১
শূন্যের জাতক
শূন্যের ভেতর দাঁড়িয়ে
শূন্যকে দৃশ্যমান করে তোলা
এখানে নিন্দিত।
যেন বেড়ালের পায়ের ভেতর এই জন্ম পেয়েছি
কোনো শব্দ না করেই চলে যাব।
অথচ এই তীব্র শীত
প্রকাশের মতো নির্জনতা নেই কোথাও।
২
মার্গদর্শন
পাথরের এই নির্জনতাই উপাদেয়।
আলোও অশ্লীল
যদি সে নষ্ট করে নিরীহ অন্ধকারের ধ্যান।
কাঁচামাংসের ক্রোধ- ওগো, মিলন হেতু এই ভীড়
প্রদর্শনকালীন এই প্রসববেদনা
কোনো মাতৃস্নেহ তো নয়
তবু মহানগরের অলিতে গলিতে আজও শিল্পের জন্ম হয়।
এও এক অদ্ভুত বিরম্বনা, দেখো হে মানুষের বাচ্চা
তোমার পক্ষে আলোর প্রচার
তবু অন্ধকারের মার্গদর্শন তো সবার জন্য নয়।
৩
মনঃস্তাপ
তোমার মুখের দিকে মেঘ ভারী হয়ে আছে দেবী
বৃষ্টির সম্ভাবনা আমি আজও বুঝতে পারিনা।
হাতের চামড়া কি দিনদিন মোটা হয়ে যাচ্ছে আমার।
তোমাকে স্পর্শ করে, নিজেকেই অগ্রাহ্য করি
নিজেকে স্পর্শ করে তোমার অভাব ছিঁড়ে খাই
এই ক্ষিদের ক্রোধবর্ম
এই রাক্ষসের মনঃস্তাপ
তোমার পায়ের নীচে আলগোছে রেখে
নিভে যাওয়া প্রদীপের সলতের মতো আমি
থেকে যেতে চাই দেবী।
৪
শরিক
বাপ ঠাকুর্দার একান্নবর্তী উঠোন
তার বুকে পাঁচিল দিয়ে আমরা আলাদা হয়ে গেলাম
শুধু কি এক অমোঘ টানে
মানুষ নয়
কেবলমাত্র পাঁচিলরাই একে অপরকে ছুঁয়ে থাকল।
৫
সূর্যাস্ত ও মনোবিদ
তিনটে সূর্যাস্ত রয়েছে তোমার হাতে।
লাল আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে মনোবিদের মুখ সময়কে ভারী করে তুলছে।
আর চরাচর জুড়ে ঘন্টা পেটানোর শব্দে জেগে উঠছে বরফের কারখানাগুলি।
এই সূর্যাস্তের হাতে গোণা দিনগুলোয় তুমি কাকে সঙ্গে পেতে চাও?
করোটির ঘুমের ভেতর আবার জন্ম নিচ্ছে অনুতাপের হাত - পা - মুখ
শীতের তীব্র চীৎকারকেও আর উপেক্ষা দিয়ে আটকানো যাচ্ছে না
রক্তমাংসের এই গুহাকেও ছেড়ে দেওয়া যাচ্ছে না অনিবার্য কারনবশত
শেষ সূর্যাস্তের নীরবতার জন্য ক্রমশ ফ্যাকাসে হয়ে আসছে তোমার নির্বাপিত মুখ।
৬।
শূন্যতা বিষয়ে রাক্ষস
ক্ষিদের উপর অনবরত জল ঢেলে দিচ্ছে আজন্ম রাক্ষস।
আর শ্বাসকষ্টের বাজারে ভীড় - কেউ কারো চেনা নয়।
অনুপস্হিতির শব্দ এখন আরোও প্রকট
ছাপাখানার সরু গলি সম্ভবত এজন্যই এখনও বন্ধুত্বপূর্ণ।
মার্কস পড়া মেয়ে আমার পকেটে আজ কোনো অর্থ নেই যা তোমার স্বয়ংকে সুখী করতে পারে
আজ শূন্যতা বিষয়ে অনেক গল্প শোনাতে পারব আমি
ক্ষিদের বিষয়ে শিক্ষিত এই শরীর আজ ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসছে
টেবিলের সাদা কাপড়কে এখন প্রশ্ন করো - যা ঘটতে চলেছে তার জন্য সে প্রস্তুত কিনা
ছুরি কাঁচিকে প্রশ্ন করো - মাংসে ও মর্মে সে কতটা সপ্রতিভ
তারপর ডুবে যাও শরীরের লবনে যেভাবে ঘুমের কোলে হেসে ওঠে দুধের শিশু।