বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
সম্পূর্ণ খবর
Pallabi Ghosh | ১২ জুন ২০২৪ ১৫ : ২৪Pallabi Ghosh
শুভাশিস চট্টোপাধ্যায়: ইলিশ ধরতে যাওয়া তো নয়, কাকদ্বীপের মৎস্যবন্দর এখন যেন এক রণক্ষেত্র। চলছে শেষ মুহূর্তের টাচ, পরীক্ষা এবং নজরদারি। তাই রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে দিনভর ব্যস্ততায় ঘুম ছুটেছে কাঠ থেকে লোহা, ইলেকট্রিক থেকে ইঞ্জিন, পাম্পমোটর মিস্ত্রি থেকে জাল–বুনিয়েদেরও।
কয়েক একর বিস্তৃত বন্দরের এই ঘাটে এবং মাঠে রবিবার সকালে একটা চক্কর দিতেই নজর কেড়ে নিল একের পর এক চোখ–চমকানো ছবি। ঘাটে দাঁড়িয়ে–থাকা প্রায় শ’পাঁচেক ট্রলারের কোনওটার গায়ে নতুন করে লেখা হচ্ছে লাইসেন্স নম্বর, কোনওটায় চলছে রঙের শেষ পোঁচ। কেউ লম্বা–লম্বা শালের গুঁড়ি কাঁধে বয়ে তুলছেন ট্রলারের মাথায়, কেউ বেঁধে চলেছেন রোগা–মোটা, নীল–হলুদরঙা কাছি। কোনও ট্রলারে তোলা হচ্ছে বস্তাভর্তি চাল–ডাল–আলু–সবজি–তেল–নুন–সহ যাবতীয় মশলাপাতি থেকে প্যাকেট–প্যাকেট চা–পাতা, বিস্কুট, চিঁড়ে, মুড়ি, চানাচুর। কোনওটায় উঠছে বরফের বিশাল–বিশাল চাঁই তো কোনও ট্রলারে পানীয় জলের ড্রাম। কেউ আবার জ্বালানি তেল তুলতে ব্যস্ত। কোথাও আবার সেই বরফের চাঁই যত্ন করে রাখার জন্য কাটা হচ্ছে সমান মাপের টিনের পাত, মাছ ধরে রাখার জন্য বিস্তর ক্রেট। কোথাও চলছে নিজস্ব জিপিএস, ফিশ ফাইন্ডার, ওয়াকিটকির শেষ পরীক্ষা। কারণ মাঝদরিয়ায় জলের গভীরতা বা চড়া মাপতে, ভারতের জলসীমা টের পেতে, ট্রলারের গতিপথ নির্দেশে কিংবা মালিকের সঙ্গে ঘন ঘন যোগাযোগ রাখার কাজে এ–সব ডিভাইসই ওঁদের ‘অন্ধের যষ্টি’। ট্রলারে উঠছে ছোট–বড় নানা ফাঁসের, নানা কায়দার একাধিক জাল। মহিলা–পুরুষ নির্বিশেষে এখনও চলছে সেই জাল বোনার কাজ। শুধু তো ইলিশ নয়, কোনও জালে ফাঁসবে লোটে–ভোলা, কোনওটায় চিংড়ি, কোনওটায় পমফ্রেট–রূপচাঁদ, এমন আরও নানা নামের মাছ, এমনকী উঠবে কাঁকড়াও। এদিকে, বন্দরের মাঠে ত্রিপল খাটিয়ে চলছে সেই সব শ্রমিকের জন্য দুপুরের ভাত–মাছ খাওয়ানোর তোড়জোড়। ওদিকে, দূরে বেলুন–কলাপাতায় সাজানো কোনও ট্রলারের বারান্দায় পুরোহিতের হাতে বাজছে শান্তিপুজোর ঘণ্টা। মাঝেমধ্যেই কাজের গতি দেখতে বাইক–হানা দিচ্ছেন ট্রলার–মালিকেরা। আর চারদিকে সমস্ত কর্মযজ্ঞের গোটা তদারকিতে ট্রলারের ক্যাপ্টেন (মাঝি)। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই দিনক্ষণ দেখে যাবতীয় পুজোপাঠ সেরে ট্রলার ভাসিয়ে হল্ট করেছেন নামখানা, হরিপুর, সীতারামপুর, পাথরপ্রতিমায়। ১৪ জুন রাত বারোটার পর সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন ওঁরা। অপেক্ষার রয়েছে ‘দেবী কার্ভিমা’, ‘বলরাম কৃষ্ণ’, ‘দশভুজা’, ‘তারা মা’, ‘বাবা চন্দনগড়’, ‘জয়গুরু’, ‘শঙ্খচক্র’, ‘কন্যামাতা’, ‘সূর্যনারায়ণ’রা। কেউ সদ্য তখনই, কেউ সূর্যোদয়ের মুহূর্তে শুরু করবেন যাত্রা। গঙ্গার উদ্দেশে প্রণাম জানিয়ে ঘাটে বাঁধা কাছি খুলে ট্রলার–মালিক শ্রদ্ধার সঙ্গে তুলে দেবেন ক্যাপ্টেনের হাতে। কেউ সাত দিন, কেউ দশ, কেউ পনেরো দিনের জন্য পরিবার ছেড়ে পাড়ি দেবেন গভীর সমুদ্রে।
