শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ | EXCLUSIVE: তৃণমূলের 'ডায়মন্ড হারবার মডেল' থেকে পরিত্রাণ চায় মানুষ: প্রতীক উর

Riya Patra | ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৯ : ১০Riya Patra


রিয়া পাত্র 

হাই ভোল্টেজ ডায়মন্ড হারবার। শাসক দলের প্রার্থী দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড, সেখানকার বিদায়ী সাংসদ, অভিষেক ব্যানার্জি। জল্পনা ছিল নওসাদ সিদ্দিকি বাম-কং-আইএসএফ জোটের প্রার্থী হবেন। সমঝোতা ভেস্তে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডায়মন্ড হারবারে বামফ্রন্টের তুরুপের তাস প্রতীক উর রহমান। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরেই মুখোমুখি প্রতীক উর।


* ডায়মন্ড হারবার কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক থেকে ২৪ -এর লোকসভা ভোটের প্রার্থী। বাম জমানার ছাত্র রাজনীতি থেকে তৃণমূল জমানার ভোট। দীর্ঘ সময়ে রাজনীতির কী বদল দেখলেন?

প্রতীক উর: স্পষ্ট কোনও বদল হয়নি। ২০০৮-এ আমি কলেজে যাই। তখন রাজ্যে বাম জমানা থাকলেও, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলা পরিষদে তৃণমূলের রমরমা। কলেজে প্রতিদিন তৃণমূল আক্রমণ করেছে। মার খেয়েছি, আক্রান্ত হয়েছি। এখনও মার খেয়ে রাজনীতি করছি।


* ছাত্র রাজনীতি, সেখান থেকে ডায়মন্ড হারবারের বিধানসভা ভোটের টিকিট এবং তারপর ওই লোকসভা কেন্দ্রের টিকিট। দলের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করলেন কীভাবে?

 প্রতীক উর: আমাদের দলে ওভাবে টিকিট দেওয়া হয় না। এসএফআই-এর সমস্ত স্তর অতিক্রম করেছি আমি। সমাজে বঞ্চিত যাঁরা, তাঁদের হয়ে লড়াই করি। আমরা তৃণমূলের মতো টিকটক করি না। কাজ দেখে দল ভরসা করেছে। টিকিটের জন্য কেন ভেবেছে আমাকেই, সেটা বলতে পারব না।

* ছাত্র রাজনীতিতে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন সৃজনের সঙ্গে জুটি বেঁধে। জুটি ছেড়ে লড়াই এবার কেমন?

 প্রতীক উর: জুটি তো ভাঙেনি, আমরা ভৌগোলিক ভাবে পাশাপশি দুই কেন্দ্রের প্রার্থী। দুই ভাই পাশাপশি একসঙ্গেই আবার লড়াই করছি।

* ছাত্র রাজনীতি কঠিন নাকি জনপ্রতিনিধি হওয়া বেশি কঠিন? 

  প্রতীক উর: জনপ্রতিনিধির যেমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে, তেমনই রাজ্যের ছাত্রদের একসঙ্গে নিয়ে কাজ করাও ভয়ানক কঠিন। তবে যে রাঁধে সে চুলও বাঁধের মতো, যে ম্যানেজ দিতে পারবে, সে সব জায়গায় পারবে। 

* ফ্রন্ট সূত্রের খবর ছিল, নওসাদ প্রার্থী হলে বামেরা কোনও প্রার্থী দেবে না। আপাতত আসন সমঝোতা হল না আপনাদের। আইএসএফ-এর প্রার্থী ডায়মন্ডহারবার থেকে যে ভোট পাবেন, তাতে মূলত সুবিধা কার হবে? তৃণমূল নাকি বিজেপি?

 প্রতীক উর: আইএসএফ আমার কাছে ফ্যাক্টর নয়। আমার লড়াই বিজেপি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে। 

* জোটের জটিলতা বহুদিন চলল, ডায়মন্ড হারবারে কংগ্রেস আপনার সমর্থনে থাকবে তো?

 প্রতীক উর: আপাতত কংগ্রেস প্রার্থী দেবে বলে শুনিনি। শুধু ডায়মন্ড হারবার নয়, গোটা রাজ্যেই বাম-কং জোট। এই প্রথম আমরা লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করছি। 

* লোকসভা ভোটে আপনার লড়াই তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের বিপরীতে। লড়াই কি অনেক বেশি কঠিন?

