বুধবার ০৮ জানুয়ারী ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

খেলা | বুট কেনার সামর্থ্য ছিল না, সন্তোষ ট্রফি জিতে বাড়ি ফিরলেন ভাগচাষীর ছেলে, চোখে জল বাবা-মায়ের

Riya Patra | ০৬ জানুয়ারী ২০২৫ ১৮ : ১৮Riya Patra


মিল্টন সেন,হুগলি: চরম দারিদ্রতা। ভাগচাষ করে সংসার চালানোই দায় হয়ে উঠেছিল। ছেলের পড়াশোনা চালানোর মত আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। খেলার বুট কিন দেওয়াতো অনেক দূরের কথা ছিল পন্ডিত পরিবারের কাছে। তবে সব বাধা কাটিয়ে, ছেলে জয় ছিনিয়ে এনেছেন। দুঃখ ঘুচেছে বাবা-মায়ের। স্মৃতি রোমন্থনে বলছেন, তাঁদের ছেলে বরাবর ভালই ফুটবল খেলত। এখন সেই ছেলে সন্তোষ ট্রফি জিতেছেন। আনন্দে আত্নহারা পন্ডিত দম্পতি।


 আবারও কেরলকে হারিয়ে সন্তোষ ট্রফি জিতেছে বাংলার ফুটবল দল। ট্রফি জেতার পর সেই দল বাংলার মাটিতে পা রাখতেই মিলেছে বিভিন্ন মহলের সম্বর্ধনা। জয়ী এই বাংলা দলের একজন ফুটবলার হুগলির নালিকুলের বন্দিপুর গ্রামের বছর ২৮-এর সুপ্রিয় পন্ডিত।
গ্রামের সকলের কাছে সুপ্রিয় বাবাই নামেই পরিচিত। এখন হুগলির গৌরব বাংলার এই তরুণ ফুটবলার। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বাংলা দলের ফুটবলারদের জন্য চাকরির ঘোষনা করেছেন।


শুরু থেকে সুপ্রিয়র এই চলার পথ একেবারেই মসৃণ ছিল না। দারিদ্রতা তো ছিলই, সঙ্গে ছিল অনেক বাধা। তা সত্ত্বেও লক্ষ্যে অবিচল থেকেছেন। খেলা শুরু পাড়ার মাঠ থেকে। সেখান থেকে বৈদ্যবাটি কৃষ্টি চক্র ক্লাব। তারপর কলকাতার রেনবো, ভবানীপুর ক্লাব এবং পিয়ারলেস দলে খেলেছেন। বর্তমানে ডায়মন্ড হারবার ফুটবল দলের ফুটবলার বাবাই। ছোটবেলায় ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান দলের খেলা দেখতে ভাললাগত। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় তার ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। যখনই সময় পেত, তখনই মাঠে গিয়ে ফুটবল নিয়ে অনুশীলন চালাত। 

তবে তখন এই খেলা মোটেও ভালোভাবে নিতক না পরিবার। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ইতি টানতে হয়েছিল। বাবা কাশীনাথ ও মা কৃষ্ণা পণ্ডিত ছেলেকে ফুটবল খেলতে দেখলেই বকাবকি করতেন একসময়ে। কারণ, কাশিনাথ ছিলেন একজন ভাগচাষী। অন্যের জমিতে চাষ করে যা উপার্জন হত, তা দিয়ে কোনওরকমে চলত সংসার। ছেলে ফুটবল খেলে বড় নাম করবে, সেটা ছিল তাঁদের কাছে স্বপ্নের মতো। 
অর্থের অভাবে ছেলের জন্য সামান্য বুট কিনে দিতে পারেননি বাবা। যদিও ছোট থেকে সুপ্রিয় ছিল খুব জেদি। বাবা মায়ের বকাবকি সত্ত্বেও লুকিয়ে হলেও, খেলা ঠিক চালিয়ে গিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় খেলে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে একাধিক পুরস্কার। প্রথমদিকে মা ছেলের খেলাধুলা মেনে নিতে না পারলেও পরবর্তীতে ছেলেকে উৎসাহ দিয়েছেন। ছেলে খেলতে গিয়ে কোথাও চোট আঘাত পেলে আর বকাবকি করতেন না, উল্টে শুশ্রূষা করতেন। এখন ছেলের খেলা মানেই বিরাট ব্যাপার। কখনওই তা দেখতে মিস করেন না বাবা মা। ছেলের খেলা আছে জানলেই কাজকর্ম সেরে বসে পড়েন টিভির সামনে।
 তাঁদের সেই ছেলে লক্ষ্যে অবিচল থেকে এগিয়ে গিয়েছেন। ক্রমাগত লড়াই করে, চড়েছেন সুনামের শিখরে। কোচ সুবিমল সিনহার হাত ধরে প্রথমে মানকুন্ডু ও বর্তমানে বৈদ্যবাটি কৃষ্টিচক্রের মাঠে প্র্যাকটিস। সোমবার সুপ্রিয় জানিয়েছেন, ছোট থেকেই কষ্ট করে বাবা মা তাঁকে মানুষ করেছেন। যখন যা চেয়েছে, সাধ্য মতো সেই চাহিদা পূরণ করেছেন। এবারে তাঁদের গ্রুপের কাছে সন্তোষ ট্রফি খুব কঠিন ছিল। সেখানে কাশ্মীর, রাজস্থান, তেলেঙ্গানার মতো কঠিন দল ছিলো। সেমিফাইনালেও লড়াই ছিল কঠিন। প্রতিপক্ষ যতই শক্ত হোক না কেন তাঁরাও ছাড়ার পাত্র ছিল না। দলের সবাই ১০০ শতাংশ উজাড় করে, লড়াই চালিয়েছে। তবে তাঁদের দলের ক্যাপ্টেন সবসময় সকলকে সাহস যুগিয়ে গিয়েছেন। তিনি বলতেন যে বাংলার প্রতিটা মানুষের ভরসা তাঁদের উপরে। তাই তাঁদের যে ভাবেই হোক এই লড়াই লড়ে যেতে হবে। শুধু লড়া নয় জিততেও হবে। খেলার প্রথমে একটু ছন্নছাড়া মনে হচ্ছিল, তারপর একটার পর একটা গোল, মনের জোর বাড়ায়।  কিন্তু নিজে গোল করতে পারেননি, এটা তাঁর কাছে একটা আক্ষেপ।


