সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
Rajat Bose | ১৪ মে ২০২৪ ১২ : ৩০Rajat Bose
নীলাঞ্জনা সান্যাল: প্রত্যেক বাবা–মায়ের মধ্যেই থাকেন রামসুন্দর মিত্র। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দেনাপাওনা’ গল্পের সেই কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা। যিনি তাঁর বড় আদরের একমাত্র কন্যা নিরুপমার বিয়ে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন। নিরুপমার বিয়েতে টাকা ছিল মস্ত বাধা। গল্পটির করুণ পরিণতি আজও আমাদের নাড়িয়ে দেয়। সমাজ এখন অনেকটাই বদলেছে। কিন্তু এখনও অনেক পরিবারের কাছে মেয়েকে বিয়েতে একটু ‘সাজিয়ে–গুছিয়ে’ দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকা হল প্রধান অন্তরায়। সাধ থাকলেও, নেই সাধ্য। সাধ আর সাধ্যের এই ফারাক কিছুটা হলেও ঘোচাচ্ছে রাজ্য সরকারের ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিয়েতে এই প্রকল্পের মাধ্যমে এককালীন ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য করা হয়।
রূপশ্রীর টাকায় উপকৃত হয়েছেন কারা? কীভাবে এই টাকা কাজে লেগেছে বা লাগছে? তারই হালহদিশ জানতে হাওড়ার কিছু গ্রাম–সহ ঘুরেছিলাম বিধাননগর পুরনিগমের কিছু এলাকাতেও।
হাওড়ার তাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়ি শ্রেয়া দিয়াসীর। আগের বছরই বিয়ে হয়েছে। বাবা লেদ মেশিনের কাজ করেন। মা অতসী মণ্ডল জানালেন, অভাবের সংসারে খুব জাঁকজমক করে মেয়ের বিয়ে তিনি দিতে পারেননি। সব মিলিয়ে নিমন্ত্রিতের সংখ্যা ছিল জনা পঞ্চাশ। যেটুকু খরচ করতে পেরেছেন, তা সবই রূপশ্রীর টাকায়। বললেন, ‘বিয়েতে মেয়েকে তো কিছু দিতেই হয়। সেই দেওয়ার জিনিসপত্র কিনতে, লোকজন খাওয়াতে এই ২৫ হাজার টাকা আমাদের খুব সাহায্য করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে ধন্যবাদ। আমাদের মতো পরিবারের কথা তিনি ভেবেছেন। এই সাহায্য না পেলে ধারদেনা করতে হত।’ কন্যাশ্রীর টাকায় কলেজে পড়াশোনা করছে তিয়াসা পাল। জানাল, বাবা ‘লেবার’–এর কাজ করেন। রূপশ্রীর টাকায় বিয়ে হয়েছে। তিয়াসার কথায়, ‘বিয়ের তো অনেক খরচ থাকে দিদি। রূপশ্রীর টাকা কটা পাওয়াতে বাবার সুবিধা হয়েছে। নইলে সমস্যা তো হতই।’ মেয়ে মাসুরার বিয়ে রূপশ্রীর টাকাতেই দিয়েছেন কালো খান। ইদে তখন বাপের বাড়ি এসেছিল মাসুরা। মেয়েকে পাশে নিয়েই কালো খান বললেন, ‘রূপশ্রীর টাকা মেয়ের বিয়েতে লোক খাওয়াতে খরচ করেছি। খুবই উপকারে লেগেছে। এই টাকা না পেলেও মেয়ের বিয়ে তে দিতেই হত, কিন্তু অনেক ধার করতে হত।’
বিধাননগরের ত্রিনাথপল্লীতে বাড়ি পূজা মণ্ডলের। রূপশ্রীর টাকাতেই সদ্য বিয়ে হয়েছে পূজার। মা সন্ধ্যা মণ্ডল পরিচারিকার কাজ করেন। বাবা সুভাষ মণ্ডল শারীরিক সমস্যার জন্য কার্যত ঘরবন্দী। কাজকর্ম কিছুই করেন না। পূজার মাসতুতো বউদি টিনা নন্দী। ত্রিনাথপল্লীর ১৮ নম্বর গলিতে একসঙ্গেই থাকেন। টিনা জানালেন, ‘রূপশ্রীর ২৫ হাজার টাকা না পেলে খুবই সমস্যা হত। বিয়ের ঠিক হয়ে গেছিল। কিন্তু টাকা জোগাড় হচ্ছিল না। ঠিক সময়ে টাকাটা পাওয়াতে আমরা লজ্জার হাত থেকে বেঁচেছি।’ দত্তাবাদে বাড়ি নূপুর প্রামাণিকের। মার্চ মাসে বিয়ে হয়েছে কাকদ্বীপে। বাবা কাশী প্রামাণিক রিকশা চালান। মা ছায়া পরিচারিকার কাজ করেন। যা আয় হয় তা দিয়েই সংসার চলে। নূপুর জানাল, ‘রূপশ্রীর টাকা না পেলে বাবার ওপর সত্যিই খুব চাপ পড়ত। হয়তো ধার করতে হত। লোকজন খাওয়াতে, প্যান্ডেল করতে টাকাটা কাজে লেগেছে। অনেকের মনে হতেই পারে, এই টাকায় বিয়েতে কী সাহায্য হয়। কিন্তু এই টাকাটা শুধু আমাদের কাছেই নয়, আমাদের মতো অনেকের কাছেই অনেক টাকা।’ সঙ্গীতা হাজরার বাড়ি ইকো পার্কের কাছে হাতিয়াড়ার উত্তরমাঠে। বছর ২৪ আগেই মারা গেছেন বাবা অজিত হাজরা। মা ছায়া পরিচারিকার কাজ করতেন। কিন্তু কোভিডের পর থেকে কোমরের সমস্যা, এখন আর কাজ করেন না। বাড়িতেই থাকেন। বিধবা ভাতার ১ হাজার টাকাই সম্বল। তার সঙ্গে সঙ্গীতা গেঞ্জি সেলাই, বোতাম লাগানোর কাজ করে। সংসারে অভাব নিত্যসঙ্গী। সঙ্গীতা জানাল, ‘প্রথম থেকেই মামা তাঁদের সাহায্য করেন। আর সাহায্য করেন বড়দি। ১৫ মে বিয়ে সঙ্গীতার। বিয়েতে সাহায্য করছেন মামা। আর রয়েছে রূপশ্রীর ২৫ হাজার টাকা। ছেলের বাড়ির কোনও দাবি নেই। সঙ্গীতা জানাল, এই ২৫ হাজার টাকা না পেলে খুবই সমস্যা হত। ছেলের আংটি কিনতে এই টাকাটা কাজে লেগেছে।’ কথা হচ্ছিল বিধাননগর পুরনিগমের রূপশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অংশুমান ধরের সঙ্গে। ২০১৮ সালে চালু হয় এই প্রকল্পটি। প্রথম থেকেই বিধাননগর পুরনিগম এলাকায় এই প্রকল্পটির দায়িত্বে রয়েছেন অংশুমান। তিনি জানালেন, এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৩৫০–এর কাছাকাছি মেয়ের বিয়ে হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। টাকার অঙ্ক ৫ কোটি ৮৬ লক্ষের কাছাকাছি। আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গেই খোঁজখবর নিয়ে দেখা হয়, সবটা নিয়ম মেনে হয়েছে কিনা। অংশুমান বলেন, ‘আবেদন যে পরিবারগুলি করে, তাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ থাকে। ফলে যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব এই পরিবারগুলি যাতে টাকাটা পায় তার চেষ্টা করি।’
বিশেষ খবর
নানান খবর
নানান খবর
রুবি মোড়ের অদূরে রাস্তায় পড়ে যুবকের রক্তাক্ত দেহ, পাশেই উল্টে রয়েছে স্কুটার, সাতসকালে ছড়াল চাঞ্চল্য ...
মধ্যবিত্তের জন্য বড় খবর! কতটা পরিবর্তন হল পেট্রোল ডিজেলের বাজার দরে? ...
বাড়িতে ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার ছক, নেট কানেকশন তো হলই না, উল্টে আলমারি ফাঁকা করে চম্পট দিল দুই দুষ্কৃতী...
কলকাতার বিজয়গড় এলাকায় কারখানায় আগুন
চপার দিয়ে কোপানো হল এক ব্যক্তিকে, ভরসন্ধ্যায় রক্তারক্তি কাণ্ড জোড়াবাগানে...
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে আগুন আতঙ্ক, মেন বিল্ডিং-এর দোতলায় আগুন ...
দূষণ বাড়ছে হাওড়া-কলকাতায়, গভীর উদ্বেগ বাতাসের একিউআই নিয়ে, এবার কি পরতে হবে মাস্ক? ...
ফের তৈরি নিম্নচাপ, ভাসতে চলেছে বাংলা? কী বলছে হাওয়া অফিস...
এখনই নয় সাংগঠনিক রদবদল, বড় সিদ্ধান্তের আগে আরও কিছুটা সময় চাইছেন মমতা...
Exclusive: বাবা আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী, বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায় মেয়ে...
শীতের পথে বাঁধা সৃষ্টি করবে নিম্নচাপ! জানুন হাওয়া অফিস কী বলছে...
সাতসকালে মেট্রো পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটায় সমস্যায় যাত্রীরা, ঘণ্টাখানেক পর পরিষেবা হল স্বাভাবিক...
দাউ দাউ করে জ্বলছে সব, পুড়ে ছাই একের পর এক বাড়ি, তড়িঘড়ি পৌঁছলেন মেয়র ...
‘টেস্ট টিউব বেবি’ নেওয়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট, খুশির হাওয়া কাশীপুরের দম্পতির জীবনে...
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার খাতায় নম্বর গরমিলের অভিযোগ, রিপোর্ট তলব উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের...
মন্দারমনির হোটেল এই মুহূর্তে ভাঙা যাবে না, স্থগিতাদেশ কলকাতা হাইকোর্টের ...
বিয়ের মরসুমে সোনার চাহিদা তুঙ্গে, জেনে নিন হলুদ ধাতুর বাজারদর...