শ্যামরায়মঙ্গল- প্রতাপাদিত্যের গুপ্তধন, সর্দার ও চিফ

সর্দারের নির্দেশে জামশিদ গাড়ি চালিয়ে যেখানে এসে পৌঁছল সেটি উত্তর কলকাতারই একটি আবাসিক এলাকা। গাড়ি থামিয়ে সর্দারকে নিয়ে যখন একটি বাড়িতে প্রবেশ করল জামশিদ তখন তার পকেটে রাখা আগ্নেয়াস্ত্রটির অস্তিত্ব দক্ষ চোখ চিনে নিতে পারবে অল্প চেষ্টাতেই। গাড়ি গলির মুখে পার্ক করার সময়েই জামশিদ ফোন করেছিল সর্দারের বলে দেওয়া একটি নম্বরে। গন্তব্য বাড়িটি থেকে একজন লোক এসে জামশিদ এবং সর্দারকে ভিতরের ঘরে নিয়ে গিয়ে বসালে দেখা গেল সেই ঘরে দুজন মানুষ আগে থেকেই বসে রয়েছেন  সর্দারকে দেখে দুজনেই উঠে দাঁড়িয়ে হাত মেলালেও সর্দার প্রধান লোকটিকে চিনে নিতে দেরি করলেন না।

 

 

 ‘হ্যালো, সর্দার মালিক’-এর উত্তরে প্রথমজনের সাথে করমর্দনের সময়েই সর্দার সামান্য হেসে বলে উঠলেন, ‘আপনিই তাহলে, চিফ ?’  

 

 

  চিফ হাসিমুখে সম্মতিসূচক ঘাড় নেড়ে পাশের জনকে দেখিয়ে বললেন, ‘মিট আওয়ার সিইও, মল্লিক’।

 

 

 ‘নাইস টু মিট ইউ। আপনারা দেখছি একেবারে কর্পোরেট কালচার এনে ফেলেছেন। এক্সেলেন্ট’, বলেই বেশ জোরে হেসে উঠলেন সর্দার।

 

 

 

 

  স্মিত হেসে সর্দারের হাসিতে যোগ দিয়ে চিফ বললেন, ‘আমাদের কাজের অনেকগুলি উইং রয়েছে। একেকটা উইং-এর কাজ একেকটা টিম দেখে। বিভিন্ন টিমের মধ্যে কো-অর্ডিনেশন করে, সিইও মল্লিক। বেঙ্গলের বাইরে কাজ দেখার জন্য আছে একজন ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট’।

 

 

 ‘আমি হাইলি কনভিন্সড, চিফ’, সর্দার বলেই ফেললেন।

 

 

 ‘এমনকি আমাদের কয়েকটি উইং রীতিমত ইনকাম ট্যাক্স পে করে। আমরা রিটার্ন সাবমিট করি’।

 

 

 ‘ওয়াও’, সর্দারের চোখেমুখে বেশ খুশির ছোঁয়া দেখা গেল।

 

 

 ‘এনিওয়ে, কী নেবেন বলুন’, চিফ বেশ তৃপ্তির গলায় বললেন।

 

 

  হালকা ড্রিঙ্কস সার্ভ করা হলে তিনজন গুছিয়ে বসে কথাবার্তা শুরু করলেন। যে লোকটি সর্দারদের ঘরে নিয়ে এসেছিল সে জামশিদকে নিয়ে ভিন্ন ঘরে চলে গেল। টেবিলে রাখা কাজুর প্লেট থেকে একটি মুখে পুরে দিয়ে সর্দার বললেন, ‘কয়েকবছর আগে আমার দুই বাংলার টিম ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাওয়ার পরে আমি কিছুদিন ইন্ডিয়া হয়ে মিডল ইস্টে গা ঢাকা দিয়েছিলাম। কিছুদিন হল আমি ফিরেছি। এখন আবার নতুন করে গুছিয়ে নিতে চাই। এই কারণেই আপনাদের সাথে মিট করা’।

 

 

 

 

 ‘আপনার কেসটা আমরা জানি মিঃ মালিক। ইন্টারপোল আপনার পিছনে পড়েছিল। দুই দেশের এনসিবি একজোট হয়ে আপনাকে খুঁজছে অনেকদিন ধরে’, মল্লিক এই প্রথম মুখ খুললেন।

 

 

 ‘মল্লিক আর মালিক-এর স্পেলিং-এ খুব বেশি ফারাক নেই। আপনি আমার খবর রাখবেন সেটাই স্বাভাবিক’।

 

 

 সর্দারের মজার ছলে বলা কথায় হেসে উঠল সকলেই। চিফ বলে উঠলেন, ‘আরে মল্লিক, সর্দার যে নিজেই বাংলাদেশ এনসিবি-র একজন অফিসার ছিলেন ভুলে গেলে নাকি ?’

