রবিবার ২০ এপ্রিল ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর
Reporter: নিজস্ব সংবাদদাতা | লেখক: শমিত ঘোষ | Editor: Rahul Majumder ২০ মার্চ ২০২৫ ১৬ : ১৬Rahul Majumder
বিখ্যাত কোনও নাটক থেকে ছবি তৈরি হওয়ার বহু উদাহরণ আছে ৷ সারা পৃথিবী জুড়ে এমন বহু অসাধারণ সব ছবি নির্মিত হয়েছে, যা বিখ্যাত কোনও নাটকের অ্যাডপটেশন। কিন্তু কোনও বিখ্যাত ছবির নাট্য রূপান্তর খুব একটা দেখা যায়না। এই কাজটাই সুনিপুণভাবে করে চলেছে নৈহাটি ব্রাত্যজন। দলটির জন্মলগ্ন থেকে এখন অবধি যে ক'টি পূর্ণাঙ্গ প্রযোজনা তারা করেছে, তার প্রত্যেকটিই কোনও না কোনও বিখ্যাত চলচ্চিত্রের নাট্য রূপান্তর। যার সাম্প্রতিক এবং সম্ভবত সবচেয়ে কঠিনতম পদক্ষেপ ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ১৯৭১ সালের বিখ্যাত হিন্দি ছবি 'আনন্দ'কে বাংলা নাটকের মঞ্চে আনা। এবং এই কঠিন কাজটিতে ফের সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছে নৈহাটি ব্রাত্যজন।
'আনন্দ' ছবিটিকে নাট্য মঞ্চে আনা নি:সন্দেহে কঠিন কাজ। হাসপাতাল, ডাক্তার ভাস্করের বাড়ি, সমুদ্রের ধার দিয়ে গান গাইতে গাইতে রাজেশ খান্নার হেঁটে যাওয়া এসব দৃশ্যের মন্তাজ গেঁথে আছে ভারতীয় দর্শকের মননে। এরকম একটি সুপারহিট এবং জনপ্রিয় ছবিকে নাটকের মঞ্চে আনার ক্ষেত্রে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হল, আসল ছবিটির রেশ তীব্রভাবে দর্শকের মনে রয়ে যায়। অমিতাভ বচ্চন এবং রাজেশ খান্নার দুরন্ত অভিনয়ের অনুরণন ভারতীয় সিনেমার দর্শকদের মনে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই, সেই ছবিটিই যখন নাটক হিসেবে দর্শকের সামনে আসছে, তখন মনের মধ্যে নিজের অজান্তেই একটা তুলনা চলতে থাকে। সিনেমায় এই দৃশ্যটা এমন ছিল, এখানে এইরকম হল...
এমন একটা হিসেব না চাইতেও অবচেতনে চলতে থাকে। আর এখানেই নৈহাটি ব্রাত্যজনের 'আনন্দ` এর সার্থকতা। হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের হিন্দি ছবিটি থেকে নাট্য রূপান্তর করেছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত। মূল ছবির ভাবনাটাকে অনুসরণ করলেও, অন্ধ অনুকরণের দিকে হাঁটেননি নাট্যকার পদ্মনাভ। ঠিক একই ভাবে মূল ছবিটিতে অমিতাভ বচ্চন এবং রাজেশ খান্নার মতো দুই মহীরুহ অভিনেতা যে অভিনয়টা করেছিলেন, সেই অভিনয়কেও কোনওরকম অনুকরণ করেননি এই নাট্যের দুই প্রধান অভিনেতা। আনন্দের চরিত্রে ভাস্কর মুখোপাধ্যায় এবং ডাক্তার ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রে পার্থ ভৌমিক নিজ স্বকীয়তার মাধ্যমে চরিত্র দু'টিকে নির্মান করেছেন। গোটা নাটক জুড়ে 'আনন্দে'র চরিত্রে ভাস্কর মঞ্চ জুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। কখনও হাসিয়েছেন। কখনও অজান্তেই দর্শকের চোখের কোণ ভিজে গিয়েছে। 'ইনটেন্স' অভিনয়ের এক উজ্জ্বল সাক্ষর রেখেছেন ভাস্কর এই নাট্যে। সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেছেন ডাক্তার ভাস্করের চরিত্রে পার্থ ভৌমিক।
নাটকের শুরুর দিকে ডাক্তার ভাস্কর নিজের জীবন নিয়ে বিরক্ত, ব্যক্তিজীবনে রূঢ়। সেই, ডাক্তারই 'আনন্দে'র সাহচর্যে প্রেমিক হয়ে উঠছেন। ভালবাসতে শিখছেন। আনন্দকে বাঁচানোর জন্য অসম লড়াই লড়ছেন। এবং শেষমেশ আবেগতাড়িত হয়ে ভেঙে পড়ছেন। এই পরিবর্তনটা অভিনেতা হিসেবে চমৎকার ফুটিয়ে তুলেছেন সাংসদ-অভিনেতা পার্থ। পার্থ জানতেন, অমিতাভ বচ্চন নামক এক জীবন্ত কিংবদন্তির চরিত্রে তিনি অভিনয় করছেন। স্বাভাবিকভাবেই, একটা তুলনা চলে আসতেই পারে। কিন্তু, প্রথম দৃশ্য থেকেই তিনি বচ্চন সুলভ মহানায়কীয় ম্যানারিজমের থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। সম্পূর্ণ নিজের মতো গড়ে তুলেছেন ডাক্তার ভাস্কর চরিত্রটিকে। এর ফলে দর্শক হিসেবে একটা সুবিধা হয়েছে। নাটকটি দেখতে বসার প্রথম ৫ মিনিটের মধ্যেই