আজকাল ওয়েবডেস্ক: 'এক দেশ, এক ভোট'-এর প্রস্তাবে সায় দিল মোদি মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাবে সায় দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন সংসদে এই সংক্রান্ত বিল পেশ করতে পারে কেন্দ্র। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কমিটি 'এক দেশ, এক ভোট' সংক্রান্ত রিপোর্ট অনুমোদন করেছিল। বিশদে আলোচনার জন্য বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসিতে-ও পাঠানো হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি এবং মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার এবিষয়ে বলেন, মন্ত্রিসভায় পাশ করলেও এই সিদ্ধান্ত আইনে পরিণত করা সম্ভব নয়। কারণ এর জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে যা সম্পূর্ণ অসম্ভব। এক দেশ এক ভোট আরএসএস এবং বিজেপির যৌথ প্রচেষ্টা। যার মাধ্যমে তারা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোটাই পরিবর্তন করে দিতে চাইছে। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদির স্লোগান ছিল ‘অগলি বার’ ৪০০ পার। তারা ভেবেছিল সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এই বিষয়টিকে আইনে পরিনত করে দেবে। যা সম্ভব হয়নি। এই মুহূর্তে কেন্দ্রের সরকার একটি নড়বড়ে জোট সরকার।
কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, এটা সম্পূর্ণ একটি আকাশকুসুম পরিকল্পনা। তার কারণ একসঙ্গে ভোট করাতে গেলে যত বুথের প্রয়োজন পড়বে তত সংখ্যক বুথ তৈরি করা সম্পূর্ণ অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, এর জন্য দরকার বিরাট পরিমান লোকবল। তা সে নিরাপত্তাকর্মী হোন বা ভোটকর্মী হোন। যেটা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।
আরএসপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, আরএসএস এবং বিজেপি তাদের উদ্দেশ্যের দিকে এক পা এগোল বলে মনে করছে। কিন্তু বাস্তবে এটা সম্ভব নয়। কারণ একসঙ্গে দুটো বা তিনটে রাজ্যের নির্বাচন করাতে গিয়ে যে কী অবস্থা হয় সেটা ইতিমধ্যেই ভারতবাসী প্রত্যক্ষ করেছে।
বহুদিন ধরেই 'এক দেশ, এক ভোট'-এর পক্ষে সওয়াল করে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কেন্দ্রের যুক্তি, এর ফলে নির্বাচন করার বিপুল খরচে রাশ টানা যাবে। যেমন সরকারের খরচ কমবে, তেমন রাজনৈতিক দলগুলিরও খরচ কমবে। বারবার নির্বাচনের জন্য সরকারি কাজকর্ম, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে থমকে যায়। একসঙ্গে ভোট হলে তা কমে যাবে। ভোটকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীদের খাটুনিও কমবে। একসঙ্গে বিধানসভা এবং লোকসভার ভোট হলে ভোটের হার বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। রাজনৈতিক দলগুলিও সারাবছর ভোটপ্রচারের ঝক্কি না থাকায় মানুষের কাজে অনেক বেশি মনোনিবেশ করতে পারবে।
