এক পরিবার, শিল্পের প্রতি টান, ‘মার্ডার কেস’-ই কি আলাদা করেছিল রাজ-উদ্ধবের পথ?
Riya Patra
সোমবার, 21 এপ্রিল 2025
1
8
একজনের ফোকাস ছিল ক্যামেরার লেন্সে, আর একজনের পেন্সিলে। একজন ছবি তুলতে ভালবাসতেন, একজন আঁকতে। প্রায় দু’ দশক পর জল্পনা তুঙ্গে মারাঠাভূমের রাজনীতিতে, ফের এক হতে চলেছেন বালাসাহেবের দুই হাত।
2
8
ছেলে এবং ভাইপো। রাজ ঠাকরে এবং উদ্ধব ঠাকরে। শুধু দু’ জনের কথায় এই ইঙ্গিত মিলেছে এমনটা নয়, অন্যান্য নেতাদের কথাতেও ইঙ্গিত রয়েছে। রাজ-উদ্ধব এক হলে মারাঠাভূমের রাজনীতিতে কোন সমীকরণ বদলে যাবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে আলোকপাত প্রায় দু’ দশকের আগে ঘটনায়। কেন দুই ভাইয়ের পথ আলাদা হয়েছিল?
3
8
বালাসাহেব পুত্র উদ্ধব। ক্যামেরা, কবিতায় ছিমছাম জীবন। রাজনীতিতে কতটা আগ্রহী উদ্ধব? প্রশ্ন ছিল তা। অন্যদিকে কার্টুনিস্ট বালাসাহেব হাতে করে আঁকা থেকে রাজনীতি, গড়েছিলেন ভাইপো রাজকে। তাঁর বক্তব্যের ঝাঁঝ, রাজনীতির ময়দানে তীব্রতা মারাঠাভূমে ধারণা তৈরি হয়েছিল, বালাসাহেবের, শিবসেনার উত্তরাধিকার হবেন রাজই।
4
8
পটভূমি বদলে যায় ২০০৩-এ। উদ্ধবকেই উত্তরসূরী হিসবে ঘোষণা শিবসেনার, দিনে দিনে রাজের সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়ল যোজন যোজন। ২০০৫-এ নতুন দল গঠন করেন রাজ ঠাকরে। অনেকেই বলেন, তার বেশকিছু আগে থেকেই রমেশ কিনি হত্যা কাণ্ডের পর থেকেই রাজের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
5
8
অলকা টকিজে রহস্যজনক ভাবে ১৯৯৬ সালে রমেশ কিনির দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর স্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, ঘটনায় হাত রয়েছে রাজের। বালাসাহেব রাজকে বাঁচাতে এক প্রস্ত দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন একসময়ে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ক্লিনচিট দেয় পরে রাজকে। অনেকেই মনে করেন, রাজনীতিতে সেই সময়ে বেশ ভাবমূর্তি বেশ খানিকটা নষ্ট হয়েছিল তাঁর। এই রমেশ কিনি মামলা ২০০৯ সালে ফের রাজনীতির ময়দানে নিজের ভাইয়ের বিরুদ্ধে তুলে এনেছিলেন খোদ উদ্ধব।
6
8
পরের ঘটনাও অদ্ভুত। উদ্ধবের সঙ্গে বালাসাহেব থাকলেও, রাজনীতিতে ঝাঁঝ বাড়াতে পারলেন না। অন্যদিকে রাজ গলায় ঝাঁঝ বজায় রাখলেও 'ব্যাকবোন' রইল না কেউ। রাজনীতিতে দুজনের পরিণতিই ট্র্যাজিক একপ্রকার। প্রায় দু’ দশক পর, দুই ভায়ের কথায় দীর্ঘ বিবাদ ভুলে এক হওয়ার ইঙ্গিত? এক পডকাস্টে রাজ ঠাকরে বলেন, “উদ্ধব ও আমার মধ্যে বিরোধ তুচ্ছ, মহারাষ্ট্র তার থেকেও বড়। এখন এক হওয়া সময়ের দাবি। এটা শুধু আমার ইচ্ছার বিষয় নয়, গোটা মারাঠি সমাজের স্বার্থে আমাদের এক হওয়া উচিত।”
7
8
অন্যদিকে, উদ্ধব ঠাকরে ভারতীয় কামগার সেনার এক সভায় বলেন, “আমি ব্যক্তিগত বিরোধ ভুলতে রাজি, তবে যাঁরা মহারাষ্ট্রবিরোধী কাজ করবেন, তাঁদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারি না। আগে সেটার পরিষ্কার জবাব চাই।”
8
8
একই প্রসঙ্গের উল্লেখ শিবসেনার মুখপত্র 'সামনা'য়। মারাঠাভূমের স্বার্থে দুই ভাইয়ের বিবাদ ভুলে এখন প্রয়োজন এক হওয়া, সেই ইঙ্গিত মিলেছে সেখানেও।