শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর
Kaushik Roy | ৩১ জানুয়ারী ২০২৫ ১৬ : ২৭Kaushik Roy
কৌশিক রায়
দিনটা ছিল ১৯৯৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। সেবার আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার থিম কান্ট্রি ছিল ফ্রান্স। মেলার ষষ্ঠদিনে ভয়াবহ আগুন লাগে মেলা চত্বরে। জানা যায়, সেই আগুনের ছাই উড়ে গিয়েছিল হাওড়া পর্যন্ত, ভয়াবহতা ছিল এতটাই। আগুনের গ্রাসে ছারখার হয়ে গিয়েছিল কোটি কোটি টাকার বই। দমকল কর্মীদের তৎপরতায় নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল সেই আগুন। ঘটনার পাঁচ দিন পর ফের শুরু করা গিয়েছিল বইমেলা। ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে ২৮ বছর। সেই ঘটনার কথা অনেকে ভুলে গেলেও আজও তা টাটকা হয়ে রয়ে গিয়েছে দমকল কর্মীদের মনে। বর্তমানে করুণাময়ীর কাছে বইমেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় কলকাতা বইমেলা।
অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা এখন আগের চেয়ে অনেক আধুনিক হয়েছে। রান্নার জায়গা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মেলা চত্বরের বাইরে। কিন্তু এত আধুনিক সরঞ্জাম, প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখছেন না দমকল কর্মীরা। আমজনতার কাছে বইমেলা ঘোরার জায়গা হলেও দমকল কর্মীদের কাছে এটা অতিরিক্ত দায়িত্ব। দুর্গাপুজো, বড়দিন সহ বিভিন্ন উৎসবের মতো কলকাতা বইমেলাও দমকল বাহিনীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেলায় ঢুকে যেদিকেই যান না কেন গোটা মাঠ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ডিউটি করতে দেখা যাবে কর্মীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই কয়েকটা দিন কোনও ছুটি নেই, উল্টে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ডিউটি করতে হচ্ছে একদিকে বইমেলা অন্যদিকে অফিসেও।
সম্প্রতি, শহর কলকাতায় বেশ কিছু অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফলে, বইমেলায় কড়া নিরাপত্তা থাকলেও নজরে রাখতে হচ্ছে বাকি শহরকেও। কলকাতা বইমেলার পাঁচ নম্বর গেটের ঠিক সামনে রয়েছে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের অফিস। সেখানে নিরাপত্তায় রয়েছেন পাপাই শীল এবং বিশ্বজিৎ বসু নামে দুজন দমকল কর্মী এবং তাঁদের সঙ্গে রয়েছে একটি ফায়ার ব্রিগেড বাইক। দু’জনেই এসেছেন গরিফা দমকল স্টেশন থেকে। মেলার কারণে আগামী বারোদিন এখানেই পোস্টিং। আজকাল ডট ইনকে বিশ্বজিৎ জানালেন, ‘আমরা দু’জনেই এসেছি গরিফা থেকে। বইমেলার কয়েকটা দিন আমাদের এখানেই ডিউটি। আমি নিজে টানা চার বছর এখানে ডিউটি করছি। মেলার সময় যাদের ডিউটি সবাইকে স্ট্যান্ড বাই থাকার নির্দেশ দেওয়া থাকে’। মেলার সময় নিশ্চয়ই চাপ থাকে কাজের?
পাপাই বাবু জানালেন, ‘এই কয়েকটা দিন আমাদের কোনও ছুটি থাকে না। সকাল ন’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত বইমেলার ডিউটি। তারপর অফিসে গিয়ে ডিউটি। ২৪ ঘণ্টা হয়ে গেলে তারপর আবার পরের দিনের ডিউটি। এভাবেই চলবে এই কয়েকটা দিন’। একদিকে যেমন রান্নার জায়গা তেমনই বই মানেই কাগজের ছড়াছড়ি। আগের অভিজ্ঞতা থেকে সাবধান হয়ে সবসময় কড়া নজর রাখতে হয় দমকল কর্মীদের। আর গোটা বিষয়টা নজরে রাখতে মেলার সাত নম্বর গেটের কাছে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সিসিটিভি নজরদারি সহ সেখানে দাঁড় করানো রয়েছে ফায়ার টেন্ডারও। উত্তর কলকাতার ডিস্ট্রিক্ট ফায়ার অফিসার টি.কে দত্ত নিজে নজর রাখছেন পরিস্থিতির ওপর।
আজকাল ডট ইনকে তিনি জানালেন, ‘গোটা মেলা চত্বরে প্রায় ১৩৫ জন কর্মী উপস্থিত রয়েছেন। যাঁরা ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করছেন। ইনস্পেক্টর ব়্যাঙ্কের অফিসাররা নজর রাখছেন সবসময়। ১২টা বাইক, ৬টা গাড়ি এবং পিছনের ঝিলের সঙ্গে পাম্পের সংযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। যদি কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে যায় সেক্ষেত্রে যাতে জলের কোনও অভাব না ঘটে। তাছাড়া বইমেলার নিজস্ব পাম্প এবং ৩২টা হাইড্রেন পয়েন্ট সবসময় চালু থাকে। প্রত্যেকটা হাইড্রেন পয়েন্টে আমাদের কর্মীরা ২৪ ঘণ্টা প্রহরায় রয়েছেন। তবে শুধু আগুন নয়, যেকোনও বিপর্যয়ের মোকাবিলার ক্ষেত্রেই আমাদের কর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন। সম্প্রতি, কুম্ভমেলায় একটা পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেরকম কোনও ঘটনা বা কোনও স্টল ভেঙে পড়ার মত ঘটনা ঘটলে তা সামাল দেওয়ার জন্য আপতকালীন সরঞ্জাম রয়েছে আমাদের কাছে’।
#বইমেলা#kolkata book fair#kolkata news
বিশেষ খবর
নানান খবর
নানান খবর
৩৬৫ দিন হাতে সময়, তা সত্ত্বেও জানুয়ারি মাসের শেষেই কেন হয় কলকাতা বইমেলা? জেনে নিন নেপথ্যের সেই বিশাল রহস্য ...
কলকাতা বইমেলায় হারিয়ে গেলে একদমই প্যানিক নয়, সহজ উপায় বাতলে দিল গিল্ড, কী জানাচ্ছে কর্তৃপক্ষ?...
ট্রেলার লঞ্চ, বই প্রকাশে জমে উঠেছে কলকাতা বইমেলা, বেলা বাড়ার সঙ্গে ভিড় বাড়াচ্ছেন বইপ্রেমীরা...
বইমেলার শুরুর দিন, সপ্তাহের মাঝেও ভিড়-কেনাকাটা-সেলফিতে রঙিন ...
‘বইমেলায় কেনা বই কি বদলানো যায় বইমেলার পরেও’? মেলা চলতে চলতেই ঝটপট জেনে নিন প্রশ্নের উত্তর...
কে কোথায় দাঁড়িয়ে? কোন স্টলই বা কোথায়? এই পদ্ধতি মানলে বইমেলায় হারাবেন না মোটেই...
প্রাক্তন মুখ্যসচিবের বই প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর...
ডিজিটালের যুগেও বইমেলায় রেকর্ড ভাঙা ভিড় হতে পারে, উদ্বোধনে এসে বললেন মমতা ...