সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ | EXCLUSIVE: প্রার্থী নয়, দল দেখে ভোট দেয় মানুষ: ঐশী

Riya Patra | ০২ মে ২০২৪ ২০ : ২০Riya Patra



রিয়া পাত্র 
এবারের ভোটে তরুণ তুর্কীদের ওপর ভরসা রাখছে সিপিএম। শুধু প্রার্থী নয়, ২৪-এর লোকসভা ভোটে বামেদের প্রচারেও তরুণ মুখ। জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি ঐশী ঘোষ দিল্লি থেকে বাংলায় এলেন প্রচারে। সৃজনের প্রচারে, নাইট মার্চে দাঁড়িয়ে বললেন, এই লড়াই রুজি-রুটির প্রশ্নে।

* ঐশী ঘোষ, গত কয়েকবছরে পরিচিত মুখ।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোট থেকে বিধানসভা ভোট, লড়েছেন দু’ ক্ষেত্রেই। ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সংসদীয় রাজনীতি, পার্থক্য কী বুঝলেন?
ঐশী: বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ শুধু পড়ুয়াদের নিয়ে, তাঁদের মূল দাবি থাকে শিক্ষা, পড়া শেষে চাকরি। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতিতে নানা শ্রেণির মানুষের জন্য কাজ। শ্রমজীবী, খেতমজুর নানা শ্রেণির মানুষ, তাঁদের নানা দাবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সংসদীয় রাজনীতিতে লড়াই বৃহত্তর হয়। তবে লড়াইটা তো এক। 

* জেএনইউ-তে আপনারা বেশ কয়েকটি সংগঠন জোটবদ্ধ হয়েই লড়েছিলেন। দেশের বা এই রাজ্যের ভোটে জোটের প্রয়োজনীতা নিয়ে আপনার কী মত?
ঐশী: জেএনইউতে ১৫ সংগঠনের মধ্যে আমরা কেবল ৪টে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন মিলে জোট করেছিলাম। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে স্বৈরতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছি। বাংলায় বিজেপিকে কারা টেনে এনেছে বলুন? ২০১১-এর পরের সমীক্ষা দেখুন, তার আগে তো বাংলায় বিজেপির অস্তিত্ব ছিল না।

* কিন্তু তৃণমূল সরকারে আসার পর, বামেরা যদি বিরোধী দল হিসেবে সেই পরিমাণ লড়াই দিত, তাহলে কি বঙ্গ রাজনীতিতে বিজেপি আসতে পারত? 
ঐশী: সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে এখানে বাইনারি বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বারবার বলা হয়েছে বাম শূন্য। 

* যে বাইনারি তৈরি হোক না কেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে যে পরিমাণ অভিযোগ উঠেছে, আপনারা চাইলে কি আরও জোরালো আন্দোলন করতে পারতেন না?
ঐশী: আমরা আন্দোলন করেছি। কিন্তু সকলে সেটা গ্রহণ করেননি। কিছু মানুষ বুঝতে পেরেছেন, কিছু মানুষের বুঝতে সময় লেগেছে। কিন্তু ২০২৪-এর ভোটের প্রচারে গিয়ে বুঝতে পারছি গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। ২০১৬-র সময় বোঝাবার চেষ্টা করেছিলাম, বিজেপি তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজস করে এই রাজ্যে জায়গা তৈরি করেছে। অনেকেই তখন সেকথা মানেন নি, বুঝতে চাননি। এখন রানাঘাট থেকে আসানসোল দেখুন, দুই দলের দরজা খোলা। এক দলের নেতা অন্য দলে গিয়ে টিকিট পেয়ে যাচ্ছেন। আমাদের লড়াই এঁদের বিরুদ্ধেই। এখন এমন পরিস্থিতি, আমাদের বলতে হচ্ছে স্বচ্ছ রাজনীতির কথা। 

* আপনারা ভোট প্রচারে বলছেন রুজি-রুটির কথা, মানুষের পাশে থাকার কথা। কিন্তু আপনাকেই বা বিধানসভা ভোটে লড়ার পর গত কয়েক বছরে বাংলার রাজনীতিতে কতটা দেখা গিয়েছে? আপনি পরের বার দাঁড়ালে কি সমর্থন করবেন ভোটার?
ঐশী: লড়াইটা কখনও ব্যক্তির নয়। আগামিদিনে আমি প্রার্থী না হলেও দলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়লে অন্য যে প্রার্থী হবেন, মানুষ দলের প্রতীকে তাঁকে ভোট দেবেন।

