Riya Patra | ১১ মার্চ ২০২৪ ১৮ : ১৩Riya Patra

আজকাল ওয়েবডেস্ক: সিএএ নিয়ে জারি বিজ্ঞপ্তি, দেশজুড়ে কার্যকর হল ক্যা।সোমবার বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ঘোষণা করা হয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিজ্ঞপ্তি জারি মাত্রই কার্যকর হয়ে গেল এই আইন।


গত কয়েকঘন্টা ধরে জোর জল্পনা, নির্বাচনের প্রাক্কালে, দেশ জুড়ে চালু হতে পারে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। আর সোমবার সেই সংক্রান্ত ঘোষণা করবে কেন্দ্র। অপেক্ষা ছিল ঘোষণার। কয়েক বছর আগে সিএএ প্রস্তাব আনে মোদি সরকার। বিল পাশও হয় সংসদে। ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ অনুমোদন দেন। অপেক্ষা ছিল বিজ্ঞপ্তি জারির।
এই বিল নিয়ে গত কয়েকবছরে বিতর্ক হয়েছে ব্যাপক হারে। তবে নির্বাচনের প্রাক্কালে কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রীরা বারবার সিএএ আইন নিয়ে কথা বলেছেন।


২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সংসদে পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধন আইন। তবে বিধি তৈরি করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ। তারজন্য ৯ বার সময়সীমা বাড়ানো হয়। অবশেষে লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় সিএএ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল মোদি সরকার। এই আইনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে ভারতে আসা অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেবে কেন্দ্স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জারি করা বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, "এই আইনের আওতাধীন ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন। সম্পূর্ণ অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদন করতে হবে এবং তারজন্য একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে।" এই আইনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ এর সংশোধন করা হয়েছে। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর অথবা তার আগে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, জৈন, পার্সি, শিখ, বৌদ্ধ এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ইস্তাহারে সিএএ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। তারপর থেকে রাজ্যগুলির বিধানসভা নির্বাচনে সিএএকে হাতিয়ার করে বিভাজনের নিখুঁত হিসেব কষে ভোট বৈতরণী পার করেছে পদ্ম শিবির। অবশেষে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের কয়েকদিন আগে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দিল মোদি সরকার। সপ্তাহ তিনেক আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, লোকসভা ভোটের আগেই নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে ভারতে আসা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার অমুসলিম শরণার্থীদের এই আইনের মাধ্যমে নাগরিত্ব দেওয়া হবে। তবে ভারতীয় মুসলিমদের ক্ষেত্রে এই আইন নিয়ে ভয় বা উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। যদিও বিরোধীদের দাবি, দেশের মুসলিম সমাজের প্রতি পক্ষপাত করার জন্য এই আইন কার্যকর করা হয়েছে। দেশের সংবিধানের উল্লেখিত ধর্ম নিরপেক্ষতার কাঠাসংসদে ক্যা পাস হওয়ার পরেই সারা দেশ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। দিল্লির শাহিনবাগ সহ উত্তর পূর্ব দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। তবে তারপরেই করোনা ছড়িয়ে পড়ায় সেই আন্দোলন উঠে যায়। এই আইন কার্যকর হওয়াকে কেন্দ্র করে দিল্লির শাহিনবাগ সহ বিভিন্ন জায়গায় কড়া নিরাপত্তা জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। কোনও রকম উত্তেজনা যাতে না ছড়ায়, তারজন্য সবরকম ব্যবস্থা কএদিন বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়া প্রসঙ্গে ইসলামিক সেন্টার অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারপার্সন মৌলানা খালিদ রশিদ বলেছেন, " কোনও রকম ভয় বা উদ্বেগ না করে সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানাচ্ছি। আমাদের আইন বিভাগ বিষয়টি দেখবে এবং তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।" কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন, "২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সংসদে পাস হওয়ার পর সিএএ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে মোদি সরকারের ৪ বছর সময় লাগল। প্রধানমন্ত্রী মোদি দাবি করেন, তাঁর সরকার সময়ে কাজ করে। সিএএ কার্যকর করা মোদির মিথ্যাচারের অন্যতম নজির।" তিনি আরও বলেন, "বিধি তৈরির জন্য ৯ বার সময়সীমা বাড়ানোর পর নির্বাচনের আগে এই আইনের বিজ্ঞপ্তি করা মেরুকরণের চেষ্টার প্রকাশ, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমে। নির্বাচনী বন্ড নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর খবরের আসারও এটা প্রচেষ্টা।"