শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
শ্যামশ্রী সাহা | ০৮ মে ২০২৪ ১৯ : ০৪
জীবনে যা ঘটেছে সবটাই কি ‘দাবাড়ু’তে ধরা? সূর্যশেখর আর পর্দার ‘সৌরশেখর’র মধ্যে কতটা মিল, অমিলই বা কতটা? কেন গ্র্যান্ডমাস্টারের দাবি, অনেক কিছু জানানো বাকি। তার জন্য তিনি কলম ধরবেন? বাস্তবের ‘দাবাড়ু’র থেকে জেনে নিলেন শ্যামশ্রী সাহা
প্রশ্ন: আপনার জীবনের গল্প বড়পর্দায়। অনেক অজানা কথা প্রকাশ্যে। যখন প্রস্তাব পান কী মনে হয়েছিল?
সূর্যশেখর: অনেকেই বলেছিলেন আত্মজীবনী লিখতে। আমার মনে হয়েছিল, আমি লিখলে কে পড়বে? কেউ পড়বে না। হঠাৎ একদিন শিবুদার (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) ফোন পেলাম। বললেন, তোমার জীবন নিয়ে একটা ছবি করতে চাই। এটা ২ জানুয়ারি ২০২১ এর কথা। পরের দিন আমার মেয়ে আর্যার জন্ম। তাই তারিখটা মনে আছে। পরপর দুটো সুখবর। আমার জীবনের গল্প শিবুদা শুনলেন। উনি চেয়েছিলেন, আমার জীবন নিয়ে এমন একটা ছবি হোক যেটা একেবারে আত্মজীবনী নয়। অনুপ্রেরণায় তৈরি। যেখানে আমার ছোটবেলা থাকবে। আর পারিবারিক দিকটা ধরা হবে। আমার পরিবারের জার্নি। এই ভাবনাটাই আমার ভাল লেগেছিল। আমার কেরিয়ারে কী হয়েছে সেটা তো গুগল সার্চ করে সবাই জানতে পারবেন। কিন্তু আমার সাফল্যের পিছনে আমার পরিবারের কতটা অবদান সেটা অনেকেই জানেন না। বিশেষ করে আমার দাদুর কথা। সেদিক থেকে এই ছবি আমার কাছে খুবই আবেগের। তবে ছবি তো, তাই এখানে অনেক ফিকশন। কোনটা রিল আর কোনটা রিয়েল সেটা জাজ করা যাবে না। তবে, আমার স্ট্রাগল বা পরিবারের অবদান সবটাই রিয়েল।
প্রশ্ন: ভাল কোচ, খারাপ কোচ জীবনে অনেকটাই প্রভাব ফেলেছে?
সূর্যশেখর: ওই যে বললাম, এখানে অনেক কিছুই ফিকশন। কিছুটা সত্যি। তবে এই ছবিতে অনেক কিছু দেখানো যায়নি। অনেক ঘটনা আরও কষ্টের, নিষ্ঠুরতা আছে। কোনওদিন যদি আত্মজীবনী লিখি সেখানে সব লিখব।
প্রশ্ন: যেমন?
সূর্যশেখর: আমার দিদিকে এখানে দেখানো হয়নি। দিদির সাংঘাতিক অবদান আমার জীবনে। আমার যখন ছ’মাস বয়স তখন দিদি সাড়ে চার বছরের। ট্রাম অ্যাক্সিডেন্টে ওর পা গোড়ালি থেকে বাদ যায়। ও একজন নৃত্যশিল্পী। সারাজীবন কৃত্রিম পা নিয়ে নাচ করেছে। সাঁতার, ক্যারাটে করেছে। এখন দিদি গাইনোকলজিস্ট। ওর এই জার্নি এখানে দেখানো যায়নি। তা হলে আমার জার্নি মার খেত। দুটো জার্নি একটা ছবিতে দেখানো সম্ভব ছিল না।
প্রশ্ন: দাবা আপনার প্যাশন, কখনও এমন হয়েছে, দাবা খেলতে ইচ্ছে করেনি?
সূর্যশেখর: আজ অবধি সেটা কখনও হয়নি। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলো করতে খুব ভাল লাগত। পাড়ায়, গলিতে, মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল খেলতাম। খুব দুরন্ত ছিলাম। আমাকে শান্ত করতে দাবা শেখানো হয়। আমারও দাবার প্রতি মারাত্মক আকর্ষণ ছিল। সেটা এখনও আছে। আমার বাড়িতে সত্তর রকমের বোর্ড গেম আছে। কিন্তু দাবা খেললে যে ব্রেন স্টিমুলেশন হয়, সেটা অন্য কোনও খেলাতে পাই না।
প্রশ্ন: ওয়াইল্ড লাইফের প্রতিও আপনার টান আছে...
