বৃহস্পতিবার ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Sumit | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭ : ৫৮Sumit Chakraborty
মিল্টন সেন,হুগলি : কাজে কখনও ফাঁকি নেই। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক সামলাচ্ছেন। আবার সময় মতো থানার কাজ করছেন। কাজের অবসরে চালাচ্ছেন পাঠশালা। যদিও পাকাপোক্ত নয়, তাঁর পাঠশালা তৈরি পাটকাঠি দিয়ে। তবু সেই পাঠশালায় পড়ুয়ার সংখ্যা নিতান্তই কম নয়। এভাবেই সারাদিন কাজ কর্ম আর অবসর সময়ে শিক্ষিত সমাজ গড়ার করে লড়াইয়ে মগ্ন পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার হীরালাল সরকার।
ধীরে ধীরে ছোটদের এই পাঠশালা সমগ্র বলাগড়ে হীরার পাঠশালা নামে খ্যাতি অর্জন করেছে। আর হীরার সেই পাঠশালায় স্বচ্ছন্দে শিখছে পড়ছে ছোটোরা। আর বলাগড়ের এই সিভিক ভলেন্টিয়ারের উদ্যোগে যথার্থই খুশি হুগলি গ্রামীণ পুলিশ। এদিকে শিক্ষক হীরালালের হাত ধরে ভালো করে শেখার সুযোগ পেয়ে খুশি কচিকাঁচারা।
সকাল থেকে হীরালালকে দেখা যায় হুগলির বলাগড় ব্লকের নাটাগরে এস টি কে কে রোডের উপর। প্রতিদিন নিয়ম করে তাঁকে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ত্ব, অর্থাৎ ট্রাফিকের দায়িত্ব সামলাতে হয়। রোদ, ঝড়, জল উপেক্ষা তাঁকে দেখা যায় রাস্তার যান নিয়ন্ত্রণ করতে। দায়িত্ত্ব নিয়ে মানুষকে রাস্তা পারাপার করতে সাহায্য করেন হীরালাল।
বলাগড় ব্লকের নাটাগড় মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত একটি গরীব গ্রাম হিসেবেই পরিচিত। সেখানকার বাসিন্দাদের অধিকাংশই ক্ষেতমজুর বা চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। তাই স্বল্প রোজগারে গ্রামবাসীদের অধিকাংশেরই গৃহশিক্ষক রাখার সমর্থ্য নেই। নিষ্ঠার সঙ্গে সেই গৃহশিক্ষকের অভাব পূরণ করেন হীরালাল। দীর্ঘ দিন ধরে বিনামূল্যে পড়ুয়াদের পাঠদান করেন সিভিক ভলেন্টিয়ার হীরা। আর সেই শিক্ষা দানের জন্য রাস্তার পাশে পাটকাঠির বেড়া দিয়ে তৈরি করেছেন একটি চালা ঘর। প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার আগে প্রায় ২০ জন পড়ুয়া আসে ওই পাঠশালায়। তার কাছে তালিম নিয়ে তার পর যায় স্কুলে।
ঘণ্টা দেড়েক খুদে পড়ুয়াদের লেখাপড়া শেখানোর পর তাদের হাত ধরে রাস্তা পার করে স্কুলেও পৌঁছে দেন। এটা তার নিত্য দিনের কাজ। বর্তমানে নাটাগড়ে পাটকাঠির ওই চালা ঘর, হীরার পাঠশালা নামে পরিচিতি লাভ করেছে। হীরার পাঠশালায় মিড-ডে মিল না থাকলেও, পড়া শেষে পড়ুয়াদের জন্য থাকে বিস্কুট আর লজেন্স। আর তাতেই খুশি পড়ুয়ারা। বিস্কুট লজেন্স পেয়ে আনন্দে আত্নহারা খুদেরা হীরার হাত ধরে পৌঁছে যায় স্কুলে। সেখানে দুপুরে মিড-ডে মিল। এভাবেই চলে পড়াশোনা।
২০১০ সালে বলাগড় কলেজ থেকে বিএ পাস করেন হীরালাল সরকার। এরপর হুগলি গ্রামীণ পুলিশের বলাগড় থানার সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাজে যোগ দেন। সকালে ট্রফিকের দায়িত্ব সামলাতে হয়। থানাতেও কাজ থাকে। সব মিটিয়ে বিকেলে বাবার সবজির দোকানে কাজ করতে হয়। তার মাঝেই পাঠশালা। তবে বরাবরই নিজের দায়িত্ব কর্তব্যে অবিচল হীরা এক সময় ভালো ক্রিকেট খেলত।
হীরার পাঠশালার প্রশংসায় মুখর স্থানীয় পাপিয়া সরেন, প্রিয়াঙ্কা মান্ডিরা। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রত্যেকদিন সকাল হলেই তাঁরা তাঁদের ছেলে মেয়েকে পাঠাশালায় পৌঁছে দিয়ে আসেন। হীরালাল হাজার কাজের মাঝেও ঠিক সময়মতো সেখানে হাজির থাকেন। তাঁদের সন্তানদের পড়িয়ে আবার স্কুলে পৌঁছে দেন। সর্বদা সকলের সঙ্গে হাসিমুখে সম্মান দিয়ে কথা বলে হীরা। বাচ্চাদের স্নেহ করেন ,যত্ন করে পড়াশোনা শেখান। তাঁদের ছেলে মেয়েরা বিনে পয়সায় পড়াশোনা শেখার সুযোগ পায়।
এই প্রসঙ্গে হীরালাল বলেছেন, সম্পূর্ণ ওই এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। অনেকেই মনে করেন এরা পিছিয়ে পড়া মানুষ। তিনি যেহেতু ওখানে ট্রাফিকের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাই তিনি তার কাজের ফাঁকেই কচিকাঁচাদের পড়াশোনাটা একটু দেখিয়ে দেন। তাতে তারা কিছুটা হলেও শিখতে পারে। যে সমস্ত পরিবারের প্রাইভেট পড়ানোর সাধ্য নেই, সেই পড়ুয়াদের যত্ন করে তিনি পড়াশোনা শিখিয়ে থাকেন। মূলত খুদে পড়ুয়াদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ তৈরি করতেই তার এই উদ্যোগ। সমাজের পাশে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে তার বেশ ভালোই লাগে।
