অভিমানী মেঘ ও আমি

অভিমানী মেঘ ন্যাকা সেজে থাকবি কতকাল? 

বেতালে মক্সো করে, 

মাতালে পাশা খেলে, গিরগিটি সং সাজে

তোর লাভ কি নক্সার অভিমানে? 

মরে যা না হয় উড়ে যা! এমন নাকি সুরের কান্নায়

রাষ্ট্রের অট্টহাসি পায়, আমার বোমি আসে

 

তোর দেশী মেঘের কোলে জারজটাও রোদ পোহায়, 

তার বুঝি ভাদ্রের রোদেও কেমন বসন্ত বসন্ত লাগে, 

তুই বরং যা না, ভিনদেশী মেঘের দলে

ছানাপোনা জোটা কিছু, আর নক্সা কর্

 

তোর ডাক শুনলে কেমন মায়া মায়া লাগে, 

বৃষ্টিও হয় না, 

ঘূর্ণি ঝড়ও না, তোলপাড় হয় না, 

কেমন নিরামিষ বিধবার কান্নারা হাহুতাশ করে, 

তুই যা না

এই বেশ আছি, 

একবিংশের তারুণ্যে বার্ধক্যের দিনগুণে

 

শুনেছিলাম তোরায় তো একদিন পুঞ্জীভূত হয়ে

পৃথিবী কাঁপিয়ে ছিলি,নতুন সূর্য উঠেছিল ইউরোপে, 

এখন অতীত স্বপ্নে বিভোর না হয়ে আগুন জ্বালতে ইচ্ছে করে, 

সেই আগুন-ইচ্ছে একটু ধার নিবি? যে ইচ্ছের স্ফুলিঙ্গে—

মধ্যপ্রাচ্য সভ্যতার নতুন সকাল আলো এনে দিয়েছিল 

 

তোরা মেঘ গুলো একটু একটু করে ঘণ হয়ে জমাট বাঁধ না!

 জমাট বাঁধা মেঘের তারে তারে হোক না অগ্নুৎপাত, 

নিজে জ্বলে ওঠ্, আর জ্বালিয়ে দে আকাশময় আগুন, 

রাক্ষসের চিৎকারে আকাশ বাতাস কেঁপে উঠুক, 

হায়েনারা লেজে আগুন নিয়ে ছুটতে ছুটতে

দুর্যোধনের প্রাসাদে আশ্রয় নিক

 

তারপর... 

না, এসবে কী মন ভোলে, না মন গলে!

বরং তুই থাক পড়ে, ভেসে চল সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে, 

আফসোস শুধুমাত্র এই—তোর নাম মেঘ, 

তুই অভিমানী হলে আমার ঘুম পায়, 

আমি ঘুমিয়ে থাকি আর তুই ভেসে চলিস,

রাক্ষুসে দাপটেও আমার ঘুম ভাঙে না

 

তবুও তুই ভাসবি?

 

 

 

নীল বিষের দেশ

 

 

বসন্তে আদুরে ফুলের

ভালোবাসা, তুমি দূরে থাকো

তুমি এসো নাকো কাছে

এই বেলা ছুটি ফুলে

মৌমাছি বসছে না গাছে

 

তোমার ওষ্ঠের প্রগাঢ়

চুম্বন অধরা মাধুরী যেন

করোনা নিয়ে গেছে তাকে

নীল বিষের দেশে, 

চেরি ফুলের ডালা

বসন্ত বাতাশে উপহাসে

প্রস্ফুটিত 

 

তোমার ভালোবাসার

আকালের দিনে

প্রতিটি ক্ষণ বেঁচে থাকার লড়াই,

 শ্রমিকের লড়াইয়ের থেকেও কঠিন মনে হয়

 

তবুও দন্ড, পলে পলে

তিল তিল করে না এগিয়েও,

এগিয়ে চলে রাত্রি দিন 

 

কচ্ছপের পিঠে পৃথিবীর ভার

কুবের তো গিরগিটি,

পাতালের রাজা এই দুর্দিনে আত্মগোপন করেছে  

 

পলাশ ফুল গুলো রক্তাভ চোখে

চেয়ে রয়

কীসের প্রতীক্ষায়?

