্ময় প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছিলেন। সুচিত্রা মিত্র, তাঁর গানে, কি তাঁর উচ্চারণে, তাঁর সুরনিক্ষেপ -এসব নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে, হবে। আর এই জন্মশতবর্ষে সেসব চর্চার মধ্যে, আমার হাতের তৈরি চা সুচিত্রাদি খেতে খুব ভালোবাসতেন। আমার হাতে তৈরি ইডলি না হলে তাঁর প্রাতরাশ হত না- এরকম বহু গল্প আমরা শুনতে পাব।
কেমন যেন মনে হয় এইরকম গল্প শোনবার পর চুপিচুপি গিয়ে তাঁকে বলি, জানো তো, এই এই কথা, ওই ওই লোকটা, লোকগুলো তোমাকে ঘিরে বলছিল। আর তিনি তাঁর সেই স্বভাবসুলভ দুষ্টুমি মাখানো মুখটা হাসিতে ভরিয়ে দিয়ে, একটু চোখ পিটপিট করতে করতে বলে উঠবেন, কচু পোড়া খেলো যা।
এই শব্দটার প্রতি সুচিত্রা মিত্রের বড় যেন পক্ষপাতিত্ব ছিল আবার কেউ কেউ বলবেন, তাঁর মুদ্রাদোষ হয়ত ছিল এই শব্দটির উচ্চারণের বাহুল্যে। আসলে সত্যিকে সত্যি বলবার হিম্মত রাখা গত শতকের চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আটের দশক। এই সময়কালের শিল্পীদের মধ্যে কানন দেবী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়- এই রকম যে দু-একজনের নাম হাতে গুনে বলতে পারা যায়, তাঁদের মধ্যে এক বন্ধনীতে থাকা সুচিত্রা মিত্র, যাঁকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রশ্নে এক এবং অনন্যা বললে মনে হয় না খুব ভুল বলা হবে।
সুচিত্রা মিত্রের মধ্যে কোনও দ্বৈততা কখনওই কাজ করেনি। তাঁর সঙ্গে উচ্চারিত হয় এমন কিছু কিছু শিল্পীর মধ্যে দেখা গিয়েছে, সংগীত ব্যতীত অন্য সমস্ত কিছুতেই একটা অদ্ভুত ভাবের ঘরে চুরি। তাঁরা মুখে যেটা বলতেন, অন্তর থেকে সেটা বিশ্বাস করতেন না। সেটা মুখে বলতে ভয় পেতেন। এখানে সবার থেকে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ছিলেন সুচিত্রা মিত্র। হয়ত বিনোদন জগতের নানা ধরনের বাধ্যবাধকতার নিরিখে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মধ্যেও এমন নির্দ্বিধায় কয়লায় কালো সত্য উপস্থাপিত করা অনেক সময় সম্ভবপর হয়নি। কিন্তু যেটা স্পষ্টভাষায় বলার দরকার, সেটা বলার ক্ষেত্রে সুচিত্রা মিত্র কোনওদিন কোনও দ্বিধাগ্রস্থ হননি, তাই ভোগেননি।
সুচিত্রার যে দৃঢ় মানসিকতা ছিল সেটি সহ্য করা তাঁর সমকালে, তাঁর সহকর্মী হোক, অনুরাগী হোক -বহু লোকের পক্ষেই যথেষ্ট কষ্টকর ঠেকেছে। কারণ, কঠিন সত্যকে প্রকাশ করবার মত কলজের জোর সুচিত্রার মতন খুব কম মানুষেরই ছিল, আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। সেই কারণে সমকালের সুচিত্রার শত্রুর অভাব ছিল না। তাঁর শারীরিক অনুপস্থিতির পরেও শত্রুর অভাব নেই। ভবিষ্যতেও শত্রুর অভাব থাকবে না। আবার কল্পিত যে সমস্ত ঘনিষ্ঠ লোক তাঁর জীবনাবসনের পর গজিয়ে উঠেছে, তাঁদের মধ্যেও দেখতে পাওয়া যায়, সুচিত্রাকে অনুধাবন করবার বিন্দুমাত্র চেষ্টা না করে কতগুলো বাজার চলতি ধারণার মধ্যে দিয়ে সুচিত্রা মিত্রের মত এক ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্বের জীবনচিত্র অঙ্কনে তাঁরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এখান থেকেই তৈরি হয় বিভ্রান্তি। যে বিভ্রান্তির হাত থেকে সুচিত্রা মিত্র কখনও নিস্তার পাননি। আসলে সুচিত্রা নিজেও হয়ত আত্মপ্রচারের বর্তমান ধারা ঘিরে কোনদিনও কল্পনা করতে পারেননি। সেই কারণে তাঁকে ঘিরে প্রচার করে নিজেদের প্রচারের আলোতে তুলে আনা লোকদের সম্বন্ধে, জীবৎকালে যথাচিত সতর্কতা তিনি অবলম্বন করতে পারেননি।
