বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Sumit | ২৫ জুন ২০২৪ ১৯ : ৫২Sumit Chakraborty
কথায় বলে ‘মাছে–ভাতে বাঙালি’। তবে, অতিমারি পরবর্তী সময়ে সহজপাচ্য প্রোটিনের উৎস হিসেবে মাছের গুরুত্ব আরও বেশি করে বুঝতে শিখেছে বিশ্ববাসী। ফলে লাফিয়ে বাড়ছে মাছ ও মৎস্য বিশেষজ্ঞদের চাহিদা।
আকর্ষণীয় কেরিয়ার গড়তে মাছ কীভাবে কাজে আসতে পারে, জানাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের সহ–অধ্যাপক ড. অলিপ্রিয়া বিশ্বাস
* মাছ ছাড়া বাঙালি, ভাবা যায়? দেশের যে প্রান্তেই যাওয়া হোক না কেন, সকলেই বলবে বাঙালি মাত্রেই মাছ খেতে ভালোবাসে। এই মাছের কিন্তু প্রচুর গুণ। কোভিড–পরবর্তী সময়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস বদলেছে। সেই বদলে যাওয়া অভ্যাসে মাছের সঙ্গে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে মাংস। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে উত্তরোত্তর, অত্যন্ত সহজপাচ্য খাবার হিসেবে মাছের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। পাশাপাশি নদী–নালার দেশ বাংলায় প্রচুর প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। কোন মাছের কী গুণ, কোন মাছ কখন খাওয়া যায়, কোন মাছের কী কাজ, কীভাবে বাড়ছে মাছচাষ, মাছ ধরার ঠিক পদ্ধতি, জাল ও নৌকার ব্যবহার, মাছের গুণগত মানবৃদ্ধি এবং মাছ দিয়ে নতুন ধরনের খাবার তৈরি–সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের সুযোগ এবং সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা আমাদের দেশে বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।
প্রাণিসম্পদ এবং মৎস্য সেক্টর আমাদের দেশে দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। ২০২২–২৩ অর্থবর্ষে রেকর্ড ১৭৫.৪৫ লক্ষ টন মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মাছ উৎপাদনকারী দেশ হয়েছে। এটি বিশ্বের উৎপাদনের ৮ শতাংশ এবং দেশের মোট মূল্য সংযোজনে (জিভিএ) প্রায় ১.০৯ শতাংশ। এই সেক্টরের বৃদ্ধির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতে ১৯৬১ সালে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফিশারিজ এডুকেশন, মুম্বইয়ে প্রথম এবং পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে স্টেট এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির অধীনে ম্যাঙ্গালোরে প্রথম ফিশারিজ কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। গত চার দশকে ফিশারিজ সায়েন্স স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরাল প্রোগ্রাম মিলিয়ে একটি পেশাদার শিক্ষা হিসেবে উঠে এসেছে।
বর্তমানে ব্যাচেলর অফ ফিশারিজ সায়েন্সে (বিএফএসসি) চার বছরের ডিগ্রি কোর্স এবং বিভিন্ন বিষয়ে মাস্টার অফ ফিশারিজ সায়েন্স (এমএফএসসি) পড়ানো হয়। এছাড়াও ডক্টরাল প্রোগ্রামও রয়েছে সব কোর্সে।
কোথায় পড়া যায়
দেশের ২৫টি কলেজে এই বিষয়ে পড়ানো হয়। যদিও পশ্চিমবঙ্গে একটি মাত্র সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে, ফ্যাকাল্টি অফ ফিশারি সায়েন্স তৈরি হয় ১৯৯৫ সালে। চকগড়িয়ার এই ক্যাম্পাস দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে একটি। বিস্তারিত তথ্যের জন্য www.wbuafsce.org দেখা যেতে পারে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই ফিশারি কোর্স পড়ানো হয়। এই ক্যাম্পাসে আধুনিক ক্লাসরুম ভিত্তিক পড়াশোনা ছাড়াও নতুন ও সব ধরনের ইক্যুইপমেন্টে সজ্জিত ল্যাব এবং প্রসেসিং ইউনিট রয়েছে। পাশাপশি হাতেকলমে শিক্ষার জন্য খামারও রয়েছে।
