নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ০১ মে ২০২৪ ২২ : ৪৯

বাংলায় জড়তা নেই। নিখুঁত মার্কিনি উচ্চারণে ইংরেজি বলেন। ‘আরেঙ্গাত্রম’-এ ডিগ্রি পেয়েছেন। গানে বিভিন্ন পুরস্কারে সম্মানিত। তিনি মাস্টার অফ ফাইন আর্টস ডিগ্রি পেয়েছেন ফিল্ম স্কুল থেকে। স্ট্র্যাটেজিক মিডিয়ায় ডক্টরেট, স্বর্ণপদকজয়ী। লস এঞ্জেলসে থাকার সুবাদে সেখানকার বিখ্যাত রিয়্যালিটি শো আমেরিকান আইডল, এক্স ফ্যাক্টর, সারেগামাপা নর্থ আমেরিকা-য় নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তারপরে দেখা দিয়েছে জি টিভি, সোনি টিভিতে। ড. প্রিয়দর্শিনী গুহ রায়চৌধুরী মার্কিন মুলুক ফেলে বাংলায় উড়ে এসেছেন বাংলা ছবিতে অভিনয় করবেন বলে! শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘দেবী চৌধুরাণী’ দিয়ে তাঁর বাংলা ছবিতে হাতেখড়ি। উচ্ছ্বসিত ড. প্রিয়দর্শিনী আজকাল ডট ইনকে জানিয়েছেন, যেখানেই থাকুন, দিনের শেষে তিনি বাংলার মেয়ে। তাই কলকাতায় এসে শুট করে যেন হারানো শিকড়ের সন্ধান ফিরে পেলেন। ছবিতে তাঁর চরিত্রের নাম ‘দিবা’। প্রযোজনায় অ্যাডিটেড মোশন পিকচার্স (অনিরুদ্ধ, অপর্ণা দাশগুপ্ত), লোক আর্টস ক্রিয়েটিভ (সৌম্যজিৎ মজুমদার)।

ড. প্রিয়দর্শিনী বরাবরই প্রবাসী। বিদেশে গিয়েও নিজের সংস্কৃতিকে ভোলেননি। ভুলতে দেননি তাঁর পরিবার। তাই তিনি ভারতনট্টমে পারদর্শিনী। রবীন্দ্রসঙ্গীত অনায়াসে গাইতে পারেন। বিদেশের মাটিতে আয়োজিত এনএবিসি বঙ্গ সম্মেলনে পরিচালক শুভ্রজিতের সঙ্গে আলাপ। বাংলা ছবিতে কাজ করতে চান, মনের কথা জানাতেই ‘দেবী চৌধুরাণী’র অডিশনের জন্য ডাক পাঠান পরিচালক। কলকাতায় এসে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে চরিত্র পেয়েছেন, আত্মতুষ্টি তাঁর গলায়। অভিজ্ঞতা কেমন? প্রশ্নের জবাবে ড. প্রিয়দর্শিনী বললেন, ‘‘অদ্ভুত ভাললাগা জড়িয়ে ছিল। সব্যসাচী চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন চক্রবর্তীকে এতদিন দূর থেকে দেখেছি। এবার তাঁদের সঙ্গে পর্দাভাগ করলাম। গর্ব হচ্ছে। ‘নিশি’ চরিত্রে আপনারা বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়কে দেখেছেন। আমিও তেমনই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ‘দিবা’।’’ 

বাংলার বুকে প্রথম সন্ন্যাসী বিদ্রোহ ঘটেছিল দেবী চৌধুরাণীর হাত ধরে। সেখানেই ড. প্রিয়দর্শিনী এক বিদ্রোহী সন্ন্যাসিনী। মাথায় জটা। কপালে তিলক। খাদির শাড়ি পেঁচিয়ে পরা। রুদ্রাক্ষের গয়নায় সেজেছিলেন। নিজের সাজের কথা জানাতে জানাতে উত্তেজিত তিনি। আরও জানালেন, ঘোড়ায় চড়া আগেই জানতেন। অস্ত্রচালনা শিখতে হয়েছে। দেখেছেন, প্রত্যেকে কী পরিশ্রম করে অস্ত্রচালনা শিখেছেন। ড. প্রিয়দর্শিনী যদিও হিন্দিতে কাজ করে ফেলেছেন। হলিউড-বলিউড-টলিউডের মধ্যে প্রাথমিক পার্থক্য কী? উত্তর, ‘‘ভাষা। আর কিচ্ছু না। প্রত্যেকে প্রতিটি কাজে তাঁদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমি ভাগ্যবান, তিন জায়গাতেই কাজ করলাম।’’ বাংলায় পছন্দের পরিচালক? সত্যজিৎ রায়, গৌতম ঘোষের কাজ দেখে বেড়ে ওঠা ড. প্রিয়দর্শিনীর স্বপ্ন গৌতম, সুজিত সরকার, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বা সৃজিত মুখোপাধ্যায় যদি ডাকেন!

শুভ্রজিতের আগামী ছবিতেও শ্রাবন্তী রয়েছেন। বিদেশে শুটিং। ছবিতে ‘দিবা’ দেখা দেবেন? হেসে ফেলেছেন শুভ্রজিতের ছবির অভিনেত্রী। জানিয়েছেন, হলে তাঁর থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না।