বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

দেশ | গণতন্ত্র রক্ষায় সফল ভারত, কেন পারছে না বাংলাদেশ?

RD | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭ : ৩৬Rajit Das


স্বাধীনতার ৭৫ বছর পার করেছে ভারত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বয়স ৫০ বছর। বহু ভারতীয়র প্রশ্ন, গণতন্ত্র ধরে রাখতে ভারত সফল হলেও কেন পারছে না তার পড়শি দেশটি? কেন বারে বারে বাংলাভাষী এই রাষ্ট্রে সামরিক শাসন জারি করতে হয়? 

ঔপনিবেশিক শাসন থাকা সত্ত্বেও স্বাধীনতার পর ভারত পরিচালনায় তার কোনও কুপ্রভাব তেমনভাবে পড়েনি। তর্কের খাতিয়ে যদি ধরে নেওয়া হয় যে, বহু জাতি, ভাষা এবং সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় সমাজে গণতন্ত্রের যেকোনও ধরনই আগোছালো- তবে ভারতীয়দের বাহবা দিতেই হবে। 

ডজন ডজন বিষয়ের প্রকেষিতে এই তুলনা চলে। তবে প্রশ্ন, আমরা কি এখানে কমলার সঙ্গে আপেলের তুলনা করছি? যদি তাই হয়, তাহলে ফলাফল হতে পারে যে কমলা ভালো। কিন্তু এভাবে বেশিরভাগ সংবেদনশীল তুলনাই দুর্বলতা দোষে দুষ্ট। পদ্ধতির ত্রুটির কারণেই এক্ষেত্রে, বাংলাদেশকে খুব খারাপ আলোতে দেখা হবে। যাই হোক না কেন, আমরা যদি আমাদের পদ্ধতিগত অস্বস্তিকে মুহুর্তের জন্য একপাশে রেখে তুলনাটি ফের দেখি, তাহলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে নিম্নলিখিতগুলি বিবেচনা করতে পারি। 
 
১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগের সময়, বৃহত্তম উত্তরসূরি দেশ হিসাবে ভারত বেশিরভাগ বেসামরিক পরিকাঠামো এবং সম্পদে পরিপূর্ণ ছিল। কিন্তু পাকিস্তান এবং ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশ সেভাবে এই ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ ছিল না। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং সম্পদের দিক থেকেও, ভারতের সুবিধা ছিল, যার ফলশ্রুতিতে ভারত তার নেহেরু পরিচালিত নীতির মাধ্যমে একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি করতে পেরেছিল। নবগঠিত ভারত এই মধ্যবিত্ত শ্রেণির আকাঙ্খা পূরণে কর্মসংস্থান দিতে সক্ষম হয়েছিল। শিল্প, রেল, উদীয়মান গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং পরে ক্রমবর্ধমান বাজার-চালিত কর্পোরেট বিশ্বে ভারতীয়দের কর্মসংস্থান আশীর্বাদস্বরূপ।

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল- হিন্দুরা প্রতিযোগিতার বাজার থেকে সরে দাঁড়াবে বলে যেসব মুসলিম অভিজাতরা ভারত থেকে তৎকালীন পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন, তাঁরা দ্রুত জানতে পেরেছিলেন যে- এইসব নয়া দেশে সামরিক বাহিনী ছাড়া রাষ্ট্রে শ্রেণী অগ্রগতির বহু পথ রুদ্ধ। শিল্প বিকাশের দুর্বলতা, পেশায় বৈচিত্র্যের অভাব এবং পণ্য ও পরিষেবার পরিকাঠামো তৈরির চেয়ে আমদানিতে বেশি আগ্রহী ছিল রাষ্ট্র নেতৃত্ব। ফলস্বরূপ, সামরিক বাহিনী সেসব দেশের অভিজাত স্বার্থের একমাত্র স্বার্থবহনকারী হয়ে ওঠে। এই কারণেই সামরিক প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিকভাবে অভিজাতদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। আমরা যদি স্বাধীনতার পরে দীর্ঘ সময় ধরে সামরিক শাসনের মধ্য দিয়ে যাওয়া রাষ্ট্রগুলির প্রকৃতি বিবেচনা করি তবে এটি আরও স্পষ্ট হয়। বাংলাদেশ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের উত্তরাধিকারী, এছাড়াও পাকিস্তানি দমন-পীড়নের উত্তরাধিকারী। ফলে জন্মগতভাবেই বাংলাদেশ গণতন্ত্রবিরোধী হওয়ার দিকে এগিয়েছে।

