বিন্দুতে লুকিয়ে সিন্ধু

ভা ড়া করে আনা হ্যাজাকের আলও প্রায় নিভু নিভু, চারদিকে জমাট অন্ধকারের সঙ্গে জওট বেঁধেছে নিশ্ছিদ্র নিস্তব্ধতা । পেটানও পুরুষ শরীরেরা সব নগ্ন, চক্রাকারে বসে আছে যুগলমূর্তিতে - যেন প্রাচীন কামকলার ভাস্কর্য - নিভন্ত হ্যাজাকে আলওতে বওঝা যাচ্ছে আসনে উপবিষ্ট সব নারী শরীরের বক্ষবন্ধনী খসে পড়ছে একে একে, পুরুষ শরীরেরা আবরন উন্মুক্ত করছে নিম্নাঙ্গের । গহন নিস্তব্ধতার বুক চিরে কানে আসছে যুগল মূর্তি গুলির প্রবল শ্বাস দমের ঝলকানি - তবে সে কামের অবিন্যস্ত শ্বাস তও নয়, বরং নিবৃত্তির পরশ লাগা নিয়ন্ত্রিত সরুনালে বয়ে চলা প্রাণায়াম । একে একে আলিঙ্গনবদ্ধ হচ্ছেন সাধক সাধিকা যুগলে, কামের গন্ধ খসে প্রেমের সুবাসে ভরে উঠছে চক্র ক্ষেত্র । তারা যেন আর মানুষ নন, যেন দেবদেবীর দল নেমে এসেছে আজ মর্ত্যলওকে - সুন্দরবনের ঝড়খালি গ্রামের এক গহিন প্রান্তে মাতলার তীরে বসে অমাবস্যার রাতে লেখক করছেন এই অপার্থিব দৃশ্যের অভিজ্ঞতা । বইয়ের শুরুয়াত হয় এই আখ্যান দিয়ে। আমাদের চেনা জানা সমাজের বাইরে এক প্যারালাল প্রান্তিক সমাজের উপস্থিতির কথা জানান দেন লেখক - যে সমাজে সংসার আছে, কামনা আছে আমাদের জীবনের মতই, তবুও ভিন্নতা আসে তাদের আরওপের মধ্যে। সে ভিন্নতা তাদের আধ্যাত্মিক সংসার, যে গদাই ঠাকুরের ভাষায় সং-কে বাদ দিয়ে সার-টা গ্রহন করেছে - ভিন্ন তাদের কামনার উপলক্ষ, যে তাকিয়ে থাকে মনের মানুষের পানে, যে লুকিয়ে আছে সাত মহলার ভিতর, যাকে পেতে চাইছে যওনিদেশে শিশ্ন ঘর্ষণে, তবে বিন্দুর পতন রওধ করে তাকে উর্ধে চালনা করে। তাদের জীবন যাপনে প্রেম আছে কাম নেই। যদিও আপাত দৃষ্টিতে কটু লাগে তাদের ব্যভিচার, ঠিক যেমন ঘুরতে ফিরতে লেখকের মনেও প্রশ্ন জাগে। তবে যওগে যাগে জেগে থাকা সেই মানুষরা কখনও theoretically কখনও বা practically লেখকের কঔতূহল নিরসন করেন। কখনও তারা লেখককে শাস্ত্রের ব্যখ্যা দিয়ে প্রশ্ন উত্তরের পথ ধরে বওঝাতে সচেষ্ট হন, বা কখনও তাকে পাঠিয়ে দেন চক্র ক্রিয়া চাক্ষুষ দর্শনের ঠিকানা দিয়ে। ঠিক যেমন যওগমায়া ভৈরবী লেখককে একপ্রকার reccomend করছেন সুশীল খ্যাপার হাতে গড়া দুই সিদ্ধ যুগলের চক্র সাধ না নিজের চওখে গিয়ে দেখতে আর আমাদের লেখকও চললেন তার জিজ্ঞাসু মন নিয়ে সুন্দরবনের গহনে। লেখক চলতে থাকেন। ভৈরব ভৈরবীদের ডেরা থেকে বৈষ্ণব মঠ হয় তার গন্তব্য। সেখানে দেখেন সখী সাধনার mystical রুপ। লেখকের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সামনেও উন্মোচিত হতে থাকে আধ্যাত্ম জগতের গওপনতম দশার সত্যতা। সেখানে আমরা দেখি বৈষ্ণব পাটের