শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

দেশ | আরব সাগরে বিসর্জন ঠাকরে সাম্রাজ্যের, ফল বোঝালো নরম উদ্ধবকে দিয়ে শিবসেনা চলবে না

Riya Patra | ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৫ : ৫৪Riya Patra


রিয়া পাত্র

বালা সাহেব ঠাকরে, লাল পোশাক, রুদ্রাক্ষের মালা। হিন্দুত্বের স্লোগান এবং মারাঠিদের স্বার্থরক্ষার দাবি সামনে রেখে ১৯৬৬-তে শিবসেনা গড়েছিলেন কার্টুনিস্ট ও রাজনৈতিক স্যাটায়ারিস্ট বালা সাহেব ঠাকরে। ব্যারিটোন ভয়েসে বলেছিলেন, মারাঠাভূমে মুখ্যমন্ত্রী যেই হোন, কন্ট্রোল থাকবে তাঁরই হাতে। হয়েছিলও তাই। শিবসেনা ভাঙনও দেখেছে বহুবার। তবু, যতদিন বালাসাহেব ছিলেন, ততদিন মারাঠারা তাকিয়ে ছিলেন তাঁর দিকে। কিন্তু ২০২৪-এর বিধানসভা ভোট মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে যেন ঠাকরের সাধের শিবসেনা একেবারে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ল, আর এক ঠাকরের হাত ধরে। ছেলে, ভাইপো, নাতি, কারও হাতে রইল না আর শিবসেনার রাশ। 


মারাঠাদের স্বার্থ রক্ষার কথা এবং উগ্র হিন্দুত্ববাদের কথা ছিল বালাসাহেবের তুরুপের তাস। তাঁর সময়েই বারবার ভাঙন এসেছে এই দলে এবং তার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল দলের উদ্ধবের গুরুত্ব বৃদ্ধি। শিবসেনা যে আদতে পরিবারকেন্দ্রিক,আঞ্চলিকতাবাদ এবং মৌলবাদ কেন্দ্রীক দল, সেই কথা মানতে সময় লেগেছিল অনেকের। ফলে পিতার পর পুত্র বা কন্যা দলে-ক্ষমতায় এলে অনেকক্ষেত্রেই যেটা হয়, তার অন্যথা হয়নি শিবসেনায়। উদ্ধব শিবসেনার অলিন্দে ঢুকতেই, দল ছাড়েন অনেকে। শুধু দলের নেতারা নয়, বালা সাহেবের পর যেখানে রাজ ঠাকরেকেই অনেকে উত্তরসুরী বলে ধরে নিয়েছিলেন, উদ্ধবের অবস্থান স্পষ্ট হতেই, বালাসাহেবের প্রায় ‘লুকঅ্যালাইক’ রাজও শিবসেনা ছাড়েন। ছগন ভুজবল, গণেশ নায়েক, সঞ্জয় নিরুপম থেকে রাজ ঠাকরে নানা সময়ে বালাসাহেবের হাত ছেড়েছেন অনেকেই। কিন্তু বালাসাহেবের শিবসেনার তীব্র হিন্দুত্ববাদকে তখনও টক্কর দিতে পারেনি বিজেপির হিন্দুত্ববাদ। 

সমস্যা হল ২০১২ পরবর্তী সময়। উদ্ধব রাজনীতিতে এসে, বাবার ছত্র ছায়ায় একের পর এক পদক্ষেপের দিকে হাঁটলেও, যেমন বালাসাবেহের মতো উচ্চ কন্ঠে কথা বলতে পারেননি, তেমনই জোর দিয়ে বোঝাতে পারেননি হিন্দুত্ববাদের কথা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর কুরশি থেকে বালাহাসেবের কন্ট্রোল যেতেই, শিবসেনার উপর থেকে কার্যত কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলেছিলেন উদ্ধব। যাঁরা তাঁকে মান্যতা করতেন, হয় বালাসাহেব পুত্র হিসেবে, অন্যথা তাঁর নরম আচরনের জন্য। কখনওই কেউ উদ্ধবের মধ্যে বালাসাহেবের তেজ খুঁজে পাননি। 