 

 

 ‘ভুলিনি চিফ’, বলে মল্লিক চোখে অদ্ভুত ইশারা করে গ্লাসে চুমুক দিল।

 

 

 সর্দার সেটি লক্ষ্য করলেন। গ্লাসে চুমুক দিয়ে বললেন, ‘দেখুন জামাল ছিল আমার রাইট হ্যান্ডও এরেস্টেড হওয়ায় আমার টিম দুর্বল হয়ে গিয়েছে। আমার সাপ্লাই চেন নতুন করে গড়ে নিতে আপনাদের হেল্প লাগবে’

 

 

 ‘আমাদের ফিল্ডে সর্দার মালিক হলেন একজন জানেমানে নাম। আপনার সাথে কাজ করতে পারলে আমরা খুশিই হব। কিন্তু আমার ছোটখাটো কয়েকটা প্রশ্ন রয়েছে’, চিফ বললেন

 

 

 ‘জ্বি বলুন’, সর্দার শুনতে চাইলেন

 

 

 ‘শুনেছি মনোময় সাহা নামে একজন সিভিল অফিসারের কারণে আপনার বেশ ক্ষতি হয়েছিল’

 

 

 ‘জ্বি’

 

 

 ‘এটাও শুনছি যে সেই মনোময় সাহার সাথে আপনি যোগাযোগ করেছেন রিসেন্টলি’।

 

 

 চিফের এই কথাটিতে সর্দার বেশ চমকে গেলেন। এই খবরটা এই গ্রুপের কাছে এল কী করে ? বললেন, ‘আপনাদের নেটওয়ার্ক বেশ স্ট্রং দেখতে পাচ্ছি। আপনার ইনফরমেশন সত্যি আছে’।

 

 

  চিফ একটা সিগারেট ধরালেন। সর্দারকেও অফার করে বললেন, ‘সাহার সাথে আপনার কাজের কী সম্পর্ক একটু বলবেন ? কারণ আমাদের স্টাডি বলছে সাহা কম্প্রোমাইজিং ক্যারেকটার নয় একেবারেই’।

 

 

 সর্দার সিগারেটে টান দিয়ে সামান্য রিল্যাক্স পোজে বসে বললেন, ‘আপনি কাজে নামার আগে বেশ হোম ওয়ার্ক করেন বুঝলাম। সর্দার খুশি হল। দেখুন, এই সাহাসাহেব হলেন একজন স্মল গাই। বাট ভেরি ভেরি ইন্টেলিজেন্ট। আমার লোকেরা ওকে শাস্তি দিতে চায়। কিন্তু আমি ওকে কাজে লাগাতে চাইএকজন লোককে মেরে ফেললেই তো সব খতম হয়ে গেল। এই দুনিয়ায় কত লোকের কত কিছু করার আছে। জাস্ট যোগ্যতা মতো কাজ দিতে হবে’

 

 

  চিফ একটু অবাকই হয়েছেন। বললেন, ‘সাহার মতন লোককে কাজে লাগাবেন কিভাবে ?’

 

 

 ‘ওঁর মেধাকে কাজে লাগিয়ে। ওঁকে আমি একটা কাজ করতে দিয়েছি। যদি ব্যর্থ হয় কিছু বলার নেই। যদি সফল হল তাহলে আমার লাভ আছে। ওর কারণে আমার যে ক্ষতি হয়েছে তার কিছুটা আমি ওকে দিয়েই উসুল করিয়ে নেব’।

 

 

 ‘সাহা রাজি হল ?’