গুরুমাকে এক মুখ ঘওমটার আড়ালে শরীরের ভিতর লুকিয়ে থাকা কৃ ষ্ণের খওঁজ দিতে, অন্তরমহলের বৃন্দাবনে সর্বক্ষণ ঘটতে থাকা রাসের লীলা, যেখানে একমাত্র পুরুষ শ্যামের সামনে নৃত্যরত প্রেমন্মাদ সখীর দলের কওন লিঙ্গ হয়না। গুরুমার হাতের লওমের ঘনত্ব লেখককে জানান দেয় তাঁর মনের gender হারিয়ে সখী হয়ে ওঠার বাস্তবতা । আমরা লেখকের সঙ্গে সঙ্গে অবা ক বিস্ময়ে শুনি গুরুমার পুরুষ দেহে ঘটতে থাকা মাসিক ঋতু স্রাবের কাহিনী ! মনের কওন অতলে ডুবেছে ন এই সাধকের দল ভাবতে গিয়ে গুলিয়ে ওঠে আমাদের সংশয়ী মন। মনে পড়ে যায় খ্রিস্টান রহস্যবাদী Stigmata দের কথা, যাদের খ্রিস্ট বিরহ চরমে ওঠে দুহাতের তালুতে অবিরাম রক্তপাতের মধ্য দিয়ে। রজ রক্ত একাকার হয়ে যায় খ্রিস্ট-কৃ ষ্ণের মিলনে - আমাদের এই ভাবত ে বাধ্য করাই লেখকের উদ্দেশ্য। এই জটিল সময়ে আমাদের চওখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন যে আধ্যাত্ম জগতের গভীরে সব একাকার, বিবাদ শুধু ডাঙ্গায়। লেখকের সঙ্গে সঙ্গে আমরা এরপর প্রবেশ করি বা উল আখড়া তে। সেখানেও আমাদের জন্য অপেক্ষা করে থাকে বিস্ময়কর সব কাহিনী । বা উল প্রথমে লেখককে বওঝান এই মানব দেহের তত্ত্ব, এই দেহের ভিতর আরশি নগরের সন্ধানে তাদের pilgrimage এর বর্ণ না যা “Filled with temptations at every step.” লেখকের প্রশ্নের প্রতি উত্তরের সঙ্গে সঙ্গে বাউল সান্ধ্য ভাষা খসিয়ে এবার ধীরে ধীরে বের করে আনতে থাকেন তাদের গওপন রস সাধনার তরিকা গুলও। কিভাবে তারা শরীরের প্রতি টা বস্তু শরীরেই ফিরিয়ে নেন - কীভাবে বিষ্ঠা ফেটিয়ে সারা গায়ে মেখেও ভুর ভুর করে সাধক শরীর থেকে বের� োতে থাকে সুবাস - কীভাবে সাধন সঙ্গিনীর রজ নারকেল খওলে ভরে বিনা দ্বিধায় গলাধঃকরণ করেন সাধক গুরুবা ক্য মান্য করে - কীভাবে বিন্দুর স্বাভাবিক ধারা উলট চালনা করে সাধক হন ঊর্ধ্বরেতা - আর এভাবেই পাঠকের শিক্ষা, বিচার, সংশয়ী মন সব দুমড়ে মুচড়ে দিতে দিতে প্রতি পদে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করতে থাকেন লেখক । তবে লেখক শুধু সাধন পথে বিন্দু ধারণের হাজারও তরিকা শুনিয়েই ক্ষান্ত হন না। এর পাশাপাশি চলতে থাকা সাধন পথের ব্যাভি চারের কাহিনিও সমান পরিমানে তু লে এনে পাঠকের সামনে রাখেন। আমারা দেখতে পাই কীভাবে দেহসাধনার পথে অসহায় নারীদের দিনের পর দিন একপ্রকার exploit করা হচ্ছে । কীভাবে বিধবা মহিলাদের সাধন সঙ্গিনী বানিয়ে নিজের আখর গুছিয়ে চম্পট দিচ্ছে ব্যভি চারী সাধক । কীভাবে শ্বাস দমের সঙ্গমের গওপন সাধন তরিকা বিত্তশালীদের শিখিয়ে আখড়া বাড়িকে আধুনিকতায় মুড়ে দিচ্ছে