Reporter: প্রীতি সাহা | লেখক: উপালি মুখোপাধ্যায় | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ০৯ জানুয়ারী ২০২৪ ১৫ : ০৫

কারও তিনি ভাই। কারও প্রিয় বন্ধু। প্রয়াত উস্তাদ রাশিদ খানকে এভাবেই মনে রেখেছেন ঊষা উথুপ, তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, হৈমন্তী শুক্লা। এদিন ভ্রাতৃপ্রতিম প্রয়াত শিল্পীকে হাসপাতালে শেষ দেখা দেখতে গিয়েছিলেন প্রবীণ শিল্পী উষা উথুপ। শোকস্তব্ধ শিল্পী বারেবারে বলেন, ‘‘পুরনো স্মৃতি খুব মনে পড়ছে। বড্ড তাড়াতাড়ি চলে গেল। দেশ ওর মতো একজন আন্তর্জাতিক মানের শিল্পীকে হারাল। ওর অভাব কোনও দিন পূরণ হবে না।’’ 

একই বক্তব্য তেজেন্দ্রনারায়ণেরও। তাঁর কথায়, ‘‘রাশিদ খানকে নিয়ে অল্প কথায় কিছু বলা খুব মুশকিল। আমরা একসঙ্গে অনেক অনুষ্ঠান করেছি। আমি, বিক্রম, রশিদ রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিতাম। আমার বাড়িতেও নিয়মিত আসত। সেই সব স্মৃতি ভিড় করে আসছে। আপাতত এর বেশি কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই।’’ 

‘‘রাশিদ খান আমার ভাই’’, কান্না জড়ানো গলায় বলেছেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। তিনি আজকাল ডট ইনের কাছে তুলে ধরেছেন ‘ঘরোয়া’ রাশিদ খানকে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতি বছর আমার থেকে ভাইফোঁটা নিত। কোনও বছর ভুল হত না। ঠিক সময়ে বাড়ি চলে আসত। সেই ভাই চলে গেল! দিদি হয়ে কী যে কষ্ট হচ্ছে কী বলব।’’ ভাইফোঁটার খাওয়াদাওয়াও নিশ্চয়ই করতেন? প্রশ্ন রাখতেই শিল্পীর দাবি, ‘‘বরাবর কম খেত। একটু করে চেখে দেখত সব কিছু। তারপর ওর বাড়িতে পাঠিয়ে দিতাম।’’ তাঁর মতে, প্রয়াত শিল্পী কোনও দিন বুঝতে দেননি, তিনি কত বড় মাপের শিল্পী। ভীষণ মিষ্টিভাষী। তাই ওঁকে পছন্দ করতেন সব বয়সের শ্রোতা। তাঁর গানও তাই সহজে পৌঁছে যেত সব বয়সের শ্রোতার কাছে। সবার গান শুনতেন। কারও গায়কি ভাল লাগলে তাঁকে ডেকে প্রশংসা করতেন। যখন যেখানে দেখা হয়েছে আগে সবাইকে বলতেন, হৈমন্তী শুক্লা তাঁর দিদি। দিদির যেন কোনও অসুবিধে বা অসম্মান না হয়। হৈমন্তী দেবীর গাওয়া ‘প্রথমে সকাল পরে সন্ধ্যা’ গান প্রয়াত শিল্পীর খুব প্রিয় ছিল। গানটি রাগাশ্রয়ী। সম্ভবত সেই জন্যই বারেবারে শুনতে চাইতেন। তবে প্রবীণ গায়িকা এও জানিয়েছেন, নিজেকে শুধুই রাগাশ্রয়ী সঙ্গীত দুনিয়ায় আটকে রাখেননি রাশিদ। সব ধরনের গান গাইতে ভালবাসতেন। তাই তাঁর গানের সমঝদার সব বয়সের শ্রোতা।

রাশিদজির কোন গান হৈমন্তী দেবীর প্রিয়? জবাবে গায়িকার যুক্তি, ‘‘সব গান। ও সা স্বরটি লাগালেই কান-মন ভরে উঠত। সঠিক সুর গাইত একবারে। নিখুঁত সা স্বর লাগানোর সেই মানুষটাই হারিয়ে গেল।’’