তীর্থঙ্কর দাস: ১৬ মাসের শিশু পেল ১৬ কোটি মূল্যের জিন থেরাপি বিনামূল্যে। সোমবার দক্ষিণ কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে ১৭.৫ কোটি টাকার জিন থেরাপি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পেল পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬ মাসের শিশু দীন মোহাম্মদ। নভেম্বর কলকাতার পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। নোভার্টিজের গ্লোবাল ম্যানেজ এক্সেস প্রোগ্রামের মাধ্যমে এবছর লটারিতে নাম আসে দীনের। দীন মোহাম্মদের মা, আজকাল ডট ইনকে জানিয়েছেন, ‘চিকিৎসক সংযুক্তা দে আমার ছেলের চিকিৎসা করেন এবং তার পরামর্শ শুনে বিনামূল্য এই থেরাপি পেয়ে নিজের ছেলের প্রাণ বাঁচাতে পেরেছি।‘
আবেদনপত্র থেকে শুরু করে হাসপাতালর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে ‘কিওর এসএমএ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া’ । সংস্থার ডিরেক্টর এবং সহ প্রতিষ্ঠাতা মৌমিতা ঘোষ আজকাল ডট ইনকে বলেন, 'শিশুটি জীবন রক্ষাকারী 'জলজেনোস্মা' বিনামূল্যে পাচ্ছে। আমরা ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা এবং হাসপাতালের কাছে কৃতজ্ঞ।'
এসএমএ টাইপ ১ রোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি হল জিন থেরাপি। সুইস ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি নভার্টিসের তৈরি এই থেরাপি ২০১৯ সালের মে মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্বারা অনুমোদিত পায় এবং এটি একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এসএমএ রোগটি অস্বাভাবিক জেনেটিক অবস্থার ফলস্বরূপ, যা শিশুদের মাংসপেশি নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে। এসএমএ হয় তখনই, যখন এসএমএন১ জিনের দুটি কপি (একটি মা থেকে, এবং একটি বাবা থেকে) ত্রুটিপূর্ণ থাকে। চিকিৎসা না হলে, এসএমএ সাধারণত প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।
দিন মোহাম্মদের চিকিৎসক সংযুক্তা দে আশা করছেন, সে ধাপে ধাপে উন্নতি করতে শুরু করবে। চিকিৎসক সংযুক্তা দে বলেন, "সম্প্রতি পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এসএমএ-র ক্যারিয়ার রেট ৩৫ সে ১ জন । থ্যালাসেমিয়ার পর দ্বিতীয় সর্বাধিক সাধারণ জেনেটিক রোগ হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন তিনি।
'জোলজেন্সমা' এই ত্রুটিপূর্ণ জিনের একটি স্বাস্থ্যকর কপি সরবরাহ করে, যা স্নায়ু কোষগুলিকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি করতে সাহায্য করে, স্নায়ু কোষের অধঃপতন রোধ করে এবং শিশুর স্বাভাবিকভাবে বিকাশ হতে সহায়তা করে। পূর্বে আরও দুই শিশুকে এই থেরাপি দেওয়া হয়েছে। সৌম্যজিৎ পাল, যিনি এখন ২ বছর বয়সী, ২০ মাস বয়সে এই থেরাপি পেয়েছিলেন, এবং আব্রাহাম হোসেন, যিনি এখন ৩ বছর বয়সী, ২ বছর বয়সে থেরাপি পেয়েছিলেন।