তার মাঝেও মারাঠাভূমের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন উদ্ধব। যদিও সেসবের মাঝে রাজনীতির মারপ্যাঁচ, আর সমঝোতা এমন ছিল, উদ্ধবকে অনেকেই ‘অ্যাক্সিডেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী’ বলে থাকেন। সেই অ্যাক্সিডেন্টাল মুখ্যমন্ত্রীকেও কুরশি ছেড়ে দিতে হয়েছিল অ্যাক্সিডেন্টলি। রাজ ঠাকরে থেকে একনাথ শিন্ডে, যাঁরা দল ছাড়লেন, ছাড়লেন ক্ষোভে, বিরক্তিতে, নিজেদের ক্ষমতার জন্য। কেউ বালাসাহেবের নামে অভিযোগ করলেন না বিন্দুমাত্র। ক্ষোভের কারণ হয়ে রয়ে গেলেন বাবার পরে শিবসেনার প্রধানের জুতোয় পা গলানো উদ্ধব। মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হল, বাবার তৈরি দলের নাম, প্রতীক নিয়ে একনাথ শিন্ডের সঙ্গে আদালতের লড়াই হল। লক্ষ্য ছিল এই ভোট। ভেবেছিলেন ফিরিয়ে নেবেন সব। 

এই ভোট মারাঠাভূমে ছিল দুই হিন্দুত্ববাদী দলের মধ্যে কোনও একটিকে বেছে নেওয়ার ভোট। এবার বিজেপির সঙ্গে জোটে শিন্ডের শিবসেনা, কিন্তু উদ্ধবের শিবসেনা আলাদা ছিল। এই ভোট যেমন মহারাষ্ট্রের রাজনীতির জটিল ভোট ছিল, তেমনই প্রেস্টিজ ফাইট ছিল উদ্ধবের জন্য এমনকি শরদ পাওয়ারের জন্যও। শনিবারের ফলাফল বলছে যেমন লোকসভা ভোটের ফলাফল উল্টে গেল মহারাষ্ট্রে, তেমনই ক্রমেই সেখানকার রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হওয়ার দিকে এগোল ঠাকরে পরিবারের শিবসেনা। ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস, উদ্ধবের শিবসেনা এবং শরদ পাওয়ারের এনসিপির আসন সংখ্যা পাঁচ ভাগের একভাগে দাঁড়াবে। 

তবে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার রাজনৈতিক সঙ্কট শুরু হয়েছে আরও কয়েকবছর আগে শিন্ডের আলাদা হয়ে যাওয়ার সময়েই। একনাথ শিন্ডে উদ্ধবের শিবসেনা থেকে লাদা হয়ে যাওয়ার কারোণ হিসেবে স্পষ্টতই জানিয়েছিলেন, শিবসেনা হিন্দুত্বের চিরাচরিত পথ থেকে সরে গিয়েছে অনেকটাই।  বালাসাহেবের যে তীব্র মৌলবাদ, মুলসিম বিরোধীতা ছিল তা উদ্ধব বজায় রাখেননি। যে বালাসাহেব ১৯৯১-এ পাকিস্তান-ভারতের ম্যাচ হতে দেবেন না বলে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের পিচ খুঁড়ে দিয়েছিলেন, ফিরোজ শাহ কোটলার পিচও কুপিয়ে দেন শিবসৈনিকরা। কিংবা রামমন্দির-সহ একাধিক বিষয়ে সমঝোতা করেছেন বিজেপির সঙ্গে, তাঁরই পুত্র যেন অনেকটাই লিবারেল হয়ে গেলেন শারদ পাওয়ারের এনসিপি আর কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে 'মহা বিকাশ আঘাড়ি' জোট সরকার গঠন করে। শিবসেনা যেন খুইয়ে ফেলল নিজেদের গরিমা, পরিচয়। বালাসাহেবের শিষ্য হিসেবে মেনে নিতে পারেননি একনাথ, তেমনই মেনে নিতে পারেননি অনেক শিবসৈনিকও। অনেকেই মনে করছেন, এই অপ্রাসঙ্গিকতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ সেই পরিবারতান্ত্রিকতা। বালা সাহেবের পর উদ্ধবের উত্থান যেমন ভাঙন ধরিয়েছিল, উদ্ধবের পর আদিত্যর উত্থানও ভাঙন ধরিয়েছে দলে। 

