সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

বিনোদন | সিরিয়ালের ভবিষ্যৎ এখন টিআরপি-র হিসেবনিকেশের দখলে, তার রেশ কতটা পড়ছে চিত্রনাট্যকারদের উপরে?

Reporter: পরমা দাশগুপ্ত | লেখক: পরমা দাশগুপ্ত | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৫ : ০৯Snigdha Dey


বাংলা সিরিয়ালের ভবিষ্যৎ এখন টিআরপি-র হিসেবনিকেশের দখলে। তার রেশ কতটা পড়ছে চিত্রনাট্যকারদের উপরে? খোঁজ নিলেন পরমা দাশগুপ্ত। 


 
ঢাকঢোল পিটিয়ে সিরিয়াল শুরু। তারপর দু’তিনমাস পেরোতে না পেরোতেই তার ঝাঁপ বন্ধের পালা। এ ছবি এখন আর নতুন নয় বাংলা টেলিভিশনে। আর তাই নতুন মেগা এলে যতটা আনন্দে থাকেন অভিনেতা-কলাকুশলী-সহ গোটা টিম, ঠিক ততটাই থাকে উদ্বেগ। কাজ তো এল, চলবে তো? সেই প্রশ্নটাই তাড়া করে বেড়ায় গোটা ইউনিটকে। 

 

টিআরপি অর্থাৎ টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট দাঁড়িয়ে দর্শকের পছন্দের উপরে। সিরিয়াল পর্দায় এলে দর্শক তা কতটা পছন্দ করলেন, কতক্ষণ দেখলেন, দেখতে দেখতে চ্যানেল বদলালেন কিনা, তার উপরেই দাঁড়িয়ে এই রেটিংয়ের হিসেবনিকেশ। ফলে টিআরপি-র অঙ্কেই বাঁধা থাকে ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা, তার সূত্র ধরে চ্যানেলের আয় এবং ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ, অর্থাৎ তা কতদিন টিকে থাকবে চ্যানেলে। ইদানীং এই হিসেবের টক্কর এতটাই জোরালো যে, টিআরপি তালিকায় প্রথম দশে জায়গা করে নিতে রেষারেষির শেষ নেই। রেটিং পড়ে গেলেই যে সিরিয়াল বন্ধের ভয়। আর তাতে প্রযোজনা সংস্থা বা চ্যানেলের যেমন মোটা অঙ্কের ক্ষতি, তেমনি জড়িয়ে অভিনেতা-কলাকুশলীদের কাজ হারানোর আশঙ্কা। 

 

 
অগত্যা দর্শককে টেনে রাখার চাপটা গিয়ে পড়ে কাহিনি-চিত্রনাট্য এবং অভিনয়ের জোরের উপরে। কিন্তু অভিনেতারা তো ফুটিয়ে তুলবেন গল্পকে। সেই গল্প শক্তিশালী না হলে, সংলাপ দর্শকের মন কাড়তে না পারলে কি চলে? শেষমেশ তাই বোধহয় সবটা গিয়ে বর্তায় গল্প, চিত্রনাট্য বা সংলাপ লেখার ভার যাঁদের হাতে, সেই লেখকদের উপরেই। 

 

 
কিন্তু টিআরপি-র ইঁদুরদৌড়ে লাগাতার হাইপয়েন্ট, হুকপয়েন্টের নাটকীয়তায় দর্শককে টেনে রাখতে কতটা চাপ আসে লেখকদের উপরে? জনপ্রিয় হয়ে ওঠার বা জনপ্রিয়তা ধরে রাখার তাড়ায় সৃষ্টির স্বাভাবিক ছন্দ, গল্পের স্বাভাবিক গতি কিংবা ইচ্ছেমতো গল্প বলার স্বাধীনতা সবটাই কি কোথাও প্রভাবিত হয়? পরিস্থিতির চাপেই কি গল্পকে এগিয়ে দেওয়া হয় যেমন খুশি পথে?

 

 
দীর্ঘ কয়েক দশক সিরিয়াল পাড়ায় রাজপাট প্রযোজনা সংস্থা ব্লুজ-এর। সংস্থার কর্ণধার তথা লেখক-পরিচালক-চিত্রনাট্যকার স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “আমি সেই ভাগ্যবানদের দলে, যার উপর গল্প নিয়ে আজ পর্যন্ত কেউ চাপ সৃষ্টি করেনি। এখনকার পরিস্থিতিতেও আমার সিরিয়ালগুলো কোনওটা হাজার পর্বের কাছাকাছি, কোনওটা পাঁচশো পর্ব পেরোচ্ছে। আমি এখনও নিজের মতো করেই গল্প বলি। যে গল্পটা যেভাবে বলতে চেয়েছি, যেদিকে তাকে এগিয়ে নিতে চেয়েছি, সেটাই করেছি বরাবর। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ আমার উপর ভরসা রেখেছেন, কখনও হস্তক্ষেপও করেননি, এ নিয়ে কোনও শব্দও খরচ করেননি। তবে হ্যাঁ, শুনতে পাই অনেকের কাছে। সিরিয়াল বন্ধের চাপ থাকে, টিআরপি বাড়ানোর চাপে গল্পও বদলাতে হয় কখনও কখনও। এবং সেই চাপ চ্যানেল, প্রযোজনা সংস্থা বা গোটা ইউনিটের উপরেই থাকে নানা ভাবে।”  