সূর্যশেখর: হ্যাঁ। ঠিক বলেছেন। সেটা বাঘের খাঁচায় ঢুকে যাওয়া হোক বা অন্য কোনও রকমের অ্যাডভেঞ্চার। এই তো কিছুদিন আগে টরেন্টোতে ঘুরতে গিয়ে স্কাই ডাইভিং করলাম। প্রকৃতির সঙ্গে থাকতে আমার খুব লাগে। জঙ্গলে থাকা বা ট্রেকিংও দারুণ লাগে।
প্রশ্ন: আপনাকে ‘চাইল্ড প্রডিজি’ বলা হয়, কোচিং করাতে গিয়ে আপনি কোনও ‘চাইল্ড প্রডিজি’র খোঁজ পেয়েছেন?
সূর্যশেখর: আমার চোখে প্রত্যেকটা শিশুই ‘চাইল্ড প্রডিজি’। প্রত্যেকে ইউনিক। ওদের থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। আমার মেয়ে আর্যার থেকেও আমি অনেক কিছু শিখি। বাবা হিসাবে কোনও কিছুই বাচ্চাদের উপর চাপিয়ে দিতে চাই না। ওরা যেভাবে লাইফ লিড করছে আমি কি পারব? তাহলে আমি কী শেখাব? আমাকেই শিখতে হবে। আমার ছেলের বয়স সাত মাস। ওকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া হয়নি। কিন্তু আর্যাকে নিয়ে ঘুরতে যাই। প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে শেখাই।
প্রশ্ন: গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পর জীবন কতটা বদলেছে?
সূর্যশেখর: খুব ছোটবেলা থেকেই চ্যাম্পিয়ন। বয়সে বড়দের হারাচ্ছিলাম। তাই জনপ্রিয়তা ছোটবেলা থেকেই ছিল। এটা আমার কখনওই পছন্দ হত না। প্রচার থেকে আমার দূরে থাকতেই ভাল লাগে। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রেও খুব একটা স্বচ্ছন্দ নই। ছোটবেলায় তো ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য ক্রিকেট, ফুটবল খেলার সময় পেতাম না। গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পর যে জনপ্রিয়তা পেয়েছি, সেটা নতুন কিছু নয়। যেটা হয়েছিল, খেলা থেকে চাপমুক্ত হয়েছিলাম আর অর্থনৈতিক দিকে একটা পরিবর্তন এসেছিল। আমি যখন গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছি তখন অমাকে নিয়ে বাংলায় দু’জন গ্র্যান্ডমাস্টার আর ভারতে সাত জন। আমার অনেক দিনের ইচ্ছেপূরণ হয়েছিল। চাপ কমে যাওয়ায় আমার পারফরন্যান্সও আরও ভাল হতে শুরু করল। আগে টুর্নামেন্টের সব খরচ আমাকে সামলাতে হত। গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পর রেটিং বাড়ল। অ্যাপিয়ারেন্সে টাকা পেতে শুরু করলাম। এই জায়গাটায় একটা পরিবর্তন এসেছিল।
প্রশ্ন: এমন কোনও হার-জিত যা ভুলতে পারেননি বা ভুলতে চান না?
সূর্যশেখর: হার-জিতকে আলাদা করে দেখতে চাই না। পুরোটাই একটা জার্নি, একটা লেসন। জার্নিটাই মনে রাখতে চাই। এমন অনেক টুর্নামেন্ট আছে যেখানে একেবারে শেষ মুহূর্তে হেরে গিয়েছি। আমার কাছে এই অনিশ্চয়তাটাকে জয় করাই সবথেকে বড় ব্যাপার। খেলার বাইরেও জীবনে টাফেস্ট মোমেন্ট আছে।
প্রশ্ন: সেটা কী?
