আজকাল ওয়েব ডেস্ক: অয়নের বয়স মাত্র ৬ বছর। সারাক্ষণ তার একটাই বায়না, মোবাইল হাতে চাই। আবদার না রাখলেই সবকিছুতে বিরক্ত, পড়াশোনায় মনঃসংযোগের অভাব। আবার বছর তিনেকের অহনার সামনে ফোন না দিলে কিছুতেই গলা দিয়ে খাবার নামে না। মেয়েকে খাওয়ানো যেন বাবা-মায়ের কাছে রীতিমতো পরীক্ষার সমান। তবে নিমেষে সমাধান হয় যদি হাতে মোবাইলটি দিয়ে দেওয়া হয়। অয়ন কিংবা অহনাই শুধু নয়, মোবাইল কেন্দ্রিক শৈশব এখন অধিকাংশ শিশুর। এ যেন এক রোগের বাতাবরণ। আপাতদৃষ্টিতে তেমন কিছু মনে না হলেও বিপজ্জনক এই নেশায় শিশুর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। এই আসক্তি কীভাবে কাটাবেন? জেনে নেওয়া যাক:
অধিকাংশ শিশুর স্মার্টফোনে হাতেখড়ি হয় তার অভিভাবকদের হাতেই। তাই অভিভাবকদেরও ফোন ব্যবহারে সতর্ক থাকা জরুরি। সেক্ষেত্রে মোবাইলের সম বিকল্প ও আকর্ষণীয় জিনিসের প্রতি শিশুর আগ্রহকে বাড়িয়ে তুলতে পারলে। যেমন, ছবি আঁকা, গান গাওয়া বা কোনও বাদ্যযন্ত্রের প্রতি খুদের কৌতূহল থাকলে সেই আগ্রহকে বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন।
শিশুকে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন রহস্য-রোমাঞ্চকর গল্পের প্রতি ঝোঁক তৈরি করা খুব দরকার। বাড়ির আবহে যেন পড়াশোনা-খেলাধুলার পরিবেশ থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রাতে ঘুমানোর আগের একঘণ্টা ও সকালে ঘুম ভাঙার পর প্রথম এক থেকে দুই ঘণ্টা খুদেটির ফোন ব্যবহার নিষেধ রাখতে হবে। এই নিয়ম বাবা-মায়ের জন্যও প্রযোজ্য হলে ভাল।
ঘরের ছোট্ট খুদেটির সঙ্গে বাবা-মায়ের ‘কোয়ালিটি টাইম’ কাটানো জরুরি। সপ্তাহে একটি দিন বাড়ির প্রত্যেক সদস্যের জন্য একটি স্মার্টফোনবিহীন দিন রাখতে হবে, সেদিন প্রত্যেক সদস্যের শিশুটির সঙ্গে সময় কাটানো দরকার।
সন্তানকে সময় না দিয়ে তার বদলে হাতে মোবাইল ধরিয়ে দেওয়া বা টিভিতে কার্টুন চালিয়ে দেওয়াই পরে সমস্যা তৈরি করে। অনেক শিশু একাকিত্বের কারণে মোবাইল ফোনের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। বাবা-মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে যে শিশু স্মার্টফোন ব্যবহার করেও পড়াশোনা সহ প্রতিদিনের কাজকর্ম সঠিকভাবে করছে কিনা। যদি তা নির্দ্বিধায় করে তাহলে ১-২ ঘণ্টা ফোন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া যায়।
