প্রিয়দর্শী চক্রবর্তীর তিনটি কবিতা

বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বাড়ি আছেন? 

--------------------------------------  

ভাবনার কেঁচো মেখে বঁড়শিতে শব্দ গাঁথার মোহ

অপেক্ষা অনন্ত পুকুরপারে...

কান জ্বালানি ভ্যানভ্যান একেঘেয়ে মশার   

থাবড়ায় কবি নিজের গালে, টনটনে ব্যাথা

মজে উঠে হারিয়ে ফেলে পথ

ক্রোধ প্রতিহিংসা শেষমেশ নুয়ে নম্র,

কালচক্র চুলকে আরাম খোঁজে আঙুল, ভ্রমের আঁচড়ে।

 

এদিকে জমাট মেঘ পাথুরে কালো, কড়িবরগায়

পেঁচিয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপ্ত চরাচরে...!

যে কোন সময় নামতে পারে ধস

কবি জানে! জানে না দাগতে অক্ষরগোলায়

প্রতিরোধের কামান, পালটা তুর্যনিনাদে

চাইতেন বাতিল পূর্বপুরুষ এক, প্রজন্মে প্রত্যয়,

আজও আকুতির প্রলাপ‘তুমি ভয় পাওনি’!

 

 

 হঠাৎ শক্তি চাটুজ্জে

----------------------

মাঝেমধ্যে অতল স্থবিরে ডুবে

খেই হারায় মগজ-মন ইচ্ছে-অনুভূতি

থমকে দাঁড়ায় মুহূর্ত, দমচাপা হাওয়ার নিরেট আস্তরণে

কী ভাবব, কী লিখব,

কোন শব্দের মাঞ্জা ছেড়ে ওড়াব গদ্যপদ্যের ঘুড়ি

লাটাই কোথায়? হারিয়েছি ঘরের কোণে জমে পাহাড়

বাতিল বর্জ্য চেতনার অনর্থক আলিঙ্গনে

 

তবুওঅনন্ত কুয়ার জলে চাঁদ

তবুওপৃথিবীর কিশলয়ে বেসে থাকা ভালো

তামসিক অরণ্যে এই মজে থাকা উজ্জ্বলে

মোহ-বোধ-স্বপ্নে শরক্ষেপ

যদিও নিভৃত, তবু মানস অধিরথে

কাতর নাছোড় ছিঁড়েকুটে ফেলার আশ্লেষ

বেতাল নির্ঘণ্টে বিধুর, সময়ের সূতপুত্রের

 

 

 

নিজের মুদ্রাদোষে

-----------------------

রাস্তা আমার পদব্রজে একা

সিঁথি কেটে রোজ চলছি ভিড়ের মাঝে

এই কোলাহল, গুঞ্জনের রেশ

আবহ-সুরের মূর্ছনাতে বাজে

 

নিত্যদিনের ধোঁয়ায় ঢাকা শহর

ফুটপাতেতে দেদার বেচাকেনা

লাভ-অলাভের অঙ্ক শিকেয় তুলে

চোখের খিদেয় দোসর খুঁজে গোনা

 

ক্রমশ যেন একলা মনের স্বর

ভিজিয়ে তোলে হৃদমাঝারের পাঠ

তবুও জানি, চলতে হবে ঢের

প্রেমে-অপ্রেমে ভুবনডাঙার মাঠ

  

 

 

 

  • প্রিয়দর্শী চক্রবর্তী