এই প্রসঙ্গে হুগলি গ্রামীন পুলিশের ডিএসপি ক্রাইম অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র বলেছেন, সবাই খারাপ হয় না। হীরালকে দেখলে সেটা বোঝা যায়। ও ক্রমাগত ছোটোদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু হতদরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর মহৎ চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ছয় মাস ধরে নিজের চেষ্টায় ধীরে ধীরে পাঠশালা গড়ে তুলেছে। তার ওই উদ্দেশ্যই হলো ছোটোদের শিক্ষিত করা। পুলিশের তরফে ওর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিজিৎ বাবু। হুগলি গ্রামীন পুলিশের সুপার কামনাশিস সেন নিজেও এই ধরনের কাজ পছন্দ করেন। তাই গ্রামীণ পুলিশের তরফে হীরাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এদিন বলাগড় থানার ওসি রাজকিরণ মুখার্জি এবং ডিএসপি ক্রাইম হীরালালকে তার মহৎ কাজের জন্য তাকে থানায় ডেকে সম্বর্ধনা দিয়েছেন।
#Hoogly police#Civic police
বিশেষ খবর
নানান খবর
নানান খবর
![](/uploads/thumb_33011.jpg)
খেলতে খেলতেই ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, পাঁচিল ভেঙে মৃত শিশু...
![](/uploads/thumb_33000.jpg)
স্ত্রীকে খুশি করতে ‘ভালবাসা’ চুরি, মাঝরাস্তায় ভেঙে গেল প্লাস্টিকের ‘লাভ’, তারপর? ...
![](/uploads/thumb_32996.jpg)
তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ, তীব্র চাঞ্চল্য নন্দীগ্রামে ...
![](/uploads/thumb_32982.jpg)
বড়দিনের রাতে বেপরোয়া গাড়ি, দোকান ভেঙে পরপর ধাক্কা বাইক-সাইকেলে, গতির বলি দুই...
![](/uploads/thumb_32979.jpg)
আদিবাসী সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে ফ্যাশন শো, র্যাম্পে হাঁটলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি...
![](/uploads/thumb_32976.jpg)
বড়দিনে ছাড়িয়ে গেল এবছরের সব রেকর্ড, আলিপুর থেকে দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানা, কত ভিড় হল জানেন?...
![](/uploads/thumb_32969.jpg)
বড়দিনে ঘরে মোবাইল ফোনের সঙ্গে নয়, সময় কাটুক মাঠে ,অভিনব উদ্যোগ তৃণমূল বিধায়কের ...
![](/uploads/thumb_32966.jpg)
অশান্তি-উত্তেজনার মাঝেই বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর...
![](/uploads/thumb_32886.jpg)
বড়দিনের ‘উপহার’ নিতে গিয়ে প্রৌঢ়ের হাতে ধর্ষিতা নাবালিকা...
![](/uploads/thumb_32878.jpg)
মুর্শিদাবাদ ভাগের দাবি, এবার সুর চড়াচ্ছে অরাজনৈতিক সংগঠন...
![](/uploads/thumb_32877.jpg)
আমাদের স্কুলে কেন পাঠাচ্ছেন না? ছাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রশ্ন শিক্ষিকাদের ...
![](/uploads/thumb_32865.jpg)
বন দপ্তরের দেওয়া টোপ নয়, জিনাতের পছন্দ গ্রামের পোষা ছাগল ...
![](/uploads/thumb_32863.jpeg)
চুঁচুড়ায় টেনিস কোর্টের উদ্বোধন, খেলোয়াড়দের জন্য রয়েছে একাধিক সুব্যবস্থা ...
![](/uploads/thumb_32775.jpg)
চলছে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান, সুন্দরবনে নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা, গ্রেপ্তার তিন সন্দেহভাজন ...
![](/uploads/thumb_32754.jpg)
রেল মন্ত্রীকে দেওয়া চিঠির সদুত্তর মিলেছে, হুগলিতে চলতে পারে মেট্রো! আর কী বললেন সাংসদ রচনা? ...
![](/uploads/thumb_32748.jpg)
দ্বিতীয় হুগলি সেতু নয়, ভারী যান চলাচল করবে রোরো ভেসেলের মাধ্যমে ...
![](/uploads/thumb_32743.jpg)
পরিবারের তিন সদস্যকে গলার নলি কেটে খুন, দোষীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা চুঁচুঁড়া আদালতের...
![](/uploads/thumb_32740.jpg)
কমছে কাশ্মীরি শালওয়ালাদের আগমন, দরদাম করে কিস্তিতে পোশাক কেনায় ধাক্কা ...