শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Riya Patra | ১২ এপ্রিল ২০২৪ ১৪ : ৫৭Riya Patra
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সামনে লোকসভা ভোট। প্রার্থীদের সমর্থনে জোরকদমে প্রচারে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। শুক্রবার দিনহাটার সংহতি ময়দানের সভা থেকে মমতা বোঝালেন তাঁর সঙ্গে টেক্কা দেওয়া মুশকিল। বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণ থেকে একুশের ভোটের শীতলকুচি কাণ্ড, অমিত শাহ থেকে ক্যা, একের পর এক ইস্যু তুলে ধরলেন। তীব্র আক্রমণ করলেন কেন্দ্রকে, বুঝিয়ে দিলেন, খেলা সহজ নয়। সোজাসাপটা ভাষায় বললেন, আমরা করব সব, আর ভোট পাবে বিজেপি, তা কখনও হয়?
শুরুতেই মমতার কথায় আসে শীতলকুচির প্রসঙ্গ। তারপরেই বলেন বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণ প্রসঙ্গ। শুক্রবার বাংলা থেকেই এই ঘটনায় জড়িত দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। মমতা এদিন বলেন, "বেঙ্গালুরুর ঘটনায় জড়িতরা কর্ণাটকের, বাংলার নয়। বাংলায় লুকিয়েছিল, ২ ঘন্টার মধ্যে ধরে দিয়েছি, আমাদের পুলিশ।" প্রশ্ন করেন, "বলছে বাংলা সেফ নয়, দিল্লি সেফ? উত্তর প্রদেশ সেফ? রাজস্থান সেফ? গুজরাট সেফ? বিহার সেফ?" বাংলার মানুষের শান্তি বিজেপির সহ্য হয় না বলেও এদিন তোপ দাগেন মমতা।
জলপাইগুড়ির ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরির বিষয়ে এদিন মমতা ব্যানার্জি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশাসন কিস্তিতে দেবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। কীভাবে? বুঝিয়ে দিলেন সেকথাও। "ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আছে, জুলাই মাসে নতুন হয়েছে। ২০ যাঁরা পেয়েছেন প্রশাসন তাঁদের আরও ৪০ দেবে। প্রথম কিস্তি ৬০ হয়ে গেল। আরও ৬০ হাজার দ্বিতীয় কিস্তিতে পাবেন। অর্থাৎ ১ লক্ষ ২০ হাজার প্রশাসন আপনাদের কাছে পৌঁছে দেবে। ঘর তৈরি করতে শুরু করুন, যাঁদের ঘরবাড়ি ঝড়ে ভেঙে গেছে।" সঙ্গেই বলেন, "গরীব লোকেদের জন্য কাজ করতে গিয়ে যদি আমায় কেস দাও, আমি গর্বিত হব।" আবাস যোজনার টাকা প্রসঙ্গেও কেন্দ্রকে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, "কেন টাকা দিচ্ছেন না? বাংলায় সবাই চোর? আপনি টাকা দিলে তো চুরি করবে?" নাম না করে নিশীথ প্রামাণিক সম্পর্কে বলেন, "সব থেকে বড় চোর আপনার প্রার্থী। আগে তাঁকে ধরুন।"
মোদির কথা তুলে ধরে বলেন, "২০২৪-এ জুনের পর খুঁজে খুঁজে সকলকে গ্রেপ্তার করব, জেলে নিয়ে যাব। আগে বিজেপির চোরকে ধরুন। দেশ জেলখানা নয়। আপনি দেশকে জেলখানা বানিয়েছেন।" মোদির "আত্মপ্রচার" নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, "কোভিডে একটা ইনজেকশন দিয়েছে, তাতেও নিজের ছবি। এত আত্মপ্রচার করতে ভালবাসে। সিনেমায় নামা উচিত। ভাল অভিনয় করতে পারবে।" শাহের "উল্টে ঝুলিয়ে রেখে দেব" মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সোজা প্রশ্ন করেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে শোভা পায় একথা?" মমতা বলেন, "এমনভাবে কথা বলছেন যেন ৫৪৩ আসনে আপনি ইতিমধ্যে ১০৪৩ আসন পেয়ে গিয়েছেন। এত তাড়াহুড়ো করবেন না। খেলা এত সহজ নয়।"
সন্দেশখালি নিয়ে গেরুয়া শিবির ভোটের আগে ফায়দা তুলতে চেয়েছিল, মনে করিয়ে দিয়ে বললেন, "এটা সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, বিলকিস বানো, হাথরস, ক্যা নয়।" তিনি আরও বলেন, "মোদি শাহ আর গুন্ডাগুলো ছাড়া কাউকে এদেশে থাকতে দেবে না। আমরা সবাই নাগরিক। কারো গায়ে হাত দিতে দেব না, দিলে বুঝবে।"
নির্বাচনী প্রচারে এদিন মমতা কর্মী সমর্থকদের যেমন বললেন "কেউ ভয় পাবেন না", তেমনই উদয়নকে টিপস দিলেন "কুল" থাকার। মমতা বলেন, "উদয়ন, বি কুল। কুল কুল তৃণমূল। ভোট করতে হবে ঠান্ডা মাথায়। ও তোমাকে গন্ডগোলে জড়িয়ে দিয়ে ভোট করিয়ে নেবে বিএসএফকে দিয়ে। মাথায় রেখো, ভুলেও সেটা করতে দিও না। নিজেকে আগে থেকে তৈরি রাখো।" শান্তি বজায় রাখতে কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রশাসনকেও। প্রশাসনকে প্রশ্ন করেন, "কিসের ভয়? চাকরি যাবে? নির্বাচন কমিশন সরিয়ে দেবে? এখনই দিল্লি যান, নইলে নিশীথের বাড়ি চলে যান। তাহলে আর আইন শৃঙ্খলা সামলাতে হবে না। " কর্মীদের ভোট লড়ার টিপস দিয়ে দলনেত্রী বললেন,"আমার সঙ্গে পারা মুশকিল আছে। আমি ইটের বদলে পাটকেল দিই না। বুদ্ধি দিই।"