বৃহস্পতিবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

বিদেশ | ট্রাম্পের হাত ধরে জেগে উঠবে বাংলাদেশের আওয়ামী লিগ? ভারতের ক্ষেত্রেই বা কী হবে? ফলের পরেই শুরু জল্পনা

Riya Patra | ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ২১ : ০৬Riya Patra


মোরসালিম সেখ

 এক দেশের ভোট, ফল নিয়ন্ত্রণ করে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি, বদল ঘটায় অর্থ-সামাজিক অবস্থানেরও। দেশের নাম আমেরিকা হলে, প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। দ্বিতীয়বার মার্কিন মুলুকের মসনদে ট্রাম্প আসতেই শুরু অঙ্ক কষা। রাজনীতিবিদরা হিসেব কষছেন, কে কাছের, কে দূরের। লাভ কার, মাশুল দিতে হবে কাকে? 

 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাজনীতি বিষয় নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন তাঁরা একটি বিষয়ে অবগত যে, ভারত–মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের পারদ সর্বদা ওঠা নামা করেছে। তবে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ঠান্ডা যুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিশ্বায়নের প্রভাবে দুই উদারনৈতিক দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও বৈদেশিক সম্পর্ক অগ্রগতি হওয়ার দরুণ সম্পর্ক শক্ত হয়েছে। তবে নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর সময় ভারতের কূটনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্ক কেমন ছিল তা জানতে হলে আমাদের ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের সংস্কৃতি ও রাজনীতি জানা দরকার।

আমেরিকা সবসময় বিশ্বায়নের প্রধান উদ্যোক্তা হওয়ায় তারা বিনিয়োগকারী ব্যাংকার, শিল্পপতি ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এখানে কোনও নৈতিকতা বা গণতন্ত্র বা স্বাধীনতার মুখোশের ইস্তান নেই আছে শুধু  মুনাফা অর্জনের লক্ষ্য। তাই জেফারসনের 'এম্পায়ার অফ লিবার্টি' বা উদ্র উইলসনের নৈতিক কতৃত্বের কথা বাদ দিলেও বারাক ওবামার আমলে সংখ্যালঘুদের যেটুকু সৌহার্দ্য অবশিষ্ট ছিল সেগুলিকে বাদ দিয়ে চরম জাতীয়তাবাদী পদক্ষেপ আমেরিকার অবস্থানকে বিতর্কিত করেছিল। তবে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প এইচ১ বি ভিসার ব্যাপারে যে কঠোর অবস্থান নিতে শুরু করেন তাতে ভারত মার্কিন সম্পর্কের ছেদ পড়লেও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কারণ মোদি-ট্রাম্পের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন। এর স্পষ্ট ছাপ পড়ে তাদের নেওয়া ২০১৯ সালে “হাউডি মোদি” এবং২০২০ সালে”নমস্তে ট্রাম্প”-এর মতো সফ্ট পলিসিতে। 

 

দ্বিতীয় বারের জন্য মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রে ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার ফলে ভারতের বিদেশনীতিতে কী প্রভাব পড়বে সেটাই এখন দেখার। 

ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, বাণিজ্য নীতি, অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়ে তার অবস্থান, জ্বালানি বিষয়ক নীতি, জলবায়ু সম্পর্কিত নীতি এবং চিনের প্রতি তার মনোভাবের মতো একাধিক বিষয় ভারতকে প্রভাবিত করতে পারে। একইসঙ্গে প্রভাবিত করতে পারে বৈশ্বিক ভূ- রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকাকেও- তা সে পশ্চিম এশিয়ার সংকটের ক্ষেত্রে হোক বা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।

 

অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ভারতের সঙ্গে সে দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছিল প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং আঞ্চলিক উদ্যোগ। তাই ভাবা হচ্ছে যে পূর্বের ন্যায় হয়ত এবারও এই বিষয়গুলি প্রাধান্য পাবে। তবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের নীতি ভারতের পক্ষে নাও যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন অনেকে। সাম্প্রতিক এক প্রচার সভায় তিনি ভারত ‘আমদানি শুল্কের’ অপব্যবহার করে বলে অভিযোগ তুলেছেন এবং ‘রেসিপ্রোকাল ট্রেড’ চালু করার কথাও বলেছেন।

 

যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ‘চমৎকার মানুষ’ বলে প্রশংসা করতে শোনা গিয়েছে তাঁকে।

 

আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য, ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের জন্য কিছুক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন বাজারে চিনা আমদানি ঠেকাতে ভারতের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।

 

বর্তমান সময়ে চিনের প্রভাবকে স্থগিত করতে 'ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারতের গুরুত্ব, ভারতের কৌশলগত অবস্থান, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং সামরিক সক্ষমতার কারণে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বাঞ্ছনীয়। এর আরও একটা কারণ হলো চিন।'

 

ওই অঞ্চলে চিনের প্রভাবকে প্রশমিত করতে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশলগত অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ যা ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে আরও সম্পর্ক শক্ত হবে ।

 

 দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতকে তার সম্পর্ক ভালো রাখতেই হবে। ডিজিটাইজেশন নিয়ে ভারতের যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে এবং যে দিশাতে দেশ এগোচ্ছে সেই পথে হাঁটতে হলেও এই সম্পর্ককে ভালো রাখতে হবে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে দেখতে গেলে ভারতকে অস্বীকার করতে পারবে না তার কারণ ভারতের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং তথ্য প্রযুক্তিতে বলীয়ান কর্মক্ষমতা। আর এই কারণগুলির জন্যই দুই দেশই চাইবে সম্পর্ক ভালো রাখতে।

 

 

  তবে শুধু কি ভারত! বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতে জর্জরিত ও সম্মুখে নির্বাচন। কিছুটা হলেও বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের দিকে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অদৃশ্য হাত থাকলেও দক্ষিণ এশিয়ার ভূকৌশলগত দিক থেকে বাংলাদেশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচুর বাংলাদেশি অভিবাসী হিসাবে থাকেন, তাঁরা এবার চাপের মুখে পড়তে পারেন কারণ রিপাবলিকান দল প্রথম থেকেই এর বিরোধী। বাংলাদেশের প্রধান ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক দলের সুসম্পর্ক থাকার দরুণ স্বাভাবিক ভাবেই ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক শক্ত নয়। তাছাড়া ড: ইউনূস ফ্রান্সের এইচইসি প্যারিস নামের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৬ সালে বক্তব্য রাখার সময় ট্রাম্পের ক্ষমতা লাভকে “সূর্য গ্রহণ” বা অন্ধকার সময় “সমালোচনা করে বলেন যা হেকের ওয়েব সাইটে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু যখন শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটল তখন ট্রাম্প দাবি করেন বাংলাদেশে অরাজকতা চলছে, যা আওয়ামলীগের সঙ্গে মিলে যায়।তবে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর ছিল ট্রাম্পের ভোট প্রচারের সমাবেশে গুটি কয়েক বাংলাদেশিদের আগমন লক্ষ্য করা গেছে যারা আওয়ামীলিগ সমর্থক। তাই এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লিগের আবার নতুন করে জেগে উঠবে কি ট্রাম্পের হাত ধরে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

 

( লেখক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের গবেষক। এই লেখায় সমস্ত মত লেখকের ব্যক্তিগত। সেই মতের দায়িত্ব আজকাল ডট ইনের নয়)


#US Election# US election 2024#Bangladesh# India# Sheikh Hasina#



বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর

স্ত্রীয়ের মৃত্যুর ক’দিন পর ফের করা যাবে বিয়ে, হত্যাকারী স্বামীর গুগল সার্চ দেখে শিওরে উঠল পুলিশ...

রাশিয়ার আকাশে উজ্জ্বল আলো, গোটা এলাকা জুড়ে আতঙ্ক...

শেখ হাসিনা সরকারই বাংলাদেশের সব ধ্বংস করেছে, এবার পাল্টা দাবি ইউনূসের ...

অশান্ত সময়ে জেল পালানো ২২০০ বন্দির মধ্যে ৭০০ জন এখনও পলাতক, জানাল বাংলাদেশ সরকার...

জাপানের প্রযুক্তি তাক লাগিয়ে দিল বিশ্বকে, প্রতি ঘরে এবার তৈরি হবে শক্তি...

কমিউনিস্ট প্রভাব থেকে মুক্তিই লক্ষ্য? তাই কি দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে জারি সামরিক শাসন? ...

মৃতদেহ নিয়ে ধ্যান! সন্ধান মিলল ৭৩টি মৃতদেহের, হাড়হিম করা কাণ্ড বৌদ্ধ মঠে...

১৯৯২ সালে আজকের দিনে পাঠানো হয়েছিল প্রথম এসএমএস, কী লেখা ছিল সেই বার্তায়?...

গতে বাধা জীবনে বিরক্ত, একঘেয়েমি কাটাতে নিজের বিরুদ্ধেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি যুবকের...

কতবার খসে পড়ে এই প্রাণীর লেজ, জানলে চোখ কপালে উঠবে ...

রিলস দেখতে গিয়ে সময়জ্ঞান নেই! আপনার 'ব্রেন রট' হয়নি তো? কী বলছে অক্সফোর্ড অভিধান? ...

এই ধনকুবেরের সংগ্রহে রয়েছে ৭০০০টি গাড়ি, রয়েছে ৬০০ রোলস রয়েস, ২৫টি ফারারি...

আদর খাচ্ছে ছোট্ট কিং কোবরা, ভিডিও দেখলে গা শিউরে উঠবে...

ছুটির দিনে ডেকেছিলেন বস, কাজের শেষে কেনা লটারির টিকিটে ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেল এই কর্মীর...

মহাকাশে অন্য গবেষণায় ব্যস্ত সুনীতা উইলিয়ামস! চাষ করছেন লেটুস, তবে খাওয়ার জন্য নয়...



সোশ্যাল মিডিয়া



11 24