ভারতের যে সব কলেজে এই বিষয়ে পড়ানো হয় সেগুলি হল কলেজ অব ফিশারিজ, ম্যাঙ্গালোর, কর্নাটক, ভেটেরিনারি, অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারিজ সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি, বিদার (www.cofm.edu.in); ফিশারিজ কলেজ অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, থুতুকুড়ি, ড. জে জয়ললিতা ফিশারিজ ইউনিভার্সিটি, তামিলনাড়ু (https://www.tnjfu.ac.in/fcritut/); কেরালা ইউনিভার্সিটি অফ ফিশারিজ অ্যান্ড ওশ্যান স্টাডিজ, পানানগড়, কোচি (www.kufos.ac.in); কলেজ অফ ফিশারিজ, রত্নগিরি, ড. বালাসাহেব সাওন্ত কোঙ্কন কৃষি বিদ্যাপীঠ, দাপোলি (www.dbskkv.org/f-Fishereis.html); কলেজ অফ ফিশারিজ, রঙ্গেইলুন্ডা, ব্রহ্মপুর, ওড়িশা, ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (www.cofouat.in); কলেজ অফ ফিশারিজ, পন্থনগর, গোবিন্দবল্লভ পন্থ ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (www.gbpuat.ac.in/colleges/COF/index.html); কলেজ অফ ফিশারিজ়, পুসা, সমস্তিপুর, ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ সেন্ট্রাল এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি (www.rpcau.ac.in/colleges/college-of-fisheries); কলেজ অফ ফিশারিজ সায়েন্স, রাহা, অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (www.aau.ac.in/colleges/name/college-of-fisheries-science/); সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফিশারিজ এডুকেশন, মুম্বই (www.cife.edu.in); কলেজ অফ ফিশারিজ, লেম্বুচেরা, ত্রিপুরা; সেন্ট্রাল এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি, ইম্ফল (http://cofcau.nic.in); কলেজ অফ ফিশারিজ, উদয়পুর, মহারানা প্রতাপ ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচার, রাজস্থান (www.cofudaipur.ac.in); কলেজ অফ ফিশারিজ, ভেরাভল, জুনাগড় এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটি, গুজরাট (http://www.jau.in/cof); ফ্যাকাল্টি অফ ফিশারিজ, রঙ্গিল, শের–ই–কাশ্মীর ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অফ কাশ্মীর (http://skuastkashmir.net/frmFacultyFisheries.aspx); কলেজ অফ ফিশারি সায়েন্স, নাগপুর, মহারাষ্ট্র অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি (http://cofsngp.org); কলেজ অফ ফিশারি সায়েন্স, উদগীর, মহারাষ্ট্র অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি, নাগপুর (http://cofsu.in); কলেজ অফ ফিশারিজ, লুধিয়ানা, গুরু অঙ্গদদেব ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি (http://www.gadvasu.in/college/ug-Colleges-Institutes/1357583476); কলেজ অফ ফিশারিজ, কাওয়ার্ধা, ছত্তীসগঢ় কামধেনু ইউনিভার্সিটি (http://cgkv.ac.in/fisheries.aspx); ফিশারিজ কলেজ অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, পোন্নেরি, ড. জে জয়ললিতা ফিশারিজ ইউনিভার্সিটি, তামিলনাড়ু (http://tnfu.ac.in/pages/view/fc_ri_ponneri); কলেজ অফ ফিশারিজ ইঞ্জিনিয়ারিং, নাগাপট্টিনম, ড. জে জয়ললিতা ফিশারিজ ইউনিভার্সিটি, তামিলনাড়ু (http://tnfu.ac.in/pages/view/cofe_nagapattinam); কলেজ অফ ফিশারি সায়েন্স, মুথুকুর, শ্রীবেঙ্কটেশ ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি, তিরুপতি (www.svvu.edu.in/CfscMuthukur.html); ফিশারি কলেজ, জব্বলপুর, নানাজি দেশমুখ ভেটেরিনারি সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, মধ্যপ্রদেশ (www.ndvsu.org/index.php/contact/16-fishery-college-jabalpur); কলেজ অফ ফিশারিজ ইঞ্জিনিয়ারিং, নাগাপট্টিনম, ড. জে জয়ললিতা ফিশারিজ ইউনিভার্সিটি, তামিলনাড়ু (www.tnjfu.ac.in/cofenag); ফ্যাকাল্টি অফ ফিশারি সায়েন্সেস, চকগড়িয়া, কলকাতা, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্সেস।