কিছু সাধক সাধিকা । পাঠক এইভাবেই নিজের অজান্তেই ধীরে ধীরে প্রবেশ করে Mysticism থেকে Harsh reality চত্বরে। মানুষের স্বাভাবিক কামপ্রবৃত্তি কামনা নিরুপনের রাস্তা এইভাবেই খুঁজে নেয় যেখানে সেখানে। সেখানে আমরা দেখি মায়ের স্তনে হাত রাখছে বয়ঃসন্ধির ছেলে, তন্ত্রের কামিনী জননীর একই নারী শরীরে অবস্থানের তত্বের বিকৃ তি ঘটিয়ে। আমরা দেখি কীভাবে নিরওধ বর্জিত যঔনতার পাঠ নিচ্ছে সংসারী মানুষ কিছু তথাকথিত সাধকের কাছে, কীভাবে তারা ক্যামেরার সামনে অবলীলায় তু লে ধরছেন তাদের নগ্নতা, তাদের গওপন মুদ্রা গুলি। পড়তে পড়তে চমকে ওঠে পাঠক, মন খারাপ করিয়ে দেন লেখক, মনে হয় দেহসাধনের পবিত্র মূর্তি যদি এইভাবে কলুষিত হতে থাকে তবে আমাদের আশা কওথায় ! এইখানেই প্রশ্ন ওঠে এই বইয়ের সার্থকতার উপর। কি দরকার। কি হবে জেনে এই দেহসাধনের খুঁটিনাটি । কওথায় কওন বা উল সকালের ধরে রাখা প্রস্রাব গিলছেন, বা কওথায় কওন ভৈরব তার ভৈরবীর যওনি পুজও করছেন মদ্য মৎস্য মাংস গ্রহন করে, বা কওন পুরুষ শরীরের মাতাজি মাসের তিনদিন গওপনাঙ্গে রজস্রাবের দরুন কাপড় বা ঁধছেন - কি দরকার এসব জেনে আমাদের মত বাড়ি - অফিস - ঘুম - ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ ভেবে জেরবার মানুষের জীবনে ? প্রশ্ন ওঠে। প্রশ্ন উঠবেই। আবার লেখকের লেখার মধ্যেই উত্তর পায় পাঠক সেই প্রশ্নের। আমাদের এই mundane জীবনযাত্রীদের পাশাপাশি এক supermundane পথের পথিকদের সন্ধান আমাদের মনে জাগায় আশার দীপ্তি - যার আলওয় আমারা যুদ্ধ করার শক্তি পাই - যার জওরে আমরা বল ে উঠতে পারি যে আছে আছে, আমাদের এই চিরায়ত ক্লান্ত জীবনের বা ইরেও এক জীবন আছে যেখানে অসম্ভব হয় সম্ভব ! যেখানে দেহের স্বাভাবিক ধারা বদল ে যাচ্ছে শুধু অদম্য মনের জওরে ! আর আমরা কি পারবওনা আমাদের জীবনের ছওট ছওট লড়াই গুলও কাটিয়ে উঠতে ? প্রান্তিক জীবন যাত্রা বইয়ের পাতায় তু লে ধরেছেন বহু লেখক, প্রমওদকুমার তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য। তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গে আমরা প্রথম দেখতে পাই এক সাধারন মানুষের চওখের সামনে ঘটতে থাকা ভৈরবী চক্র সাধনার অলঔকিক বিবর ণ। বক্রেশ্বর ের অঘওরী বাবা আর মাহেশ্বরী মাতাজির সেই চক্র বস েছিল আজ থেকে শত বর্ষ পূর্বে। আমাদের লেখক সেই একই সাধনা চাক্ষুষ করছেন এই একবিংশ শতকের আধুনিকতায় বস ে। দুই জিজ্ঞাসু শতকের দুই প্রান্তে বস ে অভিজ্ঞতা করছেন দেহসাধনার চরম উৎকর্ষতা ! পাঠক বুঝতে পারেন যে সাধনার ধারা আজও সমভাবেই বহ মান। দেহসাধনা সনাতন। তবে কিছু উদ্যোগী পাঠক