নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭ : ০৮

সদ্য দামিনী বেণি বসু একটি ছবি ভাগ করে নিয়েছেন। এক ফ্রেমে দেব, তিনি আর সৃজিত মুখোপাধ্যায়। জুটির আগামী পুজোর ছবি ‘টেক্কা’য় দামিনী নতুন রূপে ধরা দিতে চলেছেন? এই কৌতূহল নিয়েই আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। তখনই চমকে যাওয়ার মতো খবর, তিনি অভিনয় করবেন না। দেবকে প্রশিক্ষণ দেবেন। এবং গত এক বছর ধরে দেব তাঁর কাছে ওয়ার্কশপ করছেন! ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য’ দিয়ে বাংলার সুপারস্টারের সঙ্গে অভিনেতা-প্রশিক্ষকের পথ চলা শুরু। ‘বাঘা যতীন’, ‘প্রধান’-এর পর তাঁদের চতুর্থ ছবি ‘টেক্কা’। "ছাত্র" দেব কেমন? জবাবে বেণির দাবি, ‘‘ভীষণ বুদ্ধিদীপ্ত, ঝকঝকে, চৌকস। প্রচণ্ড পরিশ্রমী। যেটা বলবে সেটাই করবে। খুব অধ্যবসায়।’’ ‘ছাত্র’ দেবের উপরে ‘সুপারস্টার’ দেব কখনও ছায়া ফেলে? প্রশ্ন রাখতেই বেণি তাঁর মতো করে ধারালো, ‘‘দেব সুপারস্টার নিজের জোরে। সেখানে আমার কোনও হাত নেই। আমি গত এক বছর ধরে দেবের অভিনেতা সত্তার সঙ্গী। সেই সত্তা ভীষণ মাটির কাছাকাছি, নম্র, ভদ্র। একটু আধটু হয়তো বকুনি দিতে হয়। কিন্তু সেটা খুবই সামান্য।’’

টলিউড বলছে, কঠিন সাধনা আর জেদ দেবকে অভিনেতা থেকে প্রযোজক-সুপারস্টার আর এখন প্রযোজক-অভিনেতা-সুপারস্টার বানিয়েছে। বেণিও মানেন সেকথা। জানিয়েছেন, এই গুণ না থাকলে নিজেকে এতদূর টেনে আনা সম্ভব নয়। একের পর এক ধাপ পেরনোও যায় না। নিজেকে ঘষেমেজে এতটাই তৈরি করেছেন যে, দেবের ছবি বাণিজ্য দেয়। অভিনেতার স্বীকৃতি আদায় করে নেয়। তা হলে ‘সুপারস্টার’ দেব আর ‘অভিনেতা’ দেবের যদি তুল্যমূল্য বিচার হয়, কে এগিয়ে থাকবে? বেণির সপাট জবাব, ‘‘আপনি শিক্ষক দামিনী বেণি বসুর সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি ছাত্রের একাধিক সত্তার মধ্যে কখনও তুলনায় যাবে না। তুল্যমূল্য বিচারও করবে না।’’

টলিউড বলে, সার্বিক উন্নতির মধ্যে ছোট্ট ফাঁক, দেবের বাংলা উচ্চারণ। যা নিয়ে তিনি নিজেও সজাগ।

কথা কেড়ে নিয়ে বেণির জবাব, ‘‘তা হলেই ভাবুন কতটা সজাগ! যে ছাত্র নিজেই নিজের সম্বন্ধে এত সজাগ সে তো অর্ধ্বেক পথ নিজেই এগিয়ে গিয়েছে।’’ পাশাপাশি যুক্তি, পর্দার ‘প্রধান’ বড় হয়েছেন মুম্বইয়ে। মহারাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলে। যেখানে বাংলা বলার সুযোগ ছিল না। সেখান থেকে বাংলায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। ওঁর উচ্চারণে অবাঙালি টান থাকাটাই স্বাভাবিক। তার পরেও প্রযোজক-অভিনেতা কিন্তু সারাক্ষণ বিষয়টি নিয়ে চর্চা করে চলেছেন। সমালোচনার আগে এই দিকগুলোও কিন্তু দেখা দরকার। 

টলিউড যে আরও একটি কথা বলছে! পর্দার "দীপক প্রধান" নাকি আগের তুলনায় বেশি সপ্রতিভ, টানটান? ‘সাবিত্রী মণ্ডল’ নেপথ্য কারণ?

সাফ জবাব বেণির, ‘‘আমি দেখেছি, সুপারস্টার বা নামকরা স্টারেরা যেটা ডেলিভার করেন সেটা নিয়ে সাংবাদিক বা সমালোচকেরা কাটাছেঁড়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন! এটা কেন হবে? দেব তাঁর প্রত্যেক ছবিতে টানটান বলেই তিনি সুপারস্টার। ওর সঙ্গে আছি মানেই ওর ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করব না। দেব নিজেকে আরও ঝকঝকে করতেই আমার সঙ্গে মহড়া দেয়। ক্যামেরার সামনে কিন্তু দেবের হয়ে আমি শট দিই না। পুরোটাই ওর কৃতিত্ব।’’ দেব তাঁকে ভরসা করেন। তাই তাঁর সঙ্গে মহড়া দেন। কিন্তু ছাত্রের সাফল্য উদযাপনে সেই ‘গুরু’ ততটাও দেখা দেন না। সঙ্গে সঙ্গে তীব্র প্রতিবাদ, ‘‘দেব বলে নয়, আমি কারও পার্টিতেই খুব একটা যাই না। কারণ, সময় পাই না। খুব একটা "পার্টি গোয়ার" নই। এই তো, দেবের জন্মদিনের পার্টিতে কিছুক্ষণ ছিলাম! তার মানে আমায় ডাকা হয় না, এটা ঠিক নয়। সবাই আমন্ত্রণ জানান। আমি যেতে পারি না। কারণ, হাওড়া-বনগাঁর মতো মুম্বই-কলকাতা যাতায়াত করি। ফলে, ক্লান্তও থাকি। তাই অবসর পেলেই হয় ঘুম নয় গল্পের বই পড়তে বেশি পছন্দ করি।’’