 

আদিম আদম কঁকিয়ে ফুফিয়ে কাঁদে

উহানের বদ্ধতায়,

রোমের অলিন্দে দেওয়ালে দেওয়ালে

টাইগ্রিস ইউফ্রেটিস,

হাডসনের

কান্নার ধ্বনি 

গঙ্গা-সিন্ধু-যমুনাতে মিলে যায়

 

এই দুর্দিনে বন্ধু করছিনা অঙ্গীকার হাতে হাতে রেখে পথ চলবার

দিন শেষে সুখের প্রাসাদে নিশি যাপনের

 

'বনলতা' তোমার ওষ্ঠে নীল বিষ

'মুখোমুখি বসিবার' দিন তো শেষ,

এখন শুধু রাতের প্রহর প্রতীক্ষায় অধীর

 

কালরাতে শেয়ালের আনাগোনা

শ্মশানে শ্মশানে শকুনের সমাবেশ

শিমুল ফুলের শোভা মেখে

গাছে গাছে কাকেদের আনাগোনা

 

লক ডাউন শাট ডাউনে

শুনশান রাজপথ থেকে গলির রাস্তা,

তুমি একবার চেয়ে দেখ

তোমার অলিন্দ থেকে

কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পরিযায়ী শ্রমিকের অনাহারী মুখ, 

রাজ অসুখে লংমার্চের লাইনে শুধু নীরব মৃত্যু

 

রামজি মাহাতোদের মৃত আত্মার সুতীব্র চিৎকারে

আকাশ বাতাস বেদনা বিধূর, মারিয়ানার গভীরতম গহ্বর থেকে

উত্থিত সুতীব্র আহ্বান -

'বাঁচতে চাই

বাঁচতে চাই

বাঁচতে চাই' 

 

 

ঐখানেই পাবে আমাকে

হাতের স্পর্শে নয়, নাড়ির স্পন্দনে

মিশে আছি

এই গভীর অসুখে

স্পন্দন যদি বেঁচে থাকে ঘড়ির কাটায়,

 

সেই দিন বঁধু তোমার চোখের পাতায় বেহেশত খুঁজে নেব,

অমৃত সুধা পানে অমর হয়ে রবো অধর লালিমায়

 

 

কাবুলিওয়ালা

 

 

শব্দ খুঁজে ফিরি

অক্ষর সাজাই

শবদেহ মেলে

 

অন্ধকার ঢিল ছোঁড়ে অন্ধকারে

আদিম অমানিশার মুদ্রার দু-পিঠে বসে দুই কারবারী

 

ভক্ত আর তক্তি ঠোকাঠুকি করে

শেয়ানা দুর্যোধন অথবা বহুজাতিক বহুরূপী

নিঃশব্দ বেসাতি করে

 

মিনি সেই কবে চলে গেছে অন্তঃপুরে

মিনির দেশ প্রহর গোণে

সংবিধান হারানোর 

উদ্বাস্তু করার নতুন আইন পাশ হয়ে যায় তার দেশে 

 

মিনি তোর কাবুলিওয়ালা কই? 

তার কারাবাসই সই

প্রেম পিরিতি ফেরি তো বিকোয় না সস্তায়

বিকোয় ঐতিহ্য 

রক্ত, লাশ.. 

মানুষ উদ্বাস্তু হলে 

শকুন উল্লাস করে 

 

সভ্যতার আলোফোটা ভোর বিকোয় না

বিকোয় ছায়াভোর

হাজার বছরের অকেজো জঞ্জাল 

আস্তাকুড় থেকে আস্ফালন করে 'নীতি' আওড়ায় 

বহিরঙ্গের পোশাকী আফিমখেকো মবড

আজগুবি গাঁজাখুরি মন্ত্রের বোল ধরে 

মানুষ মারে দানবিক উল্লাসে

লকলকে লোলজিভের ডগায় বসে

 

বুজরুকি ডেরা বাঁধে অস্ত্র কাঁধে

রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে

দেশ বিকোয়, মানুষ কাঁদে

শুধু কুবেরের চিকন মুখে শীতল হাসির রেখা ফোটে

 

