উপালি মুখোপাধ্যায় | ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৯ : ৫২

একদিকে, অনিতার মতো শহুরে শিক্ষিতার আকর্ষণ। অন্যদিকে, অনুরাধাকেও সরানো যাচ্ছে না। কারণ, সে মা-হারা একমাত্র ছেলের মায়ের জায়গা দখল করে নিয়েছে। কী করবে বিজয়? এদিকে, অনিতার দিদি প্রভার খালি কূটনামি! বোনকে ছোট দেওরের সঙ্গে বিয়ে দেবেই। তাই ছলেবলেকৌশলে বোনকে অন্য পুরুষের সঙ্গে সিনেমা দেখতে যেতে আটকেছে। পা মচকে যাওয়ার মিথ্যে অভিনয় করে। সুমন রায় পরিচালিত আকাশ ৮-এর ‘সাহিত্যের সেরা সময়’-এর নতুন ধারাবাহিক ‘অনুরাধা’র সেটে গিয়ে এমনই টানটান দৃশ্যের সাক্ষী আজকাল টেলিভিশন।

ফাল্গুনে বিকশিত...
ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়। ধারাবাহিকে পড়ন্ত জমিদার অমর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যু অনুরাধাকে আরও অসহায় করবে। কম সময়ের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। মঞ্চ, বড়-ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা সেদিন ঝকঝকে লাল পাঞ্জাবি, সাদা চোস্তে। মুখোমুখি হতেই বললেন, ‘‘আমরা বই পড়তাম। এই প্রজন্ম ই-বুক পড়ে। তাই ছোটপর্দায় দু’মলাটের গল্প। অভিনয় করতে গিয়ে আরও একবার বইটা পড়া হল। সেই কারণে রাজি হলাম।’’ এখন কি ছোট চরিত্রের প্রতিই আগ্রহী? যাতে মঞ্চাভিনয় ঠিক থাকে? জানালেন, উল্টোটা। ধারাবাহিকে ঠিক যতটুকু দরকার ততটুকুই থাকতে ভালবাসেন।

হাত বাড়ালেই বন্ধু 
ধারাবাহিক ‘মেঘে ঢাকা তারা’র পরে ‘অনুরাধা’। আদিত্য বক্সি-পৃথা চন্দ। আকাশ ৮-এর ‘বিজয়’-‘অনুরাধা’। দ্বিতীয় বার একসঙ্গে কাজ করতে পেরে দারুণ খুশি। প্রসঙ্গ তুলতেই উচ্ছ্বসিত নায়ক-নায়িকা। বললেন, ‘‘বন্ধুত্বের উদযাপন বলতে পারেন। টেকনিশিয়ান স্টুডিওয় আগের ধারাবাহিকের কাজ। এবার সিনহা-রায় স্টুডিওয়। বোঝাপড়া থাকলে সেই কাজ দারুণ হয়।’’ কিন্তু ‘বিজয়’ যে প্রচণ্ড দাম্ভিক, রাগী? আদিত্যর স্বীকারোক্তি, অবশ্যই তাই। তবে সেটা পর্দায়। বাস্তবে তিনি একেবারেই উল্টো। যথেষ্ট শান্ত, মিশুকে। একই ভাবে পর্দায় এবং বাস্তবে পৃথা যেন অনুরাধা। ধীর-শান্ত। কিন্তু স্পষ্ট কথায় কষ্ট নেই তাঁর। আগের ধারাবাহিকে গ্ল্যামারাস চরিত্র। এবার শুরু থেকেই মা-বাবা ... কথা ফুরনোর আগেই বিজয়-অনুরাধার এক সুর, ‘‘খুব ভাল লাগছে। সাহিত্য থেকে উঠে আসা চরিত্রে খাদ কম। ভীষণ জীবন্ত হয়। যার জন্য অভিনয় করে তৃপ্তি। এখানে প্রচুর স্তর আর পরিচালকের সহজ পরামর্শ— পর্দায় কিন্তু তার ছাপ পড়ছে। ফলে, দর্শকদের থেকেও প্রশংসা পাচ্ছি আমরা।’’



দেবী থেকে খলনায়িকা!
প্রচণ্ড জোরে আর্তনাদ! তারপরই ঝরঝরিয়ে মেকি কান্না। ‘ভবতারিণী’ কিংবা ‘ঘোমটা কালী’ যে এভাবেও পর্দার দাপুটে খলনায়ক হয়ে উঠবে, কে জানত? ধারাবাহিকের ‘প্রভা’ ওরফে তনুশ্রী ভট্টাচার্যকে সে কথা জানাতেই হেসে ফেলেছেন। বলেছেন, ‘‘বোধহয় দেবীর তেমনই ইচ্ছে। বারবার একই চরিত্রে অভিনয় করতে করতে আমিও যেন চরিত্রের ঘেরাটোপে আটকে যাচ্ছিলাম। অনেক দিনের ইচ্ছে, চুটিয়ে খলনায়িকা চরিত্রে অভিনয় করব। এতদিন নয়, বাবলি নয়তো মিষ্টি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি।’’ ‘প্রভা’ কি টিপিক্যাল খলনায়িকা? তনুশ্রীর দাবি, একেবারেই তা নয়। অভিজাত শিক্ষিত। সামনে মিছরি। পিছনে ছুরি। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বোনকেও ব্যবহার করতে বাধে না। সম্পত্তি হাত করবে বলেই বোনের সঙ্গে ছোট দেওরের বিয়ের চেষ্টা তার। বাস্তবেও অভিনেত্রী সংসারী। সেখানেও তো কূটবুদ্ধির প্রয়োজন... কথা কেড়ে নিয়ে হাঁ হাঁ করে উঠেছেন। বলেছেন, ‘‘মোটেই ওই রকম নই। সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকি। বাড়িতে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।’’ বোন শ্বেতা ভট্টাচার্য যথেষ্ট পরিচিত মুখ। অন্য চ্যানেলের জনপ্রিয় ধারাবাহিকের নায়িকা। দুই বোন এক চ্যানেলে এলে? হইহই করে উঠেছেন তিনি। জানিয়েছেন, তাঁদের খুবই মজা হবে। কিন্তু চ্যানেলের কাজ থমকে যাবে।

জিনা যখন অনিতা
জিনা তরফদার মানেই চুলবুলে মিষ্টি মেয়ে। এই ধারাবাহিকেও কি তেমনই? সব রকম মাধ্যমে কাজ করা জিনার দাবি, সেই সময়ের শহুরে-শিক্ষিতা। যার আকর্ষণে সাময়িক হয়তো বশে থাকবে বিজয়। কিন্তু উপন্যাস অনুযায়ী, পরে সেই সমীকরণ বদলে যাবে। চরিত্র হয়ে উঠতে জিনা পরিচালকের উপরেই নির্ভর করছেন। পাশাপাশি, পুরনো ছবি দেখছেন।

ছবি: বিপ্লব মৈত্র