একটাই দৈত্য পুষেছিলাম এ যাবৎকালে–
খাড়া নাক, কুলোর মতো কান, ভাটাভাটা চোখ।
সে যখন হুঙ্কার ছাড়তো পুকুর হয়ে যেত পুষ্করিণী,
জানালা হয়ে যেত গবাক্ষ।
আমাদের ঘরের ভেতর একটা ছোট কুলুঙ্গিতে
রাখা ছিল তার প্রাণ।
সেই প্রাণকে আমরা মাঝেমাঝে আশরীর ভিজিয়ে দিতাম,
তার কাছে নিচু হয়ে প্রণাম করে বলতাম,
‘প্রাণ জুড়াও, প্রাণ জুড়াও’।
মাঝেমাঝে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে দিতাম
যাতে প্রাণ আলো পায়।
প্রাণের ভেতর আলো যাওয়া ভাল
একদিন তাকে বললাম ‘ আমাকে খুবসুরত নকরানি এনে দাও’
সে সমস্ত বসতি খুঁজে এনে দিল।
একদিন চাইলাম নক্ষত্রের গাছ।
আকাশ ছিঁড়ে চার টুকরো করে সে আনলো।
আরেকদিন আক্ষেপ করে বলেছিলাম
‘একটা শাসকের চেয়ার পেলে মন্দ হতো না।’
সে হাড়ের সিংহাসন এনে ফেলে দিল পায়ের কাছে
শুধু যেদিন বললাম, ‘ একটা মানুষ এনে দাও দেখি’
সেদিন থেকে দৈত্য একদম ভ্যানিশ।
কুলুঙ্গিতে আজও মোমবাতি জ্বলে,
প্রাণের ভেতর আলো যায় কিনা বুঝতে পারিনা।