সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর
UB | ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১৩ : ১৪Uddalak Bhattacharya
উদ্দালক ভট্টাচার্য
আমরা আসলে খুব সাধারণ। আমরা আসলে খুবই নগন্য। আমরা, আমাদের চারপাশ সম্পর্কে আমাদের খুব সিরিয়াস হওয়ার প্রয়োজন নেই, বরং সিরিয়াস হতে হবে যুদ্ধ নিয়ে, সিরিয়াস হতে হবে ধর্মের নামে মারামারি নিয়ে, সিরিয়াস হতে হবে আঁতের কথাটা খোঁজার তাগিদে, সম্পর্কের ভিতরের কঙ্কালটাকে খোঁজার তাগিদে। সুদীপ্ত লাহা পরিচালিত ছবি 'কারণ গ্রিস আমাদের দেশ না বা ব্লু, ব্ল্যাক অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট হোয়াইট' ছবিটি আসলে এই সমস্ত গোড়া ধাক্কা মারা প্রশ্ন তুলে যায়। প্রশ্ন তুলে যায় বাণিজ্য ও শিল্পের তীব্র লড়াই নিয়ে। প্রশ্ন তোলে ছবির ভিস্যুয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ বা দৃশ্যকাব্যের ভাষা নিয়ে। প্রশ্ন তোলে আবহের ব্যবহার নিয়ে। আসলে অ্যান্টি কালার থিয়োরি নিয়ে কথা বলতে-বলতে সুদীপ্ত আসলে পৌঁছে যান এক নতুন মার্গে, যেখানে কবিতা হয়ে যায় যে কোনও শিল্প।
শেষ দশকে এমন সুলিখিত বাংলা ছবির দেখা মেলেনি। সুদীপ্ত এই ছবি লিখেছেন অত্যন্ত যত্ন করে। ছবি প্রথম থেকেই কঠোর সম্পাদনা স্পষ্ঠ। সংলাপের প্রায় প্রতিটি শব্দ, বাক্য এমন তন্বী, যে লোভ হয়। সাহিত্যের ছাত্র হিসাবে আগাগোড়া আকর্ষণীয় সংলাপ, সুগঠিত চিত্রনাট্যের দিকে একটা ঝোঁক আজীবন ছিল। বাংলা মাতৃভাষা বলে, বাংলার ভাষার ছবির ক্ষেত্রে সেই প্রবণতা আরও বেশি। এ ক্ষেত্রে সুদীপ্ত সেই দিক থেকে তৃপ্ত করেছেন। শুনেছি, এই ছবির সঙ্গে সাত-আট বছর যাপন করেছেন সুদীপ্ত। এই সুলিখিত ছবিতে পরিচালক ও সৃষ্টির প্রণয়ের সম্পর্ক স্পষ্ট। প্রথমেই সেই কারণে ছবির সংলাপ লিখিয়ে-কে।
বাংলা ছবির ক্ষেত্রে শেষ কয়েক বছরে এক আলগা বদল নজরে পড়ছে। একঝাঁক নতুন পরিচালক উঠে আসছেন, যাঁরা প্রথার বাইরে গিয়ে অন্যরকম ছবি তৈরি করছেন। আর সেই ছবিগুলো শুধু মাত্র ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ঘুরছে এমন নয়, সেগুলো বাণিজ্যিক মুক্তি পাচ্ছে, এক সপ্তাহের জন্য হলেও হলে-হলে সেই ছবি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শকরা। বাংলা ছবির এই নব্য প্রবণতা অত্যন্ত আশার। সুদীপ্তর এই ছবি তেমনই অন্যধারার হয়েও বাণিজ্যিক ভাবে মুক্তি পেয়েছে। প্রাথমিক আনন্দ এই ছবি একটি সেভেন-ডি ডলবি হলে বসে দেখার। তাতে পূর্ণ মাত্রার এক সাউন্ড এফেক্ট বোঝা গিয়েছে, কোনও ফিল্ম স্কুলের ফেস্টিভ্যালে এই ছবি দেখতে হলে এতটা প্রাণবন্ত হয়ত লাগত না। এই ছবিতে কোনও গান নেই, কোনও আবহ নেই, কিন্তু আছে প্রচুর সংলাপ। ছবির সংলাপ ও আবহের এই মিনিম্যাল ব্যবহার এই ছবিকে শান্ত করেছে, দর্শক হিসাবে দেখার পথ প্রশস্ত করেছে।