 প্রতীক উর: একেবারেই না। এক মুহূর্তেই জন্যও তা মনে হচ্ছে না। আমি বামপন্থী রাজনীতি করি। ব্যাক্তিগত বিরোধিতায় বিশ্বাসী নই। তাই আমি তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছি। তাদের পলিসি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই আমার। দেখুন, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি গত ১০ বছরে। এমন অনেক জায়গা আছে, সেখানকার মানুষ ১০ বছরে ভোট দিতে পারেননি। মানুষের দমবন্ধ হয়ে আসছে। এটা আমার কাছে বাড়তি সুযোগ। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ভোট হলে মুশকিল আছে শাসক দলের। এটা ভেবেই ভাল লাগছে।


* দিন বদলের স্বপ্ন দেখেন, তাতে পরিকল্পনা কী?

  প্রতীক উর: দিন বদল তো একদিনের নয়, বড় লড়াই... 

* আপনারা এরাজ্যে এক দশকের বেশি সময় পেয়েছেন...

 প্রতীক উর: বামপন্থী রাজনীতিতে সরকারে এলেই দিন বদল হয় না। পচাগলা সমাজ ব্যবস্থা বদলে যে নতুন ব্যবস্থা আনতে হয়, সেটা অনেক লম্বা সময়ের। সরকার পরিবর্তনের কথা বললে ১১ বছর বলতে পারেন, কিন্তু দিন বদলের কথা বললে বহু বহু সময় লাগে। পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি বললে বিষয়টা আলাদা। সমাজ বদল আমার একার সদিচ্ছায় হবে না।


* "ডায়মন্ডহারবার মডেল"-এর বিকল্প মডেল কী ভাবছেন?

 প্রতীক উর: প্রথমত ডায়মন্ড হারবার মডেল নিয়েই আমার প্রশ্ন আছে। ভোট না দিতে দেওয়া কি মডেল? কথা বলতে না দেওয়া? ডায়মন্ড হারবার পিসফুল জেলা, তবু ভোটের আগে বিরোধীদের নামে মিথ্যে কেস আসে। আসলে এখানে নিঃশব্দ বিপ্লব নয়, নিঃশব্দ দুর্নীতি, কাটমানি। ডায়মন্ড হারবারের দুর্নীতি নিয়ে কেউ কথা বলে না। মানুষ এই মডেল থেকে পরিত্রাণ চাইছে। এর বিকল্প মডেল, মানুষ তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন, মন খুলে কথা বলতে পারবেন, কাজ করতে পারবেন। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা ফেরাতে হবে। দুর্নীতি তোলাবাজ মুক্ত লোকসভা কেন্দ্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

* প্রচার পরিকল্পনা কী? কী বার্তা দেবেন তাহলে? 

 প্রতীকউর: কমিশনের অনুমতি পেলেই শুরু হবে প্রচার। বামপন্থী প্রার্থীদের মূল বার্তা হচ্ছে, ভুল অ্যাজেন্ডার বিরুদ্ধে মূল অ্যাজেন্ডার লড়াই। ভুল নীতির বিরুদ্ধে ঠিক নীতির লড়াই। ফুল বদলে লাভ নেই। আমাদের লড়াই অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান নিয়ে। দাবি স্কুল খোলার, হাসপাতালে ডাক্তার নিয়োগের। উন্নত রাস্তা, পরিবহন ব্যবস্থার দাবি। সবথেকে বড় কথা, এখানকার মানুষকে সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে না। এই বার্তা দেব। 

* জিতলে সংসদে গিয়ে কী বলবেন? 

প্রতীক উর: আমি জিতলে ডায়মন্ড হারবারে গণতন্ত্র জিতবে। কলকারখানা নিয়ে সুর চড়াব।বেকার যুবকদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করব। এক সঙ্গে রাজ্যের নানা বিষয়ের দাবি তুলে ধরব। তবে এটুকু গ্যারান্টি দিচ্ছি, আমি সাংসদ হলে, এই কেন্দ্রের কেউ আমাকে কখনও টিভির পর্দায় গরু, কয়লা, বালি চুরির অভিযোগে দেখতে পাবেন না। মিথ্যে মামলায় জেল খাটাতে পারে, কিন্তু চুরির দায়ে অভিযুক্ত হব না, এটুকু গ্যারান্টি দিতে পারি।




বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর





রবিবার অনলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া



04 24