 

 

 

 

 ‘রাজি করাতে হলএই দুনিয়ায় সব কিছুই কেনা যায় চিফ। কেবল ডিলটা ঠিকমত করে নিতে হয়’, বলেই হেসে উঠলেন সর্দার।

 

 

  চিফ কিন্তু হাসলেন না। বললেন, ‘কিন্তু আমরা একসাথে কাজ করতে চলেছি। এই সাহা যদি পাঁয়তারা করে তাহলে আমার টিম ছেড়ে কথা বলবে না’

 

 

 ‘এই দেখুন, একই গণ্ডগোল করে ফেললেন। আমার লোকেরা একই ভুল করে ফেলে। মিঃ চিফ, আমার কথা বুঝুন। মানুষের যেটা দুর্বলতা সেটাই তার শক্তি হতে পারে। আবার যেটা শক্তি সেটাই হতে পারে তার প্রধান দুর্বলতা’, সর্দার সিরিয়াস টোনে বললেন।

 

 

  চিফ গ্লাসে চুমুক দিয়ে বললেন, ‘আপনি দার্শনিকের মতন কথা বলছেন। এ আবার হয় নাকি ?’

 

 

  ‘আপনি প্রেম করেছেন ?’, সর্দার ভিন্ন কথা বললেন। 

 

 

 ‘এ আবার কী কথা !’, চিফ একটু যেন বিরক্ত হয়েছেন।

 

 

 ‘প্রেমে পড়লে বুঝবেন আপনি একজন মহিলার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। এই দুর্বলতা আপনি অনুভব করবেন। কিন্তু এই প্রেম আপনাকে দিয়ে এমন অনেক কাজ করিয়ে নিতে পারে যা আপনি সাধারণ অবস্থায় করবেন না। ফলে আপনার দুর্বলতার মধ্যেই আপনার শক্তি লুকিয়ে রয়েছে। আবার দেখুন আপনি যদি জানেন যে আপনি ভীষণ বুদ্ধিমান তাহলে যে কেউ আপনার ইগোকে চ্যালেঞ্জ করিয়ে আপনাকে দিয়ে অনেক কাজ করিয়ে নিতে পারেন, যেগুলি সাধারণ অবস্থায় আপনি করবেন নাসেক্ষেত্রে আপনার শক্তিই আপনার দুর্বলতার কারণ হয়ে দাঁড়াল’

 

 

  চিফ সর্দারের কথা বোঝার চেষ্টা করছিলেন। সর্দার গ্লাসে আবার চুমুক দিয়ে বললেন, ‘আমি সাহার ইগোকে চ্যালেঞ্জ করেছি একটু। একটা রহস্যের সমাধানের কাজ দিয়েছি ওকে। ওর সমস্ত বুদ্ধি মেধা দিয়ে ও কাজ করবে সেই রহস্যের সমাধানে। আসলে সে আমার কাজটাই করে দিচ্ছে। বিনে পয়সায় আমি একজন লোককে নিয়োগ করেছি আমার কাজ করে দেওয়ার জন্য’। বলেই সর্দার হা হা করে হেসে উঠলেন।

 

 

  সর্দারের হাসি থামলে চিফ সর্দারের চোখে চোখ রেখে বললেন, ‘সবই বুঝলাম, কিন্তু...’।

 

 

 ‘চিফ, আমি বলেছি সবকিছু কেনা যায়। তবে সবকিছু টাকা দিয়ে কেনা যায় সেকথা কিন্তু বলিনি। কখনও টাকা দিয়ে, কখনও সম্মান দিয়ে। কখনও আবার অহং-কে প্যাম্পার করিয়ে’, সর্দারের মুখে ইঙ্গিতময় হাসি।

 

 

 ‘কিন্তু আপনি খামখা রিস্ক নিচ্ছেন কেন ?’, চিফ যেন সন্তুষ্ট হতে পারছেন না।

 

 

 ‘আপনি কী ভাবছেন আমি বুঝেছি। ভেবে দেখুন মনোময় সাহা কী আছেন ? একজন সিভিল অফিসার। পুলিশ নয়, আর্মি নয়। আপনাদের সিবিআইও নয়। ওই লোকটা আমাদের কী ক্ষতি করতে পারে ? ওকে কিছু করতে হলে পুলিশের সাহায্য নিতে হবে। তবে আমি যা চমকে দিয়েছি সেই কাজ উনি আর করবেন বলে মনে হয় না। ছাড়ুন ওঁর কথা’।

 

 

  চিফ আর মল্লিক পরস্পরের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখে কিছু কথা বলে নিলেনকিছুক্ষণ বাদে মল্লিক বললেন, ‘আপনার ইন্ডিয়ান এজেন্ট হল রত্নদীপ। আপনি তা সত্ত্বেও আমাদের সাথে কাজ করতে চাইছেন কেন ?’

