নির্বাণ
আমার শব্দ তোমার সহ্য হয়নি,
আবার নির্বাক সত্তাকেও ভেবেছ ঝড়ের পূর্বাভাস,
পুকুরের মতো শান্ত চোখের জলে
দেখেছিলে উত্তাল সমুদ্র
আবার শুকোনো খাঁড়িপথ,
দেগেছিলে বাঘের ফাঁদ
আমার স্থিরদৃষ্টি, তোমার অস্থিরতার মুখোশ
তবু নিরন্তর এ প্রাণ
তোমায় ভালোবেসেছে
দশ মিনিট আগুনের আঁচে
শব্দ, জল, স্থিতি, শরীর-
তোমার সমস্ত অবহেলার নিশ্চিত নিদর্শন
পরমাণু হয়ে বাতাসে মিশে যাওয়ার পর
জ্যোৎস্নার আনত আলো,
চৈত্রের স্নিগ্ধ বাতাস
আর প্রথম বৃষ্টির চুম্বনে
আমি প্রমাণ করে দিলাম,
ভালোবেসেছিলাম
হাটের কথা
কচি তৃণসমুদ্র থেকে বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে
ছাগলটাকে তুলে আনা হলো হাটে
গোটাকয়েক কাঁঠালপাতাতেই সে খুশি
মালিক পরমেশ্বর, ভাবতে ভাবতে
মনের আনন্দে সে চোয়াল নাড়ে...
ঠিক একইভাবে চোয়াল নেড়ে
সন্ধেবেলা আমরা ছাগলটাকে চিবোলাম।
নরম পাপড়ির মতো ঠোঁটের আড়ালে সঙ্গোপনে লুকিয়ে রাখা
আমাদের ধারালো কৃন্তক দিয়ে
হাটে একবার বিক্রি হয়ে গেলে
সকলে ছাগল হয়ে যায়।
মৃৎশিল্পী
কালের নিয়মে আমি কিছু আগে এসেছি
তাই স্রেফ বুড়ো বলে
অন্য কারোর সাথে গেলে চলে
অথচ তুমিও জানো
এই যাওয়া সেই যাওয়া নয়,
প্রোটনে প্রোটন লাগা, এ কেবল জীবনীর ক্ষয়
তবুও এখন চাই
এমনই ক্ষয়ের পরে ক্ষয় হতে হতে
সকল অন্য কেউ যাক যার পথে
যেমন দূষিত জল
প্রতিমার মাটি খেয়ে ফেলে রাখে নগ্ন কাঠামো
বাজারে থাকে না যার কানাকড়ি দামও
সেদিনই আমার প্রেম, জেনো
পূজারী আমি তো নই পনেরো পাড়ার
ভাঙা কাঠামোয় মাটি লেপি আরবার
সুপারসেট
ক্ষুদ্রতম পরিসরে, জেনো
মানুষের দেহ অক্কা পায়
তারও দু'ধাপ উপরে
অক্কা পায় জাতির জাতীয়তাবোধ
জাত-ধর্মের খোলস ছেড়ে উলঙ্গ মানুষ বেরিয়ে এলে
অক্কা পায় পুঁচকে এই পৃথিবীটা
মানুষের বিদেহী আত্মা ষড়রিপু অতিক্রম করে
নেপচুনের মঙ্গল কামনা করলে
আমাদের সৌরজগৎ অক্কা পায়
তারও উপরে, ভিনগ্রহীকে যে বন্ধু হিসেবে পেতে চায়
জেনো তার কাছে অক্কা পায় আকাশগঙ্গা
বস্তুর উৎস সন্ধানে, শীতল ইথারসমুদ্রে সাঁতরে
ভগবানের অস্তিত্ব নির্মূল করতে চেয়েছে যে,
তার কাছে আবার ব্রম্ভান্ডই একমাত্র।
তবে সবার উপরে, অক্কা পায়
মানুষের চেতনা
কোন মৃত্যুভয় তোমার জন্য?
সময় আছে, ভেবো...