আমার ধারণা, ছবির বেশিরভাগই শ্যুটিং হয়েছে চার দেওয়ালের মধ্যে। ফলে বিশাল বড় কোনও ক্যানভাস পরিচালক তৈরি করতে চাননি। ছবি তৈরি হয়েছে, স্বল্প দূরত্বের মিড-ক্লোজ শটে। এই ছবি দেখতে দেখতে কখনও আপনার মনে পড়তে পারে সত্যজিতের 'আগন্তুক'-এর কথা। সংলাপ আর দর্শন নির্ভর ছবির নির্মাণে যে স্থৈর্য্য, যে পরিমিতি বোধ থাকার উদাহরণ বিশ্ব চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে রয়েছে, সুদীপ্ত সেই কপিবুক স্টাইল মেনে চলেছেন। কিছু গভীর, চিরকালীন দার্শনিক দ্বন্দ্ব সংলাপে রাখার একটা সমস্যাও আছে, কারণ, সেটা পৌঁছতে হবে দর্শকের কাছে, যদি ছবির ডিজাইন সংলাপকে পাশে সরিয়ে দেয়, তাহলে আসল উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে না। সুদীপ্ত ডিজাইনে সেই বিষয়টির দিকে তীক্ষ্ণ নজর রেখেছেন। সেই নজরেই জোরেই ছবি কখনই লাইনচ্যুত হয়নি।
ছবিতে অনবদ্য অভিনয় করেছেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, তনুশ্রী চক্রবর্তী, অনিন্দ্য সেনগুপ্ত, রাজেশ্বরী পাল, গৌরব চ্যাটার্জি, পার্থসারথি-রা। কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রটি বাংলা ছবির ক্ষেত্রে এক সম্পদ হয়ে থেকে যাবে। বহুদিন পর এমন আলগোছে যেন উপন্যাসের পাতা থেকে উঠে আসা একটি মানুষের চরিত্র তৈরি করেছেন সুদীপ্ত। কমলেশ্বর যেন বুঁদ হয়ে অভিনয় করেছেন এই চরিত্রে। তেমনই অনবদ্য পার্থসারথি। পার্থ অত্য়ন্ত গুণী এক অভিনেতা, আগেও বাণিজ্যিক ছবি ও অন্যধারার ছবির ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি তাঁর কৃৎকৌশল। এই ছবিতে পার্থ কার্যত সমস্ত অভিনেতাদের অতিক্রম করে গিয়ে পারফর্ম করেছেন। অনিন্দ্য সেনগুপ্ত ক্রমে নিজেকে মেলে ধরছেন বাংলা ছবির জগতে। তিনি যে কেবল প্রথাগত ছবির গ্ল্যামারের আস্তরণ নিয়ে অভিনয়ের দুনিয়ায় বেঁচে থাকতে চান না, সে কথা বারংবার প্রমাণ করেছেন আগেও, এই ছবিতেও সে কথা প্রমাণ করলেন তিনি। অনিন্দ্য এই ছবির রাহুল দ্রাবিড়। প্রত্যেকে প্রত্যেকের মতো করে সুদীপ্তর তৈরি করা ব্যাটিং অর্ডারে পারফর্ম করেছেন সাফল্যের সঙ্গে। ছবির সম্পাদনার কাজ করেছেন অনির্বাণ মাইতি। তাঁর কাজটা কঠিন ছিল, কারণ, দীর্ঘ সময় ধরে এক একটি স্ট্যাটিক ক্যামেরার শট ধরে থাকতে হয়েছে। সেখানে এডিটরের হাত নিশপিশ করার কথা, বৈচিত্রের তাগিদে। কিন্তু তিনি ছবির মূল স্রোতের শান্তিকে বুঝতে পেরেছেন। অপ্রোয়জনীয় ওয়েব সিরিজ সুলভ কাট এড়িয়ে এক নির্বিঘ্ন সময় উপহার দিয়েছেন। ধন্যবাদ, অনির্বাণ।
আসুন এ বার আমরা ফিরে যাই। ফিরে যাই আমাদের অতীতের দিকে। ধীর হয়ে বসি। কিছুই না করে থাকতে শিখি। অপ্রয়োজনে ইচ্ছা মতো শিল্প নির্মাণকেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। চাঁদ দেখার যেমন কোনও কারণ লাগে না, যেমন কারণ লাগে না অকারণে আকাশের দিকে চেয়ে থাকার, তেমনই ছবি আঁকার ইচ্ছা ও তাগিদ ছাড়া আর কোনও কারণ লাগে না। ছবিতে নিজের কথাটা পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজন ছাড়া আর কোনও কারণ লাগে না ছবিটি তৈরি করার। এই শিল্পের বাউন্ডুলেপনা বেঁচে থাক, বেঁচে থাকুন অপ্রোয়জনীয় কবিরা, অ্যাভারেজ আঁকিয়েরা, ততটা বিখ্যাত না হওয়া নাট্যকাররা, তা হলেই বসন্তের বিকেলে এমন এক একটা হাওয়া দেবে, যে হাওয়ায় ভেসে আসবে আমাদের দেশ না হওয়া গ্রিসের কুঁচি বরফ। জুড়োবে আমাদের হৃদয়।
নানান খবর