 

 
লেখক-চিত্রনাট্যকারদের উপরে সেই চাপের বহর কতটা প্রভাব ফেলে?
বেশ কয়েক বছর ধরে সিরিয়াল পাড়ায় কাজ করছেন সুজয় সরকার। তাঁর কথায়, “ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বাস্তবতার বাইরে গিয়ে হয়তো কিছু লিখতে হয় কখনও কখনও। অনেক সময়ে তা বেমানান লাগে বা গরমিল ডেকে আনে, একথা সত্যি; কিন্তু টেলিভিশনের ক্ষেত্রে দর্শকের চাহিদার উপর ভিত্তি করে গল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই শেষ কথা। কারণ, ধারাবাহিকের লেখকের ধাঁচটাই সম্পূর্ণ আলাদা। মেগা সিরিয়াল মানে বটগাছের মতো একটা বিষয়, যার অজস্র শাখা আর ঝুরি আছে; কিন্তু মূল গল্প হল গাছের ওই মোটা গুঁড়ি। তাই মেগা-সিরিয়ালের নিয়মিত লেখক হতে গেলে গল্পের প্রয়োজনে শাখামৃগের মতো ডালে ডালে লাফ দেওয়ার মানসিকতায় অভ্যস্ত থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। ব্যবসায়িক চাহিদা আর ক্রিয়েটিভিটি কীভাবে ব্যালান্স করতে হবে, সেটা সম্পূর্ণ লেখকের দক্ষতার উপর নির্ভর করে।”

 

 
খুব অল্পদিন সিরিয়ালের সংলাপ লিখেছেন সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর লেখালেখি এবং জনপ্রিয়তা অনেকটাই ওটিটির পরিসরে। টিআরপি-র বদলে সেখানে ভিউজের নিরিখে তুল্যমূল্য বিচার চলে জনপ্রিয়তার। সিরিয়ালের সঙ্গে পরিস্থিতিটা কতটা এক বা আলাদা? এক্ষেত্রেও কি প্রভাব পড়ে গল্পের মানে? 
“ভিস্যুয়াল মিডিয়ার অন্য মাধ্যমগুলোর সঙ্গে সিরিয়ালের একটা তফাত গড়ে দেয় রোজকার তাড়াহুড়ো। প্রত্যেকদিন সকালে অতগুলো সিন ছাড়া, ব্যাঙ্কিং না থাকলে বাড়তি চাপ, একেকটা করে সিন লেখার ফরমায়েশ— পুরোটাই ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের নিয়মে চলতে থাকে। এত সব সামলাতে গিয়ে লেখার গুণগত মান নিয়ে ভাবার সময় থাকে কি সেভাবে? বরং সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিনের জন্য ভাবনাগুলো তোলা থাকে, যেদিন টিআরপি-র হিসেব আসে। তখন তলিয়ে দেখা হয় গল্পের কোন ট্র্যাকটা কাজ করল, কোনটা করল না এবং কেন। শুধু সিরিয়াল কেন, সিরিজের গল্পও তো এখন ‘ওয়ার্ক করা’ বা না করার উপরে অনেকটা নির্ভরশীল। বিশেষত সিরিয়ালের ক্ষেত্রে ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের এই সিস্টেমটার এই তাড়া, জনপ্রিয় হয়ে ওঠার তাগিদ লেখকদের উপরে পুরোটা না হলেও কিছুটা চাপ তৈরি করে তো বটেই। সময়-নির্ভর সৃষ্টিশীলতা নিশ্চয়ই শেখার বিষয়। কিন্তু কতটা সময় বরাদ্দ থাকে, সেটাও তো একটা প্রশ্ন," বলছেন সম্রাজ্ঞী।  

 

 
রেটিং নিয়ে এত তোলপাড় যাঁদের জেরে, সেই দর্শকদের একাংশ অবশ্য শুধু ধারাবাহিক না চলাতেই থেমে থাকেননা। বরং সুযোগ পেলেই দেদার ট্রোলে মজে যান। কেউ বলেন, আজকাল সিরিয়ালের গল্প মানেই নাকি গল্পের গরু গাছে ওঠে যখনতখন। কেউ বা গল্প বা চরিত্র নিয়ে তুলোধনা করার এতটুকু সুযোগ ছাড়েন না। সে সবের জেরে অনেক ক্ষেত্রে আরও তলানিতে ঠেকে টিআরপি। যার জেরে চাপ বাড়ে আরও। রেটিং-যুদ্ধে হিমশিম টেলিপাড়া কীভাবে দেখে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের এই রমরমাকে? 


