বৃহস্পতিবার ১৬ জানুয়ারী ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

দেশ | গণতন্ত্র রক্ষায় সফল ভারত, কেন পারছে না বাংলাদেশ?

RD | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭ : ৩৬Rajit Das


স্বাধীনতার ৭৫ বছর পার করেছে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বয়স ৫০ বছর। বহু ভারতীয়র প্রশ্ন, গণতন্ত্র ধরে রাখতে ভারত সফল হলেও কেন পারছে না তার পড়শি দেশটি? কেন বারে বারে বাংলাভাষী এই রাষ্ট্রে সামরিক শাসন জারি করতে হয়? 

ঔপনিবেশিক শাসন থাকা সত্ত্বেও স্বাধীনতার পর ভারত পরিচালনায় তার কোনও কুপ্রভাব তেমনভাবে পড়েনি। তর্কের খাতিয়ে যদি ধরে নেওয়া হয় যে, বহু জাতি, ভাষা এবং সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় সমাজে গণতন্ত্রের যেকোনও ধরনই আগোছালো- তবে ভারতীয়দের বাহবা দিতেই হবে। 

ডজন ডজন বিষয়ের প্রকেষিতে এই তুলনা চলে। তবে প্রশ্ন, আমরা কি এখানে কমলার সঙ্গে আপেলের তুলনা করছি? যদি তাই হয়, তাহলে ফলাফল হতে পারে যে কমলা ভালো। কিন্তু এভাবে বেশিরভাগ সংবেদনশীল তুলনাই দুর্বলতা দোষে দুষ্ট। পদ্ধতির ত্রুটির কারণেই এক্ষেত্রে, বাংলাদেশকে খুব খারাপ আলোতে দেখা হবে। যাই হোক না কেন, আমরা যদি আমাদের পদ্ধতিগত অস্বস্তিকে মুহুর্তের জন্য একপাশে রেখে তুলনাটি ফের দেখি, তাহলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে নিম্নলিখিতগুলি বিবেচনা করতে পারি। 
 
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগের সময়, বৃহত্তম উত্তরসূরি দেশ হিসাবে ভারত বেশিরভাগ বেসামরিক পরিকাঠামো এবং সম্পদে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু পাকিস্তান এবং ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশ সেভাবে এই ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ ছিল না। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং সম্পদের দিক থেকেও, ভারতের সুবিধা ছিল, যার ফলশ্রুতিতে ভারত তার নেহেরু পরিচালিত নীতির মাধ্যমে একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি করতে পেরেছিল। নবগঠিত ভারত এই মধ্যবিত্ত শ্রেণির আকাঙ্খা পূরণে কর্মসংস্থান দিতে সক্ষম হয়েছিল। শিল্প, রেল, উদীয়মান গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং পরে ক্রমবর্ধমান বাজার-চালিত কর্পোরেট বিশ্বে ভারতীয়দের কর্মসংস্থান আশীর্বাদস্বরূপ।

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল- হিন্দুরা প্রতিযোগিতার বাজার থেকে সরে দাঁড়াবে বলে যেসব মুসলিম অভিজাতরা ভারত থেকে তৎকালীন পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন, তাঁরা দ্রুত জানতে পেরেছিলেন যে- এইসব নয়া দেশে সামরিক বাহিনী ছাড়া রাষ্ট্রে শ্রেণী অগ্রগতির বহু পথ রুদ্ধ। শিল্প বিকাশের দুর্বলতা, পেশায় বৈচিত্র্যের অভাব এবং পণ্য ও পরিষেবার পরিকাঠামো তৈরির চেয়ে আমদানিতে বেশি আগ্রহী ছিল রাষ্ট্র নেতৃত্ব। ফলস্বরূপ, সামরিক বাহিনী সেসব দেশের অভিজাত স্বার্থের একমাত্র স্বার্থবহনকারী হয়ে ওঠে। এই কারণেই সামরিক প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিকভাবে অভিজাতদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। আমরা যদি স্বাধীনতার পরে দীর্ঘ সময় ধরে সামরিক শাসনের মধ্য দিয়ে যাওয়া রাষ্ট্রগুলির প্রকৃতি বিবেচনা করি তবে এটি আরও স্পষ্ট হয়। বাংলাদেশ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের উত্তরাধিকারী, এছাড়াও পাকিস্তানি দমন-পীড়নের উত্তরাধিকারী। ফলে জন্মগতভাবেই বাংলাদেশ গণতন্ত্রবিরোধী হওয়ার দিকে এগিয়েছে।