 বাংলা দলের প্রতিটা ছেলের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি চাকরির ঘোষণা করেছেন। এর জন্য তার কাছে দলের সকলেই কৃতজ্ঞ। একথাও জানিয়েছেন তিনি। সুপ্রিয়র দু’ চোখে অনেক স্বপ্ন এখনও। এবারে লক্ষ্য ভারতীয় দলে খেলা। এদিকে ছেলের সাফল্যে চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি মা। অশ্রু ভেজা চোখে এদিন বলেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছেন। ফুটবল খেলার প্রতি ঝোঁক দেখে রাগ হয়েছে, বকেছেন, মেরেছেন তবু ছেলে খেলা ছাড়েনি। ওর বাবারও ইচ্ছা ছিল না। ওর বাবা বারবার বলত, খেলাধুলা করে কিছু হবে না। তবু তিনি ঈশ্বরের প্রতি ভরসা রেখেছিলেন, জানতেন একদিন না একদিন ছেলে ঠিক মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। এখন তিনি চান ছেলে অনেক বড় হোক। চোখে জল আটকাতে পারেননি সুপ্রিয়র বাবা কাশীনাথ পন্ডিতও। এদিন তিনি বলেন, তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। সংসার চালাতে পারতেন না। ছেলের জন্য একটা বুট কেনার টাকা ছিল না। ছিল না বই কেনান সামর্থ্যও। অন্যের জমি চাষ করতেন তিনি। অনেক বকাবকি ও করেছেন। এদিন তিনি বুঝেছেন ছেলে এখন অনেক বড় হয়েছে। 
ছবি পার্থ রাহা।


#Santosh Trophy#mamatabanerjee#supriya pandit#hooghly



বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর

লক্ষ্যের লক্ষ্যভ্রষ্ট! মালয়েশিয়া ওপেনের প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে গেলেন ভারতীয় শাটলার ...

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই কি দুই মহাতারকার শেষ আইসিসি টুর্নামেন্ট?...

বিচ্ছেদের গুঞ্জনের মাঝেই ইনস্টাগ্রামে রহস্যময় পোস্ট তারকা স্পিনারের...

নতুন বছরে প্র্যাকটিসের ধরন বদলাচ্ছেন, সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছতে কী পদ্ধতি নিচ্ছেন নীরজ? ...

'পন্থের জায়গা কেড়ে নিয়েছে ও', ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে এই তারকাকেই দলে দেখছেন বাঙ্গার ...

বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে দর্শক সংখ্যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ দুই প্রাক্তন তারকার...

দল নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে, মুম্বইয়ের কাছে হারের পর বার্তা অস্কারের...

গাছে উঠে আত্মহত্যার চেষ্টা, সুয়ারেজের বুদ্ধিমত্তায় বাঁচল একটা জীবন ...

বছর শুরুতেই হোঁচট, ডার্বির আগে ঘরের মাঠে লড়াই করে হার ইস্টবেঙ্গলের...

বছর শুরুতেই হোঁচট, ডার্বির আগে ঘরের মাঠে লড়াই করে হার ইস্টবেঙ্গলের...

'১৭০-১৮০ রান করে ম্যাচ জেতা যায় না', সিডনিতে ভারতের হতশ্রী হার দেখে বলছেন সৌরভ...

'মানছি ভুল হয়েছে', বিজিটির পুরস্কার বিতরণে গাভাসকারকে না ডাকায় এবার ক্ষমা চাইল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া...

ভারতও বিজিটি হারল, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অভিষেক করা এই ভারতীয় ক্রিকেটার অবসর নিলেন একই দিনে...

'জাতীয় দলে জায়গা তো এমনিই হবে', বিজিটিতে হারের পর নির্বাচকদের একহাত নিলেন গাভাসকার...

ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ ভাঙল একশো বছরের পুরনো রেকর্ড, জেনে নিন ...



সোশ্যাল মিডিয়া



01 25