মাথার ভিতর থেকে এই ভাবনাটা উধাও হয়ে যায়, যে কোনও এক বিখ্যাত চলচ্চিত্রের অ্যাডপটেশন দেখছি! বরং সম্পূর্ণ নতুন একটি মৌলিক নাটক হিসেবেই গোটা নাট্যটা দেখা যায়। গোটা নাট্যের আলো, মঞ্চ এবং দৃশ্য নির্মাণ করেছেন দেবাশীষ। নি:সন্দেহে বলা যায়, এই মুহুর্তে বাংলা থিয়েটারের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দৃশ্য নির্মানকারীর নাম দেবাশীষ। বিশেষ করে, হাসপাতালের বেডে শুয়ে আনন্দে'র কাতর যন্ত্রনার দৃশ্য এবং তাঁর সঙ্গে আবহ এবং আলোর ব্যবহার দেখতে দেখতে একটা অদ্ভুত অস্বস্তি হয়! কষ্ট হয়। কোথাও গিয়ে মঞ্চের আনন্দে'র যন্ত্রণার শরিক হয়ে ওঠেন দর্শক।
লিম্ফোসারকোমা অফ ইনটেসটাইন' নামের বিরল ক্যান্সার বাসা বাঁধা শরীরেও আনন্দ ভালবাসতে জানতে। ভালবাসার আখ্যান ছড়িয়ে দিতে পারে। সেই ভালবাসার গন্ধ ছড়িয়ে যায় গোটা হাসপাতাল জুড়ে। প্রচণ্ড কষ্টে দুমরে মুচড়ে যাওয়ার পরেও আনন্দ তাঁর বাবুমশাইয়ের সাথে মস্করা করে! আনন্দ বাঁচতে চায়। তাঁর মধ্যে তীব্র জিজীবিষা আছে। আসলে জিজীবিষা তো আমাদের সকলের মধ্যেই আছে। আমরা সবাই আসলে বাঁচতে চাইছি।কিন্তু, তারপরেও ভয় পেয়ে গুটিয়ে থাকছি। হাসতে ভুলে যাচ্ছি। এমন বহু দৃশ্য দর্শকের হৃদয়ে থেকে যাবে। এজন্য তরুণ নির্দেশক অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়তি ধন্যবাদ প্রাপ্য।
এবং অবশ্যই আবহ। এই নাট্যের আবহ ভাবনাও ভেবেছেন নাটকের প্রধান অভিনেতা ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। সলিল চৌধুরী, কবীর সুমন থেকে রবীন্দ্রনাথ হয়ে শঙ্কর - জয় কিষান। বাংলা ও হিন্দি একাধিক জনপ্রিয় গানকে নাটকের প্রয়োজনে ব্যবহার করেছেন ভাস্কর। একেকটি সিচ্যুয়েশনে এরকম জনপ্রিয় গানের ব্যবহার নাটকটিকে আরো আকর্ষনীয় যেমন করেছে, ঠিক তেমনই দেবব্রত বিশ্বাসের কন্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যবহার দর্শকমনকে একটা অদ্ভুত কষ্টে ডুবিয়ে দিয়েছে । হয়তো, এভাবেই সঙ্গীত আমাদের স্নায়ুতন্ত্র কে নিয়ন্ত্রণ করে। আর এখানেই সঠিক আবহের ম্যাজিক!
বাকি অভিনেতাদের মধ্যে পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবযানী সিংহ রায় এবং অনুরণ সেনগুপ্তের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন। নাটকের দলের নির্দেশকের ভূমিকায় অনুরণ যে অভিনয়টি করলেন, তা দীর্ঘদিন মনে থাকবে। আর অবশ্যই হাসপাতালের মেট্রোনের ভূমিকায় কস্তুরী চক্রবর্তী। কখনও কড়া অনুশাসন, কখনও মাতৃসুলভ মমতায় চরিত্রটিকে নির্মাণ করেছেন তিনি। খুব স্বল্প সময় মঞ্চে থাকলেও নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন কস্তুরী।
এই ধরনের নাটকে যেখানে প্রায় প্রথম দৃশ্য থেকেই দর্শক জানেন যে নাটকের প্রধান প্রোটাগনিস্ট ক্যান্সার আক্রান্ত এবং তাঁর মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী সেখানে মাত্রাতিরিক্ত মেলোড্রামা'র একটা আশঙ্কা থেকেই যায় ৷ পদ্মনাভ দাশগুপ্ত'র মেদহীন কলম, দেবাশীষের দৃশ্য নির্মান এবং অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় সেই আশঙ্কাকে মিথ্যে প্রমাণ করেছে ৷ নাটকটিকে কোনোভাবেই 'ওভার মেলোড্রামাটিক' মনে হয়নি। বরং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করাই যে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত যা নাটকের প্রধান চরিত্র আনন্দ বারবার বলে, সেই কথাকেই দর্শকের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে, এমন একটি বিয়োগান্তক নাট্য দেখে একরাশ মন খারাপ নিয়ে নয়, বরং জীবনে বেঁচে থাকার উদ্দীপনা নিয়েই প্রেক্ষাগৃহ ছাড়বেন দর্শক। যেখানে আনন্দ বারবার বুঝিয়ে দেবে, মৃত্যু আসবে জেনে গুটিয়ে থাকা নয়, বরং আনন্দে'র সাথে বাঁচাটাই আসল! জীবনের আসল মন্ত্র- “জিন্দেজি লম্বি নেহি, বড়ি হনি চাহিয়ে বাবুমশাই...”
নানান খবর
নানান খবর

