নিজস্ব সংবাদদাতা | ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৪ : ৫৫

শনিবারের দুপুর। বাইরে ঝলসে যাওয়া গরম। সেই তেজ উপেক্ষা করে মহাজাতি সদনে একরাশ স্কুল পড়ুয়া। তারা ম্যাজিক শো দেখতে এসেছে। স্বাভাবিক ভাবেই মুখগুলো ঝলমলে। আচমকাই তাদের সামনে বড় ম্যাজিক! তাদের কাছে হাজির ‘ফেলুদা অ্যান্ড কোং’। স্কুলপড়ুয়াদের নিয়ে তাঁরা ম্যাজিক দেখবেন। তাদের সাক্ষী রেখে আগামী অভিযান ‘নয়ন রহস্য’-র ট্রেলার প্রকাশ্যে আনবেন। খবর ছড়াতেই সভাগৃহে উপস্থিত একাধিক সংবাদমাধ্যম। সেখানেই আজকাল ডট ইনের কাছে স্বস্তিপ্রকাশ পরিচালক সন্দীপ রায়ের। তাঁর কথায়, ‘‘হত্যাপুরীতে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, আয়ুশ দাস, অভিজিৎ গুহকে নিয়ে নতুন টিম বানিয়েছিলাম। সবাই প্রশংসা না করলেও সিংহভাগের ভাল লেগেছে। অর্থাৎ, নতুন ফেলুদা পাশ। তাই এবার হয়তো একটু বড় বিরতি নেব।’’ এও জানান, খুব ইচ্ছে, আগামীতে ফেলুদা আর প্রফেসর শঙ্কুকে একসঙ্গে আনার। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পর এই ‘ফেলুদা’ ‘মাচো’, ‘হ্যান্ডসাম’। এমন কথাও শোনা যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে। জানাতেই আজকাল ডট ইনের কাছে ইন্দ্রনীলের দাবি, ‘‘মাচো বা হ্যান্ডসাম কিনা জানি না। তবে সৌমিত্রবাবুর পংক্তিতে জায়গা পেয়েছি, যথেষ্ট।’’ প্রযোজনায় সুরিন্দর ফিল্মস।



‘হত্যাপুরী’র পরে ‘নয়ন রহস্য’ কেন? পরিচালকের যুক্তি, এখানে অনেক চরিত্র। এক বাচ্চাকে কেন্দ্র করে গল্প। ম্যাজিকের আকর্ষণ। পুরির পরে চেন্নাইয়ে পৌঁছে যাবেন দর্শক। এবং ফেলুদার এখানে মগজাস্ত্রের খাটনি অনেক বেশি। সব মিলিয়েই এই গল্প। নয়নকে ঘিরে রহস্য বলেই কি গরমের ছুটিতে ফেলুদা? সায় দিয়েছেন সন্দীপ, ‘‘একেবারেই তাই। তাছাড়া, গরমের ছুটির বিস্তৃতি বেশি। শীতের ছুটি বেশি দিনের হয় না। তাছাড়া, গত শীতে ছবিমুক্তি ঘটলে বেশি তাড়াহুড়ো করতে হত। এতে ছবির ক্ষতি হত।’’ পরিচালকের সঙ্গে কথোপকথনের মধ্যেই হাজির ‘নয়ন’ ওরফে অভিনব বড়ুয়া। হলুদ টিশার্টে প্রজাপতির মতোই ফুরফুরে কিশোরের কথায়, ‘‘জেঠু একটুও বকে না। খুব ভাল। যেভাবে দেখিয়েছেন সেভাবে করেছি। বাকিটা পর্দায় দেখতে হবে।’’ শুনে হো হো হাসি সন্দীপ-ইন্দ্রনীলের। পরিচালকের দাবি, বাকিদের থেকে তাঁর শিশুশিল্পী অনেক বেশি পরিণত।



শো শুরুর আগে ছিলেন অভিজিৎ গুহ (জটায়ু), শুভ্রজিৎ দত্ত, দেব চট্টোপাধ্যায় (ম্যাজিশিয়ান)। অভিজিতকেও সবাই ‘লালমোহনবাবু’র চরিত্রে ফুল মার্কস দিয়েছেন। সেই খুশিতে তাঁর সংযোজন, ‘‘পুরিতে আমার নুলিয়া সন্দীপ রায়। চেন্নাইতেও। আমার মতো করে চেষ্টা করেছি। দর্শকেরা প্রশংসা করছেন। বড় পাওনা এটা।’’ সঙ্গে রহস্য ফাঁস করেন, তিনিও একটা সময় ম্যাজিক দেখাতেন। মহাজাতি সদনে পা রেখে সেই স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। দেব জানিয়েছেন, এই ছবির দৌলতে তিনি অনেক ম্যাজিক শিখে ফেলেছেন! চরিত্রের রেশ কাটতেও অনেকটা সময় লেগেছে। ফেলুদা পরিবারে যুক্ত হতে পেরে তিনি গর্বিত।



লাস্ট বাট নট দ্য লিস্ট, ফেলুদা ইন্দ্রনীল। গরমকে ঢিট করতে মগজাস্ত্র খাটিয়ে সাদা পোশাকে সুসজ্জিত তিনি। আগের বার পুরি, এবার চেন্নাইয়ের সমুদ্র। খুব পার্থক্য? ঝকঝকে হেসে জবাব, ‘‘স্থান মাহাত্ম্য, পরিবেশ, দর্শণীয় স্থান আলাদা। পুরির সমুদ্র বেশি উত্তাল। চেন্নাইয়ের সমু্দ্র যেন তুলনায় শান্ত। তবে কমন ফ্যাক্টর গরম।’’ এবং আফসোস, গত গরমে সন্দীপ রায় পুরিতে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবার চেন্নাই। আগামী বার হয়তো রাজস্থানে নিয়ে যাবেন! সবার, পাহাড় বা শীতের জায়গায়, বিদেশে শুট করলে হয় না? পরিচালকের যুক্তি, ফেলুদা কোনও দিন এসব জায়গায় যানইনি! ইন্দ্রনীল এও জানিয়েছেন, শিশুশিল্পীর সঙ্গে কাজ করে সবথেকে মজা পেয়েছেন। না, একেবারেই পিতৃসুলভ অনুভূতি থেকে নয়। বরং, বাকিদের থেকে বেশি বুদ্ধিদীপ্ত বলে। অভিনব খেতে খুব ভালবাসে। ওকে নিয়ে তাই খাওয়াদাওয়া করে আরাম পেয়েছেন।   

সৌজন্যে: সুরিন্দর ফিল্মস