এক মুখে হাজারো মুখোস

মোড়লির ঠেকে শান্তি বাহিনী কুচকাওয়াজ করে 

'শান্তি'র গুষ্টির পিন্ডি দেয়

নেপথ্যে অট্টহাসির ফোয়ারা নামে 

 

বর্বর তান্ডবে মাতে জোব্বা বাহিনী 

প্রাণবায়ু থেকে যাওয়া প্রাণ গুলো 

ফতোয়ায় ফতোয়ায় উপরদম ধরে

 

অন্ধ-কানারা উল্লাস করে 

ঐতিহ্যমন্ত্র উচ্চারণে আকাশ বাতাস কাঁপায় দেশে দেশে 

ঐ বুঝি মিলে গেল জান্নাতি হুর

 

খবিশ গুলো অমানুষই থেকে যায়

অধিকারহীন সহস্র প্রাণ আকাশ বিদীর্ণ করে কাঁদে

অধিকার প্রতিষ্ঠার কুরুক্ষেত্র

ছায়া যুদ্ধে চাপা পড়ে যায়।

 

 

অমানিশার ইশতেহার 

 

 

অপ-রাজনীতির বারবনিতা নেমেছে রাস্তায়

নীল লাল রুপোলি মাছের

উলম্ফনে মাতে জনতা 

 

জ্বিন পরি আর মৎস কন্যার 

বিছানা বদল ঘনঘন

দিন বদলের ভানে

কালো ঘন রাতে জোনাকিও আলো দেয় না 

 

মাঝ রাতে 

নিশি হায়েনা সদম্ভে পায়চারি করে

শকুনির পাশা চলে সারা নিশি 

বেশ্যার খদ্দের বিছানা বদলায় রাতারাতি 

নিলাম হয়ে যায় ক্ষমতার দালালি

মাথাপিছু ভোট বিক্রি হয় 

ঘাটে মাঠে রাস্তায় 

 

গণতন্ত্রের দোহাই পাড়ে

দুর্যোধনের সাগরেদরা 

রাত কেবলই বেড়েই চলে

আঁধার আরো ঘন হয়

 

অমানিশার ইস্তেহারের পাতায় 

কালো অক্ষর গুলো মুখ লুকিয়ে হাসে 

লুম্পেনী পোকারা জান লড়িয়ে দেয়

ক্ষমতা মোহে, আস্ত গিলে খায় ইশতেহারের পাতা

 

দুর্যোধনী মন্ত্রে ফের জন্ম নেওয়ার

আকাঙ্ক্ষায় উৎসব করে 

নতুন লুম্পেন-রাজ

 

ইতিহাস তুমি কি বোবা? 

এত পান্ডুরতা! 

তবু তুমি নির্মম 

 

খন্ড মেঘ গুলো 

তবু চলমান

পাথর সময়ের বুকে ঘড়ির কোন দাগ পড়ে না 

 

পঞ্চপান্ডব কোথায় তুমি? 

কোন জরায়ূতে মুখ লুকাও?

 

 

 

ইতিহাসের কাঠগড়ায় তুমি যেদিন দাঁড়াবে! 

 

 

ঠুলি পরা চোখে তুমি তো কিছুই দেখো না, 

হাবিয়া জাহান্নামে আগুন জ্বলছে 

ঝলসে যাচ্ছে মানুষের রক্ত মাংস 

তুমি নাকি নীতির কান্ডারি? ঔচিত্যের পরিমাপক? 

 

তুমি তো পোড়া ছাই

কোটি বছরের ফসিল তুমি, 

তুমি তোমার জমিন বিক্রি করেছো, 

তোমার স্বদেশ বিক্রি করেছো

তোমার অস্তিত্ব বিক্রি করেছো

 

কিন্তু তুমি তো শুধু তোমার ছিলে না?

