নিজস্ব সংবাদদাতা | ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১ : ১৪Angana Ghosh

নিজস্ব সংবাদদাতা: ২২ ডিসেম্বর, ভোর ৬টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন সাউন্ড ডিজাইনার অনুপ মুখোপাধ্যায়। সত্যজিৎ রায়, মৃনাল সেন, গৌতম ঘোষ, প্রভাত রায়, হরনাথ চক্রবর্তী - একাধিক পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। পুণে থেকে পড়াশোনা শেষ করে মুম্বইয়ে স্ট্রাগল। ওখান থেকে কলকাতায় এসে এনএফডিসি-তে কাজ। তাঁর হাত ধরেই টলিপাড়ায় ফিল্ম ডাবিংয়ে এল বিবর্তন। সেই সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড। আজকাল ডট ইন এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল ও তাঁর সহকারী সাউন্ড আর্টিস্ট সৌগত বন্দোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করেছেন শিল্পীর প্রয়াণে।
হরনাথ চক্রবর্তীর কথায়, ""আমার যত হিট ছবি অনুপ দা"র সঙ্গে। প্রতিবাদ, শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ - সবই। আগে লুপ ডাবিং হতো, পরে রিল ডাবিং এল। অনুপ দা"র থেকে কাজ শিখেছি। কলকাতায় প্রথম ডিজিটাল মিক্সিং স্টুডিও তৈরি করেছিলেন। সত্যজিৎ রায়, মৃনাল সেন একটা সময় অনুপ ছাড়া কাজই করতেন না। ওর চলে যাওয়াটা খুবই মর্মান্তিক। একটা মানুষ রাত্রে ঘুমলো আর সকালে বাড়ির লোক ডেকে তাঁর সাড়া পেল না। ভাবতেই পারছি না, কয়েকদিন আগে পর্যন্ত আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি নন্দনে।""


অনুপ মুখোপাধ্যায়ের সহকারী শিল্পী সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে সকালেই তিনি বেরিয়ে পড়েছেন শিল্পীর ইছাপুরের বাড়ির দিকে। সৌগতর কথায়, "ঠাণ্ডা লেগেছিল। ফুসফুসের সংক্রমণ হয়েছিল। ডাক্তার দেখিয়েছিলেন। বলেছিলেন ফিরে এসে সন্দীপ রায়ের "নয়ন রহস্য"-এর কাজ শেষ করবেন। বুঝতে পারছি না কীভাবে কী হবে।"
শিল্পীর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন সন্দীপ রায়। আজকাল ডট ইন এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ""সকালেই খবরটা পেলাম। খুবই খারাপ লাগছে। অনেক দিনের পরিচয়। বাবার সঙ্গে সেই "ঘরে বাইরে" থেকে কাজ করছেন অনুপ। বড় রকমের ক্ষতি হল। নয়ন রহস্যর কাজ আশাকরি ওর সহকারী এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। পোস্ট প্রোডাকশন চলছে। সব ঠিক থাকলে জানুয়ারিতে কাজ শেষ করে ফেলতে পারবো।""
সকাল সকালই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল। তিনি জানালেন, পর্দার নেপথ্যের মানুষদের অনেকেই চেনেন না। তাঁদের নিয়ে অনেক সময়ই কথা হয় না। সেই জন্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে তিনি অনুপ মুখোপাধ্যায়ের কথা জনসমক্ষে এনেছেন। চৈতির কথায়, ""তখন স্কুলে পড়ি। আমার বাবা শ্যামল ঘোষালের সূত্রেই অনুপদার সঙ্গে পরিচয়। আমার প্রথম ছবিতেও অনুপদা ডাবিং করেছেন। বিয়ের পরে অনুপদার সঙ্গে আমার কাজ ও ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। রক্তকরবী দেখে উনি মুগ্ধ হয়েছিলেন। রিহার্সালের সময় রেকর্ডিং রুম থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের সঙ্গে মুড়ি চানাচুর খেতেন। এই কয়েকদিন আগেও আমার কথা হয়েছিল অনুপদার সঙ্গে। সাউন্ড নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছিলাম। অনুপদা বলেছিলেন, আমি নিজে যাব। ভাবতেই পারি না, এত বড় একজন কিংবদন্তি সাউন্ড ডিজাইনার, এতগুলো জাতীয় পুরস্কার যাঁর, তিনি এই কথা বলছেন। ওর মতো মানুষের চলে যাওয়া ইন্ডাস্ট্রির বড় ক্ষতি।""