* দল অবশ্যই ফ্যাক্টর, কিন্তু তাতে কি প্রার্থীর দায়বদ্ধতা নেই? মানুষ কি প্রার্থীকে চান না? তাহলে স্লোগান কেন ‘যাদবপুর সৃজনকে চায়’?
ঐশী: আমাদের সংগঠন সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা কোথায় কী কাজ করব। আমি এখন গবেষণা করছি। আমার কাজ সেখানেও।

* গবেষণা শেষ হলে ফের ফিরবেন বঙ্গ রাজনীতিতে?
ঐশী: অবশ্যই। যেখানে আমার কাজ থাকবে আমি ফিরব সেখানে। আমাদের দল প্রতিনয়ত কাজ করছে। চতুর্দিকে হাজার হাজার কমরেড কাজ করছেন। সবথেকে জরুরি সংগঠন। সংগঠন আরও শক্তিশালী না করলে মানুষের ভোট পাওয়া মুশকিলই হবে।

* দল ছাড়া প্রার্থী সৃজনের ইউএসপি কী? কেন তাঁকে ভোট দেবেন মানুষ?
ঐশী: বাকিদের অ্যাজেন্ডা মানুষ শুনেছে আগেও, কিন্তু কাজ হয়নি। কিন্তু আমাদের প্রার্থী নিজের বার্তা নিয়ে যাচ্ছে। গিগ ওয়ার্কারদের জন্য কাজ, স্থানীয় সমস্যা নিয়ে তিনি কথা বলছেন। বড় বড় কথার মাঝে এই স্থানীয় বিষয় নিয়ে কেউ কথা বলছেন না। তাছাড়া এখানে ছাত্র রাজনীতি করেছেন তিনি দীর্ঘদিন, ছাত্রদের পালস বুঝেছেন। নতুন প্রজন্মের কাছে শিক্ষা শেষে চাকরির বার্তা দিচ্ছেন, বোঝাচ্ছেন।

* ঐশী যদি এবার প্রার্থী হতেন, কী বার্তা দিতেন?
ঐশী: একই বার্তা। আমরা দেখছি শিক্ষা শেষে কাজ হচ্ছে না। অনেককে কাজের জন্য পরিবার ছেড়ে বাইরে থাকতে হচ্ছে। স্বচ্ছ নিয়োগ আমাদের মূল কথা। ঘরের ছেলে মেয়েদের ঘরে রাখা। নজর মহিলা সুরক্ষায়। 

* এই যে একটা সময় বলা হয়েছিল বামেরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের থেকে, আপনারা তরুণ তুর্কীরা সেই শূন্যস্থান পুরণ করতে পারছেন?
ঐশী: ২০১১-র পরে অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়েও আমরা মানুষের সামনে যেতে চেয়েছি। মানুষ উন্নয়ন চেয়েছিল। আমরা বলছি, রুজি-রুটি-নিয়োগ-শিক্ষার কথা। আমাদের মনে হয় মানুষ বুঝতে পারছে উন্নয়নের নামে অন্যদের ফাঁকা আওয়াজ।

* বামফ্রন্ট কী এমন পরিকল্পনা করছে, যাতে মানুষ এই তৃণমূল-বিজেপির বিকল্প হিসেবে তাদের বেছে নেবে?
ঐশী: আমাদের অ্যাজেন্ডা পরিষ্কার। মানুষের পাশে, সাথে থাকতে হবে। আমাদের প্রজন্মের একটা বড় অংশকে শিক্ষা চাকরিসহ একাধিক কারণে
বাইরে চলে যেতে হচ্ছে। শিল্প সহ নানা সেক্টর গড়ে উঠুক, যাতে তারা এখানে থাকতে পারে। আমাদের স্থানীয় সমস্যা সমাধান করতে হবে। জলের সমস্যা থেকে কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম, মহিলা সুরক্ষা, পড়ুয়াদের ফিজ সহ নানা বিষয়ে আমাদের কাজ। আমরা ধর্মের নামে ভোট চাইছি না, এটা তো মানুষ বুঝছে।




বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর





রবিবার অনলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া



05 24