 

 

 সর্দার নিজের পকেট থেকে এবার সিগারেট বের করে হোস্টদের অফার করে নিজে একটা ধরালেন। বললেন, ‘এর কারণ একটা নয়, দুটো। প্রথম কারণ হল আপনাদের অর্গানাইজেশন রত্নদীপের তুলনায় অনেক বড়। আমি বড় স্কেলে কাজ করতে চাইছি’ 

 

 

 ‘দ্বিতীয় কারণটা ?’, মল্লিকের এই পয়েন্টেই আগ্রহ মনে হল।

 

 

 ‘যে কেসটাতে আমি মনোময় সাহাকে ইনভলভ করিয়েছি সেটির ডিলিংস রত্নদীপ ঠিক মত করতে পারছে বলে আমার মনে হচ্ছে না। সুলতানি যুগের কিছু কয়েন আমাদের হাতে এসেও চুরি গিয়েছে। চুরি কে করেছে রত্নদীপ বের করতে পারছে না। ডাইরেক্ট আমাদের হয়ে কাজ না করলেও আমাদের নিচুস্তরের কর্মীদের একজন মারা গিয়েছে, একজন হেভিলি উন্ডেড এবং একজনের হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের লাইনে এরকম ঘটনা ঘটেই। তবে ঘটনার পরে সিচুয়েশন কন্ট্রোলে নিতে পারছে না রত্নদীপ। ফলে ওর উপরে আমার ভরসা কিছুটা হলেও কমে গিয়েছে বলতে পারেন’।

 

 

  চিফ এবং মল্লিক দুজনেই বুঝতে পারলেন যে সর্দার একদম সত্যি কথা বলেছেন। নম্র গলায় মল্লিক বললেন, ‘আপনার অসুবিধা না থাকলে বলতে পারেন ঠিক কাকে আপনি খুঁজছেন’।

 

 

 ‘চিতপুর অঞ্চলে বহু পুরানো একটি বাড়ি ভাঙ্গতে গিয়ে কিছু সুলতানি কয়েনের হদিশ পেয়েছিল শামসুল এবং রতন নামের দুজনশামসুল মার্ডার হয়েছে। উন্ডেড রতন পরে সুস্থ হয়ে আমাদের জানিয়েছে ঘটনা। ঘটনাস্থল থেকে পুরো উধাও হয়ে গিয়েছে ওদের গ্রুপের সর্দার লছমন নামের একজন’

 

 

 কয়েন কটা ছিল ?’

 

 

 শামসুলের প্যান্টের পকেটে পাওয়া গিয়েছে দুটো গোল্ড কয়েন মার্কেট প্রাইস দুটো মিলিয়ে এক লাখের বেশি

 

 

 আসলে কটা কয়েন ছিল ? মানে চুরি গিয়েছে কটা ?’

 

 

 রতনের কথা অনুযায়ী গোটা পঞ্চাশেক হবে

 

 

 অর্থাৎ প্রায় ত্রিশ লাখের মাল নিয়ে পালিয়েছে লছমন

 

 

 প্রাথমিক অনুমান সেটাই

 

 

 

 

 আমি কী ধরে নেব কয়েকশো কোটির কারবার করা সর্দার মাত্র ত্রিশ লাখের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন ? এর জন্য একজন শখের গোয়ান্দা নিয়োগ করেছেন ? তাও আবার বিনে পয়সায় ?’, চিফ বলে উঠলেন

 

 

 নিশ্চয়ই না’, সর্দার হেসেই জবাব দিলেন

 

 

 তাহলে ?’

 

 

 পুরো খাজানা পাওয়া গেলে তার পরিমাণ এর তুলনায় অনেক বেশি

 

 

 গুড এবার বুঝলাম কিছুটা দেন, আপনি ঠিক কী চাইছেন আমাদের থেকে এখন

 

 লছমনকে খুঁজে বের করা যেহেতু আমি আন্ডারগ্রাউন্ডে রয়েছি, তাই আমার হয়ে আপনারা কাজ করবেন এছাড়াও অন্যান্য কারবারেও আপনাদের সাথে টাই আপ করব আমি

 

 

  ডিনারের ব্যবস্থা করেছিলেন চিফ বিরিয়ানি, রেজালা, বুরহানি খাবার টেবিলে বসতে বসতে চিফ বললেন, ‘আমাদের ডিল শুরু হয়ে গেলে রত্নদীপের কী হবে ?’