 

তুমি আমার দেশ

তুমি আমার সত্তার কান্ডারি

তুমি আমার জমিন

তুমি আমার ইজ্জত

তুমি নীল আকাশে শরৎ মেঘের ভেলা

তুমি আমার শিশুর মানবাধিকারের প্রহরী

তুমি আমার ঈমান, তুমি তো ব্যক্তির ঊর্ধ্বে 

 

সাঁঝ রাতের উজ্জ্বল নক্ষত্রের এমন পতন যদি বলি, 

হবে অপলাপ সত্যের 

ইতিহাসে জানে তুমি তো আঁধারের প্রতিনিধি,

 সাজানো আলোক স্তম্ভে শোভিত বাতির মক্সো 

 

বুকের ভেতর গভীর ক্ষত 

এই ভেবে যে ,তুমি ছিলে আসলে ইতর,

বরাহ নন্দন কচু-বনে নোংরা কীট, 

রাজাকারের প্রাণ ভোমরা, 

দূর্যোধনের দোসর, দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণকারি

পদলেহী সারমেয়

 

তুমি তো একটা জীবন্ত লাশ

দানবের হাতের পুতুল

আমার জমিন খেকো হায়েনা, 

ঘাপটি মেরে এগোতে থাকো ক্ষমতার অলিন্দে 

দুর্যোধনী ক্ষমতাও তোমার প্রেমে মশগুল 

 

জোঁকের মতো চুপি সারে 

যখন রক্ত চুষেই খাবে 

তবে মানুষ হলে কেন? 

নরখাদক ভ্যাম্পায়ার হতে পারতে।

 

নীরোর বাঁশির সুর যখন তোমাকে এতই মুগ্ধ করে 

তখন তুমি ঘাতক হতে পারতে, 

মানুষ হলে কী করে?

 

তুমি তো সেই বিচারক—

ইতিহাসের কাঠগড়ায় যিনি পৃথিবীর সব চেয়ে কলঙ্কিত, 

সক্রেটিসের বিচার সভার সেই কলঙ্কিত 

চির-নিন্দিত কূপমন্ডুক—সেই তুমি

 

আজও বিচার সভার প্রহসনের সফল খলনায়ক তুমি, 

যুগে যুগে তোমার ধ্বজা টিকে থাকে দেশে-দেশান্তরে।

 

কিন্তু তোমার ধ্বজা পুজার উৎসবের দিনে 

মনে রেখো, অর্জুনের তীর কিন্তু তাক করা 

তোমার ক্রুর চোখের দিকে

সেইদিন সমাসন্ন।

 

 

    অভিমন্যু 

 

রামের উত্তরীয় রাবণের গলায় 

বানর সেনা নয় রাবণসেনায় ছেয়ে গেছে দেশ

শেষ মেষ বুঝি ভেবেছিলে 

বেঁচে যাবে !

জন্মভূমি , হে জন্মভূমি!

তোমার লালিত মুক্ত চিন্তার আকাশে

এই আকালেও সোনা ঝরবে !

হনুমানের ভেংচি থাকলেও থাবা বসবে না!

ভুল ভেবেছিলে ,

এই শীতেও কাল ঘাম বিন্দু বিন্দু 

শরীর বেয়ে নামছে ।

 

শিরদাঁড়ার আত্মবিশ্বাস নুইয়ে যাচ্ছে ,

একটু একটু সহনশীলতা 

দুর্বলতার মসৃণ ধুলিতে মিশে লুটোপুটি খাচ্ছে,

আর কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ?

উঠতে পারবে শিরদাঁড়া সোজা করে? 

চক্রব্যুহে অভিমন্যু, কাঁদে রাস্তা রাস্তা বলে!

 

আপন শেকলে আপনি বন্দী 

ফন্দির কারাগার সাজছে 

কংস রাজার দেশে তুমি থাকো কয়েদি বেশে

তোমার কন্ঠ, তোমার দৃষ্টি রইল তার গোচরে

এখন পালাবে কোথায়?

উত্তর দক্ষিণ পশ্চিম সে তো কব্জায়

পূবেও আঁধার 

সূর্য এখন নিষিদ্ধ ইস্তেহারের লুকানো পাতায়।

 

 

 

 

             রক্ত করবীর কান্না 

 

 

তুমি যাবে কত দূর?

