নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ২৮ মার্চ ২০২৪ ২৩ : ০৬

শুরু থেকে পরিচালক স্বামীর পাশে থেকেছেন। ‘অতি উত্তম’-এর চিত্রনাট্য লেখা থেকে টুকরো টুকরো দৃশ্য এডিটিং টেবিলে ছবির পুনর্বিন্যাস— সাক্ষী রফিয়াত রশিদ মিথিলা। তখনই বুঝেছিলেন, উত্তমকুমারকে ফিরিয়ে এনে আরও একবার সৃজিত মুখোপাধ্যায় চর্চা, শিরোনামে উঠে আসবেন। সেই বিশ্বাস সত্যি হতে দারুণ খুশি তিনি। আফসোস, প্রিমিয়ারে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘ও অভাগী’র প্রিমিয়ারে এসে আজকাল ডট ইনকে জানালেন মিথিলা।



আগের দিন জাতীয় পুরস্কারজয়ী পরিচালকের ছবির প্রিমিয়ার। পরের দিন তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রীর। টলিউড বলছে, তারকা দম্পতি হাতখুলে ব্যাটিং করছেন! বৃহস্পতিবার সকাল সকাল কলকাতায় এসেছেন। সারা দিন ছবিমু্ক্তি নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। মিথিলা তখনও বসে নিজের ছবির একটা দৃশ্যও দেখে উঠতে পারেননি! ক্লান্ত মুখে ঘামের সুচারু আলপনা। প্রশ্ন শুনে মুহূর্তের মধ্যে চনমনে। হেসে ফেলে জবাব দিলেন, ‘‘ভাল তো! এতে দুই বাংলার বিনোদন দুনিয়ারই উপকার হচ্ছে। আমরা বাংলা ছবির পাশে দাঁড়াচ্ছি।’’ এই ধারা মেনেই টলিউডে নতুন সংযোজন পরীমণি। তিনি এখন কলকাতায় শুটে ব্যস্ত... কথা ফুরনোর আগে উত্তর তৈরি, সবটাই সম্ভব হয়েছে করোনাকালে ওটিটি আত্মপ্রকাশ করায়। এই মাধ্যমের হাত ধরে দুই বাংলার আদানপ্রদান আরও বেড়েছে।

মিথিলা যখন সাক্ষাৎকারে ব্যস্ত তখন মন দিয়ে তাঁর ছবি দেখছেন সৃজিত, শাশুড়ি মা সুমিতা সরকার। কথাপ্রসঙ্গে নায়িকা জানান, তাঁর শাশুড়ি মায়ের দায়িত্বজ্ঞান অসম্ভব। আগের দিনে ছেলের ছবির প্রিমিয়ারে গিয়েছিলেন। পরের দিন বৌমার। তারপরেই রসিকতা, ‘‘নইলে জানে, বৌমা খবর নেবে।’’ মিথিলার ছবি দেখতে বাংলাদেশ থেকে উড়ে এসেছিলেন প্রথম সারির এক প্রযোজক-পরিচালক। উপস্থিত সুব্রত দত্ত, সায়ন ঘোষ, ঈশান মজুমদার, পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী-সহ টিম ‘ও অভাগী’। বেজরঙা শিফন শাড়ি, খোলা, লম্বা চুল সামলাতে সামলাতে নায়িকার অস্ফুট স্বগতোক্তি, ‘‘কারও সঙ্গে কথা না বলে প্রেক্ষাগৃহ থেকে যাব না। সবার সঙ্গে ছবি নিয়ে কথা বলব বলেই তো আমি কলকাতায়।’’ মিথিলার প্রথম ছবি ‘মায়া’ শেক্সপীয়রের ম্যাকবেথ অবলম্বনে। দ্বিতীয় ছবিটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভাগীর স্বর্গ’র অনুসরণ। পরপর সাহিত্যধর্মী ছবির নায়িকা কি জেনেবুঝেই, নাকি কাকতালীয়? নায়িকা অকপটে স্বীকার করেছেন, তিনি সাহিত্যধর্মী ছবিতেই বেশি আগ্রহী। তাই হয়তো তাঁর কাছে এই ধরনের ছবিই আসছে। এবং তিনি ভাগ্যবান, সাহিত্যধর্মী ছবির নায়িকার ভূমিকায় ডাক পাচ্ছেন। 

হাতে এখনও টলিউডের একমুঠো ছবি। সৃজিত দেখছেন, তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রী আর শুধুই বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ নেই। এবার কি মিথিলাকে নিয়ে কিছু ভাববেন? প্রশ্ন রাখতেই অভিনেত্রী সপাট, ‘‘এই প্রশ্নগুলো কেন যে সৃজিতকে করেন না!’’ তারপরেই জানিয়েছেন, ছবিতে কাকে নেবেন আর কাকে নেবেন না, সেটা পরিচালক ঠিক করেন। সৃজিত সেটা আরও বেশি করে। তাই ওঁর যখন মনে হবে ঠিক মিথিলাকে ডেকে নেবেন।



উত্তর দিতে দিতে হঠাৎ আনমনা নায়িকা। মিথিলার একমাত্র মেয়ে আইরার কথা খুব মনে পড়ছে। একটু ভারী গলায় বললেন, ‘‘খুব অল্প সময়ের জন্য এসেছি তো। নিয়ে আসতে পারিনি।’’ 

বাস্তব বলছে, এখানেই পর্দার ‘অভাগী’ আর বাস্তবের মিথিলা মিলেমিশে একাকার!