সোমবার ১৪ অক্টোবর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Sumit | ০৮ আগস্ট ২০২৪ ১৮ : ০৪Sumit Chakraborty
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্রিটিশ রাজত্বের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন বিপ্লবী যতীন্দ্রনাথ দাস। তাঁর গল্প অনেকেরই মনে রয়েছে। ১৯০৪ সালে ২৭ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই বিপ্লবী। এনাকে আবার অনেকে যতীন দাস বলেও জানেন। কলকাতায় জন্মগ্রহণ করার সুবাদে যতীন্দ্রনাথ দাস এখানেই নিজের পড়াশোনা করেন। তিনি ম্যাট্রিকুলেশন ও ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এরপর মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি বাংলার বিপ্লবী দল অনুশীলন সমিতিতে যোগদান করেন।
১৯২১ সালে এই বিপ্লবী মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন। সেই থেকেই তাঁর মনে অসহযোগ আন্দোলনের বীজ বপন হয়েছিল। এরপর ময়মনসিংহ কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি প্রথম দেখেন রাজনৈতিক বন্দিদের সঙ্গে অশোভন আচরণ। জোরগলায় প্রতিবাদও করেছিলেন। টানা ২০ দিন ধরে প্রতিবাদে অনশন করার পর জেলের সুপার তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি অনশন ছেড়ে দেন। সময়টা ছিল ১৪ জুন, ১৯২৯। ভগৎ সিং এবং বটুকেশ্বর দত্তের সঙ্গে অধিবেশন চলাকালীন অ্যাসেম্বলি হলের মাঝে বোমা ফেলার জন্য তাঁকে ফের একবার গ্রেপ্তার করা হয়। লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁকে বন্দি করে লাহোর জেলে রাখা হয়।
সেখানে তিনি অন্যান্য বিপ্লবী নেতাদের সঙ্গে আরেকটি অনশন শুরু করেন। ইউরোপ থেকে আসা ভারতীয়দের সঙ্গে ভারতীয় রাজনৈতিক বন্দিদের সমতার দাবিতে। জেলের ভিতর ভারতীয় বন্দিদের অবস্থা ছিল শোচনীয়। ১৯২৯ সালের ১৩ জুলাই শুরু হয় তাঁর অনশন। টানা ৬৩ দিন ধরে তিনি অনশন করেন। জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে এবং অন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জোর করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। এরপর জেল কর্কৃপক্ষ তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির সুপারিশ করেন। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করে তাঁকে জামিনে মুক্তির প্রস্তাব দেয়।
১৯২৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মারা যান যতীন্দ্রনাথ দাস। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে সেদিন হাজার হাজার মানুষ রেলস্টেশনে ভিড় করেছিলেন। কলকাতা শহরে দুমাইল দীর্ঘ মিছিল করে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর দেহ গ্রহণ করেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি সেদিন যতীনের শেষযাত্রার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু যতীন দাসকে ভারতের তরুণ দধিচি হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। তার কথা ভুল ছিল না।