এছাড়া রয়েছে কলেজ অফ ফিশারিজ, এটাওয়া, কানপুর, চন্দ্রশেখর আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, উত্তরপ্রদেশ (http://csauk.ac.in/college-of-fisheries); কলেজ অফ ফিশারিজ, কিষানগঞ্জ, বিহার অ্যানিমাল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি (www.basu.org.in/colleges/cof) প্রভৃতি।
বিষয় হিসেবে গুরুত্ব
ভারতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি জাতীয় আয়, রপ্তানি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও যথেষ্ট অবদান রাখে। মৎস্য খাতকে ‘সূর্যোদয় সেক্টর’ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয় এবং ভারতের প্রায় ৩০ মিলিয়ন মানুষের, বিশেষত প্রান্তিক ও দুর্বল সম্প্রদায়ভুক্ত, জীবিকা টিকিয়ে রাখতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পশ্চিমবঙ্গ ৮ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি অভ্যন্তরীণ জলাশয় এবং ১৫৮ কিলোমিটারের একটি উপকূলরেখা–সহ বৈচিত্রময় জলজ সম্পদ সমেত ছয়টি কৃষি–জলবায়ু অঞ্চলে সমৃদ্ধ। শীতল জল থেকে সামুদ্রিক এবং এর মধ্যে (অভ্যন্তরীণ, লবণাক্ত জল, জলাভূমি) মৎস্য খাতে ব্যাপক বৈচিত্র রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ২০২২–২৩ সালে ২০.৪৫ লক্ষ মেট্রিক টন মাছ এবং ২৭ বিলিয়ন মাছের বীজ উৎপাদন করেছে। এছাড়াও, রাজ্যে ১.১৭ লক্ষ মেট্রিক টন মাছ (বেশিরভাগ হিমায়িত চিংড়ি) রপ্তানি করেছে যার দাম ৫০০০ কোটি টাকারও বেশি। যদি সমস্ত জলাশয় লাভজনকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে রাজ্যে মোট মাছের উৎপাদন বছরে প্রায় ৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন হতে পারে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ অ্যানিমেল অ্যান্ড ফিশারি সায়েন্সেস ইতিমধ্যেই এই দিকে লক্ষ্যস্থির করেছে এবং তার শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম ও গবেষণা কার্যক্রম এবং পরবর্তীতে গ্রামীণ কৃষি সম্প্রদায়ের কাছে অনুশীলনের প্যাকেজ প্রচারের মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভর্তি কীভাবে
উচ্চমাধ্যমিকের ফল বেরনোর পরেই বিভিন্ন দৈনিক সংবাদপত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এই কোর্সে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। ব্যাচেলর অফ ফিশারিজ সায়েন্সে (বিএফএসসি) কোর্সে ভর্তি হতে গেলে উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান শাখায় পড়াশোনা করা জরুরি। ফিশারিজ সায়েন্স ডিগ্রি যেহেতু বিজ্ঞানের ডিগ্রি, তাই আগ্রহী পড়ুয়াকে উচ্চমাধ্যমিকে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যা এবং ইংরেজিতে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। তফসিলি জাতি এবং উপজাতিভুক্ত পড়ুয়াদের জন্য কমপক্ষে ৪০ শতাংশ নম্বর লাগে। পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা এই রাজ্যের বাসিন্দা হলে তবেই পড়ার সুযোগ পাবেন। উচ্চমাধ্যমিকে পাওয়া নম্বরের নিরিখে তৈরি মেধাতালিকাভুক্ত পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর মাত্র ৪৪ জন পড়ুয়া ভর্তির সুযোগ পায়। বাকি ১৫ শতাংশ আসনে ভর্তি নেওয়া হয় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (www.icar.org.in) পরিচালিত সর্বভারতীয় পরীক্ষার মাধ্যমে। চার বছরের ডিগ্রির পরে দুই বছরের মাস্টার্স এবং পরবর্তীতে পিএইচডি করা যেতে পারে।