সূর্যশেখর: এই বছরের জানুয়ারিতে আমার মেয়ে আর্যার অদ্ভুত একটা অসুখ ধরা পড়ে। ও আট দিন আইসিইউতে ছিল। ওকে বাঁচাতে পারব কিনা বা ও আবার আগের মতো হাঁটাচলা করতে পারবে কিনা বুঝতে পারছিলাম না। সাংঘাতিক একটা সময়। এই ফেস থেকে একটা শিক্ষা হয়েছে, লাইফে যা পেয়েছি তার প্রতি যদি কৃতজ্ঞতাবোধ না থাকে তাহলে সমস্যা এলে সেটা ওভারকাম করা যায় না। তখন হতাশা ঘিরে ধরে। সেটা জীবন হোক বা খেলা— দু’দিকেই সত্যি।
প্রশ্ন: পর্দায় আপনার প্রথম প্রেম দেখলাম, বাস্তবে?
সূর্যশেখর: (হাসি) ওই ক্যারেক্টারটা আমার স্ত্রী নন। আমার তো স্কুল লাইফ বলে সেরকম কিছু ছিল না। প্রচুর ট্র্যাভেল করতে হত ওই সময়। আমার স্ত্রীর সঙ্গে ডেট করেছি গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার অনেক পরে।
প্রশ্ন: ছবিতে দুই ‘সৌরশেখর’কে দাবা শেখাতে পারলেন?
সূর্যশেখর: দাবা খেলার সময় বুঝতে হয়, নির্দিষ্ট চাল কেন দিচ্ছি। সেটা এখানে করতে হয়নি। চাল দেওয়ার সময় অ্যাকশন শেখাতে হয়েছে। এটা আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং ছিল। সমদর্শী, অর্ঘ্যকে চাল শেখাতে হয়নি। চাল দেওয়ার সময় হাতের পজিশন কী থাকবে, ঘড়ি কীভাবে টিপতে হবে— সেগুলো শেখাতে হয়েছে। ওরা খুব তাড়াতাড়ি শিখে নিয়েছে।
প্রশ্ন: আর্যা যখন বাবাকে দাবা খেলতে দেখে কী করে?
সূর্যশেখর: ও এটুকু বুঝতে পারে, বাবা কিছু একটা খেলে। কিছুদিন আগে আমার দেড় মাসের একটা ট্রিপ ছিল। আর্যাকে বেরনোর সময় ‘খেলতে যাচ্ছি’ বলার পর রিয়েলাইজ করলাম, এটা বলা ঠিক হচ্ছে না। আমি তো দাবা খেলতে যাচ্ছি। ও মনে করছে, বাবা খেলতে যাচ্ছে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে না। ওকে তখন বোঝালাম আমি কাজে যাচ্ছি আর দাবা খেলাটাই আমার কাজ। তারপর ওর কত প্রশ্ন! কাজ কী, সবাই কি একই কাজ করে?... (হাসি)
প্রশ্ন: বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার পিছনে মা-বাবা আছেনই, শিক্ষক বা কোচের ভূমিকা কতটা?
সূর্যশেখর: প্রচুর। আমিও তো এখন শিক্ষক। প্রচুর ট্রেনিং করাই, কোচিং করাই। শিক্ষক হিসাবে আমার মনে হয়, পড়ার প্রতি বা শেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি করাটাই আসল কাজ। যে শিক্ষক এই কাজটা করতে পারেন তিনিই প্রকৃত শিক্ষক। আমার ক্লাসে এলে দেখতে পাবেন, সেখানে সবাই দুষ্টুমি করছে, মজা করছে। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া নিয়মানুবর্তিতায় বিশ্বাসী নই। ছাত্রদের মধ্যে যদি দাবা খেলার প্রতি ভালবাসা তৈরিই না করতে পারি তা হলে আমি কেমন শিক্ষক?
প্রশ্ন: যারা হেরে গিয়ে আবার ফিরতে চান তাদের কী বলবেন?
সূর্যশেখর: আমি জিতেছি বা আমি হেরেছি, এটা ভাবলে চলবে না। খেলার প্রথম শিক্ষাই হল কখনও জিতবে কখনও হারবে। পার্ট অফ লাইফ। সাফল্যের কোনও সংজ্ঞা আছে? একেক জনের কাছে একেক রকম। ফলাফল যাই হোক, তার মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নিতে হবে। আনন্দে থাকার চেষ্টা করতে হবে। ‘পৃথিবী সেরা’ হয়ে যদি মনে সুখ না থাকে তাহলে তাকে সফল বলা যায় না।
প্রশ্ন: দাবায় বিশ্বকাপ কবে আসবে?
