বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর
Sampurna Chakraborty | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩ : ৪৬Sampurna Chakraborty
সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: ২০ বছর আগের সেই অভিশপ্ত রাত। ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে কালো দিন। বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ঘটে যায় মর্মান্তক ঘটনা। আচমকাই মাঠে লুটিয়ে পড়েন ক্রিশ্চিয়ানো জুনিয়র। আর ওঠেননি। ডেম্পো এবং মোহনবাগানের মধ্যে চলছিল ফেডারেশন কাপ ফাইনাল। সবুজ মেরুন গোলকিপার সুব্রত পালের অনিচ্ছাকৃত ঘুঁষি লাগে ডেম্পোর স্ট্রাইকারের বুকে। মাঠের ধারে শুরু হয় শুশ্রূষা। নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। থমথমে পরিবেশে নিজের গোলেই সামনেই হাঁটু মুড়ে দু'হাত জোড় করে প্রার্থনা শুরু তৎকালীন ডেম্পোর গোলকিপার অভিজিৎ মণ্ডলের। কাট টু ২০২৪। মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে ২০ বছর। কিন্তু সেই দিনটি এখনও স্মৃতিতে টাটকা অভিজিতের। ভোলেননি জুনিয়রকে। চোখ বুজলেই দিনটি ভেসে ওঠে। মনে পড়ে যায় প্রতিটি মুহূর্ত। যতদিন বাঁচবেন, স্মৃতিতে থাকবে। কিন্তু এই দিনটিতে যেন আরও বেশি করে মনে পড়ে যায় ব্রাজিলীয় সতীর্থকে। সকাল থেকেই মন কেঁদে ওঠে। বারবার প্রশ্ন ওঠে, মাত্র ২৫ বছর বয়সে সত্যিই কি এমন পরিণতি হওয়ার কথা ছিল জুনিয়রের?
ফোনে অভিজিৎ জানান, প্রত্যেক বছর এই দিনটিতে সতীর্থের ফটোতে মালা দেন। প্রার্থনা করেন তাঁর পরিবারের জন্য। এদিনও ব্যতিক্রম নয়। অভিজিৎ বলেন, 'এই দিনটা ভোলার নয়। ফুটবল মাঠে মৃত্যু এবং চোখের সামনে মৃত্যু যেন কেউই কোনও দিন না দেখে। কারোর যেন এই দুর্ভাগ্য না হয়। কিন্তু আমার এই দুর্ভাগ্য হয়েছিল। পুরো ঘটনাটা চোখের সামনে ভাসছে। কোনওদিন ভুলতে পারব না। এখনও জুনিয়রের ফটো আমার বাড়িতে রাখা আছে। আজ মালাও দেওয়া হয়েছে। বেদনাদায়ক ঘটনা। ভারতীয় ফুটবলে জুনিয়র তাঁর জীবন দিয়ে কিছু জিনিস পরিবর্তন করে গিয়েছে। প্রত্যেকবার এই একটা দিন আমাকে নাড়া দেয়। যেহেতু মাঠে ছিলাম, প্রার্থনা করছিলাম। আশা করেছিলাম জুনিয়র ফিরবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত ওকে বাঁচানো যায়নি। প্রত্যেক বছর এই দিনে ওর ফটোতে মাল্যদান করি। শুধু আমি নয়, আমার পরিবারের কাছেও এই দিনটা অত্যন্ত দুঃখের। গোয়ায় থাকাকালীন আমার পরিবারও প্রত্যেকটা ম্যাচে যেত। তাই আমার স্ত্রীর মনেও এই ঘটনা নাড়া দিয়েছে।'
জুনিয়রকে যে ভারতে এনেছিল, সেই ডগলাস সিলভার কাছেও দিনটি খুবই বেদনাদায়ক। এদিন ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন ব্রাজিলীয় তারকা। সেখানে সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে দেখা যায় ডগলাস এবং জুনিয়রকে। ফটোর ক্যাপশনে লেখেন, '২০ বছর কেটে গিয়েছে। আমি তোমাকে খুব মিস করি ভাই। আমি যেসব স্ট্রাইকারদের সঙ্গে খেলেছি, তারমধ্যে তুমি অন্যতম সেরা।' ২০০৩ সালে দেশওয়ালি ভাইকে ভারতীয় ফুটবলে আনেন ব্রাজিলীয় স্টপার। একবছর একসঙ্গে খেলেন ইস্টবেঙ্গলে।