এই ভোটে উদ্ধব-সেনা প্রায় ১১ শতাংশ ভোট পেল, শিন্ডে সেনা কিছু বেশি শতাংশের হারে। কিন্তু বিজেপি জোটে, আসনের নিরিখে এগিয়ে অনেকটা। এই ফলাফলের পর, বালাসাহেবের শিবসেনার রাশ রইল না আর কোনও ঠাকরের হাতে। শুধু দলের নাম প্রতীক নয়, বালাসাহেবের পরিবার মারাঠাভূমে তাঁর রাজনৈতিক পরম্পরাটুকুও বজায় রাখতে পারল না।


#Bal Thackeray#Uddhav Thackeray#Aditya Thackeray#Maharashtra election#Shiv Sena



বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর

মানুষের আস্থা হেমন্তেই, শুধু প্রত্যাবর্তন নয়, ঝাড়খণ্ডে রেকর্ড শিবু-পুত্রের...

প্রথম ভোটেই এল জয়, রাহুলের রেকর্ড ভাঙলেন প্রিয়াঙ্কা ...

সমাজমাধ্যমে অনুরাগী ৬ লক্ষ, কিন্তু ভোটবাক্সে খালি, নোটার চেয়েও কম ভোট পেলেন 'বিগ বস' খ্যাত আজাজ...

উদ্ধার ১০০টিরও বেশি বাঁদরের মৃতদেহ, মৃত্যুর কারণ শুনলে চমকে উঠবেন...

নয় বছরে শেষ স্কুলের শিক্ষা, ১২ বছরে মাস্টার্স, ২১ বছরে পিএইচডি, ভারতের এই জিনিয়াসের জীবনকাহিনী শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে...

এবার থেকে হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস মেসেজকে রূপ দেওয়া যাবে টেক্সটের, কীভাবে ব্যবহার করবেন?...

ভারত-কানাডার কূটনৈতিক উত্তেজনা চড়ছে, এরপর কী হবে...

কোন দেশে পাসপোর্ট বানাতে খরচ সবচেয়ে বেশি? ভারতেই বা খরচ কত? দেখুন হিসাব...

ধাক্কা সামলে ফের নজরে আদানি, রক্তক্ষরণ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াল সেনসেক্সও...

বায়ুদূষণের মধ্যে নতুন রোগ ভয় ধরাচ্ছে দিল্লিতে, চিন্তিত চিকিৎসকরা...

নেপালের এই ব্যক্তি গাইতে পারেন ১৬০টি দেশের জাতীয় সঙ্গীত, শুনলে চমকে যেতে হবে...

সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে ওড়াল আদানি গ্রুপ, বিজেপি বলছে খামোখা মোদিকে বদনামের চেষ্টা...

একসঙ্গে ১৭,০০০ হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল কেন্দ্র, আপনার অ্যাকাউন্ট বিপদে নেই তো? জানুন বিস্তারিত…...

আদিবাসী তরুণীর মুখে মানুষের মল ঢুকিয়ে হেনস্থা, মধ্যযুগীয় নির্মম অত্যাচারের সাক্ষী থাকল ওড়িশা ...

পিকনিকে হুল্লোড়ের মাঝেই ঘটল বিপত্তি, ঘুরতে গিয়ে ডুবে মৃত্যু তিন পড়ুয়ার ...





রবিবার অনলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া



11 24