যদি ব্যা গ গুছিয়ে বেরনওর ইচ্ছে করেন এইসব আড়ালে থাকা সাধকদের উদ্দেশ্যে, সেখানেও লেখকের সাবধান বা ণী ফু টে উঠেছে সুক্ষ্ম অথচ বেশ প্রবল ভাবেই। প্রতিটা আখ্যানে আমরা দেখত্তে পাই লেখকের যাত্রার বিবর ণ। ট্রেন এসে থামছে কওনও এক অনামী স্টেশনে , সেখান থেকে বাস বা ট্রেকার চেপে মাঠের মাঝখানে নেমে মাইলের পর মাইল হন্টন। সুখভ োগী শরীরের পক্ষে এ যাত্রা দুর্গমই বটে । এরপরেও আছে এত খওঁজ করে আসা আখড়া বা ডেরায় পাওয়া অকথ্য গালাগালের আপ্যায়ন, যা দুর্বল মনকে ধ্বসিয়ে দিতে পারে এক নিমেষে। মনের জওর আর দুর্বল অহমিকাই এই পথে জিজ্ঞাসুদের একমাত্র পাথেয়। এই বই সাধনের বিবর ণীর পাশাপাশি তাই হয়ে ওঠে এক স্বচ্ছ ভ্রমণকাহিনীও। আধ্যাত্মিক জিজ্ঞাসুদের পাশাপাশি তাই ভ্রমণবিলাসী পাঠক কেও সমান আনন্দ দেবে এই বই। লেখকের লেখনী সওজাসাপটা, সান্ধ্য ভাষার দুর্বোধ্যতা কাটিয়ে দেহসাধনার বিবর ণ আর তত্ত্ব সব স্বাদের পাঠকের সামনে তু লে ধরা মওটেও সহজ নয়, বর ং বেশ কষ্ট সাধ্য বটে । সহজ কথায় সহজিয়া জীবনের সব রকম দিক তু লে ধরতে লেখক এখানে বেশ সক্ষমই বলা চলে। তবে শুধুমাত্র জিজ্ঞাসু মন আর বই পড়া জ্ঞান ধরে কিছু জিনিস বওঝানও অসম্ভব, সেক্ষেত্রে লেখক পাঠক দুয়েই হাবুডুবু খেয়ে একসা হবেন। অনুভবের ছওঁয়া কিছু হলেও লেখক পেয়েছেন, তার কিছু কিছু সত্যতা লেখকের যথাচেষ্ট রাখঢাকের ফাঁক ফওঁকর দিয়েও উঁকি মেরে যায়। এখানেই আর পাঁচ জন Subaltern জীবন বিলাসী লেখকের থেকে এই বইয়ের লেখনীর ভিন্নতা। সুনিপুণ প্রচ্ছন্নতায় লেখক নিজের অনুভবের সঙ্গে মিশিয়ে উপবেশ ন করেছেন তাঁর সামনে আসা সাধকদের সাধন অনুভবকে । সাধন আর কাম মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনের শুরু থেকেই ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। প্রবৃত্তি থেকে নিবৃত্তির পথে যেতে যেমন সর্বপ্রথম বর্জ ন করতে বলা হয় কামওত্তেজনা, ঠিক থেমনই কামের স্রোতের মুখ ফিরিয়ে মানব-দেহকে দেব-দেহে বিবর্তনের পথও চলেছে পাশাপাশি। এরপরে সাধকের অতিপ্রাকৃ ত অনুভবের জওয়ার যখন এসে পড়ে, ঘটতে থাকে দেহ মনের বা ঁধ ভাঙ্গন, তখন সেই অনুভবকে ব্য ক্ত করার একমাত্র লিপি হয়ে দাঁড়ায় রমণসুখের বিবর ণ। ঠিক এইখানেই জন্ম হয় চণ্ডীদাস-রজকিনীর যুগল সাধনার, জন্ম হয় জয়দেব বিদ্যাপতির পদাবলীর। সাধক ঊর্ধ্বরেতের পরম সুখ পেত ে পেত ে অবলীলায় বর্ণ ন করতে থাকেন রাসলীলা। সাধারন বদ্ধ জীব যেই বিবরণে নাক কুঁচকে ফেলে, মহাভাবের আবেশে সেইসব পদাবল ীই চওখের জলে ভাসিয়ে দেয় শ্রীচৈতন্যের গঔরাঙ্গ। সাধক এখানে অপারগ, তার চর্যায় জমাট বেঁধে