ছবি যেখানে কথা বলে

যে দিকেই চোখ ফেরাই ছবি। ছবি ছবি আর ছবি। চোখ জুড়িয়ে যায় রঙের খেলায়। এমন ছবির দুনিয়ায় ভেসে থাকা জীবনের যেন এক পরম প্রাপ্তি -
গত ১০ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ -এর সন্ধ্যায় কলকাতার যোগেন চৌধুরী সেন্টার ফর আর্টস এর 'চারুবাসনা' আর্ট গ্যালারিতে শুভারম্ভ হয় 'চিত্রকল্প'  আর্ট ফাউন্ডেশন -এর প্রথম চিত্র প্রদর্শনী। চলে ১৪ই সেপ্টেম্বর অবধি। এই প্রদর্শনীর মুখ্য উদ্যোক্তা হলেন শিল্পী কৃষ বসু মহাশয় যিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব ভিজুয়াল আর্ট -এ স্নাতক। উনি ভারতীয় পুরাণশাস্ত্র ভিত্তিক কাজ ও ভারতীয় চিত্রকলার ধারা অনুসরণ করে কাজ করেন। ওঁর সঙ্গে সহ উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছেন শিল্পী অঞ্জন মিত্র মহাশয় যিনি ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজ থেকে স্নাতক। উনি মূলত সুরিয়েলিজিম বা পরাবাস্তবতাবাদ নিয়ে বিমূর্ত শিল্পধারায় কাজ করে থাকেন।


ওঁদের কথায় এই প্রদর্শনী আয়োজন করার মুখ্য উদ্দেশ্য হল, আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা তথাকথিতভাবে কোনওদিনই আঁকা বা শিল্প নিয়ে শিক্ষা অর্জন করতে পারেননি বা আর্ট কলেজের থেকে ডিগ্রি করতে পারেননি অথচ তারা প্রত্যেকেই যথেষ্ট প্রতিভার অধিকারী, তাদেরকে একত্রিত করে তাদের শিল্পকর্মকে যাতে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায় যাতে তারা শক্ত প্লাটফর্ম পান, প্রচারের আলো দেখতে পান, তার সঙ্গে যে সব শিল্পীরা চাকুরীজীবি বা এমন অনেক মহিলা শিল্পীরা আছেন যারা সংসার জীবন সামলেও শুধুমাত্র ছবি আঁকবার তাগিদে ছবিকে ভালোবেসে নিজের মতো সময় বের করে অনবরত ছবি এঁকে চলেছেন তাদের শিল্পকীর্তিগুলিকেও একই সঙ্গে স্থান করে দেওয়ার প্রয়াস রাখি আমরা।


প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেছেন শিল্পী পম্পা প্রধান,  শিল্পী দেবাদীপ ঘোষ, শিল্পী তথা কার্টুনিস্ট জয়ন্ত বিশ্বাস,  শিল্পী প্রত্তুষা মুখার্জী। উদ্বোধক শিল্পীদের কথায় এখানকার প্রতিটি কাজই নিজ নিজ ধারায় অনবদ্য, অনন্য। যারা প্রথমবার এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন তাদের কাজগুলিও এতটাই পরিণত যে বোঝা যায় না তারা এরা প্রথমবার কোনও প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। এরই মধ্যে এই গ্যালারির কর্ণধার স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী শ্রী যোগেন চৌধুরী মহাশয়ও প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেছেন আর সবার কাজের প্রশংসা করেছেন এবং ভবিষ্যতের শিল্পীদের জন্য শুভকামনা ও স্নেহাশীষ জানিয়েছেন। এই প্রদর্শনীতে কলকাতাসহ ও অন্যান্য জেলা থেকেও বিভিন্ন শিল্পীরা তাদের শিল্পের পসরা নিয়ে হাজির ছিলেন। প্রদর্শনীটির মিডিয়া কভারেজের দায়িত্বে ছিলেন today story র পক্ষ থেকে নুপুর রায় ও প্রীতম সরকার। এই প্রদর্শনী -র প্রতিটি কাজই নিজ আঙ্গিকে ও স্বকীয়তায় সুন্দর।


বিভিন্ন মিডিয়াম -এ কাজ করেছেন শিল্পীরা, জলরং, চারকোল, পেন্সিল ওয়ার্ক, পেন ওয়ার্ক, অয়েল ও অ্যাক্রইলিক। এখানে প্রতিটি কাজই স্বমহিমায় উজ্জ্বল, ঠিক যেন বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য,  বর্তমান সময়ের যে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা দিনযাপন করছি এই চিত্রপ্রদর্শনীটি তারই মধ্যে যেন মরুভূমির মধ্যে থাকা এক টুকরো মরুদ্যান। 

  • কবিতা বৈদ্য