সূর্যশেখর: ১৮৬টা দেশের মধ্যে ইন্ডিয়া দু’নম্বরে। ভারত দাবায় বিশ্বজয় করবে সেই দিন খুব দূরে নেই।
প্রশ্ন: ১০ মে ‘দাবাড়ু’ মুক্তি পাচ্ছে। আপনার লড়াই অন্যদের অনুপ্রেরণা দেবে…
সূর্যশেখর: হ্যাঁ, এটা শুধু একজন দাবাডুর গল্প নয়। এমন অনেক পরিবার আছে যেখানে এই লড়াই দেখা যায়। তাই দর্শক রিলেট করতে পারবেন। ছবিটা দেখুন। এটা শুধু দাবা খেলার ছবি নয়, অনেক মেসেজ আছে এই ছবিতে। দাবা খেলার বেশ কিছু দর্শন আছে যা জীবনে প্রয়োজন। এই খেলার মাধ্যমে আমি জীবনে যা শিখেছি অনেক কিছুই সংলাপে ধরা আছে।
বিশেষ খবর
নানান খবর
নানান খবর
শুধু রহমান-সায়রার নয়, বলিউডে ঘন ঘন বিচ্ছেদের নেপথ্যে কোন রহস্য? ফাঁস রহমানের স্ত্রীর আইনজীবীর!...
নেই ভ্যানিটি ভ্যান, খোলা আকশের নীচে শৌচকর্ম আলিয়ার! কী অসভ্যতামো করেছিল ইমতিয়াজের ইউনিটের সদস্য? ...
স্বামীর জন্য একতা কাপুরের সঙ্গে কেন ঝামেলায় জড়িয়েছিলেন নীলম? রহমানের পর বিচ্ছেদের পথে ধনুশ...
হাতে পিস্তল, চোখেমুখে রহস্যের ছাপ! উত্তরবঙ্গে 'ঝড়'-এর মুখোমুখি বনি-সৌরভ...
পরপর ছবি সুপারহিট অথচ ঘনঘন বড়পর্দায় হাজির হন না শ্রদ্ধা! কিন্তু কেন?...
কাটিয়ে ফেলেছেন ৩৫ বছর, তবু আজও বলিউডের কোন বিষয়টি দারুণ অবাক করে শাহরুখকে? শুনলে চমকে যাবেন! ...
‘অ্যানিম্যাল নয় অনিল-ম্যাল’, ‘মজনু ভাই’-এর সামনেই তাঁর ছবিকে আর কীভাবে কটাক্ষ করলেন নানা? ...
এবার সত্যিই 'অনুরাগের ছোঁয়া' নায়িকার মনে! কার সঙ্গে মন দেওয়া-নেওয়ার পর্ব সারলেন অভিনেত্রী?...
অনুষ্কার বদলে এবার ‘রোশনাই’ তিয়াসা? মুখ খুললেন শন...
নারীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার কোন উপায় তাঁকে বাতলেছিলেন ধর্মেন্দ্র? এত বছর পর ফাঁস শত্রুঘ্ন সিনহার ...
শুটিংয়ের প্রথম দিনেই ক্যাবারে নাচ? রণবীর-ভিকির সঙ্গে 'লভ অ্যান্ড ওয়ার'-এর শুটে যোগ আলিয়ার ...
সম্পর্কে সিলমোহর কৃতির! সমুদ্র সৈকতে প্রেমের জোয়ারে কার সঙ্গে ভাসলেন অভিনেত্রী? ...
তারকা সন্তানদের সহ্য করতে পারেন না! তবে হঠাৎ কেন শাহরুখপুত্র আরিয়ানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কঙ্গনা?...
'রোশনাই' ছাড়লেন অনুষ্কা গোস্বামী, শনের সঙ্গে জুটি বাঁধতে আসছেন কোন নায়িকা?...
হিন্দি ধারাবাহিকে অভিকা! জুটি বাঁধছেন কোন বলি নায়কের সঙ্গে?...
'শেষ সময়ে কাছে থাকতে পারলাম না, এটাই আফশোসের'-বাবার শেষযাত্রায় ছলছল চোখে আর কী বললেন রাইমা?...
'মনে হচ্ছে জীবন ওলটপালট হয়ে গেল'-স্বামী ভরত দেব বর্মার শেষযাত্রায় আর কী বললেন মুনমুন সেন?...
'সে পুরুষই নয়, যার মনে আঘাত লাগে না'- আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসে সমাজ বদলানোর বার্তায় আর কী বললেন অভিনেতা রাহুল দ...