কিন্তু এসব সত্ত্বেও শিল্পী সুচিত্রা আর ব্যক্তি সুচিত্রা, এই উভয়ের সন্মিলনে যে রবীন্দ্রসাধিকা সুচিত্রা মিত্র, যিনি তাঁর সমসাময়িক কালের অনেক শিল্পীদের থেকেই বেশ খানিকটা দীর্ঘজীবী হয়েছিলেন, সময়কে দেখবার একটু বেশি সুযোগ পেয়েছিলেন। আর সময়ের বদলটাকে অনুভব করবারও দুঃসময় জনিত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে নিজেকে অতিবাহিত করেছিলেন।
এই অতিবাহিত করবার মধ্যে এক নিঃসীম নিঃসঙ্গতা সুচিত্রা চিরসঙ্গী ছিল। হয়তো তাঁর স্পষ্টবাদিতা, সততা, নিগূঢ় সত্যের প্রতি আন্তরিক দায়বদ্ধতা, কখনও ভাবের ঘরে চুরি না করা, মন আর মুখকে কখনও পৃথক না করা -এ সমস্ত কিছুই তাঁকে এক নিশ্চিত নিঃসঙ্গতার পড়শি করে তুলেছিল।
কখনও কখনও মনে হয়েছে, এই নিঃসঙ্গতা সুচিত্রাকে ব্যথিত করছে। যন্ত্রনা দিচ্ছে। আবার কখনও কখনও মনে হয়েছে, তিনি যেন সাধ করেই এই নিঃসঙ্গতার তরণীতে সওয়ারি হয়েছিলেন। নিঃসঙ্গতাকে তিনি হয়ত খানিকটা অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করতেন মানুষের কোলাহল থেকে নিজেকে খানিকটা দূরে রাখবার জন্য। আর হয়ত চারপাশে জমে থাকার লোকেদের স্তাবকতার এক অদ্ভুত মোহ আবরণ থেকে নিজেকে বিমুক্ত রাখতে তিনি খুব ভালোবাসতেন।
হয়তো রবীন্দ্রনাথের মন্ত্র, 'এ মোহ আবরণ খুলে দাও', এটিই ছিল তাঁর একান্ত জীবন সাধনা। মোহ আবরণের সমস্ত ধরনের মোহমুদগল থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে পেরেছিলেন বলেই তিনি সুচিত্রা মিত্র। অনেকে হয়তো চেষ্টা করেছিলেন সেই মোহমদগলের বৃত্তে নিজেকে সেধিয়ে দিতে। পারেননি। চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। সুচিত্রা, আপনারে দিয়ে রুচিলি রে কি এ আপনারই আবরণ - কেমন যেন একটা প্রাচীর দিয়ে সেই সিঁদ কাটাকে রুখেছেন। তা বলে তিনি কখনও নিজেকে আড়াল করেননি। আঁখি না মেলে দুনিয়াকে দেখবার অভিনয় করেননি। এগুলো করেননি বলেই হয়ত তিনি যারা তাঁকে কেন্দ্র করে কোনও সুবিধা করে উঠতে পারেনি, তারা তাঁর সম্বন্ধে বিশেষণ যুক্ত করেছে, 'বাগান বিলাসিনী বোগেনভিলা 'বলে। তা বলে তাদের উদ্দেশ্যে কখনও কাঁটা ফোটানোর চিন্তা বা চেষ্টা, সেগুলি ছিল সুচিত্রার নীতিবিরুদ্ধ। রুচিবিরুদ্ধ। মেধাবিরুদ্ধ। নিজের মন মানসিকতাকে যেখানে সায় দেয়নি, তেমন কোনও কিছুর সঙ্গে সুচিত্রা মিত্র নামক রবীন্দ্রসাধিকা জীবনে কখনও আপোষ করেননি। এটাই হল শিল্পী এবং ব্যক্তি সুচিত্রা মিত্রের সম্পর্কে সবথেকে বড় তুলে ধরবার মতো বিশেষণ।
আসলে আজ তাঁর জন্মের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই কথাটাই বারবার মনে হচ্ছে, সুচিত্রা মিত্রের মতো একজন পরিপূর্ণ শিল্পী মাত্র কয়েক বছর আগে এই মাটির বুকে হেঁটে বেড়িয়েছিলেন। এই বাতাস থেকে নিঃশ্বাস নিয়েছিলেন -এটা ভাবতেই যেন আজ কেমন অবাক লাগে। আসলে আজ যখন মানুষ, মানসিকতা, মানবিকতা, শিল্পী, শিল্পবোধ, চেতনা- এই সমস্ত কিছুর মধ্যেই একটা অদ্ভুত কৃত্রিমতা এসে বাসা বাঁধতে শুরু করেছে, তখন সমস্ত ধরনের কৃত্রিমতা, সুচিত্রার নিজের ভাষায় যাকে বলতে হয়, ন্যাকা ন্যাকা আচরণ, সেটা ব্যতীত একজন ব্যক্তিত্ব, তার অভাবটা তাঁর না থাকাটা আমরা, যাঁরা থাকাটা অনুভব করেছিলাম, আমাদের কাছে বড্ড বেশি মর্মান্তিক।
নানান খবর

