
বুধবার ২৮ মে ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি: গ্রামের মানুষকে বজ্রাঘাত থেকে রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছেন। গ্রাম জুড়ে একের পর এক তালগাছ বসিয়ে চলেছেন পান্ডুয়ার ভূগোলের শিক্ষক। তালগাছ বসানোর নেশা পেয়ে বসেছে পান্ডুয়ার শিক্ষক ভাস্কর মণ্ডলকে। ইতিমধ্যেই তাঁর ৭৫ হাজার তালগাছ লাগানো হয়ে গেছে। এরপর তিনি বাঁকুড়ার জয়পুর জঙ্গলে তালগাছ বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন।
শুধু তালগাছ নয়। সব রকমের গাছকেই তিনি পরিবেশের সব থেকে বড় বন্ধু মনে করেন। তাই ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে বন্ধুদের রক্ষাও করেন। কাজের মাঝে যখনই সময় পান তখনই ফাঁকা জায়গায় স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে বৃক্ষরোপণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। পান্ডুয়ার রানাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভাস্কর মণ্ডল। তিনি ভূগোলের শিক্ষক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় তাঁর আদিবাড়ি। প্রায় ৩২ বছর আগে হুগলিতে এসে পান্ডুয়ার উত্তরায়ন এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
তিনি মনে করেন গাছ হল প্রকৃত 'বন্ধু'। তাই বন্ধুকে ত্যাগ করা যাবে না। যত বন্ধুত্ব বাড়বে, ততই সকলে ভাল থাকবেন। তাই তার কাছে গাছ লাগানো এক প্রকারের নেশা। প্রায় ২২ বছর ধরে লাগাতার পান্ডুয়ার বিভিন্ন এলাকায় গাছ লাগিয়ে আসছেন ভাস্কর। তাঁর লাগানো গাছের মধ্যে অধিকাংশই তালগাছ। প্রতিবছর জুন থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে তিনি তাল সহ বট, অশ্বত্থ, খেজুর, বেল, তেঁতুল, আম বিভিন্ন গাছ পোঁতেন। পান্ডুয়া ব্লকের অধিকাংশ এলাকা কৃষি প্রধান। পান্ডুয়ার আত্তি মোড় থেকে রানাগড় যাওয়ার পথে সবুজে ঘেরা প্রচুর গাছ লক্ষ করা যায়। তার মধ্যে অধিকাংশই রয়েছে ছোট-বড় তালগাছ। স্থানীয়দের দাবি, সেই সমস্ত তালগাছ বসিয়েছেন ভাস্কর। তীব্র দাবদহে মানুষ যখন একটু বিশ্রামের আশ্রয় খোঁজেন, তখনই ছায়া শীতল পরিবেশে তালগাছের ছায়ায় আশ্রয় নেন অনেক পথচলতি মানুষ।
ওই রাস্তার দু'পাশেই রয়েছে প্রচুর চাষযোগ্য জমি। কৃষকরাও কৃষি কাজের ফাঁকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেন। প্রায় শতাধিক তালগাছ রয়েছে রাস্তার দু'পাশে। তালগাছের পাশাপাশি তিনি বিহার থেকে মাখনা গাছ এনে জলাশয়ে বসিয়েছিলেন। সেই গাছও বর্তমানে বেশ বড় হয়েছে। মাখনা একটি লাভজনক চাষ। চাষীদের তিনি অনুরোধ করেছেন এই চাষ করার।
প্রধান শিক্ষককে সাহায্য করে তার স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। প্রায় ২০০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে "নেচারস লাভার ক্লাব" নামে একটি সংগঠন করেছেন ভাস্কর। বিদ্যালয়ের ভিতরের অংশে চারপাশে গাছ-গাছালিতে ঘিরে ফেলেছেন। গ্রামে বিভিন্ন জায়গা থেকে তাল আঁটি সংগ্রহ করার জন্য পিকআপ সেন্টার তৈরি করেছেন প্রধান শিক্ষক। কেউ ফোন করে জানালেই তাঁর বাড়িতে হাজির হয়ে যান শিক্ষক সহ পড়ুয়ারা। সেখান থেকে তাঁরা তাল আঁটি সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় বসান। ইতিমধ্যেই প্রায় ৭৫ হাজার তালগাছ বসিয়েছেন বলে দাবি করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