'রায়ান'-এর জন্য মৃত্যুমুখে 'পারুল'! টিআরপি-র প্রথম স্থান ফিরে পেতে কোন চমক আনছে 'পরিণীতা'?

শ্বাসকষ্টে গিয়েছিলেন হাসপাতালে, বাড়ি ফিরলেন ‘ভালবাসায় ডুবে’ — এখন কেমন আছেন সৃজিত?

সিরিয়ালের ভবিষ্যৎ এখন টিআরপি-র হিসেবনিকেশের দখলে, তার রেশ কতটা পড়ছে চিত্রনাট্যকারদের উপরে?

‘ভয় পাস না মা, আমি আছি’, ঝুপড়ি থেকে কন্যাশিশু উদ্ধার করলেন দিশা পটানির দিদি!

Ramayana 2: সীতা বন্দি, নতুন রূপে রাম - রামায়ণের দ্বিতীয় পর্বে বদলে যাচ্ছে গল্পের ছন্দ? কবে থেকে শুরু শুটিং?

দ্বিতীয় বিয়ের দেড় বছরের মধ্যেই বাবা হলেন সৌম্য চক্রবর্তী, পুত্র না কন্যা সন্তান এল গায়কের ঘরে?

আটকে গেল সলমন অভিনীত প্রথম বায়োপিক! বিয়ে না করেই ৪৯ বছরে অন্তঃসত্ত্বা আমিশা?

বেনারসে ঘনাল বিভীষিকা! 'বাপি-প্রমথ'কে নিয়ে কোন রহস্যভেদে 'একেন বাবু'? টিজারেই উঠল কৌতূহলের ঢেউ

ফিরছে অপরাজিতা-প্রিয়াঙ্কার জুটি, মা-মেয়ের কোন অজানা গল্পে ডুব দেবেন দুই অভিনেত্রী?

শেষ হল 'দেবী চৌধুরানী'র পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ, কবে আসছে বড়পর্দায়? কী জানালেন শুভ্রজিৎ মিত্র?

শাহরুখ-সুহানার রাজপাটে বাজিমাৎ করতে আসছেন আরশাদ! ‘কিং’-এর গোপন অস্ত্রটা কি আসলে তিনি-ই?

রাখি গুলজারের পোশাক ছিঁড়তে গিয়েছিলেন রঞ্জিত! জানতে পেরেই কোন কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল তাঁর পরিবার?

Exclusive: ৬০ পেরিয়ে সাতপাকে দিলীপ! ‘দাম্পত্য কীভাবে সামলাবেন ভাবলেই মজা লাগছে’ শুভেচ্ছা জানালেন দীপঙ্কর-দোলন

'কেশরী ২'-তে অক্ষয়ের অভিনয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ টুইঙ্কেল, গর্বে উচ্ছ্বসিত হয়ে কী বললেন 'খিলাড়ি' পত্নী?

‘তারকা’ হলে কী হবে, পারিশ্রমিক না কমালে কাজ পাবেন না! কোন তারকাদের সতর্কবার্তা সুজিতের?