গাড়ি, বাইক, সোনা, টাকা... পণের লম্বা লিস্ট, তাও সন্তুষ্ট ছিল না শ্বশুরবাড়ি! জামাইকে এনকাউন্টার করার দাবি শ্বশুরের

কাশ্মীরে জামাত-ই-ইসলামির সঙ্গে যুক্ত ২১৫টি স্কুল 'দখল'! সরকারের পদক্ষেপে সমালোচনার ঝড়

জেল থেকে ছাড়া পেয়েও শান্তি নেই, কাজে বেরিয়ে নিখোঁজ যুবক, পাঁচদিন পরেও মিলল না হদিশ!

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ গেল শিশুর! মুহূর্তে বিদ্যালয়ে বিষাদের ছায়া, মধ্যরাতে স্তব্ধ গোটা গ্রাম

চার ম্যাচে দুশো করতে না পারা অস্ট্রেলিয়ার পাহাড়প্রমাণ ৪৩১ রান, হেড, মার্শ ও গ্রিনের সেঞ্চুরিতে নতুন নজির

লুকিয়ে মেয়ের ছবি তোলার চেষ্টা, দুর্দান্ত পদ্ধতিতে রুখলেন দীপিকা! নিজের ‘মৃত্যু’র খবরে বিরক্ত রাজা মুরাদ

৭ সেপ্টেম্বর চন্দ্রগ্রহণে কুবের খুলবেন ধনের ভাণ্ডার! টাকার পাহাড়ে ঘুমোবেন কোন ৫ রাশির জাতক, রইল তালিকা

এশিয়া কাপের আগে চিন্তা বাড়াচ্ছেন সঞ্জু, সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ তারকা ব্যাটার, জায়গা হারাতে পারেন
দেব-শুভশ্রীর রসায়ন এবার মুঠোফোন থেকে ড্রয়িংরুমে! বড়পর্দার পর কোন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে 'ধূমকেতু'?

আমাদের আলো ওদের কাছে অন্ধকার, কেন এমন বললেন বিজ্ঞানীরা

ভারতে বাড়ছে ক্রেডিট কার্ড প্রতারণা, এই পাঁচটি উপায় মানলেই কেল্লাফতে

'গুটখা খাব, টাকা দাও', স্ত্রীর নেশার চোটে ঝালাপালা স্বামী, টাকা না দেওয়ায় শেষ হয়ে গেল গোটা পরিবার

তুমুল ভিড়ে নিতম্বে অচেনা হাত! রাগে ফেটে পড়ে কী করলেন ডেইজি, ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা ফাঁস

'গ্রাউন্ড জিরো বিজনেস ব্যাটল', শিলিগুড়ি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে বিশেষ দিনে বিশেষ আয়োজন

গোপন অভিসন্ধি? বিহারের ভোটার তালিকায় দুই পাকিস্তানি মহিলা! তথ্য সামনে আসতেই ব্যাপক হইচই

এশিয়া কাপের দলে ব্রাত্য শ্রেয়স, এবার ছেড়ে দিলেন নেতৃত্বও

‘ধূমকেতু’র দিলখোলা প্রশংসার মাঝেই ‘ভিঞ্চি দা ২’- তৈরির ইঙ্গিত সৃজিতের! মুখ্যচরিত্রে কি দেখা যাবে রুদ্রনীলকেই?
নেপোটিজমের চরম উদাহরণ! এবার নিজের ছেলেকেই বলিউডে 'লঞ্চ' করছেন করণ জোহর? ভাইরাল ভিডিও

‘চিরসখা’য় বিয়ের দিনে ধাক্কা! প্লুটোর মৃত্যু, মিঠি ভাল, মৌ ভিলেন, নিজের চরিত্র নিয়ে সরাসরি সাফাই রোশনির

মেরু অঞ্চলের বরফ গলার আগেই ডুবে যাবে সমস্ত মহাদেশ, গবেষণায় অশনি সঙ্কেত

এক্ষুনি ঝেঁপে বৃষ্টি ২ জেলায়, প্রবল বৃষ্টিতে টালমাটাল হবে ১১ জেলা! বাংলায় তুমুল দুর্যোগের অশনি সঙ্কেত