নানান খবর
ভাঙনের আঁচ 'পরশুরাম-তটিনী'র সংসারে! কোন বিপদের ছায়া নামছে ধারাবাহিকের নতুন মোড়ে?
নব্বইয়ের কোঠায়ও 'তরুণ' ধর্মেন্দ্র! সুইমিং পুলে কার সঙ্গে জলকেলিতে মাতলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা?

ওদের নিয়ে কাজ করা মজার, কিন্তু তাদের ‘ফুটবল টিম’ নিয়ে নয়! বলিপাড়ার নতুন মুখদের খোঁচা জনের

চকচকে ডিটেকটিভ চারুলতা! নতুন সিরিজে উজ্জ্বল সুরঙ্গনা, অনুজয়

পহলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে বড়সড় সিদ্ধান্ত সলমনের! শুনে মন ভাঙলেও কী বলছে নেটপাড়া?

‘বাবুরাম সাপুড়ে’ থেকে ‘হুঁকোমুখো হ্যাংলা’-র পাতায় ছড়াচ্ছে রক্ত! প্রকাশ্যে ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’র হাড় হিম করা পোস্টার

বাবা হতে চলেছেন সিদ্ধার্থ, তার মাঝেই নাম জড়াল অনন্যা এবং শ্রীলীলার সঙ্গে!

পর্দায় এবার জ্যাকলিন-সুকেশের প্রেমকাহিনি! কোন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে বলিপাড়ায় চর্চিত জুটির রোম্যান্স?

জামাকাপড় খুলে শুধু অন্তর্বাস পরে বসো! সাজিদ খানের বিরুদ্ধে ফের বিস্ফোরক কোন অভিনেত্রী?

‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর ৩’ আসছে কবে? মুখ্যচরিত্রে থাকবে ‘ফয়জল খান’? ফাঁস করলেন নওয়াজ

শেষ মুহূর্তে ‘ওমকারা’ হাতছাড়া হয়েছিল আমির খানের, কোন চরিত্রে প্রত্যাখ্যাত হন 'মি. পারফেকশনিস্ট’?

হাসপাতাল থেকে শুটিং ফ্লোর সামলিয়ে ফের হাসপাতালে কাঞ্চন মল্লিক, কেন দু’বার ভর্তি হতে হল? এখন কেমন আছেন অভিনেতা?

পাহাড়কে সাক্ষী রেখে প্রেমিকার সঙ্গে বাগদান সারলেন নির্ঝর মিত্র, কবে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন পরিচালক?

মাত্র ২৪ বছর বয়সেই থামল হৃদস্পন্দন! জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটারের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেটপাড়ায়

প্রথমবার বাংলা ছবিতে গজরাজ রাও! কোন বাঙালি অভিনেত্রীর সঙ্গে পর্দাভাগ করবেন?