‘যাত্রা শুরুর ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টার মধ্যে ‘নামা’য় (মানে দক্ষিণে, বঙ্গোপসাগরে) চলে যাব আমরা। তার পর থেকেই শুরু মাছ ধরার অপারেশন।’ বললেন ‘মা বাসন্তী ২’–এর প্রধান মাঝি বিজয় দাস। পনেরো দিনের জন্য ১৯ জনের টিম নিয়ে ২৫ বছরের অভিজ্ঞ বিজয় যাবেন ইলিশ–জয় যুদ্ধে। তাঁর ট্রলারে থাকছে উনুন–সহ তিনটে গ্যাস সিলিন্ডার, ৪ হাজার লিটার ডিজেল, ৩ হাজার লিটার খাবার জল। নিয়েছেন ২০০ কেজি চাল, দু্শোটা বরফের চাঁই–সহ আরও আরও অনেক জরুরি সামগ্রী। বিজয়ের পাশেই ছিলেন আরেক মাঝি সেন্টু বাগ। বললাম, এবার টার্গেট কেমন? উত্তর দিলেন সেন্টু। ‘এটা আমাদের কাছে জুয়া–লটারির মতো। কারও জালে রাতারাতি উঠল ১০০ মন মাছ তো, কেউ তখনও দৌড়ে বেড়াচ্ছে সমুদ্রের এ–প্রান্ত থেকে ও–প্রান্ত। তাই আগে থেকে ও–সব বলা যায় না।’
এ বছর কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা–সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন খেয়াঘাট থেকে ছোট–বড় মিলিয়ে পাড়ি দেবে প্রায় তিন হাজার ট্রলার। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র তথ্যটি দিয়ে বললেন, ‘আরও একটা কথা। সরকারি স্তরে ৫ লাখ টাকার বিমা ছাড়াও ট্রলার–মালিকদের দেওয়া প্রত্যেকের আলাদা করে জীবনবিমা রয়েছে আমাদের খাতায় নথিবদ্ধ মৎস্যজীবীদের জন্য। তা ছাড়াও আপৎকালীন বিপদ সামলাতে এবার নতুন করে বরাদ্দ হয়েছে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা।’ সেন্টু–বিজয়দের কথার জের ধরে জানতে চাইলাম, এ বছর বাঙালির পাতে ইলিশ–সুখ কেমন? সতীনাথ শোনালেন সম্ভাবনার কথা, ‘পাহাড়ে যদি ভাল বৃষ্টি হয় তাহলে নিশ্চিত মিলবে দেদার ইলিশ।’ আপাতত আশায় বাঁচুক চাষা।
বিশেষ খবর
নানান খবর
নানান খবর
মেয়েদের সামনেই স্ত্রীকে খুন, মাটিতে পুঁতে রাখা হল দেহ, পূর্ব বর্ধমানে হাড় হিম করা ঘটনা...
আবারও লাইনচ্যুত মালগাড়ি, কয়েক ঘণ্টা বন্ধ ট্রেন চলাচল, চরম ভোগান্তি যাত্রীদের ...
আলুরদমের মেলা সঙ্গে কাঁকড়া, এই স্বাদের ভাগ হবে না...
কোথায় ঠান্ডা! মাঘেও নেই কনকনে শীতের আমেজ, পারদ পতন কবে থেকে? ...
বজবজ পুরসভার রজতজয়ন্তী বর্ষে জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুষ্প প্রদর্শনীতে উপচে পড়া ভিড় ...
ভর সন্ধ্যায় পেটে ছুরি মেরে যুবক খুন, চাঞ্চল্য রিষড়ায়!...
জলপাইগুড়িতে ধর্ষণে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার গ্রেপ্তার...
পৌষ সংক্রান্তির আবহে ঢেঁকির দেখা মেলে গ্রামে, হুগলির এই বাড়িতেই ভিড় জমান মহিলারা ...
পূণ্যার্থীদের ফেলা বর্জ্য পদার্থ দিয়ে গঙ্গাসাগরে তৈরি হবে নতুন রাস্তা...
'মাই এফআইআর পোর্টাল', কাজে স্বচ্ছতা আনতে বনগাঁ পুলিশের উদ্যোগ...
শেষ যাত্রা নাকি উৎসব! বাজনা বাজিয়ে দাদুর মরদেহ শ্মশানে নিয়ে গেলেন নাতিরা, কেন?...
চারদিন বালি সেতুতে চলবে না ট্রেন, চরম ভোগান্তির আশঙ্কা যাত্রীদের...
অনুব্রত মণ্ডলের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলেন কাজল শেখ! কীসের ইঙ্গিত? ...
রবিতেই ভরসা মুখ্যমন্ত্রীর, ৩৬তম রাজ্য ভাওয়াইয়া সঙ্গীত কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ...
পরপর পাঁচটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ! সিকিমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড বহুতলে, কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি ...