শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Riya Patra | ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৫ : ৩৮Riya Patra
কৌশিক রায়
তৃণমূল থেকে বিজেপি, বিজেপি থেকে তৃণমূল আবার তৃণমূল থেকে বিজেপি। নির্বাচনের আগে দলবদলের ঘটনায় বারবার নাম উঠে এসেছে অর্জুন সিংয়ের। তাতে যদিও কিছু এসে যায় না ব্যারাকপুরের সাংসদের। অর্জুন আছেন অর্জুনেই। ‘ব্যারাকপুরে আমিই জিতব’, একরাশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে আজকাল ডট ইনকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন তিনি।
একাধিকবার দলবদল, এতে কি অর্জুন সিংয়ের জনপ্রিয়তা কমছে না বাড়ছে?
অর্জুন: ব্যারাকপুর অর্জুনের মাটি। অর্জুন ব্যারাকপুরের। দুবেলা প্রচার করছি। মানুষ শুধু আমাকে দেখতেই ভিড় জমাচ্ছেন। আলাদা করে কিছু বলতে হচ্ছে না তাঁদের। ফেস রিডিং করেই বুঝে যাচ্ছি তাঁদের কী কী সমস্যা রয়েছে। এটাই এখানকার মানুষ হওয়ার সুবিধা।
কী সমস্যা রয়েছে এখানে?
অর্জুন: সমস্যা একটাই এখানকার। মানুষ নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না তৃণমূলের অত্যাচারে, তৃণমূলের গুণ্ডাগার্দিতে, তৃণমূলের পুলিশরাজের ওপরে। নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত মানুষের চাপা ক্ষোভ রয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নির্বাচনের সময়ে তার বহিপ্রকাশ হতে পারে।
আপনি তো গত পাঁচ বছর ধরে এখানকার সাংসদ। পরে তৃণমূলেও যোগ দিয়েছেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলেননি?
অর্জুন: আমি অনেক চেষ্টা করেছি। বারবার বোঝাতে চেয়েছি। মমতা ব্যানার্জি, অভিষেক ব্যানার্জির সঙ্গে কথা বলেছি। তখনও বলেছিলাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে গোলমাল করলে লোকসভায় তার ফল মিলবে। কেউ পাত্তা দেয়নি। তারা ভাবছে ক্ষমতায় থাকলে সবকিছু করা যেতে পারে।
‘যখন চাই তখন পাই, ব্যারাকপুরে আবার অর্জুনদাকে চাই’,এই স্লোগানে চারদিকে পোস্টার, ফ্লেক্স দেখা যাচ্ছে। এটাই কি প্রধান ইউএসপি?
অর্জুন: কোনও ইউএসপি নেই। এখানকার মাটিকে আমি চিনি, মাটি আমাকে চেনে। ফলে মানুষের ভরসা যে আমার ওপরেই থাকবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই স্লোগান তারই প্রতিফলন।
পার্থ ভৌমিকের মাটিও তো এটাই। তিনিও এখানকারই মানুষ। প্রতিযোগিতা কী তাহলে কঠিন নয়?
অর্জুন: পার্থ ভৌমিক জীবনে নৈহাটির বাইরে বেরোননি। তৃণমূলে থেকে তৃণমূলের ক্ষতি করেছে। যারা জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূল করত তাদের বাদ দিয়ে চোর, মাদক বিক্রেতা, আসামীদের কাউন্সিলর বানিয়েছে। পয়সা নিয়ে টিকিট দিয়েছে। ব্যারাকপুরে তৃণমূলের লড়াই তৃণমূলের সঙ্গেই, বিজেপির সঙ্গে নয়।
আপনি কী তাহলে অন্তর্দ্বন্দ্বের কথা বলতে চাইছেন?
অর্জুন: ২০০%। যারা মার খেয়ে, জেল খেটে লড়াই করে ২০১১ সালে তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনল তারা এখন কোথায়। তাদেরকে ঘরবন্দি করে দিয়েছে। এখন তো তৎকাল তৃণমূল শাসন করছে। তৎকাল মানে অভিষেক ব্যানার্জির তৃণমূল এখন ক্ষমতায়। সরকারে হয়তো নেই। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসন সব জায়গাতেই তারাই ক্ষমতায়। ব্যারাকপুরের মাটি রিঅ্যাকশনের মাটি। কেউ যদি ভাবে ক্ষমতায় থাকলেই ব্যারাকপুরের মানুষের ওপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দেবে আর লোক মেনে নেবে সেটা এখানে ঘটেনা।
অভিষেক ব্যানার্জির তৃণমূল বললেন কেন?
অর্জুন: কারণ মমতা ব্যানার্জি এখন শাহজাহান হয়ে গেছেন। উনি বন্দি হয়ে গেছেন অভিষেক ব্যানার্জির কাছে। মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল আর নেই।
নির্বাচনের আগে একাধিকবার আপনি দলবদল করেছেন। মানুষ তাহলে কেন আপনাকে ভোট দেবেন?যে দলে আপনি আজ আছেন কাল আবার অন্য দলে। তাহলে কি আপনার মুখটাই সব?
অর্জুন: দল যখন কাউকে প্রার্থী করে সবথেকে আগে দেখা হয় সেই প্রার্থীর পিছনে ভোটব্যাঙ্ক কত আছে। দলের নিজস্ব একটা ভোটব্যাঙ্ক আছে। তাছাড়া প্রার্থীরও নিজস্ব একটা ভোটব্যাঙ্ক থাকে। যা হবে মানুষ সেই প্রার্থীর সঙ্গেই থাকবে। মানুষ এটা জানে যে অর্জুন সিং তাঁর সঙ্গে থাকবে। এ আমার দুঃখের সময় থাকবে। ভোটের রাজনীতি অনেকটাই ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে। রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে আমি ব্যক্তিগত সম্পর্ককে প্রাধান্য দিই।
নির্বাচন এলেই দলবদলের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। আপনি নিজেও এই তালিকায় যুক্ত। কি বলবেন?
অর্জুন: রাজনীতিতে যেটা দেখা যায় সেটা হয় না আর যেটা হয় সেটা দেখা যায় না। এবার আপনি বুঝে নিন।
টিকিট না পেলেই অভিমান করছেন অনেকে। আপনার ক্ষেত্রেও কি তাই ঘটেছে?
অর্জুন: দেখুন এখানে দলের দৃষ্টিভঙ্গিটা বুঝতে হবে। আমি যেদিন যোগ দিলাম তার তিনদিনের মধ্যে আমাকে টিকিট দেওয়া হল। তার মানে নিশ্চয়ই দল কিছু ভেবেছে। যাকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে তাঁর পাশে কত মানুষ আছেন, তিনি কেমন কাজ করেছেন সবই দেখার বিষয়। এটা অনেক দল বুঝতে পারে না। যারা বুঝতে পারে না তারাই সঠিক প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে না।
তড়িৎবরণ তোপদারের সঙ্গেও দেখা করলেন কয়েকদিন আগে।
অর্জুন: ওঁর সঙ্গে তো আমি সবসময়ই দেখা করি। রাস্তাতেও তো দেখা হয়। বাড়ি হয়তো যাওয়া হয় না খুব একটা। উনি বহুদিনের রাজনীতিবিদ। আমার বাবা একটা কথা বলতেন। রাজনীতিতে গুরুজনদের থেকে শিখতে হয়। সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি ওনার থেকে শিখিও আমি একলব্যের মত।
লড়াইটা কি এবারে কঠিন?
অর্জুন: আগের থেকে সোজা আছে। ২০১৯ সালের থেকে সোজা। শুধু ব্যারাকপুর নয় গোটা পশ্চিমবঙ্গে এবার বিজেপি ভাল ফল করবে। কম করে ২৮টা সিট পাবেই।