শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

EXCLUSIVE: রাজ্যে চোর এবং দেশে ডাকাত তাড়াতে এই কেন্দ্রে লোকে আমাকেই ভোট দেবেন: তাপস

Sumit | ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ২০ : ৫১


নকশাল আন্দোলনে যুক্ত ছিলাম কথাটায় তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি আছে। তিনি বলেন, তিনি কম্যুনিস্ট আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। আইএসএফ তৈরি হওয়ার পর যোগ দেন। এইমুহুর্তে দলের রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি। ২০২১ সালে অশোকনগর কেন্দ্র থেকে বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। এবারের লোকসভা নির্বাচনে বারাসত কেন্দ্র থেকে আইএসএফ-এর হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিভাস ভট্টাচার্য

*কট্টর বামপন্থার পর্দায় আপনার রাজনৈতিক জীবনের পেছন বা ব্যাকগ্রাউন্ডটা ঢাকা। আপনি এইমুহুর্তে আইএসএফ দলের রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি এবং বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে দলের প্রার্থী। আপনি কি মনে করেন আইএসএফ বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী একটি দল?
তাপস: শুধু বামপন্থী বলাটা ঠিক নয়। যাকে বলে কট্টর বামপন্থী পর্দায় আমার অতীতটা ঢাকা। এবার আপনার কাছেই আমার প্রশ্ন, আপনি কি মনে করেন যতগুলো দল বামপন্থী বলে নিজেদের প্রচার করে তারা সবাই বামপন্থী? বামপন্থী দল যদি কট্টর হিন্দুত্ববাদী চিন্তাভাবনায় বিশ্বাস করে বা কট্টর মুসলিম মৌলবাদী চিন্তায় বিশ্বাস করে তবে তারা কখনও বামপন্থী দল হতে পারে না। লালঝান্ডা নিলেই কি বামপন্থী হয়? এই আলোচনাটাই কিন্তু আমরা করতে চেয়েছিলাম বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ একটা নতুন দল। আবার ডানপন্থা বা বামপন্থা। মাঝখানে তো মধ্যপন্থা বলে কিছু নেই। ফলে এটুকু আমরা বলতে পারি যে আইএসএফ ডানপন্থী দল নয়। আইএসএফের কথা আর তথাকথিত বামপন্থী দলগুলির কথা কি খুব আলাদা লাগছে? যদি না লাগে তবে কেন আইএসএফকে বামপন্থী বলবেন না?

*২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আপনি অশোকনগর কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ে হেরে যান। ওই নির্বাচন থেকে কী শিক্ষা পেলেন বা সেটাকে কীভাবে ব্যবহার করবেন?
তাপস: গত বিধানসভা নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চা হিসেবে লড়াই করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মানুষ ওই জোটটাকে মেনে নিতে পারেননি। আবার ভোট শেষে সিপিএম বলে দিল "ভোট শেষ, জোট শেষ"। স্বাভাবিকভাবেই আইএসএফকে একা চলতে হল। সেইসময় থেকে উত্তর ২৪ পরগণার জেলা সভাপতি হিসেবে পরিশ্রম করে দলটাকে বুথস্তর পর্যন্ত নিয়ে গেছি। এল পঞ্চায়েত ভোট। ময়দান থেকে এক পা সরে যাইনি। সাফল্য পেলাম। ফলে এবার কিন্তু নিজের মতো সাজানো ঘুঁটিতে ভোট হচ্ছে।

*নওসাদ সিদ্দিকী ডায়মন্ড হারবার থেকে বারবার দাঁড়াব বলেও শেষ পর্যন্ত দাঁড়ালেন না। যার কারণ হিসেবে বলা হল দল চায়নি। আপনি দলের রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি। নৌশাদ এতদিন কি দলে আলোচনা না করেই এতদিন দাঁড়ানোর কথা বলে আসছিলেন?
তাপস: এটা ঠিক নওসাদ প্রথমে দলের সঙ্গে কথা না বলেই বলেছিলেন। পরে দল তাঁকে নিষেধ করে।

*কিন্তু নওসাদ তো শেষ পর্যন্ত দাঁড়ানোর কথা বলে যাচ্ছিলেন। আপনার কি মনে হয় দল নিষেধ করার পরেও নওসাদের একটা এগিয়ে যাওয়ার প্রবণতা ছিল?
তাপস: দেখুন তিনি কী বলেছিলেন তার সমস্ত রেকর্ড তো আমার কাছে নেই। কিন্তু এটুকু বলতে পারি আমার মতো নওসাদও কিন্তু দলের একজন অনুগত সৈনিক।

*আইএসএফের মুখপাত্র সৌমিত্র দস্তিদার তাঁর খোলা চিঠিতে লিখেছেন এই দলের রাজ্য কমিটি একটা পুতুল কমিটি। নওসাদ যা ভাবেন তাই হয়। আপনিও কি একমত?
তাপস: সৌমিত্র ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টায় ছিলেন। তিনি একটা সময় পর্যন্ত দলের মুখপাত্র ছিলেন। তিনি যেটা লিখেছেন সেটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। এর সঙ্গে আমি বা দল কেউই একমত নই। বরং এটাকে আমি বলব দলের মধ্যে সৌমিত্র একটা অনৈতিক বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করেছেন।