বিপরীতে, আগেই সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভারতীয় অভিজাত এবং মধ্যবিত্তদের শ্রেণীস্বার্থ প্রকাশের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর উপর নির্ভর করতে হয় না। অপর্যাপ্ত হলেও সুযোগের আধিক্য মধ্যবিত্তদের জন্য বিভিন্ন পেশা এবং বৃত্তির বিভিন্ন দিক অন্বেষণে কার্যকর হয়েছে। ভারতীয়রা আশাহত হননি। রাজনৈতিক প্রশাসনের প্রতি সামরিক বাহিনীর অধীনতা (বেশ কিছু দুর্বলতা সত্ত্বেও) একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভারতীয় নেতাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে ভাষা, ধর্ম, বর্ণের পার্থক্য সত্ত্বেও সংসদীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশাল বৈচিত্র্যকে একসুতোয় বাঁধার রাজনৈতিক ক্ষমতা কায়েম হয়েছে। বহু ভাষা, শ্রেণি, ধর্ম, বর্ণের স্তরবিন্যাস ভারতীয় গণতন্ত্রকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতেই দ্রুত একবার আফ্রিকা মহাদেশের দিকে তাকানো যাক। দেশগুলি দীর্ঘ ঔপনিবেশিক দমন-পীড়ন থেকে শক্তিশালী ঔপনিবেশিক বিরোধী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছিল। সেসব দেশের সংগ্রামের দরুন একাধিক ক্যারিশম্যাটিক নেতা বিশ্ব-দরবারে পরিচিতি পেয়েছিল। তাঁদের সঙ্গে ছিল জনসমর্থন। কিন্তু তাঁরাই শেষ পর্যন্ত শাসন ব্যবস্থাকে স্বৈরাচারে পরিণত করেছিল। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের লাভকে অস্বীকার করেছিল। অতএব আমরা এই উপসংহারে পৌঁছাতে পারি যে, গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ট্র্যাক রেকর্ড ভারতের সঙ্গে তুলনীয় নয়। তবে, ঔপনিবেশিক শাসন থেকে উদ্ভূত বিশ্বের অন্যান্য অংশের দেশগুলির সঙ্গে তুলনা করলে তা হবে ন্যায্য। 

উপমহাদেশ আমাদের সকলের জন্য একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ শিক্ষা। রাজনৈতিক অভিজাতরা রক্ষণশীলতাকে ভিত্তি করে প্রচোলিত ব্যবস্থাকে রক্ষার চেষ্টা চালাবে। এইভাবে স্থিতিশীলতা বজায়ের চেষ্টা চলবে। এক্ষেত্রে ধর্মই হবে সেরা কৌশল। তবে,সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে ভালোভাবে পরিচালিত হলে অর্থনীতি ও সমাজের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলায় ক্ষমতা আছে। প্রকৃত বিপদসমুহ যেমন- কর্মসংস্থান, খাদ্য, আশ্রয় এবং সুযোগের অভাব থাকলেও ভিন্নমতকে বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত করে। এর মধ্যেই জনগণের সবচেয়ে বড় শত্রু এবং গণতন্ত্রকে ভেঙে ফেলার সবচেয়ে বিপজ্জনক অস্ত্রকে খুঁজে বের করতে হবে। বাংলাদেশের দুর্দশা সাম্প্রদায়িক অবস্থানের কারণে। আমরা যদি সতর্ক না হই তবে এই অবস্থা আমাদেরও হতে পারে। সাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার মড়ক আমাদের আঁকড়ে ধরলে ঘোর বিপদ। কারণ আমরা কখনই যেন ভুলে না যাই যে, সার্বভৌমত্ব আমাদের আলাদা করেছে, কিন্তু বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে আমরা একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত।

(লেখক পরিচিতি- শ্রী সুরজিৎ সি মুখোপাধ্যায়, ডিন - স্কুল অফ সোশ্যাল সায়েন্স, সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি)

 


#Bangladesh#UnrestBangladesh#India#IndianDemocracy



বিশেষ খবর

নানান খবর

বিনম্র শ্রদ্ধা #aajkaalonline #PranabMukherjee #BirthAnniversary

নানান খবর

‘‌স্বার্থপরের’‌ মতো স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অপব্যবহার করা হচ্ছে ৪৯৮এ, বলল সুপ্রিম কোর্ট ...

বৌয়ের দোষারপ আর শুনতে পারছিলেন না, অতুলের চরম পদক্ষেপ প্রশ্ন তুলছে দেশে ছেলেদের জন্য আইন কোথায়...

মহিলাদের হাতে আরও বেশি ক্ষমতা দিল এলআইসি, কীভাবে এর সুবিধা পাবেন...

পেনশন নিয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, কারা এর সুবিধা পাবেন ...

নগ্ন ছবি ফাঁস করার হুমকি, বিয়ের একমাস পরেই নিজেকে শেষ করলেন যুবক ...

এই রাজ্যের রেশন কার্ড হোল্ডাররা রান্নার গ্যাস পাবেন ৪৫০ টাকায়, জেনে নিন বিস্তারিত ...

ভুল গ্রুপের রক্ত দিল হাসপাতাল, মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে শিশু ...

বোমা রাখা বিমানে, শুরু তোলপাড়, খোঁজ করে মিলল নেপথ্যে গোয়েন্দা অফিসারের মস্করা! ...

ভাজাভুজি খেয়েও কমল ৩১ কেজি ওজন! যুবকের চেহারা দেখে চমকে গেলেন নেটিজেনরা ...

এটিএম নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত, কেন এমন করল আরবিআই

র‌্যাপিডো চালকের মাস গেলে রোজগার শুনবেন?‌ চমকে যাবেন আপনিও ...

এই পাঁচ ধরনের পানীয় তিলে তিলে ঠেলে দিতে পারে মৃত্যুর দিকে, কী কী এড়িয়ে চলবেন? ...

'এক দেশ-এক ভোট': বড় তোড়জোড় মোদি সরকারের

ভয়াবহ আগুন, প্রাণে বাঁচতে এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে ঝাঁপ পড়ুয়াদের, হাড়হিম কাণ্ড...

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নতুন গভর্নরের নাম ঘোষণা মোদী সরকারের, কে হচ্ছেন প্রধান? ...



সোশ্যাল মিডিয়া



12 24