 

 

 রত্নদীপ যেমন কাজ করছে করবে আপনারা লার্জার স্কেলে কাজ করবেন

 

 

 রত্নদীপের সাথে আমাদের ক্ল্যাশ হলে ?’

 

 

 সেটা আমি দেখে নেব

 

 

 যাই বলুন মালিকসাহেব, আপনি আপনার লোকেদের নিয়ে ভীষনই পজেসিভ মনোময় সাহা বলুন বা রত্নদীপ, কারোর গায়েই আপনি হাত দিতে দেবেন না দেখছি’, হাসতে হাসতে চিফ বললেন

 

 

 বিরিয়ানিটা আর্সালানের বেশ আয়েশ করেই খাচ্ছিলেন সর্দার বুরহানিতে চুমুক দিয়ে বললেন, ‘একেবারে হার্ডকোর বদমায়েশি কেউ না করলে আমি ড্রাস্টিক কিছু করি না, চিফ মানুষ কাজে ভুল করতে পারে ভুল হয়েছে বুঝতে পারলে আমি সুযোগ দিতে চাই কিন্তু কেউ ইচ্ছে করে দুশমনি করলে সর্দার মাফ করে না আর একটা কথা…’

 

 

 বলুন

 

 

 আপনারা যে যার লাইনে থাকবেন কেউ লাইন ক্রশ করে অন্যের রাস্তায় এসে পড়বেন না ভুল হতে পারে কিন্তু ইচ্ছে করে রাস্তা কাটবেন না সর্দারের কিছু উসুল আছে উসুলের বাইরে যেতে আমাকে বাধ্য করবেন না, প্লিজ

 

 

 আমি আপনার সাথে একমত মিঃ মালিক হোপফুলি আমরা বিশ্বাস রেখেই কাজ করতে পারব আগামীদিনে

 

 

***

 

 

   আজকের আলোচনার কিছুই জামশিদ শুনতে পাচ্ছিল না যে লোকটা জামশিদকে অন্য ঘরে নিয়ে এসেছিল তার নাম জানা গিয়েছে, মুন্না মুন্না বডিগার্ড লেভেলের লোক চিফ বা অন্যের সম্পর্কে কোনো ইনফরমেশনই বের করা গেল না কেবল সর্দার হ্যান্ডশেক করার সময়চিফশব্দটি শুনতে পেরেছিল জামশিদ পাশের ঘরে বসে মাঝেমধ্যে সর্দারের হাসির শব্দ ছাড়া কিছুই কানে আসেনি সর্দারকে ফেরার পথে কিছু জিজ্ঞাসা করার সাহসও নেই বিলকিসকে কী রিপোর্ট দেবে বুঝতে পারছিল না সে অর্গানাইজেশনের মধ্যে অনেককিছু হয়ে চলেছে টের পাচ্ছে জামশিদ রত্নদীপ স্যারের নজরের বাইরে অনেক কিছু ঘটছে সুইটি ম্যাডাম কিছু চাল চালছেন জামশিদ নিজেও আদতে মুন্নার মতনই বডিগার্ড কাম ড্রাইভার লেভেলের হলেও তাকে অনেক বিষয়ে চোখকান খোলা রাখতে হয় কী ঘটছে বুঝতে না পারলেও জামশিদকে খুব তাড়াতাড়ি বুঝে নিতে হবে যত নিখুতভাবে বুঝে নিতে পারবে ততই এই লাইনে তরক্কী করতে পারবে নিজের ভিতরে একটা অশান্তি টের পেল জামশিদ মুন্না তাকে অন্য একটা ঘরে খেতে ডেকে নিয়ে গেল যখন জামশিদ এই বাড়িটার প্রতিটি ঘরের উপরে একবার ভালো করে চোখ বুলিয়ে নিল কখন কী কাজে লাগে, বলা যায় না

  • 2024-06-09
  • সর্দার ও চিফ ( নবম পর্ব )