*আপনাদের মূল লড়াই তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে। জোট না হওয়ার জন্য কি বিরোধী ভোটটা ভাগ হয়ে গেল না?
তাপস: একটা কথা খুব ভালো করে শুনুন। ভোটার কারও কেনা নয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এই ভোট ভাগাভাগির ধারণা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ যাকে উপযুক্ত মনে করবেন তাঁকে ভোট দেবেন। আসলে ক্ষমতার অলিন্দে থাকার পর কেউ কেউ মনে করেন সব ভোটটা আমার। আমরা এই ভোট ভাগাভাগির তত্ত্বে বিশ্বাসী নই। রাম নবমীতে জয় শ্রী রাম স্লোগান বিজেপির লোকরা দিচ্ছেন আবার দেবও দিচ্ছেন এবং তৃণমূলের নেতারাও দিচ্ছেন। তাহলে বলুন তৃণমূল আর বিজেপি এক। এটা তো আপনারা বলছেন না!

*কিছু কিছু জায়গায় আইএসএফ শক্তিশালী। কিন্তু লোকসভা নির্বাচন তো সাতটা বিধানসভা নিয়ে। অনেক বুথ। প্রয়োজন অনেক এজেন্ট। সব বুথে কি এজেন্ট দিতে পারবেন?
তাপস: কেন্দ্রে তো বিজেপি সরকার। তাদের কি এই রাজ্যের প্রতিটি বুথে দেওয়ার মতো এজেন্ট আছে? ফরোয়ার্ড ব্লক বা কংগ্রেসের কি আছে? রাজ্যে শাসন ক্ষমতায় থাকলে এজেন্ট দেওয়া খুব সহজ। কিন্তু বাকি ক"টা দলের সব বুথে এজেন্ট দেওয়ার ক্ষমতা আছে? এই গ্যারান্টিটা দিচ্ছি বারাসত লোকসভা কেন্দ্রে সবচেয়ে বেশি বুথে আইএসএফ এজেন্ট দেবে এবং এটাও বলছি বিজেপি বা ফরোয়ার্ড ব্লকের থেকে বেশি এজেন্ট দেব।

*নির্বাচন মানেই সেখানে একটা টাকা খরচ। ব্যানার, ফেস্টুন বা মিটিং করতে গেলে নিদেনপক্ষে এক কাপ চা। টাকা জোগাড় করছেন কীভাবে?
তাপস: প্রথম কথা হল আমরা সামাজিক মাধ্যমে কিউ আর কোড দিয়েছি‌। যার মাধ্যমে লোকে সাহায্য করছে। তা সে এক টাকাই হোক বা ১০০ টাকাই হোক। আমি যেহেতু অশোকনগরের বাসিন্দা তাই সেখানকার পৌরসভা এলাকায় সমস্ত ব্যানার, ঝান্ডা এখানকার আদিবাসী ভাইরা এবং তাঁদের পরিবার নিজেদের পকেট থেকে বানিয়েছেন। সাধারণ মানুষ পাশে দাঁড়িয়েছেন। জেনে রাখুন কার থেকে কী পাচ্ছি তার সমস্ত হিসাব আমরা প্রকাশ করব। আরও একটা কথা। আমরা কিন্তু কোনও সভাতেই বিরিয়ানির প্যাকেট রাখব বা রাখছি না বা কাউকে গাড়িভাড়া দিচ্ছি বা দেব না। এসে দেখবেন সভায় আগত লোকেদের বয়স ১৮ থেকে ৪০-এর মধ্যে। এটার জন্যই বাকি দলগুলো আমাদের ভয় পাচ্ছে।

*এই নির্বাচনে আপনাদের দলে মহিলা প্রার্থী মাত্র একজন। কৃষ্ণনগর থেকে তিনি দাঁড়িয়েছেন। অন্যান্য দলে সংখ্যাটা অনেক বেশি। আইএসএফ দলে কি মহিলারা সেভাবে যোগ দিচ্ছেন না নাকি তাঁদেরকে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে না?
তাপস: বারাসতে যেদিন আইএসএফ-এর মহিলা সমাবেশ হবে সেদিন সম্ভব হলে এসে দেখে যাবেন। সমস্ত বক্তব্যই মহিলারা রাখবেন। নওসাদ সিদ্দিকীও সেদিন বক্তা থাকবেন না। পাশাপাশি এটাও দেখবেন এই মহিলারা কারা।

*আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী এই কেন্দ্রে তৃণমূলের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন মজুমদার। অবশ্যই অন্যরাও আছেন। লড়াইটা আপনার কীরকম লাগছে বা এককথায় বলতে গেলে প্রতিদ্বন্দী হিসেবে কতটা লড়াই আপনি ময়দানে দিতে পারবেন? কেন লোকে এই কেন্দ্রে আইএসএফকে ভোট দেবেন?
তাপস:সম্প্রতি স্কুলে নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্ট একটা রায় দিয়েছে বা আগে পরে অনেক কিছুই মানুষ দেখেছেন। যাতে প্রমাণ হয়েছে রাজ্যে চোর এবং দেশে ডাকাতরা রয়েছে। এই চোর এবং ডাকাতদের যদি মানুষ তাড়াতে চান তাহলে তারা আমাকেই ভোট দেবেন।




বিশেষ খবর

নানান খবর

Advertise with us

নানান খবর



রবিবার অনলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া