শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Pallabi Ghosh | ০৮ মে ২০২৪ ১২ : ০৯Pallabi Ghosh
পল্লবী ঘোষ, বীরভূম: মাত্র দুবছর সক্রিয় রাজনীতিতে। ২০২১ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েই হাওড়ার আমতা কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়েছিলেন তিনি। তবে জিততে পারেননি। তা সত্ত্বেও চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তাঁর উপরেই ভরসা দলের। এবার বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়ছেন বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য।
* লোকসভা ভোটে প্রথম লড়াই। বীরভূমে মাত্র কয়েকদিন হল প্রচার শুরু করেছেন। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
দেবতনু: আমি ভাবতেও পারিনি, এত কম সময়ের মধ্যে এরকম বিপুল সাড়া পাব। প্রচারে বেরিয়ে মানুষের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসা, একেবারে আশাতীত।
* রাজ্যে যে প্রান্তেই কেন্দ্রের মন্ত্রীরা প্রচারে যাচ্ছেন, সেখানেই সন্দেশখালি ইস্যুতে সরব হচ্ছেন। আপনার কি মনে হয়, বীরভূমেও তার প্রভাব পড়বে?
দেবতনু: বাংলার বিভিন্ন জায়গায় সন্দেশখালির মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। আরও অসংখ্য শেখ শাহজাহান এখনও লুকিয়ে আছে। সন্দেশখালিতে যা ঘটেছে বীরভূমের বহু জায়গাতেও তা ঘটছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বাংলায় এসে মহিলাদের সাহস জোগাচ্ছেন, যাতে তাঁরা মুখ খোলেন। অবশ্যই বীরভূমের আসল রূপ সামনে এলে, ভোটে তার প্রভাব পড়বে।
* সন্দেশখালির মহিলাদের এবার প্রচারে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। যারা নির্যাতনের শিকার, তাদের রাজনীতির স্বার্থে যুক্ত করাকে সমর্থন করছেন?
দেবতনু: দেখুন, বোলপুর, বীরভূম ছাড়াও সন্দেশখালির মহিলাদের প্রতিনিধি দল বহু জেলায় ঘুরে ঘুরে নিজেদের উপর নির্যাতনের ঘটনা সকলের সামনে বলছেন। প্রত্যন্ত গ্রামের, ব্লকের বহু মানুষ সন্দেশখালির ঘটনা খবরের কাগজে বা টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছেন, পড়েছেন। কিন্তু যখন সমনাসামনি সত্যি ঘটনাগুলো জানতে পারছেন, তখন আরও স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করছেন। মহিলারা নিত্যদিন যেভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, তা সামনে আসা দরকার বলেই আমার মনে করি।
* আপনার প্রতিপক্ষ শতাব্দী রায় ১৫ বছরের সাংসদ। তারকা হিসেবে তাঁর ক্রেজ আছে। লড়াইটা নিশ্চয়ই খুব কঠিন...
দেবতনু: শতাব্দী রায় প্রতিপক্ষ, এটাই সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ। কারণ, তিন বারের সাংসদ বীরভূমের জন্য কিছুই করেননি। এখানে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। কিন্তু কাজের দায়িত্ব দিয়ে রাখছেন কর্মীদের। এই কারণে বীরভূমের মানুষের অনেক ক্ষোভ আছে। তাই এবার ওকে সামনে পেয়েই সকলে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। লড়াইটা যে কঠিন না, সেটা সাধারণ মানুষকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
* দেবাশিস ধরের মনোনয়ন বাতিল হতেই আপনাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দল। প্রথমদিকে সংগঠনের অনেকেই বুঝতে পারেননি, বীরভূমের প্রার্থী আসলে কে। দলের এই ছন্নছাড়া দশায় প্রচারে সমস্যা হওয়ার কথা...
দেবতনু: সত্যি বলতে, ছন্নছাড়া দশা ছিল। বিজেপির বহু কর্মী, সমর্থক, ভোটাররা প্রথমে বুঝতে পারেননি ঠিকই। কিন্তু আমার সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং যোগী আদিত্যনাথের জনসভার পর সেই বিভ্রান্তি কেটে গেছে।
* প্রধানমন্ত্রী এখানে এসে চাকরি হারানো যোগ্যদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন। অথচ বছরে ২ কোটি বেকারকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ করেননি। এই বৈপরীত্য দেখে বিরোধীরাও সরব। কী উত্তর দেবেন?
দেবতনু: ১০ বছরে নরেন্দ্র মোদি যা করেছেন, ৬০ বছরে কংগ্রেস তা করতেও পারেনি। আর তৃণমূলের সঙ্গে মোদি সরকারের তুলনাই হয় না। কেন্দ্রের প্রকল্প রাজ্য সরকার নতুন নাম দিয়ে চালাচ্ছে। মানুষকে ভুল বার্তা দিচ্ছে। কেন্দ্রের সরকার যেসব জনসেবামূলক প্রকল্প শুরু করেছে, তার সুবিধা ধর্ম-জাত নির্বিশেষে সকলে পাচ্ছেন। মানুষ তাই বারবার এই নরেন্দ্র মোদিকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চাইছেন।
* বীরভূমে যদি জিতে যান, কী কী পরিবর্তনের কথা ভেবেছেন?
দেবতনু: বীরভূমের একাধিক সমস্যা রয়েছে। সবার আগে চেষ্টা করব, জল আর রাস্তাঘাটের সমস্যাটা যাতে মেটানো যায়। তাছাড়া এই জেলায় মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দাবিও রয়েছে অনেকদিনের। সেটা পূরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
* আর যদি হেরে যান? রাজনীতি ছেড়ে দেবেন?
দেবতনু: সক্রিয় রাজনীতিতে এসে হেরে গিয়েও তো কাজ থামেনি। এর আগে থেকেই সমাজকর্মী আমি। বুথ ভিত্তিক সংগঠন গড়ার ক্ষেত্রে দুবছর ধরে কাজ করছি। তাই এবারেও হার, জিত আমার কাছে ফ্যাক্টর না। হেরে গেলেও, লক্ষ্যপূরণে কাজ করে যাব।