অনেক গাছ রক্ষা করা যায় না। তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। পরিবেশ রক্ষায় লাগিয়ে চলেছেন গাছ। শিক্ষকের পরিবারও তাকে এই কাজে সাহায্য করে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ছোটবেলায় রানাগড় স্কুলে পড়ার সময় ভাস্কর তালগাছ বসিয়েছিলেন। তাঁরা স্কুল জীবন থেকেই এই তালগাছ দেখে আসছেন। এখন সেইসব তালগাছ অনেক বড় হয়ে গেছে। স্যার শুধু পরিবেশ রক্ষাই করেন না, তিনি সমাজসেবীও বটে। কেউ অসুস্থ হলে তাঁকেও যেমন সাহায্য করেন তিনি, ঠিক তেমনই নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে শুনতে পেলেই সেখানে গিয়ে হাজির হয়ে যান ভাস্কর।
তালগাছ লাগানো প্রসঙ্গে ভাস্কর বলেন, প্রায় ২২ বছর ধরে তিনি তালগাছ বসাচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত পান্ডুয়ার বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৭৫ হাজার গাছ বসিয়েছেন। তার মধ্যে অনেক গাছ বড় হয়ে পূর্ণতা পেয়েছে। আর তা থেকেই মানুষ নানাভাবে উপকৃত হচ্ছে। গাছ পরিবেশকে অক্সিজেন যেমন দেয়, তেমনই ছায়া ও ফলও দেয়। তাই গাছ সকলের বন্ধু। এই এলাকার অধিকাংশটাই কৃষি প্রধান এলাকা। সেখানকার মূল সমস্যা হল মাঠে কাজ করার সময় অনেকের বজ্রপাতে মৃত্যু ঘটে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে তালগাছ যদি মাঠের মাঝখানে বা আশেপাশে থাকে তাহলে বাজ পড়া থেকে মানুষ রক্ষা পায়। জীবনহানি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। যাতে মৃত্যু না ঘটে, তাই এই তালগাছ লাগানোর মূল উদ্দেশ্য।
ছবি: পার্থ রাহা।
আবারও হিঙ্গলগঞ্জের আকাশে দেখা গেল ড্রোন, আতঙ্কে এলাকাবাসী
বীরভূমে মেগা মিছিল তৃণমূলের, নয়নের মণি সেই ‘কেষ্ট’
কুম্ভে নিখোঁজ, হ্যাম রেডিওর হাত ধরে বাড়ি ফিরলেন বৃদ্ধ
পান্ডুয়ায় চাঞ্চল্য, এটিএম লুটের চেষ্টা! আটক সুইফট গাড়ি-গ্যাস কার্টার
যাত্রীদের জন্য বিশেষ পরিষেবা, এসপ্ল্যানেডের পর দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনেও বসল মাসাজ চেয়ার
ব্যবহার করা হল বিশেষ তরঙ্গ, সুন্দরবনের উপকূল রক্ষী বাহিনীর দপ্তরের খুব কাছ থেকেই যোগাযোগ করা হল ১৪টি দেশের সঙ্গে
পরনে লুঙ্গি গায়ে গামছা, মুখে মাস্ক, রাস্তায় নেমে ময়লা পরিষ্কার করছেন মন্ত্রী, কিন্তু কেন?
বাজ পড়ে আগুন, তুমুল চাঞ্চল্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে
পেটের মধ্যে ছোট ছোট বলের আকারে জমা ছিল তরল, ফাটলেই হত সর্বনাশ, বিরল রোগে জটিল অস্ত্রোপচার মেডিক্যাল কলেজে
গঙ্গায় স্নান করতে নেমেই যত বিপত্তি, তলিয়ে গেল কিশোর
কাজ বন্ধ রেখে একমনে চলে মহাদেবের উপাসনা, প্রাচীন রীতির সাক্ষী ‘চাকা পূজা’ কেন হয় জানেন?
‘তোমায় ছাড়া বাঁচব না’, একই শাড়িতে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা পরকিয়ায় ডগমগ যুগলের
এগিয়ে আসছে গভীর নিম্নচাপ, ২৮ মে থেকে ভাসবে বাংলা, ইতিমধ্যেই শুরু বৃষ্টি
শান্তি বজায় রাখবে ‘শান্তি কমিটি’, সাম্প্রদায়িক অশান্তি এড়াতে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার বিরাট পদক্ষেপ
স্নান করতে নেমে বিপত্তি, হুগলিতে একদিনেই দুটি পৃথক ঘটনায় মৃত ৪