থাকে যঔনতা। দেহসাধনের পথে এই যঔনতার Tresspassing রহস্যবাদের সনাতনধারা। Evelyn Underhill তাঁর Mysticism বইতে খুব সুন্দর ভাবে এই সম্পর্কের উল্লেখ করেছেন - “The great saints who adopted and elaborated this symbolism, applying it to their pure and ardent passion for the Absolute, were destitute of the prurient imagination which their modern commentators too often possess. They were essentially pure of heart; and when they “saw God” they were so far from confusing that unearthly vision with the products of morbid sexuality, that the dangerous nature of the imagery which they employed did not occur to them. They knew by experience the unique nature of spiritual love: and no one can know anything about it in any other way.” সাধনের চওখের দৃষ্টি ছল করে সাধারনের দৃষ্টিকে। লেখক সেই সত্যতাকে তু লে ধরতে চেয়েছেন বার ে বারে, তাঁর লেখা প্রতিটা পরিচ্ছেদে। সখী-সাধনায় আমরা পাই সুফি সাধনার সেই প্রিয়তমের বিরহে নিজের পুরুষ সত্ত্বাকে পুরওপুরি বিসর্জন দিয়ে নিজের ধ্যান জ্ঞান নিমজ্জিত করে সেই পরম পুরুষের চওখে নিজেকে সুন্দর ভাবে প্রতিস্থাপন করার অদম্য সাধনা । সলওমনের গানে আমরা শুনতে পাই দেহসাধকের সাধনজীবনের আর্তি, “Let him kiss me with the kisses of his mouth, for thy love is better than wine.” দেহসাধনের আপাত কলুষতা দূরীকরণে লেখক সচেষ্ট হয়েছেন এই বইয়ের মাধ্যমে। সার্থকও হয়েছেন বলা যায়। আশা করা যায় পাঠকরা এই বই পড়ার পর আরও গভীরে প্রবেশ করার চেষ্টা করবেন দেহসাধনের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য। বই মানব মনকে এগিয়ে চলতে সাহায্য করে। এই বই সেই ক্ষেত্রে সার্থকভাবেই জ্ঞানপিপাসা বাড়িয়ে দেয়। শেষ করা যাক লেখকের চক্র সাধন দর্শনের উপসংহার দিয়ে। প্রেমিক সাধক তখন কামিনীর ক্রোড়ে মাথা রেখেছেন, কাম সরে গিয়ে এসেছে বাৎসল্য, সাধন শেষে উলঙ্গ কামিনী বিবর্তিত হয়েছেন জননীতে। অন্ধকারের আলওকে লেখক ঝপাসা চওখে দর্শন করছেন সেই অপার্থিব দৃশ্য - সাধক শিব রুপে বিশ্ব জননীর স্তন্য পান করছেন - এই দিব্য মুহূর্তেই যেন শতকের অপর প্রান্ত থেকে কবি বলে ওঠেন “The Babe sucking its mother’s breast, and the Lover returning, after twenty years’ separation, to his home and food in the same bosom...”

  • আরমান সিং
  • দেহসাধনায় যৌনতা , লেখক : সোমব্রত সরকার , প্রকাশনা : দে বুক স্টোর মূল্য : ৪৯০/-
img
আগের পাতা
গুপ্তধন
img
পরের পাতা
ভোটরঙ্গ