Reporter: Syamasri Saha | লেখক: Rahul Majumder | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৪ : ০৬Rahul Majumder

নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রথম প্রেমিকা অস্মিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সায়ন্তনী গুহঠাকুরতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন রণজয় বিষ্ণু। তাঁদের সম্পর্ক ছিল ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত। সম্প্রতি, তাঁর 'প্রাক্তন'-এর উদ্দেশ্যে সমাজমাধ্যমে বিস্ফোরক সায়ন্তনী। নাম না তুলে রণজয়ের উদ্দেশ্যে একগুচ্ছ দাবি করেন তিনি। লেখেন, "আসলে সোনার ডিম পাড়া মুরগি চলে গেলে খারাপ তো সকলেরই লাগে! আমার মনে হয়, নতুন এটিএম কার্ড থেকে বোধ হয় এখনও টাকা তোলা যায়নি। মেয়েরা সতর্কও থাকুন এই সব কালজয়ী অভিনেতাদের থেকে...", তবে নাম না তুললেও সেই ব্যক্তি যে আদতে রণজয়, তা এই প্রথম আজকাল ডট.ইন-এর কাছে স্বীকার করলেন সায়ন্তনী। 

কেন এতদিন পর ‘প্রাক্তন’ এর উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক হলেন সায়ন্তনী? অভিনেত্রী প্রথমেই স্পষ্ট করে বললেন, “আমি বলতে চাইনি। কিন্তু রণজয় যে অসভ্যতামো এখনও চালিয়ে যাচ্ছে, তাই বাধ্য হলাম। পুরনো প্রেমিকাদের নাম মিথ্যে কুৎসা রটিয়ে নতুন প্রেমিকার কাছে সিমপ্যাথি আদায় করে ও। সায়ন্তনী থেকে শুরু করে সোহিনী, সবার ব্যাপারে ব্যাপক কুৎসা আজও রটিয়ে বেড়াচ্ছে ও। এটা বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই বাধ্য হয়েছিল সমাজমাধ্যমে লিখতে এবং এখন মুখ খুলতে”।

সায়ন্তনী বলা শুরু করলেন, “ফেসবুকেই রণজয়ের সঙ্গে আমার আলাপ। উৎসাহ বেশি ছিল ওর তরফেই। প্রথম কয়েক মাস আমরা বন্ধুই ছিলাম। ধীরে ধীরে তা বাঁক নেয় সম্পর্কে। প্রথম থেকেই যে সেই সম্পর্কে আমি দারুণ সিরিয়াস ছিলাম, এমনটা নয়। এরপর রণজয় একদিন আমার বাড়িতে আসে, মায়ের সঙ্গে কথা বলে। আমাকে বিয়ে করতে চায়। মা কতটা সেকথায় গুরুত্ব দিয়েছিল, জানি না। কিন্তু আমি দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেটা মামাবাড়িতে বড় হয়েছে যদি ওকে ভালবাসে পাশে দাঁড়াই, তাহলে হয়তো সফল হওয়ার ব্যাপারে মনের জোর বাড়বে ওর। ভুল ছিলাম। যত দিন গিয়েছে সম্পর্কে তিক্ততা বাড়তে থাকল এবং চূড়ান্ত পর্যায় পৌঁছল। তখন বয়সটাও অল্প ছিল, সবকিছু বুঝতাম না। সহ্য করতাম। রণজয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে ভাইয়ের সঙ্গেও তিন বছর কথা বলা বন্ধ ছিল!”

সামান্য থেমে সায়ন্তনী ফের বলা শুরু করেন, “বছর ১১ আগে একটি বড়সড় দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম। নাকের হাড় ভেঙেছিল, কব্জিও। অস্ত্রোপচার করে যখন বাড়ি ফিরলাম, দেখলাম রণজয়ের ব্যবহারে অদ্ভুত পরিবর্তন। একটি মেয়ের সঙ্গে প্রায়শই কথা বলতে দেখতাম ওকে। নাম, শিবাঙ্গী শর্মা। ধীরে ধীরে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছিল। কিন্তু কিছু বলত না দু'জনের কেউ। শেষমেশ বুঝেছিলাম, আমার সঙ্গে সম্পর্কে থাকতে থাকতেই তাঁর সঙ্গেই সম্পর্কে জড়িয়েছিল রণজয়। লুকিয়ে মুম্বইতে শিবাঙ্গীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। হাতেনাতে ধরেছিলাম ওকে। তারপর কোনওদিনও আর রণজয়কে ফোন করিনি”।

“আর হ্যাঁ, যখন এইসব কাণ্ড করছে ও, তখনও কিন্তু আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে কিস্তিতে টাকা কাটা হচ্ছে রণজয়ের কেনা নতুন ল্যাপটপের মূল্য চোকাতে। এর পাশাপাশি তখন ও নতুন গাড়ি কিনেছে। সেই ব্যাপারেও আমার থেকে এক লক্ষেরও বেশি টাকা ও ধার নিয়ে বসে আছে। এক বন্ধুর মাধ্যমে কড়া গলায় রণজয়কে জানিয়েছিলাম, আমার পরিশ্রমের টাকাটা ফেরত চাই। আস্তে আস্তে দিয়েছিল। তবে মজা লুকিয়ে ছিল আরও। বছরখানেক পরে শিবাঙ্গি আমাকে ফোন করেছিল। জানিয়েছিল, মুম্বইতে রণজয়ের সমস্ত খরচ ও টেনেছে। রণজয়ের জামাকাপড় থেকে শুরু করে বিমানের টিকিটের খরচ সব জুগিয়েছে ও। শিবাঙ্গি ফোন করেছিল পুরো ব্যাপারটা জানাতে এবং রণজয়কে বলতে ওর টাকা যেন ফেরত দিয়ে দেয়। সেইসময় প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল রণজয়ের গার্লফ্রেন্ড ছিল তাই শিবাঙ্গিকে বলি আমার সঙ্গে রণজয়ের কোনও যাগাযোগ নেই তুমি প্রিয়াঙ্কা কে ফোন কর।
ভাবুন একবার! শিবাঙ্গির পরিস্থিতির সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পেয়েছিলাম, তাই অবিশ্বাস্য লাগেনি ওর কথা”। 

কথা শেষে রণজয়ের এই প্রাক্তন শ্লেষ মাখানো সুরে বলে ওঠেন, “রণজয়কে টানতে ওর প্রেমিকারা যে হারে খরচ করেছে সেই তালিকায় একেবারে প্রথমে রয়েছে সোহিনী সরকার। বিরাট খরচ করেছে সোহিনী। বিরাট! দ্বিতীয় স্থান দখল করে রয়েছেন শিবাঙ্গী এবং সম্ভবত তৃতীয় স্থানে আমি!”