 
স্নেহাশিসের কথায়, “এই ট্রোলিং বিষয়টাই আমার কাছে খুব আপত্তিজনক। এটা জানা খুব দরকার যে, কী বলব এবং কতটা বলব। টেলিভিশন বা সিনেমায় কেউ ধ্বংস করার জন্য আসেন না, সৃষ্টি করার চেষ্টাই করেন। এতে মানুষের কষ্টার্জিত টাকা বিনিয়োগ হয়। সিরিয়াল তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে গেলে প্রযোজনা সংস্থা বা চ্যানেলের বড়সড় আর্থিক ক্ষতি হয়। অনেক মানুষ রোজগারের সুযোগ হারান। ধারাবাহিকের ব্যর্থতা নিয়ে এত ট্রোলিং তাই একটা ভয়ঙ্কর অভিশাপের মতো, যেটা বহু ক্রিয়েটিভ মানুষকে, অভিনেতাদের বা লেখকদের ধাক্কা দেয়, যন্ত্রণা দেয়, ঠেলে দেয় অবসাদে। যাঁরা ট্রোল করেন, কেন করেন জানি না। এত মানুষ, এত জনের অন্নসংস্থান যে সিরিয়ালের সঙ্গে জড়িয়ে, তার প্রতি কি একটু শ্রদ্ধাশীল হওয়া যায় না? আশা করব যাঁরা সিরিয়াল না চললেই ট্রোলিংয়ের পথে হাঁটেন, তাঁদের একটু সুবুদ্ধি আসুক।"       
 
    


trptollywoodserial

নানান খবর

নানান খবর

লোকাল ট্রেনে একা পেয়ে চরম অশ্লীল প্রস্তাব! প্রভাসের নায়িকার বীভৎস অভিজ্ঞতা শুনে শিউরে উঠবেন

‘শহীদ’-এর পর এবার উজ্জ্বল নিকম? আমির সরে দাঁড়াতেই কেরিয়ারের সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্রে রাজকুমার?

খ্রিস্টান রীতিতে এবার বিয়ে করছেন কপিল! কিন্তু বৌ কি নিজের না অন্যের?

রোহিত শেট্টি অ্যাকশন থ্রিলারে যিশু সেনগুপ্ত! প্রথমবার জুটি বেঁধে কোন গল্প বলবেন পরিচালক-অভিনেতা?

‘কৃষ ৩’তে প্রধান খলনায়ক হতে পারতেন অজয়! কেন রাজি হলেন না? জানলে চমকে যাবেন!

দ্বিতীয় বিয়ের দেড় বছরের মধ্যেই বাবা হলেন সৌম্য চক্রবর্তী, পুত্র না কন্যা সন্তান এল গায়কের ঘরে?

আটকে গেল সলমন অভিনীত প্রথম বায়োপিক! বিয়ে না করেই ৪৯ বছরে অন্তঃসত্ত্বা আমিশা? 

বেনারসে ঘনাল বিভীষিকা! 'বাপি-প্রমথ'কে নিয়ে কোন রহস্যভেদে 'একেন বাবু'? টিজারেই উঠল কৌতূহলের ঢেউ

ফিরছে অপরাজিতা-প্রিয়াঙ্কার জুটি, মা-মেয়ের কোন অজানা গল্পে ডুব দেবেন দুই অভিনেত্রী?

শেষ হল 'দেবী চৌধুরানী'র পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ, কবে আসছে বড়পর্দায়? কী জানালেন শুভ্রজিৎ মিত্র?

শাহরুখ-সুহানার রাজপাটে বাজিমাৎ করতে আসছেন আরশাদ! ‘কিং’-এর গোপন অস্ত্রটা কি আসলে তিনি-ই?

রাখি গুলজারের পোশাক ছিঁড়তে গিয়েছিলেন রঞ্জিত! জানতে পেরেই কোন কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল তাঁর পরিবার?

Exclusive: ৬০ পেরিয়ে সাতপাকে দিলীপ! ‘দাম্পত্য কীভাবে সামলাবেন ভাবলেই মজা লাগছে’ শুভেচ্ছা জানালেন দীপঙ্কর-দোলন

'কেশরী ২'-তে অক্ষয়ের অভিনয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ টুইঙ্কেল, গর্বে উচ্ছ্বসিত হয়ে কী বললেন 'খিলাড়ি' পত্নী?

‘তারকা’ হলে কী হবে, পারিশ্রমিক না কমালে কাজ পাবেন না! কোন তারকাদের সতর্কবার্তা সুজিতের?

সোশ্যাল মিডিয়া