কী পড়ানো হয়
বিএফএসসি কোর্সে যে বিষয়গুলি পড়ানো হয়, তার মধ্যে রয়েছে— অ্যাকোয়াকালচার, অ্যাকোয়াটিক এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ফিশারিজ রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, অ্যাকোয়াটিক অ্যানিম্যাল হেল্থ, ফিশ প্রসেসিং টেকনোলজি, ফিশারি এক্সটেনশন, ফিশারি ইকনমিক্স অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স, ফিশারি ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফিশারি নিউট্রিশন। স্নাতক স্তরের পরে স্নাতকোত্তর স্তরে এবং পিএইচডি–তে এই বিষয়গুলি নিয়েই উচ্চশিক্ষা করা যায়।
কাজের সুযোগ
প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি হাতেকলমে ব্যবহারিক শিক্ষারও সুযোগ রয়েছে এই বিষয়ে। গ্র্যাজুয়েশনের চতুর্থ বর্ষে প্রধানমন্ত্রী ‘স্টুডেন্ট রেডি’ প্রকল্পের আওতায় খামারে গ্রাম্য কৃষিকাজের অভিজ্ঞতা (RAWE বা Rural Agricultural Work Experience and Fisheries Experiential Learning) হাতেকলমে অর্জন করতে পারে পড়ুয়ারা। বিভিন্ন মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে তারা ব্যবসা সংক্রান্ত পাঠের সুযোগ পায়। একই সঙ্গে স্টাডি ট্যুরের মাধ্যমে ভারতবর্ষের উপকূলবর্তী অঞ্চলের মৎস্য গবেষণায় ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করে। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বৃত্তি পাওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
অধিকাংশ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাশ করা ছাত্রছাত্রী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মৎস্য দপ্তরের ফিশারি এক্সটেনশন অফিসার হিসেবে চাকরি পায়। এছাড়া ছাত্রছাত্রীরা ভারতের যে কোনও ফিশারি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক, কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে মৎস্য বিজ্ঞানী, বিভিন্ন ব্যাঙ্কে কৃষি আধিকারিক, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে মৎস্য বিশেষজ্ঞ, রাজ্য সরকারের মৎস্য দপ্তরে সহকারী ও সহযোগী নির্দেশক এবং সরকারি ফুড সেফটি অফিসার হিসেবে কাজ করতে পারে। আবার বিদেশেও উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও চাকরির সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার শেষে নিয়োগের জন্য ক্যাম্পাসিংয়ে আসে এবং পড়ুয়াদের নিয়োগ করে। যদিও ইন্টার্নশিপের সুযোগ প্রাইভেট কোম্পানি দেয় না। এটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসিএআর এফইও, ফিড টেকনিশিয়ান, বিজনেস অফিস ইত্যাদির মাধ্যমে পাওয়া যায়।
খেয়াল থাকুক
মৎস্য বিজ্ঞান জীববিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা। অর্থাৎ কোনও পড়ুয়ার বায়োলজিতে আগ্রহ থাকলে এই বিষয়ে পড়াশোনা ও গবেষণায় বিশেষ সুবিধা পেতে পারে। হাতেকলমে শিক্ষার মাধ্যমে পড়ুয়াদের স্বনির্ভর করে তোলা এই কোর্সের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তবে, সমস্যার বিষয় হল, মাছ চাষ সাধারণত উপকূলবর্তী অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। তাই শহর থেকে দুরে কাজ করার বিষয়ে মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে পড়ুয়াদের সমস্যা হতে পারে। যদিও শিক্ষকতা ও গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারলে শহরাঞ্চলেও কাজের সুযোগ মেলে। দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই কোর্সটি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয়। সুতরাং ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা বিশেষ প্রয়োজন।