বিপরীতে, আগেই সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভারতীয় অভিজাত এবং মধ্যবিত্তদের শ্রেণীস্বার্থ প্রকাশের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর উপর নির্ভর করতে হয় না। অপর্যাপ্ত হলেও সুযোগের আধিক্য মধ্যবিত্তদের জন্য বিভিন্ন পেশা এবং বৃত্তির বিভিন্ন দিক অন্বেষণে কার্যকর হয়েছে। ভারতীয়রা আশাহত হননি। রাজনৈতিক প্রশাসনের প্রতি সামরিক বাহিনীর অধীনতা (বেশ কিছু দুর্বলতা সত্ত্বেও) একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভারতীয় নেতাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে ভাষা, ধর্ম, বর্ণের পার্থক্য সত্ত্বেও সংসদীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশাল বৈচিত্র্যকে একসুতোয় বাঁধার রাজনৈতিক ক্ষমতা কায়েম হয়েছে। বহু ভাষা, শ্রেণি, ধর্ম, বর্ণের স্তরবিন্যাস ভারতীয় গণতন্ত্রকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতেই দ্রুত একবার আফ্রিকা মহাদেশের দিকে তাকানো যাক। দেশগুলি দীর্ঘ ঔপনিবেশিক দমন-পীড়ন থেকে শক্তিশালী ঔপনিবেশিক বিরোধী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিল। সেসব দেশের সংগ্রামের দরুন একাধিক ক্যারিশম্যাটিক নেতা বিশ্ব-দরবারে পরিচিতি পেয়েছিল। তাঁদের সঙ্গে ছিল জনসমর্থন। কিন্তু তাঁরাই শেষ পর্যন্ত শাসন ব্যবস্থাকে স্বৈরাচারে পরিণত করেছিল। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের লাভকে অস্বীকার করেছিল। অতএব আমরা এই উপসংহারে পৌঁছাতে পারি যে, গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ট্র্যাক রেকর্ড ভারতের সঙ্গে তুলনীয় নয়। তবে, ঔপনিবেশিক শাসন থেকে উদ্ভূত বিশ্বের অন্যান্য অংশের দেশগুলির সঙ্গে তুলনা করলে তা হবে ন্যায্য। 

উপমহাদেশ আমাদের সকলের জন্য একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ শিক্ষা। রাজনৈতিক অভিজাতরা রক্ষণশীলতাকে ভিত্তি করে প্রচোলিত ব্যবস্থাকে রক্ষার চেষ্টা চালাবে। এইভাবে স্থিতিশীলতা বজায়ের চেষ্টা চলবে। এক্ষেত্রে ধর্মই হবে সেরা কৌশল। তবে,সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে ভালোভাবে পরিচালিত হলে অর্থনীতি ও সমাজের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলায় ক্ষমতা আছে। প্রকৃত বিপদসমুহ যেমন- কর্মসংস্থান, খাদ্য, আশ্রয় এবং সুযোগের অভাব থাকলেও ভিন্নমতকে বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত করে। এর মধ্যেই জনগণের সবচেয়ে বড় শত্রু এবং গণতন্ত্রকে ভেঙে ফেলার সবচেয়ে বিপজ্জনক অস্ত্রকে খুঁজে বের করতে হবে। বাংলাদেশের দুর্দশা সাম্প্রদায়িক অবস্থানের কারণে। আমরা যদি সতর্ক না হই তবে এই অবস্থা আমাদেরও হতে পারে। সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার মড়ক আমাদের আঁকড়ে ধরলে ঘোর বিপদ। কারণ আমরা কখনই যেন ভুলে না যাই যে, সার্বভৌমত্ব আমাদের আলাদা করেছে, কিন্তু বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে আমরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত।

(লেখক পরিচিতি- শ্রী সুরজিৎ সি মুখোপাধ্যায়, ডিন - স্কুল অফ সোশ্যাল সায়েন্স, সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি)

 


#Bangladesh#UnrestBangladesh#India#IndianDemocracy#Lookback2024



বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর

হিন্ডেনবার্গের ঝাঁপ বন্ধ হতেই হিমেল হাওয়া, কোথায় গিয়ে পৌঁছল আদানির শেয়ার ...

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীদের জন্য সুখবর, বেতন বৃদ্ধিতে বড় পদক্ষেপ মোদি সরকারের...

'দ্রুত আমার শাশুড়ির মৃত্যু হোক', প্রণামী বাক্স খুলতেই ২০ টাকার নোটে মৃত্যু কামনা! দেখেই তাজ্জব পুরোহিত...

পার্সোনাল লোন নিয়ে চিন্তা করছেন, আধার কার্ডেই লুকিয়ে রয়েছে সমাধান...

দুইয়ের কম সন্তান হলে আর মিলবে না ভোটের টিকিট! তোলপাড় ফেলা প্রস্তাব চন্দ্রবাবুর...

মাত্রাছাড়া দূষণ দিল্লিতে, একগুচ্ছ গাড়ি নিষিদ্ধ রাজধানীতে, তালিকা দেখে নিন এখনই ...

নদীতে আগুন! কালো ধোঁয়ায় ঢাকল শহর

ভুল করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ টাকা, টের পেতেই কী করলেন কৃষক?...

মোদির সামনে মাথা হেঁট হল জুকারবার্গের, বলা কথা গিলে ক্ষমা চাইলেন ফেসবুক প্রধান ...

১ টাকার নোট থেকে পেতে পারেন ৭ লক্ষ টাকা, কীভাবে জেনে নিন...

মনোবিদের বিরুদ্ধে কাউন্সেলিং করার অছিলায় ধর্ষণের অভিযোগ!...

'পুষ্পা ২'র গানে চুটিয়ে নাচ বৃদ্ধ দম্পতির, ভাইরাল ভিডিও দেখে মুগ্ধ নেটিজেনরা...

তিন মিনিটের জন্য মৃত্যু, জেগে উঠতেই যে কাহিনি শোনালেন তাতে ভিরমি খেতে হবে!...

আর রেখে-ঢেকে নয়, 'ইন্ডিয়া' জোট নিয়ে এবার সবচেয়ে বড় সত্যিটা খোলসা করে ফেললেন শরদ পাওয়ার ...

উধাও শীত, আসছে বৃষ্টি, কোন রাজ্যগুলিতে সতর্ক করল হাওয়া অফিস জেনে নিন এখনই...



সোশ্যাল মিডিয়া



12 24