চলে যেও 

দেবো না বাধা

মনে রেখো হৃদয় থেকে দূরে—

মানে আলোকবর্ষ ছাড়িয়ে যাওয়া

নক্ষত্র পতনের মতো নীরব মৃত্যু 

 

চলে যেও সবুজ পেরিয়ে সোনার পাহাড়ে

ভুলে যেও নদীর কলকল শব্দ 

রেখো না মনে হৃদস্পন্দনের দিনগুলি

মায়াবী চোখে মওমও শরীরী গন্ধমাখা অভিকর্ষ

ভুলে যেও —সব আকুতির শেষ বিন্দু

 

চশমাহীন বৃদ্ধের ঝুলন্ত গালের মতো অসহায়ত্ব

কখনো চিলে নিয়ে যায় না,

নিয়ে যায় তুলতুলে নরম মাংস

এসব আবহমান দিনলিপি— 

খরচের খাতায় কেবল জমা হয়

 

মনে রাখার দায় শুধু 

কৃষ্ণচূড়া শিমুল পলাশ রক্তকরবীর

তুমি এসব মনে রেখো না 

তুমি যাবে কতদূর?

চলে যেও

মনে রেখো না— 

রক্তকরবীর লাল চোখে বিন্দু বিন্দু অশ্রু 

পিছু ফিরে চেওনা অনন্ত জলরাশির দিকে 

 

 

 

        মানচিত্রের দিনরাত্রি 

 

মানচিত্র শুষে নেয় অসীম আকাশ , 

এঁকে দেয় সীমানা,

হৃদয় গোধূলি মরুতৃষায় মরীচিকা আঁকে 

ফুল পাখিদের কলরব, অফুরন্ত জলরাশি— বাটোয়ারার প্রিয় নেশা, মানচিত্রের সীমারেখা পোক্ত করে

কাঁটাতারে ঝোলে — চাতকের চোখে লেগে থাকে অতৃপ্ত রক্তাভ প্রেম

দেওয়াল ওঠে বুকের জমিনে

সাবেক দাগ খতিয়ান মুছে যায়

বদলে যায় হালের নক্সা ,বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উৎসবে মাতে

 

ঐতিহ্যের রাত বড় মায়াময় ,দীর্ঘ নিঝুম মোহময় —ঝিমুনি অশেষ, সীমানার চত্বরে, ভেতরে বাহিরে, অগ্নি জ্বলন্ত 

মানচিত্রের দিনরাত্রি চৌপর-দিন পাহারা দেয় 

মানুষের সীমান্তে 

 

সীমানার কোনো সীমান্ত নেই

 

 

 

সত্য কাছিম 

 

মিথ্যে ফড়িং তিড়িং বিড়িং

গুজব ডানায় ওড়ে, 

সত্য কাছিম অন্তর্লীন  

পায়ের কাছে পড়ে 

 

ফেরেববাজির মবড দুনিয়ায় 

তারার চোখে আঁধার, 

দশচক্রে ভূত ভগবান 

সন্ন্যাসী নেই সাধার 

 

পিপিলিকার উড়ছে পাখা 

আগুন লেলিহান,

জংলি জীবের আর্তস্বরে 

মরণ আহ্বান

 

 

 

 

 লাল অভিমান 

 

 

লাল অভিমান গুলো ,নীলমুখ করে 

হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে হেমন্তের শিশিরের মতো নিঃশব্দে; 

পুনর্জন্মে ফের সবুজ পাতা হয়ে ওঠার

দুর্মর আশার রক্তাভ ভালোবাসার পানসি বেয়ে চলা মাঝি 

স্বপ্নে দিশা খোঁজে গোধূলির মায়ায়

 

 

 

শকুনীর পাশা 

 

শকুনীর সুদিন চলছে

লাশের গন্ধ তার ভীষণ প্রিয় 

শীতের বেলায় 

শীতের পোশাকে

ঝলসানো নর মাংসের রোস্ট খেতে খেতে

আহা কী দিন! স্বস্তির আস্বাদ 

 

সৈনিকও তার পাশার বোড়ে - আজ্ঞাবহ, 

দাসখত লিখে

দেওয়া চামচিকে, পদলেহী

কী রইলো -?

হাতে শুধু পেন্সিল

 

অর্জুনের দৃষ্টি পাখির চোখে

অনন্ত কাল নির্লিপ্ত

ধ্বংস হচ্ছে আকাশ মাটি

রক্ত মাংসের দলা পাকিয়ে

পাকস্হলি ছিঁড়ে বমি পায়

তবু প্রতীক্ষা চলে আসমানি প্রত্যাদেশের প্রত্যাশায়।

  • ফিরোজ অনীক